তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় শেখ হাসিনার ২১ থেকে ২২ জুনের দুই দিনের ভারত সফরে উভয় দেশের নেতারা যৌথভাবে এই অঞ্চলের জন্য একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন। এই সফরের সময় স্বাক্ষরিত মূল চুক্তিগুলির মধ্যে একটি ভারত ও বাংলাদেশকে একে অপরের রেললাইন ব্যবহার করতে সক্ষম করেছিল, যা ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য করার সময় ও খরচ উভয়ই হ্রাস করবে। বাংলাদেশ ও ভুটানের অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা এবং অসুবিধা মিলিয়ে গত এক দশক জুড়ে এই অঞ্চলে সংযোগের জন্য ভারতের জোরালো প্রয়াস তিনটি দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও উদ্যোগের প্রসারে অবদান রেখেছে, যা ভুটানের সংযোগ ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষাকে বাড়িয়ে তুলছে।
পুরনো বন্ধন, নতুন বাধ্যবাধকতা
বাংলাদেশ ও ভুটান তাদের ভৌগোলিক নৈকট্য, সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়া এবং তাদের নেতৃত্বের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে সুসম্পর্ক উপভোগ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, ১৯৭১ সালে ভুটানই ছিল প্রথম দেশ যে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। উভয় দেশ ১৯৮০ সালে একটি ট্রানজিট চুক্তিও স্বাক্ষর করেছিল, যা ভুটানকে ফল ও সবজি, ডলোমাইট, চুনাপাথর, বোল্ডার ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানি করতে সহায়তা করে। তা সত্ত্বেও, তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক কখনই তার পূর্ণ সম্ভাবনা পূরণ করেনি। যদিও উভয় দেশ অতীতে প্রায়শই সংযোগ ও সম্পর্ক সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করেছিল, তারা এই ক্ষেত্রে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রধানত দুটি কারণ এই সংযোগ উদ্যোগগুলির বাস্তবায়নে নতুন করে শক্তি জুগিয়েছে:
এক, এই অঞ্চলে সংযোগের জন্য ভারতের চাপ ভুটান ও বাংলাদেশকে গতি বাড়াতে অনুপ্রাণিত করেছে। ভারত তার অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান চিনা হুমকি রোধ করতে আগ্রহী, এবং সে গত দশকে সংযোগকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং তার প্রতিবেশীদের অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের চাহিদাও মিটিয়েছে। ভুটান ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলির জন্য, যেগুলির একে অপরের সঙ্গে সীমান্ত নেই এবং যারা ভারত দ্বারা বিচ্ছিন্ন, এই প্রয়াস তাদের একে অপরের সঙ্গে আরও ভাল সংযোগ তৈরি করতে এবং প্রাথমিক বাধাগুলি অতিক্রম করতে উৎসাহিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালে ভুটান ও বাংলাদেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যা উভয় দেশের ট্রাকগুলিকে একে অপরের মনোনীত প্রবেশ ও প্রস্থান স্থল (ভারত হয়ে) দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। যাই হোক, বাংলাদেশী ট্রাক ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যের জন্য ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি। এবং শুধুমাত্র ২০২২ সালে এসে ভারত বাণিজ্য করার জন্য নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশকে বিনামূল্যে ট্রানজিট প্রস্তাব করেছিল (যদিও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি)। একইভাবে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ২০১৭ সালের সমঝোতাপত্র অনুযায়ী ভারত প্রথম বারের মতো ভুটানকে তার জলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানি করতে সহায়তা করেছিল।
ভারত তার অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান চিনা হুমকি রোধ করতে আগ্রহী, এবং সে গত দশকে সংযোগকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং তার প্রতিবেশীদের অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের চাহিদাও মিটিয়েছে।
কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বাহ্যিক ধাক্কার প্রেক্ষিতে সংযোগের গতিতে আগ্রহের কারণে ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ তীব্র জ্বালানি ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে, যার ফলে দেশের উৎপাদন ও অনান্য কার্যক্রমে গুরুতর ব্যাঘাত ঘটেছে, আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং দ্রুত বৈদেশিক রিজার্ভের অবনতি ঘটেছে। অন্যদিকে ভুটানে কঠোর লকডাউন তার পর্যটন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করেছে, যা এখনও অবধি আর প্রাক-অতিমারি পর্যায়ে পৌঁছতে পারেনি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কর্মক্ষম জনসংখ্যার ব্যাপক অভিবাসন, যুব বেকারত্ব এবং গত পাঁচ বছরে ১.৭ শতাংশের গড় অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ভুটানের অর্থনীতিকে আরও ধাক্কা দিয়েছে। ভুটান এই কারণে সংযোগের মাধ্যমে তার উৎপাদন ও রপ্তানির ভিত্তি বাড়াতে আগ্রহী। দেশটি নিজের অর্থনৈতিক ভাগ্য পুরুজ্জীবিত করতে অসমের কাছে গেলফুতে একটি ১,০০০ বর্গ কিমি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (এসএআর) এবং বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) তৈরি করছে। এইভাবে ভুটান ও বাংলাদেশ উভয়েই বাধ্য হচ্ছে নতুন বাজার ও বাণিজ্য সুযোগ অন্বেষণ করতে, এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনতে। নিচের সারণি ১ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উভয় দেশের দ্বারা স্বাক্ষরিত বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিগুলির বিবরণ দেয়৷
সারণি ১: বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি
বর্ষ
|
চুক্তি
|
বর্ণনা
|
২০১৭
|
অভ্যন্তরীণ জলপথ নিয়ে সমঝোতাপত্র
|
বাংলাদেশ ভুটানকে পণ্য পরিবহণের জন্য তার জলপথ এবং সমুদ্রপথ ব্যবহার করার অনুমতি দেয়
|
২০২০
|
অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)
|
২০২২ সালে বাস্তবায়িত; ভুটানে ১০০টি বাংলাদেশি পণ্য এবং বাংলাদেশে ৫০টি ভুটানি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়
|
২০২২
|
অভ্যন্তরীণ জলসীমার উপর সমঝোতাপত্র পুনর্নবীকরণ ও সংশোধন
|
সমঝোতাপত্রের প্রক্রিয়া ও বৈধতা চূড়ান্ত করা, বিকল্প ট্রানজিট রুট অন্বেষণ এবং বন্দরে আগমন বৃদ্ধির জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর সংশোধন করা।
|
২০২৩
|
ট্রাফিক-ইন ট্রানজিট ও প্রোটোকল চুক্তি
|
২০০০ সাল থেকে প্রথম ট্রানজিট চুক্তি; রাস্তা, জলপথ, রেল ও বিমান সহ বহু-ক্ষেত্রীয় সংযোগের ব্যবস্থা স্থাপন করে। চুক্তিটি ভুটানি ও বাংলাদেশী যানবাহনগুলিকে আমদানি ও রপ্তানির জন্য নির্ধারিত বন্দর/রুটে অবাধে যাতায়াত করতে দেয়।
|
২০২৪
|
এসইজেড নিয়ে সমঝোতাপত্র
|
বাংলাদেশ ভুটানকে তার কুড়িগ্রাম জেলায় ১৯০ একর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।
|
সংযোগের স্বপ্ন
সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চুক্তিগুলি ভুটান-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পিটিএ উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে পারে। এই পিটিএ অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় এফটিএ থেকে ভিন্ন, এবং এটি বেশিরভাগ বাণিজ্য যা নিয়ে হয় সেই পণ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। ভুটানের জন্য, যেটি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অনুকূল বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রেখেছে বিশেষ করে বোল্ডার, ডলোমাইট ও চুনাপাথর রপ্তানি করে, এই ধরনের বাণিজ্য সম্প্রসারণ তার বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়াবে (টেবল ২ দেখুন)। অন্যদিকে, পিটিএ বাংলাদেশকে ঘাটতি কমিয়ে রপ্তানি বাড়াতে দেয়। মিডিয়া রিপোর্ট অনুমান করে যে পিটিএ বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পরবর্তী ট্রানজিট চুক্তিগুলি সম্ভবত এই সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করবে, কারণ এটি বাংলাদেশের ট্রাকগুলিকে ভারতীয় সীমান্তে ট্রান্স-শিপিং না করে সরাসরি বাণিজ্যের জন্য ভুটানে যেতে সাহায্য করবে।
সারণি ২. ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য
বর্ষ
|
ভুটানে বাংলাদেশের রফতানি মিলিয়ন মার্কিন ডলারে
|
ভুটান থেকে বাংলাদেশের আমদানি মিলিয়ন মার্কিন ডলারে
|
২০১৫-২০১৬
|
৪.৭৪
|
২১.৬
|
২০১৬-২০১৭
|
৩.২১
|
৩৩.১
|
২০১৭-২০১৮
|
৪.৩৮
|
৩২.৩
|
২০১৮-২০১৯
|
৭.৫৬
|
৪৯.৯
|
২০১৯-২০২০
|
৪.৩৬
|
৪০.৯
|
২০২০-২০২১
|
৬.৮৯
|
৩৮.২
|
সূত্র: বিদেশ মন্ত্রক, বাংলাদেশ
আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াতেও উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ উভয় দেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট ছাড়াই একে অপরের রেলপথ ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। ভুটানের বিষয়ে (ম্যাপ ১ দেখুন) বাংলাদেশ ভারতীয় রেলওয়েকে ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের দর্শনা পর্যন্ত তার অঞ্চলে প্রবেশ করতে এবং বাংলাদেশের চিলহাটির মাধ্যমে প্রস্থান করার অনুমতি দেবে। অন্যদিকে ভারতের হলদিবাড়ি থেকে চিলহাটি হয়ে বাংলাদেশকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ভারত। জয়গাঁও-ফুয়েনশোলিং অঞ্চলের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন এবং ভারত ও ভুটানের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম বাণিজ্যপথ হাসিমারায় উভয় দেশের পণ্য আনলোড করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি ট্রেনগুলি কোনও ট্রান্সশিপমেন্ট প্রক্রিয়া ছাড়াই ভুটানের সীমান্ত পর্যন্ত বাণিজ্য করতে পারবে, এবং ভারতীয় পণ্য কম সময় ও খরচে বাংলাদেশ হয়ে ভুটানে পৌঁছতে পারবে। এছাড়াও, ভারত ভুটানের সঙ্গে দুটি রেললাইনও তৈরি করছে (মানচিত্র ১-এ বেগুনি রঙে নির্দেশিত): ভারতের বানারহাট থেকে ভুটানের সামতসে এবং ভারতের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলফু পর্যন্ত। প্রথম রেল রুটটি হাসিমারার কাছাকাছি হলে, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হলে বাংলাদেশকে কোকরাঝাড়-গেলফু রুট ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে, যার ফলে বাংলাদেশী ট্রেনগুলি ভুটানের এসএআর-এ প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যাবে। এই রেল রুটগুলি আরও বাণিজ্য ও সম্পৃক্ততা উন্নত করতে পারে, এবং ভুটানকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক আরোপিত সুবিধা কর এড়াতে সাহায্য করতে পারে।
মানচিত্র ১। রেল পথ
সূত্র: লেখকের নিজস্ব
দ্রষ্টব্য: লাল: ভারতীয় রেল রুট; খয়েরি: বাংলাদেশ রেল রুট; বেগুনি: ভারত ও ভুটানের মধ্যে নতুন রেল রুট
গেলফুতে ভুটানের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (এসএআর)-কে দেশটির নতুন প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টাও করা হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ ভুটানকে তার কুড়িগ্রাম জেলায় ১৯০ একর এসইজেড স্থাপনের অনুমতি দেয়।
গেলফুতে ভুটানের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (এসএআর)-কে দেশটির নতুন প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টাও করা হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ ভুটানকে তার কুড়িগ্রাম জেলায় ১৯০ একর এসইজেড স্থাপনের অনুমতি দেয় (মানচিত্র ২ দেখুন)। এই এসইজেড ভুটানকে তার উৎপাদন ক্ষমতা এবং শিল্পের ভিত্তি বাড়াতে সাহায্য করবে, কারণ গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস নীতির কারণে দেশে তার উৎপাদন সামর্থ্য সীমিত। এসইজেড কৌশলগতভাবে একটি প্রধান শহর রংপুরের কাছাকাছি অবস্থিত, যা স্থানীয় বাণিজ্যের জন্য আরও সম্ভাবনা তৈরি করে এবং শ্রম ও পরিকাঠামোগত উদ্বেগের সমাধান করে। এছাড়াও এই এসইজেড লালমনিরহাট বিমানবন্দর এবং অর্ধ-সক্রিয় চিলমারী বন্দরের মধ্যে অবস্থিত, যা ট্রানজিট ও অভ্যন্তরীণ চুক্তির মাধ্যমে ভুটানকে বাংলাদেশী বন্দরগুলির মাধ্যমে এসইজেড থেকে পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করতে সহায়তা করবে। গুরুত্বপূর্ণভাবে এই এসইজেড বাংলাদেশের সোনাহাট স্থলবন্দর এবং ভারতের গোলকগঞ্জের কাছেও অবস্থিত, যেটি উভয় দেশের জন্য একটি ব্যস্ত বাণিজ্য পথ। ভুটান আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে গোলকগঞ্জ এবং গেলফুর মধ্যে বাণিজ্য রুট খোলার জন্য তার এসইজেড-কে এসএআর-এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে এবং একে অপরের ক্রিয়াকলাপের পরিপূরণ করার জন্য অনুরোধ করেছে।
মানচিত্র ২। ভুটানের এসইজেড ও এসএআর
সূত্র: লেখকের নিজস্ব
রেল ও সড়ক যোগাযোগ প্রচেষ্টা এবং ট্রানজিট চুক্তি সহ এই এসইজেড ও এসএআর উদ্যোগগুলি ভুটানের উৎপাদন ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে, এবং দেশটিকে তার অভ্যন্তরীণ উপভোগ ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত রপ্তানি ও আমদানি করতে সক্ষম করবে। তাছাড়া ২০২৩ সালের ট্রানজিট চুক্তি ভুটানকে বাংলাদেশের বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয়, এবং তৃতীয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য কলকাতা বন্দরের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতার অবসান ঘটায়। এটি ভুটানের বাণিজ্যের জন্য খরচ ও সময় কমিয়ে দেবে, এবং বিশেষ করে সরাসরি ট্রেন, নৌপথ ও (সম্ভাব্য) ট্রাকের মাধ্যমে উভয় পক্ষের বাণিজ্য সহজতর করবে। এই ধরনের উদ্যোগগুলি ভুটানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তার অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং বাজার, বিশেষ করে তার এসইজেড ও এসএআর-কে, তাইল্যান্ডের মতো অন্যদের কাছে প্রসারিত করবে, যার সঙ্গে দেশটি বর্তমানে একটি এফটিএ নিয়ে আলোচনা করছে। বাণিজ্য প্রসারিত করার জন্য, ভারত ও ভুটান গেলফু ও সামতসেকে ঘিরে নতুন সমন্বিত চেক পোস্ট তৈরি করবে। এই অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং তার দক্ষিণ দিকে সংযোগকে শক্তিশালী করার জন্য ভুটান সরকার সামতসে, গেলফু, ফুয়েনশোলিং, পেমাগাতশেল ও সামদ্রুপ জংখারে শুষ্ক বন্দর তৈরি করবে, এবং সামতসেকে একটি এসইজেড-এ উন্নীত করার চেষ্টা করবে। এই উদ্যোগগুলি ভুটানকে তার অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
রেল ও সড়ক যোগাযোগ প্রচেষ্টা এবং ট্রানজিট চুক্তি সহ এই এসইজেড ও এসএআর উদ্যোগগুলি ভুটানের উৎপাদন ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে, এবং দেশটিকে তার অভ্যন্তরীণ উপভোগ ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত রপ্তানি ও আমদানি করতে সক্ষম করবে।
ভুটান, একটি ছোট স্থলবেষ্টিত দেশ, কোভিড-১৯ অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে তার অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও তীব্রতর হতে দেখেছে। বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য দেশটি তার দক্ষিণের প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারত সকলেই একাধিক এমন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা তাদের মধ্যে বাণিজ্য ও সংযোগ সহজতর করে। রেল ও সড়ক প্রকল্প, ট্রানজিট চুক্তি, পিটিএ, এসইজেড ও এসএআর প্রতিষ্ঠার মতো সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলি মূলত ভারত ও বাংলাদেশকে সংযোগ ও অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের জন্য ভুটানের দৃষ্টিভঙ্গিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।
আদিত্য গৌদারা শিবমূর্তি অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.