Author : Prithvi Gupta

Published on Feb 09, 2024 Updated 0 Hours ago

চিন তার সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করেছে এবং মাইক্রোনেশিয়া পলিনেশিয়া অঞ্চলে একটি উল্লেখযোগ্য অংশীদার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে

পলিনেশিয়া ও মাইক্রোনেশিয়ায় চিনের অর্থনৈতিক রাষ্ট্রকৌশল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে প্রথম বারের মতো ওশিয়ানিয়া তার কৌশলগত গুরুত্ব ফিরে পেয়েছে। মেলানেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া, পলিনেশিয়া অস্ট্রেলেশিয়াকে ঘিরে সুবিশাল অঞ্চলটি ১৬টি দেশ নিয়ে ঠিত, যার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে এই অঞ্চলের দ্বীপদেশীয় ভূগোলের কারণে বিশ্বের বৃহত্তম একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইইজেড) রয়েছে। ব্লু প্যাসিফিক মহাদেশটি অনাবিষ্কৃত ব্লু ইকোনমি বা নীল অর্থনীতির উত্স এবং প্রাকৃতিক গভীর-সমুদ্র বন্দরগুলিরও একটি ক্ষেত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস), অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স এবং তাইওয়ান এই অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রতিক্রিয়া হিসাবে নিজেদের সম্পৃক্ততা জোরদার করেছে। এই অঞ্চলে বেজিংয়ের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা কূটনৈতিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা সমন্বিত এক শক্তিশালী দ্বি-মুখী কৌশল উপস্থাপন করেছে। এই নিবন্ধটিতে মাইক্রোনেশিয়া এবং পলিনেশিয়া অঞ্চলে চিনা বিনিয়োগ এবং তাদের কৌশলগত ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাবের উপর আলোকপাত করা হয়েছে

 

মাইক্রোনেশিয়া পলিনেশিয়াতে চিনা ঋণ বিনিয়োগ

২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বেজিংয়ের আন্তঃদেশীয় অবকাঠামো এবং সংযোগমূলক উদ্যোগ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-এ (বিআরআই) যোগদানকারী দশম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ (পিআইসি) হয়ে ওঠে কিরিবাতি। কিরিবাতি সামোয়া, ফেডারেটেড স্টেটস অ মাইক্রোনেশিয়া (এফএসএম), টোঙ্গা এবং নিউই-কে অনুসরণ করে এই প্রকল্পে যোগদান করে, যে দেশগুলি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত বিআরআই-তে যোগ দিয়েছিল২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের সময় চিনা সরকারি কর্মকর্তারা পিআইসি-কে মিলিয়ন ডলার মূল্যের ত্রাণ-সহ উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণের জন্য চিনা রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি সংস্থার তরফে সাহায্য  প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

 

সারণি ১. মাইক্রোনেশিয়া এবং পলিনেশিয়ায় প্রধান চিনা প্রকল্প (২০১৭-২২)

 

দেশ

উপক্ষেত্র

প্রকল্প/গ্রহীতা

টাকার পরিমাণ (মিলিয়ন মার্কিন ডলারে)

ত্রাণের ধরন

টোঙ্গা

কৃষি

ফার্মিং অ্যান্ড স্পোর্টস কমপ্লেক্স

১৭

অনুদান (ওডিএ)

টোঙ্গা

অবকাঠামো

টোঙ্গা হাইস্কুলের পুনর্নির্মাণ

৪৩.৭৪

ঋণ (ওডিএ)

সামোয়া

-

অনুল্লিখিত উদ্দেশ্য

৩৪.৫

ঋণ (ওডিএ)

সামোয়া

কৃষি

চিন-সামোয়া এগ্রিকালচারাল ডেমনস্ট্রেশন ফার্ম প্রজেক্ট

১২.৪

ঋণ (ওডিএ)

সামোয়া

অবকাঠামো

সুনামি পরবর্তী পুনর্গঠন

১৬.৩

অনুদান (ওডিএ)

সামোয়া

অবকাঠামো

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার এবং সরকারি ভবন নির্মাণ প্রকল্প

৬৮.৮৩

ঋণ (ওডিএ)

সামোয়া

অবকাঠামো

সামোয়ান গভর্নমেন্ট স্কুল (প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি)

১৯.৬৩

অনুদান (ওডিএ)

সামোয়া

অবকাঠামো

ন্যাশনাল মেডিক্যাল সেন্টার প্রজেক্ট

৯২.৩৯

ঋণ (ওডিএ)

সামোয়া

অবকাঠামো

ফালকোলো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট আপগ্রেড প্রজেক্ট

৩৫.৮৭

ঋণ (ওডিএ)

ফেডারেটেড স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া

অর্থায়ন

এফএসএম ট্রাস্ট ফান্ড

অনুদান (ওডিএ)

ফেডারেটেড স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া

আর্থিক ব্যবস্থা

এফএসএম ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক

 

৩.৬

ঋণ (ওডিএ)

ফেডারেটেড স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া

সাধারণ বাজেট সংক্রান্ত সাহায্য

এফএসএম ফিন্যান্স মিনিস্ট্রি

ঋণ (ওডিএ)

মার্শাল আইল্যান্ডস

জাহাজ চলাচল

শিজপ্যান কর্পোরেশন শিপিং ট্রাস্ট

৩৪০

ঋণ (ওডিএ)

কুক আইল্যান্ডস

অবকাঠামো

টেলিকম স্পোর্টস এরিনা কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট

১২.৮

ঋণ (ওডিএ)

কুক আইল্যান্ডস

জল সরবরাহ ও স্বাস্থ্যবিধি

রারোটোঙ্গা ওয়াটার রিং মেন আপগ্রেড প্রজেক্ট

১৭.৩

ঋণ (ওডিএ)

কিরিবাতি

সাধারণ বাজেট সংক্রান্ত সাহায্য ২০২১

গভর্নমেন্ট অব কিরিবাতি

২১.৪

 

মোট দেশের সংখ্যা ৬

মোট ক্ষেত্রের সংখ্যা ৭

মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১৪

মোট মূল্য
৭৪৩.৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

অনুদান (ওডিএ)

 

সূত্র: চিনেন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশন, এডডেটা, চায়না স্টেট কাউন্সিল, এইআই চায়না গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ট্র্যাকার থেকে সংগৃহীত তথ্য

 

এই সারণি অনুযায়ী ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে চিন সামোয়া (২.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), এফএসএম (২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ (১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), কিরিবাতি (১.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং কুক দ্বীপপুঞ্জে (০.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেছেসারণি ১-যেমনটা দেখানো হয়েছে, এই দেশগুলিতে চিনের সাহায্য এবং বিনিয়োগ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিস্তৃত। বেজিংয়ের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলি রাস্তা, রেলপথ, বিমানবন্দর স্ট্রিপ, সামাজিক অবকাঠামো (স্কুল, হাসপাতাল, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন) এবং পলিনেশিয়ান এবং মাইক্রোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জব্যাপী ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। হুয়া, টেনসেন্ট এবং আলিবাবার মতো চিনা প্রযুক্তি সংস্থাগুলিও এই দেশগুলিতে ৫জি ক্ষমতা নির্মাণে ডিজিটাল সংযোগ প্রদানের চেষ্টা করেছে। এমনটা করার জন্য তারা সমুদ্রের নিচে তার স্থাপন করেছে এবং তাদের নিজ নিজ সরকারকে উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন নজরদারি হার্ডওয়্যারগুলিতে সুবিধা প্রদান করেছে।

যাই হোক, বেজিংয়ের বিআরআই ও তার সঙ্গে সংযুক্ত উন্নয়নমূলক সহায়তা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকির দিকটিও লক্ষ্যণীয়। ২০০৯ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশগুলি এমন দেশগুলির এক-তৃতীয়াংশ দেশ হয়ে ওঠে যারা তাইওয়ানকে চিন প্রজাতন্ত্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বেজিং ধূর্ততার সঙ্গে টোঙ্গা, সামোয়া, এফএসএম কিরিবাতিকে বিআরআই-তে যোগ দিতে এবং তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করেছিল। এর পরিবর্তে চিনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলি এই দেশগুলিতে বিনিয়োগের জোয়ার এনেছে। বেজিং তাদের ইইজেড-এর জন্য এই দ্বীপগুলিকেও প্রশ্রয় দিচ্ছে: কিরিবাতিতে বিশ্বের বৃহত্তম ইইজেড (৩.৫ মিলিয়ন বর্গ মাইল) রয়েছে এবং মাইক্রোনেশিয়ার ইইজেড চিনের চেয়ে তিনগুণ বড়। এই ইইজেডগুলি অনাবিষ্কৃত নীল অর্থনীতির উত্স, বিশেষ করে মাছের উৎস। চিন ব্লু প্যাসিফিক মহাদেশের গভীর জলরাশিতে মাছ ধরার লাইসেন্স পেয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে চিনা পতাকাবাহী দূরবর্তী সমুদ্রের মাছ ধরার জাহাজের সংখ্যা ২৪৫ থেকে বেড়ে ৪৭৬ হয়েছে, যা ২০০৯ সালে ৪৬টি জাহাজের তুলনায় দশগুণ বেশি। চিনের গভীর-সমুদ্রের বহরকে বিশ্বের সবচেয়ে বেআইনি, অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরার অপরাধী বলে গণ্য করা হয়। এই অঞ্চলে চিনের স্কুইড শিকার ২০১২ সালে ৪২০০০ টন থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৪২২০০০ টন হয়েছে এবং ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে চিনের সামগ্রিক মাছ ধরার পরিমাণ ৪৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মাত্রাটি দ্বীপের অর্থনীতি সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতির পাশাপাশি টুনা, স্কুইড এবং অন্যান্য প্রজাতির বাণিজ্যিক স্থায়িত্বের বিষয়ে আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। তা সত্ত্বেও দ্বীপের সরকারগুলি এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে অনিচ্ছুক কারণ চিনা উন্নয়ন সহায়তা দ্বীপগুলির আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহায়তার একটি বড় অংশ গঠন করে।

 

মাইক্রোনেশিয়া এবং পলিনেশিয়ায় (পিইএস) বেজিংয়ের ইতিবাচক অর্থনৈতিক রাষ্ট্রকৌশল

চিন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশের মধ্যে সমঝোতামূলক সম্পর্ক যেখানে বেজিং দ্বীপগুলির নীতিগত বাধ্যবাধকতাগুলিকে প্রভাবিত করে এবং আমদানি শুল্ক ছাড়, উন্নয়নমূলক সহায়তা, রেয়াতি ঋণ এবং অবকাঠামোমূলক উন্নয়নের মতো ইতিবাচক অর্থনৈতিক অনুদানের মাধ্যমে তাদের সরকারের আচরণকে প্রভাবিত করে – চিনেপিইএস-এর এক উজ্জ্বল উদাহরণ। যাই হোক, পিইএস-এর এই প্রচলিত সাধনীগুলির পাশাপাশি চিন এই ছটি দ্বীপের দেশগুলির সঙ্গে অসংখ্য অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চুক্তি (ইটিসিএ) স্বাক্ষর করেছে। এই ইটিসিএ-র অধীনে, বেজিং আটটি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্থানীয় সক্ষমতা-নির্মাণ এবং উন্নয়নের জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে। ২০১৭ সাল ২০২২ সালের মধ্যে চিনা ইটিসিএ-র পরিমাণ ছিল ৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

চিন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশের মধ্যে সমঝোতামূলক সম্পর্ক যেখানে বেজিং দ্বীপগুলির নীতিগত বাধ্যবাধকতাগুলিকে প্রভাবিত করে এবং আমদানি শুল্ক ছাড়, উন্নয়নমূলক সহায়তা, রেয়াতি ঋণ এবং অবকাঠামোমূলক উন্নয়নের মতো ইতিবাচক অর্থনৈতিক অনুদানের মাধ্যমে তাদের সরকারের আচরণকে প্রভাবিত করে – চিনেপিইএস-এর এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

 

সারণি ২. ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মাইক্রোনেশিয়ান এবং পলিনেশিয়ান দেশগুলির সঙ্গে চিনা ইটিসিএ-র পরিমাণ

 

দেশ

২০১৩-২০২৩ সালের মধ্যে চিনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইটিসিএ-র সংখ্যা

স্বাক্ষরিত ইটিসিএ থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষেত্র

টাকার পরিমাণ (মিলিয়ন মার্কিন ডলারে)

ত্রাণের ধরন

টোঙ্গা

১০

মহাকাশ, সামাজিক অবকাঠামো, রাস্তা ও মহাসড়ক

৮৫.৩৩

অনুদান (ওডিএ)

সামোয়া

২৬

পর্যটন, রেলওয়ে, পরিবহণ অবকাঠামো, সামাজিক অবকাঠামো, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন

২২৭.১২

অনুদান (ওডিএ)

ফেডারেটেড স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া

জ্বালানি, পরিবহণ অবকাঠামো, সামাজিক অবকাঠামো

৩৪.২৩

অনুদান (ওডিএ)

কুক আইল্যান্ডস

জ্বালানি, পর্যটন, খনন, সামাজিক অবকাঠামো

২৯.২৬

অনুদান (ওডিএ)

মার্শাল আইল্যান্ডস

পর্যটন, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন

৯.২৩

অনুদান (ওডিএ)

মোট দেশের সংখ্যা ৫

মোট স্বাক্ষরিত ইটিসিএ-র সংখ্যা ৪৯

মোট ক্ষেত্রের সংখ্যা ৮

মোট পরিমাণ ৩৮৫.১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

 

সূত্র: এডডেটা

প্রাথমিক ভাবে, এই ইটিসিএগুলি বৃহত্তর দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে সহায়তা করেছে। যাই হোক, কিছু উচ্চ মূল্যের ইটিসিএ-ও আছে, যেখানে অনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে’র জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হয়। এই অস্বচ্ছ ইটিসিএগুলি এই অঞ্চলে তার কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা অর্জনের জন্য বেজিংয়ের কৌশলগত পদক্ষেপকে আকার প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে চিন সামোয়ার সঙ্গে একটি ইটিসিএ স্বাক্ষর করেছে, যেখানে অনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যেসামোয়াকে চিন ১৭.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালে সামোয়ান পার্লামেন্টের নির্দেশে পরিচালিত একটি তদন্তে জানা যায় যে, অনুমিত ইটিসিএ-র অধীনে প্রদত্ত তহবিলগুলি চিন-অর্থায়নকৃত বহু-ব্যবহারের গভীর-সমুদ্র বন্দরের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রাথমিক গবেষণা পরিচালনার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের চাপের কারণে ২০২১ সালে শেষ পর্যন্ত বন্দরটি বাতিল করা হয়। অতি সম্প্রতি ২০২৩ সালের মে মাসে এফএসএম-এর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড পানুয়েলো মাইক্রোনেশিয়ান পার্লামেন্টে একটি চিঠিতে অভিযোগ  করেন যে, চিনা কর্মকর্তারা ২০১৭ সালে এফএসএম-এর ফেডারেল সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ঘুষ দিয়েছিলেন। কাকতালীয় ভাবে একই বছরে চিনও এফএসএম-এর সঙ্গে একটি ইটিসিএ-তে স্বাক্ষর করেছিল, যেখানে অনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যেতহবিল বরাদ্দ করা হয়েছিল। এফএসএম বেজিংকে তার দ্বীপের বিস্তীর্ণ ইইজেডে গুপ্তচরবৃত্তি এবং দেশে চিন-বিরোধী সমর্থকদের উপর গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে।

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং তাদের মিত্রদের অবশ্যই এই অঞ্চলে দ্বীপদেশগুলির অগ্রগতি সহায়তাকে আরও অর্থবহ সুনির্দিষ্ট উপায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় এই অঞ্চলে বেজিংয়ের অর্থনৈতিক রাষ্ট্রকৌশলের কাছে বৃহৎ শক্তিগুলি নিজেদের কৌশলগত প্রভাব হারাতে পারে।

 

উপসংহার

মাইক্রোনেশিয়া পলিনেশিয়া অঞ্চলে চিন একটি বিতর্কিত হলেও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এ অঞ্চলগুলিতে চিন তার সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করেছেকারণ দ্বীপদেশগুলি একটি আন্তর্জাতিক শক্তি হিসাবে চিনের উত্থানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে ব্লু প্যাসিফিক মহাদেশ বহুপাক্ষিক ফোরামে একটি প্রধান ভোট ব্যাঙ্ক গঠন করে, যেখানে তাইওয়ান, হংকং জিনজিয়াং-এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সমস্যাগুলি মোকাবিলায় চিনের জন্য দ্বীপদেশগুলির সমর্থন অপরিহার্য। তা ছাড়া, পলিনেশিয়া এবং মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলে বিশ্বের কৌশলগত ভাবে অবস্থিত বেশ কিছু দ্বীপ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কিরিবাতি বিষুবরেখা এবং ১৮০-ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে বিস্তৃত এবং প্রশান্ত মহাসাগরের প্রকৃত ভৌগোলিক কেন্দ্রে অবস্থিত অতি সম্প্রতি চিন এই অঞ্চলের অব্যবহৃত ব্লু  ইকোনমি উৎসগুলিকে খুঁজে বের করে অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তিনটি ক্ষেত্রেই চিক্ষমতা দখল করেছে। ১৬টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশের মধ্যে মাত্র চারটি বর্তমানে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দিয়েছে, বেজিং কিরিবাতি সরকারের সঙ্গে মিলে একটি বন্দর তৈরি করতে প্রায় সফল হয়েছে এবং এই অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা আরও গভীর করে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং তাদের মিত্রদের অবশ্যই এই অঞ্চলে দ্বীপদেশগুলির অগ্রগতি সহায়তাকে আরও অর্থবহ সুনির্দিষ্ট উপায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় এই অঞ্চলে বেজিংয়ের অর্থনৈতিক রাষ্ট্রকৌশলের কাছে বৃহৎ শক্তিগুলি নিজেদের কৌশলগত প্রভাব হারাতে পারে।

 


পৃথ্বী গুপ্ত স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের জুনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.