Published on Aug 11, 2023 Updated 0 Hours ago

নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার সঙ্গে আরও পেশাদারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সহায়ক বলে প্রমাণিত হবে

ডিকার্বনাইজেশন: প্রাতিষ্ঠানিকভাবে টিকে আছে

প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী (১৯৯৬ ও ১৯৯৮–২০০৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী) প্রযুক্তির বিষয়গুলি গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। জটিল, প্রযুক্তিগতভাবে সঠিক প্রস্তাবগুলি ধৈর্য সহকারে শোনার পরে তিনি এই ধরনের উচ্চস্তরের আলোচনাকে বাস্তবায়িত করার শ্রেষ্ঠ উপায় কী হবে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে তা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ করতেন। তবে শ্রেষ্ঠ বিকল্পগুলিরও যদি নেতিবাচক ও ইতিবাচক উভয় রকমের গুরুতর সামাজিক–রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পরিণতি থাকে, তাহলে সেগুলি খুব কমই বাস্তবায়নযোগ্য হয়। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থার বেসরকারিকরণের ঘটনাটি বিবেচনা করুন, যেখানে বিজয়ীদের তুলনায় বিজিতরা প্রস্তাবটি বাতিল করতে কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন।

ডিকার্বনাইজেশন, যা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের প্রবণতাকে চালনা করছে, এর ব্যতিক্রম নয়। ডিকার্বনাইজেশনের ফলে যাদের লাভ হবে তাদের থেকেও যাদের ক্ষতি হবে তাদের সহজে চিহ্নিত করা যায়। অটোমোবাইল সেক্টরে বড় আকারের ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ইন্টারনাল কমবাশন ইঞ্জিনকে অপ্রয়োজনীয় করে দেওয়ার ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। আবার একই সময়ের মধ্যে কয়লার ব্যবহার শীর্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়লা খনন ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে কর্মসংস্থান কমতে থাকবে ২০৬০–এর পরে, যখন ভারত নেট জিরোতে পৌঁছবে। এতে ভারতীয় রেলওয়ের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। রেলের বাহিত পণ্যের অর্ধেকই হল কয়লা, এবং এর উচ্চ হারের শুল্ক দিয়ে যাত্রী ভাড়ায় ভর্তুকি দেওয়া হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক গতিশীলতা ১০০ শতাংশে (ফুয়েল সেল ব্যবহার করতে পারে এমন ভারী যান ব্যতীত) পৌঁছে গেলে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে বেশিরভাগ শহুরে রান্নাঘরের বিদ্যুদয়নের সঙ্গেসঙ্গে তেল ও গ্যাস একইভাবে প্রভাবিত হবে।

অটোমোবাইল সেক্টরে বড় আকারের ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ইন্টারনাল কমবাশন ইঞ্জিনকে অপ্রয়োজনীয় করে দেওয়ার ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।

এই তিনটি ক্ষেত্র প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রের মোট ৩০ মিলিয়ন কর্মসংস্থানের (২০১৭—১৮)  প্রায় ১৫ শতাংশ (লেখকের অনুমান), আর প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রের কর্মসংস্থান দেশের মোট কর্মসংস্থানের ১০ শতাংশেরও কম। আদর্শ ও ন্যায়সঙ্গত ডিকার্বনাইজেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া, এবং একটি ক্ষমতাপ্রাপ্ত, বিশেষায়িত রাষ্ট্রীয় সত্তার কাছে দায়িত্ব আউটসোর্স করা।

নির্বাচনের কারণে নীতি পক্ষাঘাত এড়াতে দুটি বিকল্প

ভারত নির্বাচন চলতেই থাকে। পাঁচ বছর মেয়াদি ত্রিশটি রাজ্য সরকারের এবং প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হয় না। প্রতি বছরই নির্বাচন হয়। পরাজয়ের ভয় সরকারগুলিকে ‘‌সংস্কার উদ্বেগের’‌ দিকে চালিত করে। যেমন, গভীর বিদ্যুৎ সংস্কারের প্রথম দিককার সমর্থক অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু ২০০৪ সালে নির্বাচনী বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন।

ফলস্বরূপ, সংস্কার পক্ষাঘাত প্রতিরোধ করার জন্য দুটি বিকল্প সময়–পরীক্ষিত। প্রথমত, অসুবিধাজনক সিদ্ধান্তগুলিকে সরকারের থেকে উচ্চতর আদালতের কাছে নিয়ে যাওয়া। গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দৃঢ় অথচ ন্যায্য বিচারিক আইন দ্বারা ট্রেড ইউনিয়নগুলির শিল্প–পঙ্গুত্বকারী ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, এবং আরও সাম্প্রতিক একটি পথ হল অ–জনপ্রিয় সিদ্ধান্তগুলি বিশেষ নিয়ামকদের কাছে আউটসোর্স করা। আমরা কার্বনের জন্য দ্বিতীয় পথটি বিশ্লেষণ করতে পারি।

কেস স্টাডি: একটি নতুন নিয়ামক স্থাপন

কার্যকরী দায়িত্বকে বিভক্ত করে বিদ্যমান কাঠামোতে যদি একটি নতুন নিয়ামক ব্যবস্থা তৈরি করা হয়, তা হলে তা নিয়ামক স্থিতাবস্থাকে রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক সমস্যাগুলিকে পাশ কাটিয়ে কাজ করতে সাহায্য করবে৷ ১৯৯৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার একটি নতুন, স্বায়ত্তশাসিত নিয়ামক সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন আইন প্রণয়ন করে এটিকে ট্যারিফ স্থির করা ও গ্রিড নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত এমন কিছু ক্ষমতা অর্পণ করে যা আগে সরকারের হাতে ছিল। নিয়োগবিধিগুলি সংশোধন করা হয়েছিল সরকারের বাইরে থেকে পেশাদারদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, এবং স্বচ্ছ ও আধা–বিচারিক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য, যাতে সরকারকে দূরে রেখে সংস্থার পেশাদার কার্যকারিতাকে সক্রিয় করা যায়। পরীক্ষাটি ভাল কাজ করেছে। বাণিজ্যিকভাবে আকর্ষণীয় বিশাল মাপের সরবরাহের শুল্ক নতুন ক্ষমতাকে উৎসাহিত করেছিল, এবং তার ফলে এখন বেসরকারি ক্ষেত্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনে একটি প্রভাবশালী অংশভাগ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাহ্যিক সংযোগ–সহ একটি শক্তিশালী প্যান–ইন্ডিয়া ট্রান্সমিশন গ্রিড নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহকে সহজ করে, এবং বিদ্যুতের বড় মাপের সরবরাহের জন্য বাজারকে আরও গভীর করতে উৎসাহিত করে।

আরও কঠিন বিকল্প ছিল সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলির প্রসার ও আধুনিকীকরণ। এই অথরিটি একটি বিধিবদ্ধ, বিশেষায়িত সত্তা, এবং ১৯৪৮ সাল থেকে পাঁচটি আঞ্চলিক অফিস ও একটি বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী ক্যাডার–সহ এটি কাজ করে চলেছে। এর দায়িত্ব হল বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিদ্যুৎ সংযোগের মান নিশ্চিত করা, ক্ষেত্রটির উন্নয়নের তদারকি, এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের বৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ থেকে এই সত্তাটিকে সরিয়ে আনা কষ্টকর, সময়সাপেক্ষ, এবং তা করতে গেলে সাধারণভাবে শক্তিক্ষেত্রের সংস্কারের বিরুদ্ধে আপত্তি দৃঢ় হবে। স্বায়ত্তশাসিত সত্তাগুলিতে আংশিকভাবে চুক্তিতে বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ করা হয় বলে সরকারি কর্মচারীরা সেখানে নিজেদের দিশাহীন বলে মনে করেন।

ডিকার্বনাইজেশন সংক্রান্ত দায়িত্ব  
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের এই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে সুষম ডিকার্বনাইজেশনের প্রসারের জন্য একটি ব্যাপক নিয়ামক ব্যবস্থা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে, কার্বনাইজেশন মোকাবিলার দায়িত্ব সাতটি পৃথক মন্ত্রক এবং ৩০টিরও বেশি রাজ্য সরকারের মধ্যে বিভক্ত।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক (এমওইএফসিসি) হল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য নোডাল মন্ত্রক। এটি ২০০৪ সাল থেকে নোটিফাই করেছে ও পরিচালনা করেছে ন্যাশনাল ক্লিন ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে, যারা কিয়োটো প্রোটোকলের অধীনে গ্রিনহাউস গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমন কমানোর প্রকল্পগুলি অনুমোদন করে৷ ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি জিএইচজি নির্গমন নিয়ন্ত্রণের বাধ্যবাধকতাকে সমস্ত দেশে  প্রসারিত করে, তবে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি (ন্যাশনালি ডিটারমিনড কমিটমেন্টস বা এনডিসি’‌স)–র নমনীয়তার সঙ্গে।

সেই অনুযায়ী, এমওইএফসিসি ২০২২ সালের মে মাসে ন্যাশনাল ডেজিগনেটেড অথরিটি ফর ইমপ্লিমেনটেশন অফ প্যারিস এগ্রিমেন্ট (এনডিএআইপিএ) গঠন করেছে, এবং এতে এমওইএফসিসি সচিবকে চেয়ারম্যান করে বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিত্ব (স্তর অনির্ধারিত) রাখা হয়েছে। এই সত্তা প্রোটোকলের ধারা ৬–এর অধীনে কার্বন ক্রেডিট–এর স্বেচ্ছানির্ভর আন্তর্জাতিক ব্যবসা সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন করে, এবং অনুমোদিত প্রকল্পগুলির অগ্রগতি ও মজুদের তালিকার উপর নজর রাখে। ২০২২ সালের আগস্টে এটি প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য একটি শীর্ষ কমিটি গঠন করে (এ সিআইপিএ), যেখানে সভাপতির দায়িত্বে এমওইএফসিসি সচিবকে রেখে বিভিন্ন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়।

তখনও পর্যন্ত প্রাইম মিনিস্টার’‌স কাউন্সিল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (পিএমসিসিসি) জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে সব পর্যায়ে সরকারি প্রতিক্রিয়া বিকশিত করার শীর্ষ সংস্থা ছিল। এটি প্রধানমন্ত্রী ও বেসরকারি ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ২০০৮ সালে তৈরি করা হলেও এর শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০১৫ সালের অগস্টে। তার পরে এটি অকেজো হয়ে পড়ে বলে মনে হয়৷

এসিআইপিএ: দায়িত্বের তুলনায় কম ক্ষমতাপ্রাপ্ত

এসিআইপিএ–এর ১৬টি কাজ রয়েছে, যার মধ্যে আছে উচ্চস্তরের বিষয়গুলি, যেমন মন্ত্রকের জলবায়ু–সম্পর্কিত দায়িত্বগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা, সরকারি নীতি ও কর্মসূচি তৈরি করা, ভারতে কার্বন বাজার নিয়ন্ত্রণকারী একটি জাতীয় কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করা, কার্বনের মূল্য নির্ধারণ ও সংশ্লিষ্ট বাজার ব্যবস্থা সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা, কমিশনিং ও স্বাধীন গবেষণা ও বিশ্লেষণাত্মক অধ্যয়নের সুপারিশ করা, এবং  পিএমসিসিসি–র কাছ থেকে নির্দেশ নেওয়া ও ইনপুট প্রদান করা। প্রতিনিধিত্বের সংজ্ঞায়িত স্তরটি কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের কোনও কৌশলের অন্তর্নিহিত ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন‌ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পূর্ণ ক্ষমতা প্রতিফলিত করে না।

এর মানে এই নয় যে বিদ্যমান আন্তঃমন্ত্রক ব্যবস্থা অকার্যকর; মোটেই তা নয়। বিবেচনা করুন যে ১৫ই ডিসেম্বর ২০২২ –এ বিদ্যুৎ মন্ত্রক একটি প্রেস ব্রিফ জারি করেছিল যে, ‘‌‘‌আমাদের এনডিসিগুলি পূরণ করতে দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্বন ক্রেডিট ব্যবহার করা হবে৷ নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, যেখানে উচ্চপ্রযুক্তির ব্যয়বহুল সম্পদ দ্বারা কার্বন ক্রেডিট তৈরি করা হয়, সেগুলিকে ন্যাশনাল ডেজিগনেটেড অথরিটি বিদেশে বাজারজাত করার অনুমতি দিতে পারে।’‌’‌ প্রযুক্তির মধ্যে এই পার্থক্য টানার ফলে বর্তমানে ভারতে ব্যবহৃত হয় না এমন উচ্চ–সম্পদ, মূলধন–নিবিড় প্রযুক্তিতে নতুন বিনিয়োগ উৎসাহিত হয়েছে।

কয়েক মাস পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ –এ এনডিএআইপিএ এই কৌশলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, এবং কেস–বাই–কেস ভিত্তিতে কার্বন ক্রেডিটের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য যোগ্য ১৩টি বিভাগকে বিজ্ঞাপিত করেছে:‌ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি (আরই)‌ ব্যবস্থায় স্টোরেজ, সৌরতাপ শক্তি, তট–দূরবর্তী (‌অফ–শোর)‌ বায়ু শক্তি, সবুজ হাইড্রোজেন, সংকুচিত বায়োগ্যাস, জ্বালানি কোষ, টেকসই বিমানচালনা জ্বালানি, ‘হার্ড–টু–অ্যাবেট’‌ শিল্পে প্রশমন, সামুদ্রিক শক্তি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির এইচভিডিসি ট্রান্সমিশন, সবুজ অ্যামোনিয়া, কার্বন ক্যাপচার, এবং স্টোরেজ।

২৬ ডিসেম্বর ২০২২–এ এনার্জি কনজারভেশন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০২২–এর মাধ্যমে কার্বন ক্রেডিট কেনাবেচার জন্য আইনি ভিত্তি প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কার্বন প্রক্সির জন্য একটি প্রাণবন্ত বাজার — বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থগুলির উপর আরোপিত নবায়নযোগ্য শক্তি ক্রয়ের বাধ্যবাধকতার বাণিজ্য — এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কার্যকর ছিল। এই নিয়ামক কাঠামোটি প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কাজ করে। কিন্তু দুষ্প্রাপ্য সম্পদ এবং বিভক্ত দায়িত্ব উচ্চ দক্ষতাকে বাধা দেয়।

নিয়ামক ব্যবস্থার সরলীকরণ

বর্তমানে, প্রারম্ভিক দায়িত্ব, অর্থাৎ প্রবিধান প্রণয়ন ও প্রয়োগ ক্ষমতা, কেন্দ্রীয় সরকারের সাতটিরও বেশি মন্ত্রক ও ৩০টি রাজ্য সরকারের মধ্যে ব্যাপকভাবে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় আছে। বাহ্যিকতার সমস্যাটি (যে খরচ দূষণকারী বহন করে না) কিন্তু কার্বন প্রশমিত করার জন্য কেন্দ্রীভূত অথচ সম্মতিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন তুলে ধরে। এক দশক ধরে শীর্ষে নেতৃত্বের নিশ্চিত ধারাবাহিকতা–সহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থার গভীরতর পেশাদারিকরণ এক্ষেত্রে সাহায্য করবে। আগামী চার দশক ধরে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করব। তবে প্রাথমিক দশকে ভিত্তিস্থাপনের কাজের গুণমান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা হলে স্থবির প্রযুক্তিতে ক্রমাগত বিনিয়োগ এড়ানো যাবে। এ ক্ষেত্রে দুটি পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রথমত, পিএমসিসিসি–কে কার্বন প্রশমনের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, সংযুক্ত, অনন্য সচিবালয়ে পরিণত করার লক্ষ্যে উজ্জীবিত করতে হবে এবং এতে নতুন উপকরণ যুক্ত করতে হবে, যাতে তা আনুষ্ঠানিক ও দ্বিপাক্ষিকভাবে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে, শিল্পের সঙ্গে এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকে৷ সহযোগিতামূলক নীতি আয়োগ মডেল এবং উদ্ভাবনী জিএসটি কাউন্সিল মডেল সমবায় ফেডারেলিজমের একটি আদর্শ কাঠামো উপস্থাপন করে।

দ্বিতীয়ত, একটি বৃহৎ শক্তিমন্ত্রক তৈরি করে তার অধীনে নিয়ে আসতে হবে সরবরাহের মূল নির্দেশকদের, অর্থাৎ কার্বন প্রশমন সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রকগুলিকে:‌ প্রচলিত বিদ্যুৎ (পারমাণবিক শক্তি ছাড়া), অপ্রচলিত ও নবায়নযোগ্য শক্তি, কয়লা খনি, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস।

মোট চূড়ান্ত শক্তির ব্যবহারে বিদ্যুতের অংশ ২০৬০ সালের মধ্যে এখনকার তুলনায় প্রায় এক–তৃতীয়াংশ থেকে তিন–চতুর্থাংশ বৃদ্ধি পাবে। সংশ্লিষ্ট গভীর শিল্প পুনর্গঠনের কাজ চালিত করার জন্য ব্যবসাকে সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন, আর সেইসঙ্গে প্রয়োজন চাকরি হারানোর নেতিবাচক ফলাফলগুলিকে কমিয়ে আনা এবং নতুন উৎপাদনশীল কাজ তৈরি করা। বৃদ্ধি অক্ষুণ্ণ রেখেও একটি কম–কার্বন অর্থনীতিতে ন্যায়সঙ্গত, সুশৃঙ্খল ও দক্ষ রূপান্তর সম্ভব। তবে তার জন্য নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্তরের ক্রমাগত যত্নের প্রয়োজন।


সঞ্জীব এস অহলুওয়ালিয়া অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.