Published on Sep 19, 2024 Updated 0 Hours ago

ভারতের ক্ষেত্রে চিন থেকে শিল্প (ইভি এবং অন্যান্য) স্থানান্তরের একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতাকে চিনা কৌশলবিদদের একাংশ এক অতীতের ধারণা বলে মনে করেন।

চিন, ভারত এবং ইভি-র প্রতিযোগিতা

প্রধানমন্ত্রী মোদী তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে চিনা গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া পরিসরে আধিপত্য বিস্তারকারী বিষয়টি হল মোদীনোমিক্স ৩.০’ কি তার প্রতিশ্রুতি রাখতে সমর্থ হবে? অর্থাৎ আগামী বছরগুলিতে ভারতের জিডিপি কি আদৌ দ্বিগুণ হবে?

নির্বাচনের আগে মোদী সরকার তাঁর তৃতীয় মেয়াদে ভারতকে একটি আন্তর্জাতিক উত্পাদন কেন্দ্র এবং বহুজাতিক সংস্থাগুলির জন্য চিনা বাজারের বিকল্প হিসাবে গড়ে তুলতে একাধিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। চিনের বিশ্লেষকরা ভাবছেন, মোদীর এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাটি আদৌ এখনও কি বাস্তবায়িত হবে? অনেকে বিশ্বাস করেন যে, একটি জোট সরকার হওয়ায় তাঁকে কল্যাণমূলক পদক্ষেপগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং জমি, শ্রম কৃষির মতো ক্ষেত্রে সংস্কারের গতি কমিয়ে দিতে হবে, যার ফলে ভারতীয় উত্পাদনে অগ্রগতি বিলম্বিত হবে।

নির্বাচনের আগে মোদী সরকার তাঁর তৃতীয় মেয়াদে ভারতকে একটি আন্তর্জাতিক উত্পাদন কেন্দ্র এবং বহুজাতিক সংস্থাগুলির জন্য চিনা বাজারের বিকল্প হিসাবে গড়ে তুলতে একাধিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক উৎপাদনে ভারতের অংশ শতাংশের কম, যেখানে চিনের অংশ প্রায় ২৪ শতাংশ, যা ভারতের প্রায় আট গুণ। তা হলে চিন কেন মেক ইন ইন্ডিয়া নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছে? ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডেপুটি ডিরেক্টর চিনা গবেষক লিন মিনওয়াং তাঁর একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন যে, চিন ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক শক্তির ব্যবধান - যা ২০১০ এবং ২০১৪ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রসারিত হয়েছিল - তা বর্তমানে নতুন প্রবণতা দেখাচ্ছে, যেখানে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক আকারের ব্যবধান এখনও বিশাল হলেও ক্রমাগত প্রসারিত হওয়ার গতিবেগের দরুন দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক শক্তির ব্যবধান গত দুই বছরে কিছুটা দুর্বল হয়েছে। তিনি যুক্তি দেন যে, বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার মধ্যে ভারতীয় বাজারের স্থিতি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে, নির্দিষ্ট কিছু দেশের বিচ্ছিন্নকরণ/ঝুঁকিমুক্তকরণ নীতির মতো ভূ-রাজনৈতিক কারণগুলি এই প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি চিনের উৎপাদন শিল্পের জন্য এই নতুন উন্নয়নের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন এবং চিনা নীতিনির্ধারকদের মোদী ৩.০-র অর্থনৈতিক ও শিল্প নীতির প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

অন্য ভাবে বললে, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া নিয়ে চিনের উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক মন্থনের মাঝে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে চিনের অবস্থানকে দুর্বল করার মধ্যে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আগ্রহের প্রেক্ষিতে অনুভূত সাযুজ্য। যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, ২০১৮ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের উত্থান রোধে বাণিজ্য যুদ্ধ, প্রযুক্তি যুদ্ধ এবং চিপ যুদ্ধের মতো বিভিন্ন উপায়ের চেষ্টা করলেও সীমিত সাফল্য মিলেছে। আগামী পাঁচ বছরে - যা চিন-মার্কিন প্রতিযোগিতার দিকনির্দেশনা নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ব্যবহার করতে প্রলুব্ধ হতে পারে। কারণ ভারতও চিনের মতো জনসংখ্যাভিত্তি একটি দেশ, যার একটি বিশাল বাজার রয়েছে এবং যে দেশের ব্যাপক সম্ভাবনা-সহ একটি নতুন অর্থনীতিও বিদ্যমান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের পাশাপাশি বাণিজ্য ও অর্থনীতির ক্ষেত্রেও চিনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে ভারত।

অন্য ভাবে বললে, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া নিয়ে চিনের উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক মন্থনের মাঝে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে চিনের অবস্থানকে দুর্বল করার মধ্যে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আগ্রহের প্রেক্ষিতে অনুভূত সাযুজ্য।

অন্য দিকে, চিন মূল্যায়ন করে যে চিন-মার্কিন প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা যে কৌশলগত সুযোগটি উপস্থাপন করেছে, সে সম্পর্কে ভারত ভাল মতোই সচেতন এবং পরিস্থিতি থেকে সর্বাধিক কৌশলগত লাভ পেতে আগ্রহী। মেক ইন ইন্ডিয়া নীতির কাঠামোর অধীনে চিনের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য আরসিইপি থেকে দেশটির প্রত্যাহার, চিনা সংস্থাগুলির জন্য অতিরিক্ত বাধা অন্যান্য দেশের তরফে ভারতে বিনিয়োগ ইঙ্গিত করে যে, ভারতের লক্ষ্য হল চিনা শিল্প শৃঙ্খল ব্যবস্থা থেকে নিজেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করা এবং মার্কিন ইউরোপীয় ব্যবস্থা, বিশেষ করে কৌশলগত শিল্প বা ভবিষ্যতের শিল্পের নিরিখে ‘পুনর্সংযুক্ত’ হওয়া

মোদীনোমিক্স ৩.০ নিয়ে চিনের অভ্যন্তরীণ উদ্বেগ ভারতে চিনের নতুন রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং-এর সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়ার অভিব্যক্তিতেও ফুটে উঠেছে। ভারতে চিনের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসাবে যোগদানের কয়েক সপ্তাহ পরে, যখন সকলের নজর ভারতীয় নির্বাচনের ফলাফলের উপর স্থির ছিল, তখন তিনি ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহ ভারতের সবুজ রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে টুইট করেছিলেন। তিনি এই ক্ষেত্রে চিনের দক্ষতার উপর জোর দেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন তাপ প্রবাহ সংক্রান্ত সঙ্কট মোকাবিলায় চিনের সঙ্গে কাজ করার জন্য নয়াদিল্লির নতুন সরকারকে আহ্বান জানান। আরও একটি টুইটে তিনি একটি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, চিনয়াদিল্লির নতুন সরকারের সঙ্গে যে ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক, তা হল ব্য জ্বালানির যানবাহন ক্ষেত্র, যা চিনের ‘নতুন তিনটি শিল্পের অন্যতম এবং ধারণা করা হচ্ছে যে, তা চিনা অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিও বটেচিনা রাষ্ট্রদূত তাঁর টুইটে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন দিল্লির রাস্তায় এত বেশি জাপানি, কোরীয়, মার্কিন ও জার্মান গাড়ি চলাচল করে এবং তিনি এই প্রশ্নও তোলেন, কেন শুধু মাত্র চিনের নব্য জ্বালানির গাড়ি আমদানিকেই অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্নের গাড়ি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

চিনা বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য চিনা রাষ্ট্রদূতের শক্তিশালী আহ্বানকে সঠিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করা দরকার। যেমনটা জানা যায়, চিন দেরিতে নব্য জ্বালানির যানবাহন শিল্প শৃঙ্খলে একটি নেতৃ শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে এবং চিরাচরিত পশ্চিমী দেশগুলির পাশাপাশি জাপানকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। যাই হোক, একই সময়ে, চিন ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো মূল রফতানি বাজারগুলি থেকে বড় ধাক্কা পেয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে এ হেন গাড়ির বিক্রিবাটা তলানিতে গিয়ে ঠেকায় চিনা বাজারে অপ্রতুল চাহিদার মতো গুরুতর চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হচ্ছে।

চিরাচরিত ভাবে চিনা ইলেকট্রনিক্স পণ্য, বিশেষ করে যেগুলি মার্কিন বা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলি মূল্য-সংবেদনশীল ভারতে একটি প্রস্তুত বাজার খুঁজে পেয়েছে। যাই হোক, চিনা বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, চিনের স্মার্টফোন নির্মাতারা কী ভাবে নিজেদের নতুন স্মার্টফোন উত্পাদন শিল্পকে ধ্বংস করেছে এবং চিনা বিনিয়োগের উপর বিধিনিষেধ নিরীক্ষণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আরও ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে, তা থেকে ভারতেরও পাঠ নেওয়া উচিত। ভারত দুবার গ্রেট ওয়াল মোটরস এবং বিওয়াইডি-র মতো চিনা গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলির থেকে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং যেখানে ভারত চিনা বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে, সেখানে এ কথা সুনিশ্চিত করেছে যে, নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা যেন ভারতীয় সংস্থার হাতেই থাকে, যেমনটা এসএআইসি-এমজি ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে। সাম্প্রতিক সংবাদ প্রতিবেদনগুলিতে দেখা গিয়েছে, সরকার ইলেকট্রনিক্স অটোমোবাইল পরিসরে চিনা এবং ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে যৌথ উদ্যোগের অনুমতি দিতে পারে শুধু মাত্র এই শর্তে যে, ভারতীয় অংশীদারের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশীদারিত্ব থাকবে। এ কথা অবশ্য উল্লেখ্য যে, ভারত তার নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ির নীতিও চালু করেছে এবং যে সংস্থাগুলি ভারতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে সেই বৈদ্যুতিক যানবাহন প্রস্তুতকারকদের কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজারে চিনা নব্য জ্বালানির যানবাহন উদ্যোগগুলির সম্মুখীন হওয়া অসুবিধাগুলি গত কয়েক মাসে চিনের অভ্যন্তরীণ গাড়ি বাজারে একাধিক বার মূল্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চিনা পর্যবেক্ষকরা উদ্বিগ্ন যে, অভ্যন্তরীণ বাজারে অত্যধিক প্রতিযোগিতা এবং দামের তীব্র হ্রাস অবশেষে নব্য জ্বালানির জায়গায় সত্যিকারের উদ্ভাবনী চিনা উদ্যোগগুলির জন্য উদ্ভাবনের শ্বাসরোধ করতে পারে। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, চিনা গাড়ি প্রস্তুতকারকদের কাছে প্রতিকূল যৌথ উদ্যোগ বা প্রযুক্তি ভাগাভাগির মাধ্যমে বিদেশি বাজারে প্রবেশ করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

সামগ্রিক ভাবে, বেজিংয়ে অনুমান হল এই যে, বিদ্যমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব রোধ করতে চিনের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত আক্রমণ ঘটে চলেছে‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের প্রযুক্তি শিল্পের দমবন্ধ করার চেষ্টা করছে; ইউরোপ আরও ৫০ বছরের জন্য চিনা গাড়ির বাজারে আধিপত্য করতে চায়; ভারত এই পরিস্থিতির সুবিধা নিতে চায় এবং একটি নতুন আন্তর্জাতিক বৈদ্যুতিক যানবাহন উত্পাদন কেন্দ্র হিসাবে আবির্ভূত হতে চায় (পশ্চিমকে অনুসরণ করে চিনের পাশ কাটিয়ে যাওয়া)।’ চিনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ‘চিনের ৭০ বছরের কঠোর পরিশ্রম’ শীর্ষক নিবন্ধে চিনের কৌশলগত বৃত্তগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এই দেশগুলির নিন্দা করা হয়েছে।

সামগ্রিক ভাবে, বেজিংয়ে অনুমান হল এই যে, বিদ্যমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব রোধ করতে চিনের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত আক্রমণ ঘটে চলেছে

এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, ভারতের ক্ষেত্রে - সম্প্রতি চিনের তুলনায় আমদানির পরিমাণ বেড়েছে - অনেক চিনা কৌশলবিদ এটিকে একটি অস্থায়ী প্রবণতা হিসাবে মনে করেন, যা সদ্য ভারতে বাজারে চলে আসা কিছু শীর্ষস্থানীয় সংস্থার চাহিদার কারণে ঘটে। এর বিপরীতে ভারতের ক্ষেত্রে চিন থেকে শিল্প (ইভি এবং অন্যান্য) স্থানান্তরের একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতাকে চিনা কৌশলবিদদের একাংশ এক অতীতের ধারণা বলে মনে করেন। এর কারণ হল: প্রথমত, ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি, ক্রমবর্ধমান খরচ ইত্যাদির মতো বিভিন্ন কারণে অনেক চিনা উদ্যোগ ইতিমধ্যেই তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলগুলিকে চিনের বাইরে সরিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেছে তারা বিশেষ করে ব্যয় সুবিধা, সম্পদ সুবিধা, বাজার সুবিধার ভিত্তিতে ভারতের মতো বাজারগুলিকে লক্ষ্য করছে এবং যা আদতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পশ্চিমী দেশের ‘রিশোরিং/ নিয়ারশোর/ ফ্রেন্ডশোরিং ব্যবস্থার কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত চিনা উদ্যোগ সক্রিয় ভাবে ভারতে প্রবেশ করতে চাইছে না, তাদেরও পরোক্ষ ভাবে স্থানান্তর করতে বাধ্য করা হচ্ছে। নেতৃস্থানীয় সংস্থাগুলির চাপের মধ্যে বহুজাতিক বা চিনা সংস্থা উভয়ই ইতিমধ্যেই স্থানান্তরিত হয়েছে বা ভারতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছে।

এ হেন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চিনা কৌশলগত বৃত্তে একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে: কী ভাবে ভারতে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র গড়ে ওঠার আগে ভারতীয় বাজারে ভারতীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করতে কার্যকর ভাবে উইন্ডো পিরিয়ড বা সুযোগের জানালা ব্যবহার করা যায়? চিনা বৈদ্যুতিক যানবাহন শিল্পের শৃঙ্খলগুলি রূপান্তর ও সংস্কার করার জন্য ভারতীয় বাজারে বর্তমান সুযোগগুলি কী ভাবে ব্যবহার করা যায় (ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য এর কর অব্যাহতি নীতির বিরল সুযোগ-সহ) যার ফলে মে ইন ইন্ডিয়া এবং মেড ইন চায়না’র মধ্যে ব্যবধান সুস্পষ্ট হয় এবং ভারত ও চিনের মধ্যে প্রতিযোগিতার তুলনা নিরর্থক করে তোলা যায়?

উপসংহারে বলা যায়, কেউ যুক্তি দিতে পারে যে, এলএসি-তে চি ভারতের মধ্যে তীব্র সামরিক প্রতিযোগিতা মনোযোগের কেন্দ্রে রয়ে গিয়েছে এবং এই পটভূমিতে দুই দেশের মধ্যে সমান ভাবে ভয়ঙ্কর ভূ-অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা চলছে, যা আরও বেশি করে মনোযোগের দাবি রাখে। চিনা আখ্যান অনুসারে, ভূ-অর্থনৈতিক সমীকরণ ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘাতে চিনা পদক্ষেপের চালিকাশক্তিসামনের দিকে তাকালে বোঝা যাবে, এটি এলএসি-তে চিনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে থাকবে।

 


অন্তরা ঘোষাল সিং অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.