Author : Vinitha Revi

Published on Aug 10, 2023 Updated 0 Hours ago

ব্রিটেন কি শেষ পর্যন্ত চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব এবং চাগোসিয়ানদের অধিকারের প্রশ্নটির সমাধান করতে সক্ষম হবে?

চাগোস নিয়ে বিশৃঙ্খলা: সার্বভৌমত্বের সমস্যা কি মিটতে চলেছে?

ভারত মহাসাগরের চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে মরিশাস এবং ব্রিটেনের (ইউকে) মধ্যে বিরোধ কয়েক দশক ধরে চলছে। অপমানজনক ভাবে চাগোস দ্বীপপুঞ্জকে ‘আফ্রিকায় ব্রিটেনের শেষ কলোনি’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং চাগোস দ্বীপপুঞ্জ সংক্রান্ত বিরোধ শুধুমাত্র সার্বভৌমত্বেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তা অ-ঔপনিবেশকরণ, আন্তর্জাতিক আইন, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের বৃহত্তর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগনাথ ২০২৩ সালের নববর্ষের ভাষণে উল্লেখ করেছেন যে, মরিশাস এবং ব্রিটেন চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব সংক্রান্ত আলোচনার পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়াও বলেন যে, তিনি সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহকে অত্যন্ত উত্সাহব্যঞ্জক বলে মনে করেছেন। এর পর ফেব্রুয়ারি মাসে জগনাথ ব্রিটিশ প্রাইম মিনিস্টার ঋষি সুনাকের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ-আলোচনা চালান। এ কথাও প্রতিবেদিত হয়েছিল যে, সুনাক আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘আরও নিবিড় ভাবে একসঙ্গে কাজ করা’র সুযোগগুলিকে স্বাগত জানান। দু’জন চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিরোধ নিয়ে বিদ্যমান আলোচনা সম্পর্কে কথোপকথন চালিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর সার্বভৌমত্বের প্রেক্ষিতে মরিশাসের লড়াই কি অন্তিম পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে?

সূত্র: ব্রিটানিকা এনসাইক্লোপিডিয়া, Britannica.com

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?

চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ভারত মহাসাগরের মাঝখানে প্রায় ৫৮টি ক্ষুদ্র, অত্যন্ত নিচু দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। জোয়ারের উচ্চতা এবং স্থানান্তরিত বালির তীরের সঙ্গে সঙ্গে দ্বীপের সংখ্যাও পরিবর্তিত হতে থাকে। আঠেরো শতকের পর থেকে অঞ্চলটি ঔপনিবেশিক দখলে ছিল, স্বল্প সময়ের জন্য ওলন্দাজদের অধীনে এবং পরবর্তী সময়ে ফরাসিদের। এই সময়ের মধ্যে সেই অঞ্চলের স্থানীয় গাছগাছালিকে নারকেল গাছের বাগান দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়। বর্তমান চাগোসিয়ানরা মূলত সেই সব বলপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা শ্রমিকদের বংশধর, যাঁদের তৎকালীন জনবসতিহীন দ্বীপে বাগানে কাজ করার জন্য আনা হয়েছিল। ১৮১৪ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে (যা নেপোলিয়নিক যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায়) টোবাগো এবং সেন্ট লুসিয়ার মতো আরও কিছু ফরাসি উপনিবেশের সঙ্গে মরিশাসকে ব্রিটেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৬৮ সালে স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত মরিশাস একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল।

যাই হোক উপনিবেশের সময় চাগোস দ্বীপপুঞ্জকে মরিশাসের অধীনস্থ হিসাবে বিবেচনা করা হত। এ ভাবে ১৯৬৫ সালে মরিশাস থেকে দ্বীপপুঞ্জের বিচ্ছিন্নতা এবং ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশান টেরিটরি (বিআইওটি) সৃষ্টি বর্তমান সঙ্কটের সূচনা করে। মরিশাস স্বাধীনতা অর্জনের আগের বছরগুলিতে ভারত মহাসাগরে ব্রিটিশ মালিকানাধীন দ্বীপগুলির একটিতে একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে গোপন আলোচনা চালায়। ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির পটভূমিতে সুয়েজের পূর্ব প্রান্ত থেকে ব্রিটিশদের প্রত্যাহার জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের বৃদ্ধি এবং ঠান্ডা লড়াইয়ের কারণে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত মহাসাগরে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বাধ্য করে।

ঘাঁটির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রয়োজনীয়তা ছিল। অঞ্চলটি কৌশলগত ভাবে অবস্থিত হতে হবে, এটির আড়ি পাতা এবং যোগাযোগ কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, একই সঙ্গে এটি তুলনামূলকভাবে গোপন থাকবে, জনবসতিহীন হলে সবথেকে ভাল, এবং এটিতে পৌঁছনো সহজ হবে না।

ঘাঁটির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রয়োজনীয়তা ছিল। অঞ্চলটি কৌশলগত ভাবে অবস্থিত হতে হবে, এটির আড়ি পাতা এবং যোগাযোগ কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। একই সঙ্গে এটি তুলনামূলকভাবে গোপন থাকবে, জনবসতিহীন হলে সবথেকে ভাল এবং এটিতে পৌঁছনো সহজ হবে না। যেহেতু দিয়েগো গার্সিয়া, যা চাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি অংশ, এই সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে, তাই এমনটা অনুমান করা হয়েছিল যে, স্থানীয় জনগণকে সহজেই ক্ষতিপূরণ দিয়ে সেখান থেকে সরানো যেতে পারে।

আলোচনার শেষে এ বিষয়েও সহমত হয়েছিল যে, ব্রিটেন ‘জমি অধিগ্রহণ, জনসংখ্যা পুনর্বাসন এবং নিজেদের খরচে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে; অন্য দিকে নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত খরচের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দায়বদ্ধ থাকবে।’ এ ব্যাপারেও সহমত পোষণ করা হয়েছিল যে, ব্রিটিশ সরকার ‘মরিশাস থেকে দিয়েগো গার্সিয়া এবং চাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য দ্বীপের প্রশাসন হস্তান্তরের সম্ভাব্যতা্র দ্রুত মূল্যায়ন করবে।”

সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, cia.gov

১৯৬৫ সালে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিচ্ছিন্নতা

সেই সময় থেকে ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রকের একটি স্মারকলিপি দর্শিয়েছে, ব্রিটিশরা বিশ্বাস করত যে চাগোস দ্বীপপুঞ্জকে তার স্বাধীনতার আগে মরিশাস থেকে বিচ্ছিন্ন করা, সেটিকে সরাসরি ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে রাখা ভারত মহাসাগরে ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের স্বার্থের জন্যই সর্বোত্তম হবে। একই নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মরিশাসের সম্মতি ছাড়া এমনটা করলে তা রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে সমালোচনার কারণ হয়ে উঠবে।

ফিলিপ স্যান্ডস (মরিশাসের এইচআর আইনজীবী ও কাউন্সেল) তাঁর বই ‘দ্য লাস্ট কলোনি’তে ব্রিটেন এবং মরিশাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার সময় ব্যবহৃত চাপের কৌশলগুলির বিবরণ দিয়েছেন। ব্রিটিশ প্রাইম মিনিস্টার হ্যারল্ড উইলসন যখন মরিশাসের প্রিমিয়ার স্যার সিউসাগর রামগুলামের সঙ্গে দেখা করেন, তখন উইলসনের জন্য তৈরি করা একটি সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছিল যে, ‘উদ্দেশ্য হল তাঁকে আশা দিয়ে ভয় দেখানো। আশা, তিনি স্বাধীনতা পাবেন। আর তাঁর জন্য আশঙ্কা, তিনি চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ছাড়তে রাজি না হলে স্বাধীনতা নাও পেতে পারেন।’ সংক্ষিপ্ত বিবরণে আরও বলা হয়েছে, ‘তাই প্রাইম মিনিস্টার তির্যক যুক্তি দিতে পারেন যে, হিজ ম্যাজেস্টির গভর্নমেন্টের হাতে মরিশাসের সম্মতি ছাড়াই অর্ডার-ইন-কাউন্সিল দ্বারা চাগোসকে বিচ্ছিন্ন করার আইনি অধিকার থাকলেও তা একটি গুরুতর পদক্ষেপ হবে।’

১৯৬৮ সালে মরিশাস স্বাধীন হলে, স্বাধীনতার তিন বছর আগে ১৯৬৫ সালে মরিশাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেন চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সমর্থ হয়েছিল। ল্যাঙ্কাস্টার হাউস এগ্রিমেন্ট নামে পরিচিত চুক্তিটিতে এই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে, ‘ভূমির মালিকদের সরাসরি ক্ষতিপূরণ এবং চাগোস দ্বীপপুঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের মূল্যের উপরে মোট ৩ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মরিশাস সরকারকে প্রদান করা উচিত।’ এই চুক্তির বৈধতা তখন থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে যখন থেকে মরিশাস এই দাবি করেছে যে, তারা চাপের মুখে পড়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-এর (আইসিজে) উপদেষ্টা মতামতে বলা হয়েছে যে, ‘সেই সময়ে মরিশাসের প্রতিনিধিদের প্রকৃত আইন প্রণয়ন বা নির্বাহী ক্ষমতা ছিল না এবং এ ভাবে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির কথা বলা অসম্ভব। কারণ দ্বীপপুঞ্জের পৃথগীকরণ মরিশাসের জনগণের স্বাধীন ও প্রকৃত মতামতের ভিত্তিতে গড়ে ওঠেনি।’

বছরের পর বছর ধরে ব্রিটিশ সরকার চাগোস দ্বীপপুঞ্জ এবং সেই অঞ্চলের বাসিন্দাদের উপর তার সার্বভৌমত্বের দাবির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলা দু’টি দেশের সরকারের মধ্যে হলেও চাগোসিয়ানদের দ্বারা তাদের নিজ ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়ার অধিকার সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বেশি। এই সমস্যাটি ২০০০ সালে বিভাগীয় আদালত বা ডিভিশনাল কোর্ট, ২০০৬ সালে আপিল আদালত বা কোর্ট অফ অ্যাপিল এবং ২০০৮ সালে হাউস অফ লর্ডস-এর মতো একাধিক ব্রিটিশ আদালতে বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে। বিষয়টিকে ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস; ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ল অফ দ্য সি (আইটিএলওএস); ২০১৮ সালে আইসিজে এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ইউনাইটেড নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে (ইউএনজিএ) আনা হয়েছিল। বাস্তবে মরিশাস ১৯৮০-র দশক থেকে দ্বীপপুঞ্জের উপর ব্রিটিশ সার্বভৌমত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছে।

ব্রিটিশ নীতিতে পরিবর্তন

কয়েক দশক ধরে ব্রিটেন চাগোস গোষ্ঠীর উপর মরিশাসের সার্বভৌমত্বের দাবি এবং দ্বীপপুঞ্জে ফিরে যাওয়ার জন্য চাগোসিয়ানদের ইচ্ছার বিরোধিতা করছে। চাগোসিয়ানদের যে ভাবে বলপূর্বক দ্বীপপুঞ্জ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করার সময় ব্রিটিশ সরকার ধারাবাহিক ভাবে এ কথা বলে এসেছে যে, চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর হোয়াইট হলের সার্বভৌমত্বের মূল সূত্র ১৮১৪ সালের প্যারিস চুক্তিতে রয়েছে। তারা চাগোসিয়ানদের ফিরে যাওয়ার প্রচেষ্টাকে বাধা দিয়েছে, কৌশল পরিবর্তন করেছে এবং বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন কারণ দর্শিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্যতার ভিত্তি, ব্রিটিশ করদাতাদের খরচ, অঞ্চলটিকে একটি সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা বলে দাবি করা, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার কারণ এবং এ সবের দরুন শুধু মাত্র হেরিটেজ ভিজিটের যোগ্য বলে অনুমতি দেওয়া।

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিরোধ একটি বহু-স্তরীয়, জটিল, মর্মান্তিক এবং তবুও এক অসমাপ্ত আখ্যান যেটি মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, আন্তর্জাতিক আইন এবং আইনি মঞ্চের ভূমিকার পাশাপাশি সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অ-ঔপনিবেশকরণের যথাযথ সমাপ্তির বিষয়গুলিকে ছুঁয়ে যায়।

বর্তমানে ব্রিটেনের নীতিতে একটি উপলব্ধিযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসের আরও হিংসাত্মক ঘটনাক্রম উন্মোচনের মধ্যে এবং বার্বাডোসের মতো প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশগুলিতে ঔপনিবেশিকতা বিরোধী মনোভাবের মধ্যে ব্রিটেনের সফট পাওয়ার বা কূটনৈতিক ক্ষমতার ক্ষয়িষ্ণু প্রভাবকে প্রতিফলিত করে। যখন তারা ২০১৯ সালে ইউএনজিএ-তে তার নিষ্ঠুরতম পরাজয়ের শিকার হয়েছিল, তার অনেক মিত্র দেশই তার স্বার্থের বিরুদ্ধে মতদান করে এবং একটি অপ্রতিরোধ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মরিশাসকে সমর্থন জোগায়, তখন ব্রিটেন অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যতের আঁচ পেয়েছিল। আইসিজে এবং ইউএনজিএ-র মতামতগুলি বাধ্যতামূলক নয়, এ কথা বললেও ব্রিটিশ সরকার ব্রেক্সিট-পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থায় স্বীকার করে নিয়েছে যে, তারা যে প্রধানত ইউএন, আইসিজে ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতের বিরুদ্ধে এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ ভাবে আন্তর্জাতিক আইন ও একটি নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করছে, এই ধারণা বা আখ্যান আসলে সমস্যাযুক্ত এবং অবাঞ্ছিত।

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিরোধ একটি বহু-স্তরীয়, জটিল, মর্মান্তিক এবং তবুও এক অসমাপ্ত আখ্যান যেটি মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, আন্তর্জাতিক আইন এবং আইনি মঞ্চের ভূমিকার পাশাপাশি সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অ-ঔপনিবেশকরণের যথাযথ সমাপ্তির বিষয়গুলিকে ছুঁয়ে যায়। এই গল্পের দু’টি প্রধান পটভূমি হল মরিশাস থেকে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিচ্ছিন্নতা এবং পরবর্তী কালে দ্বীপগুলি থেকে চাগোসিয়ানদের অপসারণ। প্রথমটি দু’টি সরকারের মধ্যে সার্বভৌমত্বের জন্য একটি লড়াইয়ের দিকে চালিত করেছে এবং দ্বিতীয়টি এক বৃহৎ জনসংখ্যার উপর সংঘটিত একটি অবিচার। উভয় পদক্ষেপই দিয়েগো গার্সিয়াতে ব্রিটেন / মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের ইচ্ছার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। ব্রিটেন এবং মরিশাসের মধ্যে সার্বভৌমত্বের আলোচনা চলাকালীন ব্রিটেন সকল সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু দিয়েগো গার্সিয়ার কৌশলগত গুরুত্বের কারণে মরিশাস তার সার্বভৌমত্বের দাবিতে জয়ী হলেও চাগোসিয়ানদের ফিরে যেতে দেওয়া হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মরিশাসের জন্য পরপর আদালতে জয়লাভের ঘটনা সত্ত্বেও বাস্তবতা এখনও অপরিবর্তিতই রয়েছে।


বিনীতা রেভি ওআরএফ-চেন্নাইয়ের একজন ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কলার।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.