Published on Jul 09, 2024 Updated 0 Hours ago
ইউরোপের পছন্দ: চিনের সঙ্গে পুনরায় সম্পৃক্ততা অথবা বিচ্ছিন্নতা

এক দিকে নিজের নিরাপত্তামূলক অবকাঠামোর ভবিষ্য সম্পর্কে পথ বেছে নেওয়ার প্রেক্ষিতে মহাদেশের নাগরিকদের একটি স্থিতিশীল ভবিষ্য প্রদানের ক্ষমতা এবং অন্য দিকে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য ক্ষমতার বিকাশ করা… সব মিলিয়ে ইউরোপ একটি সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। আর এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এক দিকে বিশ্বের ক্রমভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভবিষ্য ভেঙে পড়ার দরুন চূড়ান্ত অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে এবং অন্য দিকে যুদ্ধ প্রায় বিশ্বের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই সবের মাঝে ইউরোপ তীব্র দোলাচলের সম্মুখীন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্ব থেকে এক সময় ইউরোপ সবচেয়ে বেশি লাভবান হলেও এখন বিনিময় ও স্বার্থভিত্তিক বাস্তবতার নিরিখে সেই সব লাভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে এবং মহাদেশের নিয়ম নীতিসমূহ প্রশ্নের মুখে পড়ছে।

চিনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় রূপান্তরিত হয়েছে, যা বিশ্ব মঞ্চে রাজনৈতিক গতিশীলতাকে নতুন আকার দিয়েছে। এর আন্তর্জাতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি আজ এ হেন প্রত্যয় দ্বারা চালিত হয় যে, চিনের শক্তি বিশ্বের কেন্দ্রে জায়গা করে নেবে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যেমন ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ক্রেমলিনের দরজায় ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন, “বর্তমানে এমন সব পরিবর্তন হচ্ছে, যা আমরা ১০০ বছর ধরে দেখিনি। এবং আমরাই যৌথ ভাবে পৃথিবীকে এই পরিবর্তনের দিকে চালিত করেছি।’ এর উত্থান এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার পরিসর প্রদান করার জন্য আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার পুনর্নির্মাণ করার চিনা প্রচেষ্টা এবং তাসঙ্গে বিদ্যমান নিয়ম, নীতি, মূল্যবোধ এবং আদর্শগুলি ইতিমধ্যে বিদ্যমান নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা এবং একটি দক্ষ বহুপাক্ষিকতার মূল্যে সাধিত হয়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্ব থেকে এক সময় ইউরোপ সবচেয়ে বেশি লাভবান হলেও এখন বিনিময় ও স্বার্থভিত্তিক বাস্তবতার নিরিখে সেই সব লাভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে এবং মহাদেশের নিয়ম নীতিসমূহ প্রশ্নের মুখে পড়ছে।

 

চিনের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ইউরোপের ক্ষমতা বর্তমানে তার নিজের ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলবে এবং সেই সঙ্গে তা প্রভাবিত করবে ভূ-রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠার বিষয়ে ইউরোপের ক্ষমতাকেও। ইউরোপীয় সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তার ভবিষ্যতের জন্যই শুধু নয়, একটি কার্যকরী আন্তর্জাতিক নিয়ম-ভিত্তিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যউরোপকে জরুরি ভিত্তিতে চিনের চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, যাতে ইউরোপ উন্নতি সাধন করতে পারে।

 

পুনর্মূল্যায়িত সম্পৃক্ততা ও ঝুঁকিমুক্তিকরণের লক্ষ্যে ইউরোপের ত্বরান্বিত লং মার্চ

যে জটিল এবং সূক্ষ্ম উপায়ে চিনের মোকাবিলা করতে হবে, তা অনুভব করার আগে ইউরোপ বেশ কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করেছে। ২০১৬ সালে যখন চিনকে মার্কেট ইকোনমি স্টেটাস বা বাজা অর্থনীতির মর্যাদা দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছিল —যা ২০০১ সালে ডব্লিউটিও অ্যাকশেসন প্রোটোকলের অধীনে মঞ্জুর করার কথা ছিল — তখন সেটি কৌশলগত ক্ষেত্রে ইউরোপে বেশ কয়েকটি আগ্রাসী চিনা দখলের সঙ্গে সমাপতিত হয়েছিল। চিন সংক্রান্ত জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়গুলির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুযোগের ভারসাম্য নিয়ে ইউরোপে সেই প্রথম আলোচনা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধ সেই আলোচনাকে আরও উস্কে দিয়েছে। নিজের অবস্থানকে সুসংহত করার জন্য ইউরোপীয় কমিশন তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির কাছে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটি কৌশল উপস্থাপন করেছিল, যা চিনের প্রতি ইউরোপীয় মনোভাবের একটি বাঁকবদলের সূচনা করে। প্রথমত, ইউরোপ স্বীকার করে নিয়েছে যে, তাকে চিনের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে আরও সূক্ষ্ম ও সতর্ক হতে হবে। একটি ইউরোপীয় বহুমুখী পদ্ধতির ভিত্তিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলি চিনের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে অংশীদার, প্রতিযোগী এবং কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সম্পৃক্ত হতে শুরু করে। দ্বিতীয়ত, এই কৌশলটিতে বলা হয়েছে যে, চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের মধ্যে ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়েছে এবং ইউরোপকে অবিলম্বে পারস্পরিকতার অনুপস্থিতি, সমতল পরিসরের অভাব এবং সম্পর্কের অসামঞ্জস্যগুলি সমাধান করতে হবে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনে চিনের সমর্থন এই অব্যবহিত অনুভূতিকে ত্বরান্বিত করেছে যে, ইউরোপকে তার সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করতে হবে, তার নির্ভরতার ক্ষেত্রটি বেছে নিতে হবে এবং তার দুর্বলতাগুলি যতটা সম্ভব হ্রাস করতে হবে।

 

ইউক্রেন যুদ্ধে চিনের অবস্থান এবং রাশিয়ার সঙ্গে তার সীমাহীন অংশীদারিত্ব চিনের সঙ্গে ইউরোপীয় লেনদেনে বাস্তববাদ, ব্যবহারিক এবং ঐক্যের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। যুদ্ধটি এই ভ্রান্তির অবসান ঘটিয়েছিল যে, চিন ইউরোপের জন্য নতুন কোনও প্রস্তাব রাখবে। উপরন্তু, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনে চিনের সমর্থন এই অব্যবহিত অনুভূতিকে ত্বরান্বিত করেছে যে, ইউরোপকে তার সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করতে হবে, তার নির্ভরতার ক্ষেত্রটি বেছে নিতে হবে এবং তার দুর্বলতাগুলি যতটা সম্ভব হ্রাস করতে হবে। যুদ্ধটি এই ধারণাটিকে শক্ত করে যে, ইউরোপ চিনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে যোগাযোগের উন্মুক্ত শৃঙ্খল বজায় রাখতে পারে, এবং অন্য দিকে ইউনিয়ন দ্বারা চিহ্নিত চিন সংক্রান্ত ঝুঁকি বা দুর্বলতাঝুঁকিমুক্তকরণ করতে পারে।

 

চিনকে মোকাবিলার জন্য ইউরোপীয় পদ্ধতি

মোকাবিলা করার সময় ইউরোপ চিনের সাথে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক মনোভাব পোষণ করছে। চিন এবং ইউরোপের মধ্যে দৈনিক ভিত্তিতে ২.৩ বিলিয়ন ইউরো বিনিময়ের ঘটনা এ কথাই দর্শায় যে, বিচ্ছিন্নকরণ কোনও বিকল্প হতে পারে না। একটি জটিল ব্যবসায়িক পরিবেশ সত্ত্বেও ইউরোপীয় সংস্থাগুলি - যারা চিন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেনি - এখনও চিনের বাজারের মাত্রার প্রতিনিধিত্বকারী অর্থনৈতিক সুযোগগুলিতে আস্থা রাখে। উপরন্তু, চিন ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন বা ঋণমুক্তির বিরুদ্ধে কোন লড়াই করা সম্ভব নয়। এর অর্থ হল এই যে, ইউরোপের কাছে এমন এক জটিল অংশীদারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই, যার সঙ্গে মহাদেশটির মূল্যবোধের ফারাক ক্রমবর্ধমান এবং মৌলিক ভিন্নতা ও বিরক্তির কারণওকযোগে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

চিনের সঙ্গে ইউরোপীয় সম্পৃক্ততার পুনর্নির্মাণ যথেষ্ট কঠিন কাজ। কারণ সম্পৃক্ততা বিভিন্ন আকার নিতে পারে, যার মধ্যে উভয় পক্ষের স্বার্থ সমাপতিত হয় এ হেন ক্ষেত্র ও পরিসরগুলিতে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগের শৃঙ্খল উন্মুক্ত থাকা জরুরি। বিগত বছরগুলিতে কঠোর ইউরোপীয় পদ্ধতির কারণে সম্পৃক্ততার গুণমানে অবনতি ঘটেছে, লিথুয়ানিয়ায় চিনের অর্থনৈতিক জবরদস্তি, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে ইটের বদলে পাটকেলসম মনোভাব, অতিমারি চলাকালীন চিনকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, তাইওয়ান প্রসঙ্গ… প্রায় সব ক্ষেত্রেই অতি-নিরাপত্তামূলক মনোভাব এবং রাশিয়ার প্রতি চিনের সমর্থন পরিলক্ষিত হয়েছে। শুধু মাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্কের আলোকে গড়ে ওঠা উরোপীয় ধারণাকে আঁকড়ে থাকার দরুন বেজিং ইউরোপের জন্য একটি অর্থবহ প্রস্তাব প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। এটি চিনকে ইউরোপীয় অনুরোধগুলিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে বাধ্য করবে এবং চিনকে এ কথা উপলব্ধি করার সুযোগ করে দেবে যে, সম্পর্ক গড়ে তোলার অর্থ হল দেওয়া এবং নেওয়া। সংযোগ থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন বাণিজ্য সমস্যা সমাধানের অভিপ্রায় নিয়ে ইউরোপ চিনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেও চিনা প্রতিশ্রুতির মাত্রা এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার সমানুপাতিক নয়। তা সত্ত্বেও, যোগাযোগের শৃঙ্খলগুলি উন্মুক্ত রয়েছে এবং বিগত বছরগুলিতে ইউরোপ-চিন সম্পর্ক যে একাধিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তার নিরিখে এই শৃঙ্খল তাৎপর্যপূর্ণ।

 

শুধু মাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্কের আলোকে গড়ে ওঠা উরোপীয় ধারণাকে আঁকড়ে থাকার দরুন বেজিং ইউরোপের জন্য একটি অর্থবহ প্রস্তাব প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।

 

ইউরোপ ঝুঁকিমুক্তকরণ করলেও বিচ্ছিন্নকরণের পথে হাঁটছে না।’ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেইনেতাঁচিনা প্রতিপক্ষের করা মনোভাবটি চিনের সাথে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক সমমনস্ক অংশীদারের মন্ত্র হয়ে উঠেছে। ডি-রিস্কিং বা ঝুঁকিমুক্তকরণের অর্থ হল – আক্ষরিক পরিভাষায় বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইউরোপকে চিনের সঙ্গে তার সম্পর্ককে সাবধানী মনোভাব নিয়ে বিবেচনা করতে হবে এবং ঝুঁকি বা অতিরিক্ত-নির্ভরতা ক্ষেত্রগুলিতে ইউরোপের দুর্বলতাগুলি হ্রাস করে নিজের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার এই ইউরোপীয় প্রচেষ্টাকে সুরক্ষাবাদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়, বরং এমনটা মনে করা জরুরি যে, চিন যদি নিরাপত্তাকে তার সমস্ত নীতির জন্য একটি বিস্তৃত পন্থা হিসাবে গ্রহণ করে, তবে ইউরোপেরও তেমনটা করার বৈধতা রয়েছে। এটি প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্য নির্ভরতার অস্ত্রায়নের একটি ক্রমাঙ্কিত প্রতিক্রিয়া, যা ইউরোপ অনুভব করেছে। তা সত্ত্বেও, ইউরোপ এমন এক শক্তি হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখবে, যে মহাদেশটি মুক্ত বাণিজ্যে আস্থা রাখবে এবং যার জন্য ডব্লিউটিও-র ভূমিকা অপরিহার্য। তাই ঝুঁকিমুক্তকরণ শুধু মাত্র ইউরোপের জন্য বিদ্যমান নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অংশ হিসাবে ঘটতে পারে।

ঝুঁকিমুক্তকরণ বিভিন্ন আকার নিয়েছে এবং সমগ্র ইউরোপ জুড়ে তা একটি বড় আকারের ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সূচনা করে, যেখানে ব অংশীদারদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা থেকে শুরু করে সুরক্ষা উদ্বেগের উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিরক্ষামূলক সাধনী তৈরি করা হয়েছে, যেটি প্রয়োজনমাফিক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ইউরোপীয় সরবরাহ শৃঙ্খলকে বৈচিত্র্যময় করার প্রয়োজনীয়তা এবং আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা সঙ্গে সংযুক্ত। ইউরোপীয় বাণিজ্য কৌশল নিরাপত্তা বৈচিত্র্যের জন্য এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। এখন চ্যালেঞ্জ হল ঝুঁকিমুক্তকরণ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মধ্যকার ভারসাম্য বজায় রাখা। ইউরোপীয় কমিশন যখন ঝুঁকিমুক্তকরণের প্রচেষ্টার সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়নে সক্রিয় হয়েছে, তখন জাতীয় পর্যায়ে শক্তি এবং অংশীদাররা - যাঁরা ইইউ প্রস্তাবনাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দায়ী হবেন- তাঁরা পিছিয়ে রয়েছে। এই পর্যায়ে, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়ে ইউরোপের জন্য আসল চ্যালেঞ্জ হল ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনিয়নব্যাপী অংশীদার দেশগুলির সঙ্গে ঝুঁকি ভাগ করে নেওয়া।

 

ইউরোপীয় বাণিজ্য কৌশল নিরাপত্তা বৈচিত্র্যের জন্য এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। এখন চ্যালেঞ্জ হল ঝুঁকিমুক্তকরণ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মধ্যকার ভারসাম্য বজায় রাখা।

 

ইউরোপ-চিন সম্পর্কের সামনের পথ

বাস্তববাদ এবং সূক্ষ্মতার সঙ্গে চিনের মোকাবিলা করার ইউরোপীয় পদ্ধতি সফল হয়েছে। এই সঞ্চারপথের ভবিষ্যৎকে চালিত করা এবং তা মূল্যায়ন করার জন্য কয়েকটি পরামিতি গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরীণ ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এগোবে এবং তার পাশাপাশিই একটি নতুন কমিশন গঠন করবে। চিনের প্রতি ইউরোপীয় মনোভাবের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেও নির্বাচন সর্বদাই পূর্ববর্তী নেতৃত্ব কী করেছে তা পুনর্বিবেচনা করা এবং তা নিয়ে প্রশ্ন উস্কে দেয়। দ্বিতীয় উপাদানটি খোদ চিই। অভ্যন্তরীণ অনিশ্চয়তা অর্থনৈতিক অসুবিধার মুহূর্তে বেজিং অন্তর্মুখী হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি সমাধানে মন দিয়েছে। এর অর্থ হল এই যে, ইউরোপের সঙ্গে লেনদেন করার পরিসর এবং

আগামী পথ চিনের জন্য সীমিত, বিশেষ করে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন এই বছরই হতে চলেছে। প্রকৃতপক্ষে, জোংনানহাই ইউরোপের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে ক্রমাগত পুনর্নির্মাণ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ ঘটনাপ্রবাহের উপর নজর রাখছেন। এটি ইউরোপের জন্য সুযোগের এক আদর্শ দরজা খুলে দেয়, যা চিনের কাছে সীমিত হলেও বিদ্যমান ইউরোপীয় প্রস্তাব বজায় রেখে তার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গড়ে তোলা ও তা ঝুঁকিমুক্তকরণের পথে চালিত করবে।

 


অ্যাবিগেল ভ্যাসেলিয়ার জার্মানির মের্কাতোর ইনস্টিটিউট ফর চায়না স্টাডিজ-এর ফরেন রিলেশনস বিভাগের প্রধান।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Abigaël Vasselier

Abigaël Vasselier

Abigaël Vasselier is Head of Foreign Relations at the Mercator Institute for China Studies, Germany ...

Read More +