Author : Gopalika Arora

Published on Jun 29, 2023 Updated 0 Hours ago

জাতীয় ব্যয়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত উদ্বেগগুলিকে আর্থিকভাবে সমন্বিত করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিপুল ব্যবধান মেটানো জরুরি

জলবায়ু বাজেট: জলবায়ু কর্মসূচির জন্য ভারতের আর্থিক নীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানো

জলবায়ু  পরিবর্তনের  ফলে  সৃষ্ট  ভৌত  ও  রূপান্তরকালীন  ঝুঁকি  এখন  ক্রমবর্ধমানভাবে  স্বীকৃত  হচ্ছে,  কারণ  বিভিন্ন  জৈব  ও  ভৌত  ঝুঁকি  ইতিমধ্যেই  সমাজ  ও  অর্থনীতিতে  প্রভাব  ফেলছে।  ভারতের  ২০৩০  সালের  মধ্যে  তার  জাতীয়ভাবে  নির্ধারিত  অবদান  (এনডিসি)  পূরণের  জন্য  ২.৫  ট্রিলিয়ন  মার্কিন  ডলার  এবং  ২০৭০  সালের  মধ্যে  তার  নেট–শূন্য  লক্ষ্য  পূরণের  জন্য  ১০.১  ট্রিলিয়ন  মার্কিন  ডলার  প্রয়োজন৷  এখন  সব  মিলিয়ে  জলবায়ু  অর্থের  যে  সংস্থান  আছে  জলবায়ু  লক্ষ্যমাত্রা  পূরণের  জন্য  তা  অপ্রতুল,  এবং  প্রয়োজন  সরকারি,  বেসরকারি  ও  আন্তর্জাতিক  অর্থব্যবস্থা  ব্যবহার  করে  তা  অনেকটা  বাড়ানো।

২০২২–২৩  অর্থবছরের  জন্য  প্রকাশিত  কেন্দ্রীয়  বাজেটকে  একটি  ‘‌জলবায়ু  বাজেট’‌  হিসাবে  চিহ্নিত  করা  হয়েছে,  যা  জলবায়ু–সহনশীল  উন্নয়ন  বাড়ানোর  লক্ষ্যে  পরিকল্পিত,  এবং  বৈশ্বিক  ও  জাতীয়  জলবায়ু  লক্ষ্যমাত্রা  অর্জনের  জন্য  তা  একটি  পথ  তৈরি  করেছে।  এটি  শক্তির  রূপান্তর  এবং  স্থিতিশীল  উন্নয়নের  গুরুত্বও  তুলে  ধরেছে।  এই  অনুপ্রেরণামূলক  ফোকাস  সত্ত্বেও  জাতীয়  ব্যয়ের  মধ্যে  জলবায়ু  পরিবর্তন  সংক্রান্ত  উদ্বেগকে  আর্থিকভাবে  সমন্বিত  করার  ক্ষেত্রে  একটি  উল্লেখযোগ্য  ফাঁক  রয়েছে।  সরকারি  ব্যয়  অর্থনৈতিক  কার্যকলাপের  একটি  উল্লেখযোগ্য  অনুপাত  গঠন  করে,  এবং  এইভাবে  সরকারি  ব্যয়ের  সিদ্ধান্তগুলি  একটি  দেশের  জন্য  সামাজিক,  পরিবেশগত  ও  অর্থনৈতিক  প্রভাব  ফেলে।

সরকারি  ব্যয়  অর্থনৈতিক  কার্যকলাপের  একটি  উল্লেখযোগ্য  অনুপাত  গঠন  করে,  এবং  এইভাবে  সরকারি  ব্যয়ের  সিদ্ধান্তগুলি  একটি  দেশের  জন্য  সামাজিক,  পরিবেশগত  ও  অর্থনৈতিক  প্রভাব  ফেলে।

অভ্যন্তরীণ  সরকারি  অর্থায়নের  পরিকল্পনা  এবং  প্রশাসনিক  ক্ষেত্রে,  বিশেষ  করে  রাজস্ব  ব্যবস্থাপনার  ক্ষেত্রে,  জলবায়ু  পরিবর্তনের  বিবেচনাগুলিকে  অন্তর্ভুক্ত  করার  তাৎপর্যকে  ভারত  সব  সময়েই  স্বীকার  করে  আসছে।  ভারতে  জলবায়ু  অর্থায়ন  সরকারি  ও  বেসরকারি  উভয়  উৎস  থেকে  এলেও  সরকারি  উৎসগুলিই  বেশিরভাগ  ব্যয়  করে  থাকে।  অভিযোজন  তহবিলের  প্রধান  উৎস  দেশীয়ভাবে  আসে  (৯৪  শতাংশ),  এবং  কেন্দ্রীয়  ও  রাজ্য  বাজেট  দ্বারাই  সম্পূর্ণরূপে  অর্থায়ন  করা  হয়।  সরকারি  ব্যয়  জলবায়ু  সক্রিয়তার  জন্য  বেসরকারি  অর্থ  সংগ্রহের  ক্ষেত্রেও  একটি  অনুঘটক  হিসাবে  কাজ  করে।  যেহেতু  কেন্দ্রীয়  বাজেট  এমন  একটি  অপরিহার্য  নীতিগত  দলিল  যা  সরকারের  জবাবদিহিতা,  প্রতিশ্রুতি  ও  অগ্রাধিকার  প্রতিফলিত  করে,  তাই  বাজেটকে  জলবায়ু–সংবেদনশীল  করাই  এই  সময়ের  প্রয়োজন।

জলবায়ু  বাজেট  কী?
জলবায়ু  বাজেট  সরকারের  বাজেট  কাঠামোর  পরিধির  মধ্যে  জলবায়ু  পরিবর্তনের  ক্ষেত্রে  প্রাসঙ্গিক  ব্যয়গুলির  সনাক্তকরণ,  শ্রেণিবিভাজন  ও  বিভাগ  নির্ধারণ  সম্ভব  করে।  এই  প্রক্রিয়াটি  সুনির্দিষ্ট  অনুমান,  পরিশ্রমী  পর্যবেক্ষণ  এবং  এই  ধরনের  ব্যয়ের  পদ্ধতিগত  ট্র্যাকিংয়ের  সুযোগ  দেয়।

জলবায়ু  বাজেটের  ক্রমবর্ধমান  প্রাধান্য  ‘‌প্যারিস  কোলাবোরেটিভ  অন  গ্রিন  বাজেটিং’‌  গঠনের  সময়  থেকে  খুঁজে  পাওয়া  যেতে  পারে,  যা  ২০১৭  সালে  প্যারিসে  ওয়ান  প্ল্যানেট  সামিটে  ঘোষিত  একটি  দেশব্যাপী  উদ্যোগ  ছিল।  এর  লক্ষ্য  ছিল  বাজেট  কাঠামোর  মধ্যে  সবুজ    বৃদ্ধিকে  মূলধারায়  নিয়ে  আসা।  পরবর্তী  কালে,  ২০১৯  সালে,  ‘‌জলবায়ু  সক্রিয়তার  জন্য  অর্থমন্ত্রীদের  জোট  ’‌  গঠিত  হয়,  যা  জলবায়ু  পরিবর্তনের  কারণে  সৃষ্ট  চ্যালেঞ্জ  মোকাবিলায়  বিশ্বের  অর্থমন্ত্রীদের  যৌথ  পদক্ষেপের  গুরুত্ব  তুলে  ধরেছিল।  তদুপরি,  ৭০টিরও  বেশি  দেশের  অর্থমন্ত্রীরাও  ‘‌হেলসিঙ্কি  নীতিমালা’‌–তে  স্বাক্ষরকারী  ছিলেন,  যেগুলি  রাজস্ব  নীতি  ও  সরকারি  অর্থায়নের  মাধ্যমে  জলবায়ু  সক্রিয়তাকে  উৎসাহিত  করার  জন্য  পরিকল্পনা  করা  হয়েছিল।

কেন  আমাদের  জলবায়ু  বাজেট  প্রয়োজন?
জলবায়ু  অর্থায়নে  জবাবদিহিতা  ও  স্বচ্ছতা  এখন  বিশ্বব্যাপী  বাধ্যতামূলক  ও  জাতীয়  অগ্রাধিকার।  এই  বিষয়টি  নিশ্চিত  করা  এখন  অপরিহার্য  যে  পাবলিক  ফাইন্যান্স  ম্যানেজমেন্ট  সিস্টেমগুলি  যেন  জলবায়ু  পরিবর্তনের  উদ্বেগগুলিকে  একীভূত  করে  এবং  জলবায়ু  অর্থের  জন্য  সরকারি  জবাবদিহিতা  নিশ্চিত  করে৷  এই  জলবায়ু  সক্রিয়তার  দশকে  আমরা  এখন  একটি  এনহ্যান্সড  ট্রান্সপারেন্সি  ফ্রেমওয়ার্ক  (ইটিএফ)    বা  বর্ধিত  স্বচ্ছতা  কাঠামোর  দিকে  এগোচ্ছি,  যা  ভারতের  মতো  উন্নয়নশীল  দেশগুলিকে  তার  জাতীয়  জলবায়ু  লক্ষ্য  ও  অভীষ্টগুলির  প্রতি  আর্থিক  অবদান  সম্পর্কিত  তথ্য  প্রদান  করতে  উৎসাহিত  করে  ইউএনএফসিসিসি–র  কাছে  প্রেরিত  দ্বিবার্ষিক  স্বচ্ছতা  প্রতিবেদন  (বিটিআর)–এর  মাধ্যমে।  জলবায়ু  বাজেট  হবে  দেশীয়  জলবায়ু  অর্থায়নের  স্বচ্ছতা  ও  জবাবদিহিতা  উন্নত  করার  জন্য  দেশের  বৃহত্তর  প্রচেষ্টার  দিকে  একটি  সঠিক  পদক্ষেপ।  এটি  আরও  কার্যকরভাবে  ও  দক্ষতার  সঙ্গে  প্রতিবেদনের  প্রয়োজন  পূরণে  সহায়তা  করবে।  তাছাড়া,  বাজেটের  জলবায়ু  ট্যাগিং  জলবায়ু  বিনিয়োগ  সম্পর্কিত  ডেটা  সরবরাহ  করবে,  যা  সাধারণ  বাজেটের  শ্রেণিবিন্যাস  অনুশীলনের  মধ্যে  পাওয়া  যায়  না।  এই  প্রাসঙ্গিক  তথ্যগুলি  উপযুক্ত  প্রকল্পগুলির  চিহ্নিতকরণ  এবং  ব্যয়  ও  প্রতিবেদনের  ট্র‌্যাকিংয়ের    মাধ্যমে  সবুজ  বন্ডের  মতো  জলবায়ু  সংক্রান্ত  আর্থিক  উপকরণগুলির  কাঠামোকে  আরও  শক্তিশালী  করার  ক্ষেত্রে  অবদান  রাখতে  পারে।

জলবায়ু  বাজেট  সরকারের  বাজেট  কাঠামোর  পরিধির  মধ্যে  জলবায়ু  পরিবর্তনের  ক্ষেত্রে  প্রাসঙ্গিক  ব্যয়গুলির  সনাক্তকরণ,  শ্রেণীবিভাজন  ও  বিভাগ  নির্ধারণ  সম্ভবপর  করে।

জলবায়ু  বাজেট  বিদ্যমান  জলবায়ু  ব্যয়ের  প্রমাণ  প্রদান  করে  জলবায়ু  অর্থের  ব্যবধান  অনুমান  করতে  সহায়তা  করতে  পারে।  যেমন,  বর্তমান  সরকারি  ব্যয়  এবং  জলবায়ু  প্রশমন  ব্যবস্থার  জন্য  প্রয়োজনীয়  আনুমানিক  ব্যয়ের  মধ্যে  ব্যবধান  বিশ্লেষণ  করতে  ইন্দোনেশিয়ার  সরকার  জলবায়ু  বাজেটকে  একটি  অপরিহার্য  হাতিয়ার  হিসাবে  কাজে  লাগিয়েছিল।  এটি  তাদের  জলবায়ু  অর্থায়নকে  গতিশীল  করার  জন্য  উদ্ভাবনী  আর্থিক  মডেলের  প্রসারের  পক্ষে  যুক্তি  জোরদার  করতে  আরও  বেশি  করে  সহায়তা  করেছিল।

যেহেতু  চরম  আবহাওয়ার  ঘটনাগুলির  ক্রমবর্ধমান  পৌনঃপুনিকতা  প্রান্তিক  ও  দুর্বল  জনগোষ্ঠীর  উপর  অসমভাবে  চাপ  সৃষ্টি  করছে,  তাই  এই  ধাক্কাগুলির  মোকাবিলা  করার  জন্য  সরকারকে  আর্থিকভাবে  সুস্থিত  হতে  হবে।  উপ–রাষ্ট্রীয়  বা  সাব–ন্যাশনাল  পর্যায়ে  ক্ষেত্রব্যাপী  নির্গমন  রোধ  করার  জন্য  প্রয়োজনীয়  বিনিয়োগের  মাত্রা  পরিমাপ  করা  জলবায়ু  সক্রিয়তাকে  অগ্রাধিকার  দিতে  সাহায্য  করতে  পারে,  এবং  শক্তিশালী  নীতি–নির্ধারণের  দিকে  চালিত  করতে  পারে।  উদাহরণস্বরূপ,  জলবায়ু  বাজেট  থেকে  অর্জিত  তথ্য  জলবায়ু  পরিবর্তনের  রাষ্ট্রীয়  কর্মপরিকল্পনায়  (এসএপিসিসি)  ব্যবহার  করা  যেতে  পারে,  যা  জলবায়ু  সম্পর্কিত  আর্থিক  প্রবাহকে  দক্ষ  ও  স্বচ্ছভাবে  পরিচালনা  করার  জন্য  আরও  উপায়  তৈরি  করবে।

নীতির  ফাঁকগুলি  কী  কী?
ভারতে  বর্তমানে  জলবায়ু  পরিবর্তন  হস্তক্ষেপের  জন্য  বাজেট  বরাদ্দ  করার  নির্দিষ্ট  নির্দেশাবলি,  নির্দেশিকা  বা  কাঠামো  নেই।  একটি  সাধারণ  কাঠামোর  অভাব  কিন্তু  জলবায়ু  কর্মের  প্রতিবেদনে  বাধা  দেয়,  এবং  জলবায়ু  পরিবর্তনজনিত  হস্তক্ষেপের  সঙ্গে  সম্পর্কিত  জনসাধারণের  ব্যয়  নিরীক্ষণ  ও  ট্র্যাকিং  কঠিন  করে  তোলে।  জলবায়ু  পরিবর্তন  সংক্রান্ত  জাতীয়  কর্মপরিকল্পনা  এবং  জলবায়ু  পরিবর্তন  সংক্রান্ত  রাষ্ট্রীয়  কর্মপরিকল্পনার  মধ্যে  যথাক্রমে  জাতীয়  ও  রাজ্য  স্তরে  জলবায়ু  অভিযোজন  ও  প্রশমনের    জন্য  কৌশল  ও  হস্তক্ষেপের  একটি  তালিকা  অন্তর্ভুক্ত  থাকে।  যাই  হোক,  রাজ্যের  ডিটেলড  ডিমান্ড  ফর  গ্রান্টস  (ডিডিএফজি)‌  নথিতে  এই  এসএপিসিসি  হস্তক্ষেপগুলির  অর্থায়নের  জন্য  আলাদা  কোনও  বাজেট  বরাদ্দ  দেওয়া  নেই।  উপরন্তু,  কিছু  উন্নয়ন  প্রকল্প  আছে  যেগুলি  অন্য  লক্ষ্য  পূরণের  পাশাপাশি  উল্লেখযোগ্যভাবে  জলবায়ু  অভিযোজন  ও  প্রশমনের  কাজও  করে,  কিন্তু  জলবায়ু  পরিবর্তনের  উদ্বেগ  প্রশমনের  সুস্পষ্ট  ব্যয়  হিসাবে  সেগুলি  কম  প্রতিবেদিত  হয়।  প্রধানমন্ত্রী  কৃষি  সিঞ্চায়ী  যোজনার  (পিএমকেএসওয়াই)  মতো  এমন  অনেক  উন্নয়ন  কর্মসূচি  রয়েছে  যেগুলির  লক্ষ্য  জল  সংরক্ষণ,  এবং  সেগুলির  জলবায়ু  পরিবর্তনের  তাৎপর্য  রয়েছে;‌  তবে  সেগুলিকে  জলবায়ু  অভিযোজন  বা  প্রশমনের  জন্য  ব্যয়  হিসাবে  শ্রেণিবদ্ধ  করা  হয়  না।  তাই  উন্নয়ন  কর্মসূচিতে  ব্যয়  করা  তহবিলের  জলবায়ু  প্রাসঙ্গিকতা  মূল্যায়ন  করতে  রাজ্য  সরকারগুলিকে  সক্ষম  করার  জরুরি  প্রয়োজন  রয়েছে৷

বর্তমান  সরকারি  ব্যয়  এবং  জলবায়ু  প্রশমন  ব্যবস্থার  জন্য  প্রয়োজনীয়  আনুমানিক  ব্যয়ের  মধ্যে  ব্যবধান  বিশ্লেষণ  করতে  ইন্দোনেশিয়ার  সরকার  জলবায়ু  বাজেটকে  একটি  অপরিহার্য  হাতিয়ার  হিসাবে  কাজে  লাগিয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী  জাতীয়  ও  উপ–রাষ্ট্রীয়  পর্যায়ে  সর্বোত্তম  অনুশীলন
জলবায়ু  পরিবর্তনের  অভিযোজন  ও  প্রশমন  ব্যবস্থার  ক্রমবর্ধমান  চাহিদার  পরিপ্রেক্ষিতে  ক্রমশ  বেশি  সংখ্যক  দেশ  তাদের  বিদ্যমান  বাজেট  ব্যবস্থার  মধ্যে  জলবায়ু  বাজেটকে  ব্যবহার  করছে  জলবায়ু  সম্পর্কিত  ব্যয়গুলিকে  পদ্ধতিগতভাবে  সমন্বিত  করার  একটি  উপকরণগত  কৌশল  হিসাবে।  বাংলাদেশ,  ঘানা,  ইন্দোনেশিয়া,  কেনিয়া,  নেপাল,  পাকিস্তান  ও  ফিলিপিনসের  মতো  দেশগুলি  তাদের  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থায়  জলবায়ু  পরিবর্তনকে  মূলধারায়  আনার  ক্ষেত্রে  উদাহরণ  স্থাপন  করেছে।  বাংলাদেশ  সরকার  ২০১৮  সালে  তার  প্রথম  জলবায়ু  নাগরিক  বাজেট  প্রকাশ  করেছে,  এবং  সংসদে  তার  বার্ষিক  জলবায়ু  বাজেট  প্রতিবেদন  পেশ  করেছে।  পাকিস্তানের  অর্থনৈতিক  সমীক্ষায়  জলবায়ু  বাজেট  এবং  অভিযোজন  ও  প্রশমনের  জন্য  ব্যয়  সংক্রান্ত  তথ্য  দেওয়া  হয়েছে,  এবং  প্রাসঙ্গিক  ডেটার  সারাংশ  বার্ষিক  বাজেট  নথিতেও  স্থান  পেয়েছে।

জাতীয়  পর্যায়ে  সরকারি  ব্যয়ের  সামগ্রিক  প্রাতিষ্ঠানিক  পর্যালোচনার  অভাব  থাকা  সত্ত্বেও  বেশ  কয়েকটি  ভারতীয়  রাজ্য  তাদের  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থায়  জলবায়ু  বাজেট  অন্তর্ভুক্ত  করার  উদ্যোগ  নিয়েছে।  মহারাষ্ট্র,  অসম,  ছত্তিশগড়,  বিহার,  ওড়িশা  ও  কেরল  তাদের  উন্নয়ন  প্রকল্পগুলির  জলবায়ু  প্রাসঙ্গিকতা  ট্র্যাক  করার  জন্য  একটি  বাজেট  কোডিং  অনুশীলন  পরিচালনা  করেছে।  ওড়িশাই  প্রকৃতপক্ষে  প্রথম  ভারতীয়  রাজ্য  হয়ে  উঠেছে  যেটি  প্রকাশ্যে  প্রতিটি  ক্ষেত্রগত  বাজেটের  চাহিদা  প্রকাশ  করেছে  এবং  রাজ্য  বাজেটে  জলবায়ু  সংবেদনশীলতা  তুলে  ধরার  গুরুত্ব  স্বীকার  করেছে।  রাজ্যটি  তার  উন্নয়নমূলক  কর্মসূচি  ও  প্রকল্পগুলির  জলবায়ু  প্রাসঙ্গিকতা  মূল্যায়ন  করার  জন্য  স্টেট  অ্যাকশন  প্ল্যান  ফাইন্যান্সিং  ফ্রেমওয়ার্ক  (স্যাপফিন)  তৈরি  করেছে।  এ  ছাড়াও  কিছু  রাজ্যের  সরকার  তাদের  জলবায়ু  সম্পর্কিত  ব্যয়ের  মূল্যায়ন  করতে  ইউনাইটেড  নেশনস  ডেভলপমেন্ট  প্রোগ্রাম  বা  রাষ্ট্রপুঞ্জের  উন্নয়ন  কর্মসূচির  অন্তর্ভুক্ত  ক্লাইমেট  পাবলিক  এক্সপেনডিচার  অ্যান্ড  ইনস্টিটিউশনাল  রিভিউ  (সিপিইআইআর)  পদ্ধতি  ব্যবহার  করছে।

কিছু  উন্নয়ন  প্রকল্প  আছে  যেগুলি  অন্য  লক্ষ্য  পূরণের  পাশাপাশি  উল্লেখযোগ্যভাবে  জলবায়ু  অভিযোজন  ও  প্রশমনের  কাজও  করে,  কিন্তু  জলবায়ু  পরিবর্তনের  উদ্বেগ  প্রশমনের  সুস্পষ্ট  ব্যয়  হিসাবে  সেগুলি  কম  প্রতিবেদিত  হয়।

সামনের  পথ
উন্নয়ন  কর্মসূচির  মধ্যে  জলবায়ু  পরিবর্তনকে  মূলধারাভুক্ত  করতে  জাতীয়  অগ্রাধিকারের  ভিত্তিতে  চালিত  এমন  একটি  কৌশল  প্রয়োজন  যার  মধ্যে  সব  কিছু  অন্তর্ভুক্ত  থাকবে।  এর  জন্য  বৃহত্তর  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থায়  জলবায়ু  অর্থায়নকে  সমন্বিত  করতে  একটি  সাধারণ  বাজেট  কাঠামো  প্রণয়নের  প্রয়োজন  আছে।  রাজ্যগুলি  তাদের  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থাগুলিকে  রূপান্তরিত  করার  জন্য  উল্লেখযোগ্য  প্রচেষ্টা  চালালেও  জলবায়ু  সম্পর্কিত  ব্যয়  ব্যাপকভাবে  রিপোর্ট  করার  জন্য  কেন্দ্রীয়  বাজেটের  বর্তমান  কাঠামোকে  সংশোধন  করা  প্রয়োজন।  ভারত  ইতিমধ্যে  জাতীয়  ও  রাজ্য  স্তরে  জেন্ডার  বাজেটিংয়ের  জন্য  সক্ষমতা  তৈরির  জন্য  অনেকগুলি  বছর  ব্যয়  করেছে।  সরকার  জেন্ডার  বাজেট  বিবৃতি,  আদিবাসী  উপ–পরিকল্পনা  বিবৃতি,  শিশু  বাজেট  বিবৃতি,  এবং  তফসিলি  জাতি  বাজেট  বিবৃতি  চালুও  করেছে,  তবে  কার্যকর  রিপোর্টিং  ব্যবস্থার  অভাবের  কারণে  এগুলির  বাস্তবায়ন  দুর্বল  হয়েছে।  এখন  প্রয়োজন  জলবায়ু  অর্থায়নের  প্রয়োজনীয়তা  অনুমান  করার  পদ্ধতি  গড়ে  তুলতে  সহায়তা  করে  এমন  সমন্বিত  ও  শক্তিশালী  রিপোর্টিং,  পর্যবেক্ষণ  ও  যাচাইকরণের  কাঠামো,  যা  দিয়ে  জলবায়ু  অর্থায়নকে  গতিশীল  করার  জন্য  আন্তঃক্ষেত্রীয়  প্রচেষ্টা  শুরু  করা  যাবে।

তা  ছাড়া  জলবায়ু  বাজেটের  প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের  জন্য  আন্তঃবিভাগীয়  সমন্বয়  এবং  রাষ্ট্রীয়  ও  উপ–রাষ্ট্রীয়  পর্যায়ে  সরকারের  বিভিন্ন  বিভাগের  ভূমিকা  ও  দায়িত্বের  স্পষ্টতা  প্রয়োজন।  এইভাবে  বার্ষিক  বাজেট  প্রক্রিয়ায়  জলবায়ু  বাজেট  ট্যাগিংকে  সমন্বিত  করার  জন্য  প্রশিক্ষণ  ও  সক্ষমতা  বৃদ্ধি  অপরিহার্য।  জলবায়ু  বাজেটের  সংজ্ঞা  প্রসারিত  করাও  অপরিহার্য,  কারণ  তাহলে  এমন  কর্মসূচিগুলি  অন্তর্ভুক্ত  করার  সুযোগ  তৈরি  হবে  যেগুলি  জলবায়ু  পরিবর্তনের  উদ্বেগগুলির  মোকাবিলা  করলেও  তাদের  ঘোষিত  উদ্দেশ্যের  মধ্যে    সে  কথা  বলা  নেই।।

রাজ্যগুলি  তাদের  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থাগুলিকে  রূপান্তরিত  করার  জন্য  উল্লেখযোগ্য  প্রচেষ্টা  চালালেও  জলবায়ু  সম্পর্কিত  ব্যয়  ব্যাপকভাবে  রিপোর্ট  করার  জন্য  কেন্দ্রীয়  বাজেটের  বর্তমান  কাঠামোকে  সংশোধন  করা  প্রয়োজন।

জলবায়ু  পরিবর্তনের  মোকাবিলায়  সরকারের  রোডম্যাপের  একটি  অবিচ্ছেদ্য  অংশ  হল  আর্থিক  নীতি।  ভারতের  সরকারি  অর্থায়ন  পরিচালন  ব্যবস্থা  ও  নির্দেশিকার  সঙ্গে  জলবায়ু  দৃষ্টিকোণকে  সমন্বিত  করে  এই  নীতিগুলিকে  শক্তিশালী  করতে  হবে,  বিশেষ  করে  কেন্দ্রীয়  বাজেটে।  আরও  পরিশীলিত  দৃষ্টিভঙ্গি  থেকে  ভারতের  বাজেট  ব্যয়ের  প্রভাবগুলি  অনুধাবনের  একটি  সুস্পষ্ট  কৌশলগত  আবশ্যকতা  রয়েছে,  এবং  জলবায়ু  বাজেটই  অভ্যন্তরীণ  জলবায়ু  অর্থায়নের  স্বচ্ছতা  ও  জবাবদিহিতা  বাড়ানোর  একটি  বাস্তবসম্মত  পদ্ধতি  হতে  পারে।


গোপালিকা  অরোরা  সেন্টার  ফর  ইকোনমি  অ্যান্ড  গ্রোথ,  অবজারভার  রিসার্চ  ফাউন্ডেশনের  একজন  অ্যাসোসিয়েট  ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.