৩ এপ্রিল ফিলিপিনস আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি (ইডিসিএ)–র অধীনে চারটি নতুন ঘাঁটি কোথায় কোথায় তৈরি হবে সে কথা ঘোষণা করেছে। এই চারটি ঘাঁটির মধ্যে তিনটি ফিলিপিনসের উত্তরের লুজোন অঞ্চলের কাগায়ান ও ইসাবেলা প্রদেশে তৈরি করা হবে, আর চতুর্থ ঘাঁটি হবে দেশের পশ্চিমতম প্রান্তে পালাওয়ান প্রদেশে। ইডিসিএ ঘাঁটির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে সংখ্যা মোট নয়টি করা এই জোটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত দিলেও ফিলিপিনসের বৈদেশিক নীতি ও দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় নিরাপত্তার জন্য এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকে গিয়েছে।
জোটের উপযোগিতা সর্বোচ্চ করা
প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, চিন যখন ম্যানিলার সার্বভৌমত্ব ও সার্বভৌম অধিকারের মূল্যে পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে তার আগ্রাসন ও যুদ্ধশক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে, সেই সময় তাঁর প্রশাসনের লক্ষ্য হবে ভূখণ্ডগত প্রতিরক্ষা, সামরিক আধুনিকীকরণ ও সামুদ্রিক সুরক্ষার উপর আরও কড়া নজর দেওয়া। এই পটভূমিতে মার্কোস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটের ভূমিকা প্রসারণের চেষ্টা করেছেন।
ইডিসিএ ঘাঁটির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে সংখ্যা মোট নয়টি করা এই জোটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত দিলেও ফিলিপিনসের বৈদেশিক নীতি ও দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় নিরাপত্তার জন্য এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকে গিয়েছে।
ফিলিপিনসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর অভিষেক হওয়ার পর থেকে ম্যানিলা ও ওয়াশিংটন নিয়মিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিচ্ছে। মার্কোস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যে নিউ ইয়র্ক ও নমপেনে দুবার বৈঠক করেছেন। তাছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন–সহ সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তারাও ম্যানিলা সফর করেছেন। উপরন্তু, এই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মার্কোসের একটি রাষ্ট্রীয় সফরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ক্ষমতা উন্নত করার জন্য মার্কোসের অভিপ্রায়কে সমর্থন করতে ওয়াশিংটন ২০২২ সালের আগস্টে ফিলিপিনস কোস্ট গার্ডকে ১৯৬,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যের সামুদ্রিক কৌশলগত যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম দান করেছে, এবং অক্টোবরে বৈদেশিক সামরিক অর্থায়ন খাতে ম্যানিলাকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।
চুক্তি জোটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য মার্কোসের প্রকাশ্য আকাঙ্ক্ষা তাঁর পূর্বসূরি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সতর্কতার নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র তুলে ধরে। এই ধরনের ঘটনা ওয়াশিংটনকে ম্যানিলার সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতার আরও ক্ষেত্র অন্বেষণ করতে উৎসাহিত করেছে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩–এর এপ্রিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বার্ষিক বালিকাতান অনুশীলনের পুনরাবৃত্তিটি শুধু দ্বিপাক্ষিক সামরিক অনুশীলনের বৃহত্তম সংস্করণই ছিল না, ফিলিপিনি ও মার্কিন সৈন্যদের মধ্যে অভিনব নৌকাডুবি অনুশীলনও এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ক্রমবর্ধমান ঐতিহ্যগত ও অ–প্রথাগত নিরাপত্তা হুমকির সময়ে জোটকে একটি বাস্তব মাত্রা প্রদান করেছে। এইভাবে, ইডিসিএ ঘাঁটিগুলির সম্প্রসারণও ওয়াশিংটনের সঙ্গে শক্তিশালী নিরাপত্তা সম্পর্ক স্থাপনে ম্যানিলার নতুন আগ্রহকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করে।
মার্কোস প্রশাসনের অধীনে ফিলিপিনস ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে ইউএস হাব আ্যান্ড স্পোক সিস্টেমের সঙ্গে তার সমন্বয় জোরদার করার ইচ্ছাও প্রদর্শন করেছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাপান সফরের সময় মার্কোস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা একটি দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা জাপানের জন্য ফিলিপিনসের সঙ্গে তার কৌশলগত উপস্থিতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি সুযোগ হিসাবে কাজ করবে। একই মাসে অস্ট্রেলিয়ার উপ–প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেসও ফিলিপিনস সফর করেছিলেন, এবং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ম্যানিলা ও ক্যানবেরা দক্ষিণ চিন সাগরে যৌথ নৌ–টহল পরিচালনার উপায়গুলি খতিয়ে দেখছে।
চুক্তি জোটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য মার্কোসের প্রকাশ্য আকাঙ্ক্ষা তাঁর পূর্বসূরি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সতর্কতার নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র তুলে ধরে।
ম্যানিলার জন্য অতএব ইডিসিএ সম্প্রসারণ কেন্দ্রগুলির উদ্দেশ্য হল ক্রমবর্ধমানভাবে আগ্রাসী চিনের বিরুদ্ধে ফিলিপিনসের নিবারণমূলক ক্ষমতা ও ভূখণ্ডগত প্রতিরক্ষা উন্নত করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি শক্তিশালী জোটের সুবিধাগুলি নেওয়া। যাই হোক, আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রতিযোগিতামূলক ও অনিশ্চিত প্রকৃতি কিন্তু অন্যান্য প্রতিবেশী শক্তির সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট বৈদেশিক নীতিগত সিদ্ধান্তের স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলির মূল্যায়নে অসুবিধা সৃষ্টি করে।
চিন ফ্যাক্টর ও অভ্যন্তরীণ উদ্বেগ
৪ এপ্রিল চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং ইডিসিএ সম্প্রসারণকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অ–লাভজনক প্রয়াস হিসাবে বর্ণনা করেছেন , এবং আঞ্চলিক দেশগুলিকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন যে এর ফলে এই অঞ্চলে সহযোগিতার চেয়ে প্রতিযোগিতা বেশি হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদিও বেজিংয়ের কাছ থেকে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিত, এই বিবৃতিগুলির সময় ও প্রকৃতি পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে সম্ভাব্য আরও বেশি উত্তেজনাপূর্ণ ফিলিপিনস–চিন সম্পর্কের দিকে নির্দেশ করে। আর এই ঘটনা ঘটেছে মার্কোস ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সমুদ্রসীমার বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা করতে সম্মত হওয়ার মাত্র তিন মাস পর।
চিন ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে ফিলিপিনসের বিরুদ্ধে একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান মার্কিন উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চিন সম্ভবত বিতর্কিত সামুদ্রিক অঞ্চলে সামরিকীকরণ এবং আরও শক্তি প্রদর্শনের প্রয়াস চালিয়ে যাবে। বছরের পর বছর ধরে চিন মার্কিন নৌ–চলাচলের স্বাধীনতা অভিযানের (ফোনোপস) মূল্যে পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগরে তার অ্যান্টি-অ্যাক্সেস/এরিয়া ডিনায়াল (এ২/এডি) ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। ২৩ মার্চ চিনা সামরিক বাহিনী দাবি করেছিল যে তারা দক্ষিণ চিন সাগরে ফোনোপস পরিচালনাকারী একটি মার্কিন ডেস্ট্রয়ারকে তাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও এই দাবি মার্কিন নৌবাহিনী অস্বীকার করেছিল, এই ধরনের ঘটনাগুলি মার্কিন–চিন শক্তি প্রতিযোগিতার উগ্র প্রকৃতিকে প্রতিফলিত করে।
ফিলিপিনসের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মানচিত্রের মধ্যে বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বও ইডিসিএ–র পরিধি প্রসারিত করার সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ফিলিপিনসের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মানচিত্রের মধ্যে বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বও ইডিসিএ–র পরিধি প্রসারিত করার সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এসএমএনআই প্রোগ্রামে তাঁর সাক্ষাৎকারে দুতার্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে একটি বর্ধিত ইডিসিএ ফিলিপিনসের পরিবর্তে মার্কিন স্বার্থের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। অনুরূপভাবে সেনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারপারসন ইমি মার্কোস ১ মার্চ ফিলিপিনি সরকারের ইডিসিএ ঘাঁটির সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের নেতিবাচক নিরাপত্তা প্রভাবের উপর জোর দিয়েছিলেন। সেনেটর মার্কোস উল্লেখ করেছেন যে নির্বাচিত বেশিরভাগ কেন্দ্র উত্তর লুজনে হবে, যা তাইওয়ানের বেশ কাছাকাছি।
প্রকৃতপক্ষে, ফিলিপিনসের উত্তরের ইতবায়াত দ্বীপটি তাইওয়ান থেকে মোটামুটি ১৪৯ কিলোমিটার দূরে। সেনেটর জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে ইডিসিএ সম্প্রসারণ পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে ফিলিপিনসের নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে, না তাইওয়ানে চিনের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে মার্কিন অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহৃত হবে। এই ধরনের ঘটনাবলির পরিণতিতে বেজিংয়ের সঙ্গে ম্যানিলার সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ম্যানিলাকে তাইওয়ান নিয়ে যুদ্ধের ভেতরে টেনে নিতে পারে।
মার্কোস ও মার্কিন–চিন ভারসাম্য
তাঁর প্রেসিডেন্সির শুরুতে মার্কোস তাঁর চুক্তি মিত্র এবং তাঁর নিকটতম সবচেয়ে বড় প্রতিবেশীর মধ্যে একটি কৌশলগত ভারসাম্য তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। যাই হোক, তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে স্পষ্ট করেছেন যে তাঁর প্রশাসন ফিলিপিনসের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও সার্বভৌম অধিকারকে অগ্রাধিকার দেবে। এই লক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানিলার সামুদ্রিক নিরাপত্তা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করা এবং এই অঞ্চলে নিজের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক উন্নত করার জন্য তাঁর এক উজ্জীবিত পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেওয়া অনিবার্য ছিল। এই প্রেক্ষাপটেই মার্কিন জোটের ভূমিকার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে চিনের উস্কানির ঘটনাবলির মধ্যে জানুয়ারিতে যখন তিনি চিনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিলেন, তখন উভয় নেতার মধ্যেকার চুক্তিটি অনুসরণ করতে বেজিংয়ের ব্যর্থতা নিয়েও মার্কোস তাঁর হতাশার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
এই ধরনের ঘটনাবলির পরিণতিতে বেজিংয়ের সঙ্গে ম্যানিলার সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ম্যানিলাকে তাইওয়ান নিয়ে যুদ্ধের ভেতরে টেনে নিতে পারে।
চিনের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলিকে স্বীকৃতি দিয়ে মার্কোস আরও সুরক্ষিত ফিলিপিনসের জন্য তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির পরিপূরণ করার জন্য ঐতিহ্যগত কৌশলগত সম্পর্কগুলিকে কাজে লাগাতে চেয়েছেন৷ এই পটভূমিতে ইডিসিএ সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত বোধগম্য। যাই হোক, মার্কোস একইসঙ্গে তুলে ধরেছেন কীভাবে সামুদ্রিক বিরোধের স্থায়ী সমাধান শুধুমাত্র কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই করা যায়। তাই, ম্যানিলা কূটনৈতিক চ্যানেল উন্মুক্ত রেখে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে ও স্থিতিশীল করতে চায়।
এই আলোকে, ৩০ মার্চ প্রতিবেদিত হয়েছিল যে উভয় দেশ পশ্চিম ফিলিপিনি সাগরে সম্ভাব্য যৌথ তেল ও গ্যাস উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, অঞ্চলের নিরাপত্তা স্থাপত্য যখন বড় ধরনের উথালপাথালের সাক্ষী হচ্ছে সেই সময় ফিলিপিনস তার বৈধ নিরাপত্তা স্বার্থ অনুসরণ করবে না। এইভাবে, এই অঞ্চলের কৌশলগত সমীকরণে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের বিকাশমান প্রভাবের কারণে ফিলিপিনসের বিদেশনীতি আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.