Author : Erin Watson

Published on Apr 01, 2025 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্প ২.০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এআই রপ্তানি নীতি কঠোর করার ফলে মার্কিন-চিন প্রযুক্তি যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে, এবং তা মিত্রদের পরীক্ষা করছে এবং প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা শুরু করছে

চিপস, ক্লাউডস ও চেকপয়েন্ট: ট্রাম্প ২.০-এর অধীনে নতুন এআই রপ্তানি যুদ্ধক্ষেত্র

এই প্রবন্ধটি ‘রাইসিনা এডিট ২০২৫’ সিরিজের অংশ



‘আমেরিকা প্রথম’ কখনই স্লোগান ছিল না - এটি ছিল একটি নীতিগত মতবাদ। ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পরে প্রশ্নটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে কিনা তা নয়, বরং প্রশ্ন হল এটি কীভাবে করা হবে।

বাইডেন প্রশাসন
‘ছোট উঠোন, উচ্চ বেড়া’ (‌স্মল ইয়ার্ড, হাই ফেন্স)‌ নীতি প্রণয়ন করেছিল। ছোট উঠোনটিতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জাম এবং উন্নত এআই চিপের মতো উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে;‌ তবে উচ্চ বেড়াটি প্রতিপক্ষ, বিশেষ করে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন (পিআরসি)-এর কাছে, এই প্রযুক্তির রপ্তানির উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নির্দেশ করে।

রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, পিআরসি-র ডিপসিক ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তার আর১ এআই বট চালু করে, যা বিশ্বব্যাপী এআই শিল্পে চমক সৃষ্টি করে  এবং চ্যাটজিপিটি-‌র সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতা করে। ডিপসিক-‌এর উদ্বোধন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রবর্তিত এআই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সত্ত্বেও উন্নত এআই মডেল বিকাশের জন্য পিআরসি-‌র ক্ষমতা প্রমাণ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডিপসিক-‌এর এআই চালু করাকে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলির জন্য 'জেগে ওঠার ডাক' বলে অভিহিত করে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।


ছোট উঠোনটিতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জাম এবং উন্নত এআই চিপের মতো উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে;‌ তবে উচ্চ বেড়াটি প্রতিপক্ষ, বিশেষ করে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন (পিআরসি)-এর কাছে, এই প্রযুক্তির রপ্তানির উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নির্দেশ করে।



ট্রাম্প ২.০-এর সময় এআই প্রতিযোগিতা তীব্রতর হতে চলেছে, যা প্রযুক্তি-জাতীয়তাবাদ এবং কঠোর এআই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। আসন্ন নীতিগত পরিবর্তন কেবল চিনের উপরই নয়, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো মার্কিন মূল অংশীদারদের উপরও প্রভাব ফেলবে, এবং সুযোগ ও ঝুঁকি উভয়ই উপস্থাপন করবে। এআই প্রযুক্তি নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতায় পরিণত হওয়ার সাথে সাথে, এখন আর কে সবচেয়ে উঁচু বেড়া তৈরি করে তা নয়, বিবেচ্য হবে তার ভিতরে কে থাকে।

ছোট উঠোন, উঁচু বেড়া

বাইডেন প্রশাসনের 'ছোট উঠোন, উঁচু বেড়া' পদ্ধতিটি প্রযুক্তি রপ্তানির উপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞার চেয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে তা প্রয়োগের সঙ্গে বেশি সম্পর্কিত। কৌশলটি শুধুমাত্র উন্নত এআই চিপস, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জাম এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির বাণিজ্য সীমিত করার চেষ্টা করেছিল, এবং অন্য ব্যবসায়িক বিকল্পগুলি উন্মুক্ত রেখেছিল।

এই কৌশলটি সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছিল। অক্টোবর ২০২২ এবং অক্টোবর ২০২৩ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য ছিল পিআরসি-‌কে একটি প্রযুক্তিগত জটিলতার মধ্যে আটকে রাখা। এটি
এনভিডিয়া এ ১০০ ও এইচ ১০০ এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের মতো উচ্চ-কার্যক্ষমতাসম্পন্ন এআই চিপগুলির বাণিজ্যকে অবরুদ্ধ করেছিল, যাতে পিআরসি তার নিজস্ব উন্নত এআই চিপ তৈরি করতে না পারে। তবুও, পিআরসি কৌশলটিতে দ্রুত ত্রুটি খুঁজে বার করে। চিনা এআই সংস্থাগুলি কম্পিউটিং শক্তি বজায় রাখার জন্য আরও বেশি পরিমাণে দুর্বল এআই চিপ ব্যবহার করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, স্কেল এআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলেকজান্ডার ওয়াং দাবি করেছেন যে, ডিপসিকের কাছে ৫০,০০০-‌এরও বেশি এনভিডিয়া এইচ১০০ চিপের বিশাল মজুত রয়েছে যা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে বড় পরিমাণে‌ কেনা হয়েছিল


চিনা এআই সংস্থাগুলি কম্পিউটিং শক্তি বজায় রাখার জন্য আরও বেশি পরিমাণে দুর্বল এআই চিপ ব্যবহার করেছিল।



বাইডেন প্রশাসন ২০২৪ ও ২০২৫ সালে নীতিটি সংশোধন করে। পিআরসি কর্তৃক পূর্বে ব্যবহৃত ত্রুটিগুলি দূর করার জন্য এটি কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রবর্তন করে, যেমন বিধিনিষেধ আরোপিত হয় এআই মডেল ওয়েট রপ্তানির উপর, যা দেশগুলিকে তাদের এআই প্রশিক্ষণে সহায়তা করে। নীতির আরেকটি প্রধান সংশোধন হল
মার্কিন দেশে সদর দপ্তর আছে এমন সংস্থাগুলির পরিষেবাগুলিতে ক্লাউড অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ, যা পিআরসি-‌র সংস্থাগুলিকে দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ায় ভাড়া করে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছিল

এই কৌশলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবর্তন ছিল কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের ব্যবহার। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঘোষিত
এআই ডিফিউশন ফ্রেমওয়ার্ক দেশগুলিকে তিনটি স্তরে শ্রেণিবদ্ধ করে - বিশ্বস্ত মিত্র (অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, স্পেন, সুইডেন, তাইওয়ান  ও যুক্তরাজ্য), নিরপেক্ষ রাষ্ট্র (ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ইত্যাদি), এবং প্রতিপক্ষ (পিআরসি, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরান)। বিভিন্ন শ্রেণির জন্য মার্কিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে বিভিন্ন স্তরের প্রবেশাধিকার  থাকবে, যেখানে বিশ্বস্ত মিত্রদের রপ্তানির জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে, নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলি কম বিধিনিষেধের সম্মুখীন হবে, এবং প্রতিপক্ষরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বাণিজ্যের উপর ভারী নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হবে। এই পদক্ষেপটির লক্ষ্য ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে আধিপত্য বিস্তারকারী এবং অগ্রণী হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিশ্চিত করা।

বিভিন্ন সংশোধন সত্ত্বেও কৌশলটি প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে চিপ নির্মাতাদের কাছ থেকে। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে 
এই নিয়মগুলি এনভিডিয়ার মতো চিপ নির্মাতাদের রাজস্ব সীমিত করবে, যারা চিনা বাজারের উপর নির্ভর করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)ও এই স্তর-‌ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ বিশ্বস্ত মিত্র দেশগুলির তালিকা ২৭টি ইইউ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১০টি‌কে অন্তর্ভুক্ত করে। ট্রাম্প ওভাল অফিসে ফিরে আসার পরেও প্রশ্নটি রয়ে গেছে: উঠোন কি আরও বড় হবে, বেড়া উঁচু হবে, নাকি উভয়ই?

বিভিন্ন সংশোধন সত্ত্বেও কৌশলটি প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে চিপ নির্মাতাদের কাছ থেকে।



এআইকে আবার বড় করুন: ট্রাম্পের অধীনে এআই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ

ট্রাম্প ২.০ বাইডেনের নীতিগুলির আরও ব্যাপক রূপায়ণের ইঙ্গিত দেয় — যা উঠোনকে প্রশস্ত করে, একটি উঁচু বেড়া তৈরি করে, এবং
মার্কিন প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষা করার জন্য আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান নেয়। ডিপসিকের আর১ এ১ মডেলের উন্মোচন মার্কিন সরকারের জন্য একটি ট্রিগার পয়েন্ট এবং 'জেগে ওঠার আহ্বান' ছিল। এটি এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কমিয়ে দেয়, যার ফলে বাইডেনের অত্যধিক নমনীয় নীতির সমালোচনা করা হয় এবং পিআরসি-‌র এআই অগ্রগতি রোধে আরও কঠোর নীতি গ্রহণের আহ্বান জানানো  হয়।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, ট্রাম্প 
'আমেরিকা ফার্স্ট ট্রেড পলিসি' নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যেখানে বাণিজ্য ও বিদেশ দপ্তরকে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে কৌশলগত পণ্য, সফটওয়্যার ও প্রযুক্তির 'রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে তা দূর করার' নির্দেশ দেওয়া হয়। এটি আরও বিস্তৃত হতে পারে, এবং আরও বেশি চিনা এআই স্টার্টআপগুলিকে 'সত্তার তালিকায়' অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে, যাতে তারা মার্কিন সংস্থাগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে না পারে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, ট্রাম্প প্রশাসন চিনকে 'বেড়া ডিঙোন' থেকে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন নিম্নমানের এআই চিপ রপ্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে, যা বাইডেনের নীতি কাঠামোর বাইরে ছিল। এনভিডিয়ার এইচ৮০০ ও এইচ২০-‌র মতো এআই চিপ, যা চিনা সংস্থাগুলি তাদের এআই বিকাশের জন্য উচ্চমানের চিপের বিকল্প হিসাবে প্রচুর পরিমাণে আমদানি করেছিল, ভবিষ্যতে রপ্তানির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলি চিপ নির্মাতাদের (এনভিডিয়া ও ইনটেল) কাছ থেকে আরও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এগুলি তাদের রাজস্ব ও বাজার মূলধনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।

অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস ও মাইক্রোসফট অ্যাজিওরের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ক্লাউড ক্রয়ের মাধ্যমে পিআরসি যাতে 'বেড়া ডিঙোতে' না-‌পারে, তার জন্যও প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রশাসন মার্কিন-ভিত্তিক ক্লাউড সংস্থাগুলিকে চিনা সংস্থাগুলির কাছে এআই মডেল প্রশিক্ষণ পরিষেবা প্রদান থেকে বিরত করতে পারে, যা বাইডেনের নীতির অধীনে পিআরসি দ্বারা ব্যবহৃত একটি বড় ফাঁক বন্ধ করে দেবে।


এনভিডিয়ার এইচ৮০০ ও এইচ২০-‌র মতো এআই চিপ, যা চিনা সংস্থাগুলি তাদের এআই বিকাশের জন্য উচ্চমানের চিপের বিকল্প হিসাবে প্রচুর পরিমাণে আমদানি করেছিল, ভবিষ্যতে রপ্তানির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে।



জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন এআই মডেলের ওয়েট নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি এআই ডিফিউশন ফ্রেমওয়ার্ক চালু করে। ট্রাম্প প্রশাসন আরও এক ধাপ এগিয়ে একটি নির্দিষ্ট কর্মক্ষমতা সীমার উপরে প্রাক-প্রশিক্ষিত এআই মডেলের রপ্তানি নিষিদ্ধ করার নীতি প্রস্তাব করতে পারে। ফ্রেমওয়ার্কে এআই প্রযুক্তির রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশগুলির তিন-স্তরে শ্রেণিবিভাগেরও উল্লেখ করা হয়েছে। ট্রাম্প সম্ভাব্যভাবে তালিকাটি পরিবর্তন করতে পারেন, কারণ ইইউ রপ্তানি তালিকায় তাদের ২৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি স্থান পাওয়ায় বাইডেনের নীতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ইইউ সংস্কারের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে, এবং তালিকায় আরও ইইউ সদস্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। ইইউ ছাড়াও সম্ভাব্য সংযোজন হতে পারে সিঙ্গাপুর ও ইজরায়েল, কারণ উভয় দেশই সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে মার্কিন মিত্র, এবং তাদের এআই প্রযুক্তিতে  উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।

প্রধান অংশীদারদের জন্য প্রভাব — ভারত ও অস্ট্রেলিয়া

বাইডেন প্রশাসনের অধীনে এআই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নীতি ভারতকে মধ্যম স্তরে এবং অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম স্তরে রাখে। ঐতিহাসিকভাবে, অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি মিত্র এবং
অওকাস (অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাজ্য-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) জোটের অংশ, যা একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি-ভাগাভাগি ব্যবস্থা প্রদান করে। এটি অস্ট্রেলিয়াকে ভারতের তুলনায় এআই প্রযুক্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে অনেক বেশি নিরাপদ অবস্থানে রাখে।

ভারত আমেরিকার অংশীদার, তবে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গেও তার শক্তিশালী অংশীদারি রয়েছে, এবং এই কারণে ভারত নিকটতম ও বিশ্বস্ত মিত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়ে, যার ফলে এআই প্রযুক্তি সহযোগিতার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বাইডেনের অধীনে আমেরিকা ভারতের সেমিকন্ডাক্টর উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করেছিল। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতে সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন ইউনিট স্থাপনের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী ও ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে উন্নত চিপ সরবরাহ করবে। এই চুক্তিটি ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক করিডোর এবং চিপস আইনের অধীনে ভারত-মার্কিন সহযোগিতার একটি অংশ, যা ভারতের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন ক্ষমতা সমর্থন করে।


অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি মিত্র এবং অওকাস (অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাজ্য-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) জোটের অংশ, যা একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি-ভাগাভাগি ব্যবস্থা প্রদান করে।



ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে, এআই প্রযুক্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ভারতের সম্পর্কে অবস্থান পরিবর্তিত হতে পারে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতার মাইলফলক দেখেছিল। ট্রাম্প ২.০-এ ভারতের  মধ্যম স্তর থেকে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের তালিকায় উঠে আসার সম্ভাবনা কম। তবে, সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে, এআই সহযোগিতা অপরিবর্তিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, অস্ট্রেলিয়া প্রথম স্তরের মর্যাদা ভোগ করলেও চিনের সঙ্গে তার গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে, এবং উভয়ের
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২৩ সালের মধ্যে ৩২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বর্ধিত এআই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা জটিল করে তুলতে পারে।

উপসংহার

ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ‌এখন এআই রপ্তানির বিষযটি নিয়ন্ত্রণ থেকে সংঘর্ষে পরিণত হবে। বাইডেনের 'ছোট উঠোন, উঁচু বেড়া' নীতি ছিল চিনের এআই উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যযুক্ত পদ্ধতি;‌ অন্যদিকে ট্রাম্পের সম্ভাব্য 'সুরক্ষিত বাগান, অলঙ্ঘনীয় দেওয়াল'(‌গার্ডেড গার্ডেন, আনস্কেলেবল ওয়াল)‌ নীতি উন্নত চিপগুলিকে লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক দমনের দিকে চালিত করবে, এবং পিআরসিকে মার্কিন এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সুযোগ দেয় এমন আরও ফাঁকগুলি বন্ধ করে দেবে। যাই হোক, কঠোর নিয়মকানুন বিপরীত ফলদায়ী হতে পারে, কারণ এগুলি পিআরসিকে যেমন তার অভ্যন্তরীণ সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের দিকে তাকাতে বাধ্য করবে, তেমনই বিশাল চিনা বাজারে  তাদের প্রবেশ সীমিত হওয়ার ফলে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে ক্ষতির সম্মুখীন করবে।

এই পর্যায়ে, এআই প্রতিযোগিতা আর কে সবচেয়ে কম সময়ে চিপ বা সবচেয়ে উদ্ভাবনী মডেল তৈরি করবে তা নিয়ে নয়, বরং কে খেলার নিয়ম নিয়ন্ত্রণ করে তা নিয়ে। প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে: ট্রাম্পের নীতি কি হুমকিকে বাইরে রাখবে নাকি উদ্ভাবনকে বেঁধে রাখবে?



এরিন ওয়াটসন গ্রিফিথ এশিয়া ইনস্টিটিউট এবং বেকার অ্যান্ড ইয়র্ক, অস্ট্রেলিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.