Published on Mar 11, 2023 Updated 2 Days ago

কপ২৭ ভারতকে জলবায়ু ন্যায়বিচারে নেতৃত্ব দিতে এবং জি২০ সভাপতিত্বের সময় তার জলবায়ু কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি মঞ্চ রূপে সাহায্য করতে পারে

ভারত কি কপ২৭-এ ন্যায়বিচারের কর্মসূচি পরিচালনা করতে সক্ষম?

এই প্রতিবেদনটি কমন বাট ডিফারেনশিয়েটেড রেসপন্সিবিলিটি: ফাইন্ডিং ডিরেকশন ইন কপ২৭ সিরিজের একটি অংশ


এক দিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সম্পর্কে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং অন্য দিকে জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে একটি শক্তিশালী ইতিবাচক সম্পর্ক বিদ্যমান। এই তথ্য থেকে তা আরও ভাল বোঝা যায়, বর্তমানে চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ভারত বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। গ্রুপ অফ টোয়েন্টি (জি২০) দেশগুলি বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশের জন্য দায়ী। শীর্ষ ১০টি নির্গমনকারী দেশের মধ্যে ন’টি জি২০ গ্রুপের অন্তর্গত উন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতির আওতায় পড়ে। এর মধ্যে উপরে উল্লিখিত শীর্ষ চারটি নির্গমনকারী দেশও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অন্যান্য নির্গমনকারী দেশের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, জাপান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এবং কানাডা।

জলবায়ু কর্মসূচির জন্য দায়িত্ববণ্টন সিবিডিআর নীতি অনুযায়ী মূল্যায়নের ভিত্তিতে হলে ভাল হয়, কারণ এই মূল্যায়ন ঐতিহাসিক নির্গমনের দায়ভাগ হিসাবে রাখে।

ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলির মধ্যে তৃতীয় হলেও কমন বাট ডিফারেনশিয়েটেড রেসপন্সিবিলিটিজ-এর (সিবিডিআর) দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের ফলাফল মূল্যায়ন এক সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করে। যেহেতু এই ধরনের মূল্যায়নগুলি ঐতিহাসিক নির্গমনের দায়ভাগ, জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও মানবোন্নয়নের স্তর—এগুলিকে হিসাবে রাখে এবং অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও দূষণহীন রূপান্তরকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম এহেন বৈজ্ঞানিক দক্ষতার উপর নির্ভর করে, তাই জলবায়ু কর্মসূচির জন্য দায়িত্ববণ্টন সিবিডিআর নীতি অনুযায়ী মূল্যায়নের ভিত্তিতে হলে ভাল হয়।

উন্নয়নের পথ এবং জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মোদ্যোগ: জলবায়ু ন্যায়বিচারের ধারণা

অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি আসন্ন প্রতিবেদনে সিবিডিআর নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত জি২০ দেশগুলির জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মোদ্যোগ মূল্যায়ন করার  চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি নিম্নলিখিত সূচকগুলিকে সংশ্লেষ করে জলবায়ু কর্মক্ষমতার সূচক তৈরি করে: জীবাশ্ম জ্বালানি দহন থেকে মাথাপিছু কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন, মাথাপিছু নন-কার্বন জিএইচজি নির্গমন, বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার তুলনায় বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান কার্বন নির্গমনের মোট অংশ, উত্পাদনের শক্তি দক্ষতা, মোট সর্বশেষ শক্তি ব্যবহারের অংশ হিসেবে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার, জলবায়ু নীতির প্রসার, বৃদ্ধির কার্বনমূল্য, কার্বন অসাম্যের থেইল সূচক, ২০০০ ওয়াটের তুলনায় মাথাপিছু শক্তি ব্যবহারের হার, জলবায়ু পরিবর্তনকারী ভূমি আবরণে শতাংশের পরিবর্তন এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী ভূমি আবরণের শতাংশের পরিবর্তন।

জীবাশ্ম জ্বালানি এবং শিল্প প্রক্রিয়া থেকে নিঃসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইড  জিএইচজি নির্গমনের সংমিশ্রণে প্রধান ভূমিকা নিলেও ভূমি ব্যবহারের মতো খাত থেকে অ-কার্বন জিএইচজি নির্গমনের বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি এবং একটি বৃহত্তর প্রাথমিক ক্ষেত্রবিশিষ্ট দেশগুলির জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, জলবায়ু কর্মোদ্যোগের মূল্যায়নে এই উভয় নির্গমনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। জলবায়ু ন্যায়বিচারের নীতিটি এই দাবি করে যে, দেশগুলিকে মোট নির্গমনের পরিবর্তে মাথাপিছু নির্গমন স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে তুলনা করা উচিত। বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অংশের তুলনায় বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান কার্বন নির্গমনের অংশ জনসংখ্যার পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি দেশের ঐতিহাসিক নির্গমনের তথ্য প্রদান করে, যে জনসংখ্যার প্রয়োজনীয়তা সেই নির্গমনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছিল। যেমন এই সূচকটি বৈশ্বিক উষ্ণায়নে একটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি অবদানের পরিমাপ স্বরূপ। মোট চূড়ান্ত খরচের একটি অংশ হিসাবে উত্পাদনের শক্তি দক্ষতা এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি দূষণহীন পরিবর্তনের গতি বৃদ্ধিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের রূপান্তর হল চূড়ান্ত ভাবে শক্তির ব্যবহারকে এবং বর্ধিত অভিযোজনে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিগুলিকে কাজে লাগানো।

বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অংশের তুলনায় বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান কার্বন নির্গমনের অংশ জনসংখ্যার পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি দেশের ঐতিহাসিক নির্গমনের তথ্য প্রদান করে, যে জনসংখ্যার প্রয়োজনীয়তা সেই নির্গমনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছিল।

জলবায়ু নীতি প্রসার মূল্যায়ন করে যে, নীতির একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা ছ’টি প্রধান ক্ষেত্র জুড়ে রয়েছে কিনা। যথা – কৃষি ও বন, স্থলপরিবহণ, ভবন, শিল্প, বিদ্যুৎ এবং তাপ এবং পাঁচটি প্রশমন ক্ষেত্রের লক্ষ্যে গৃহীত সাধারণ জলবায়ু কর্ম হল: শক্তির চাহিদা এবং সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতার পরিবর্তন; শক্তির দক্ষতা; পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি; অন্যান্য নিম্ন কার্বন প্রযুক্তি এবং জ্বালানিচালিত অ-শক্তি সম্পর্কিত নির্গমন।

বৃদ্ধির কার্বন ব্যয় কার্বন নির্গমনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যয়কেই পরিমাপ করে। কার্বন নিঃসরণ থেকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে পৃথক রাখা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বিশ্ব উষ্ণায়ন ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশগুলির দ্বারা প্রতিশ্রুত শূন্য-নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্যও তা জরুরি। বৃদ্ধির একটি নেতিবাচক কার্বন মূল্য সম্পূর্ণ পৃথগীকরণকেই দর্শায়। বৃদ্ধির একটি ইতিবাচক কার্বন মূল্য, যা এককের চেয়ে কম, তা আপেক্ষিক পৃথগীকরণকে দর্শায়। এবং একের অধিক বৃদ্ধির ইতিবাচক কার্বন মূল্য কোনও পৃথগীকরণকেই দর্শায় না।

থেইল-এর কার্বন বৈষম্যের সূচক হল ভোগ-ভিত্তিক নির্গমনে দেশের অভ্যন্তরীণ অসমতার পরিমাপ। এই সূচকটি শক্তি লভ্যতার অসাম্যের উপর আলোকপাত করে, যা আয় বৈষম্যকেই প্রতিফলিত করে। অন্য দিকে, ২০০০ ওয়াটের সাপেক্ষে মাথাপিছু শক্তি ব্যবহারের হার ২০০০ ওয়াটের সীমার ঊর্ধ্বে অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহারের পরিমাপ করে, যা বিশ্বব্যাপী গড়ের বেশ কাছাকাছি। এই সূচকটি শক্তির লভ্যতার নিরিখে দেশগুলির মধ্যে বিদ্যমান অসাম্যেরই সূচক।

জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী ভূমি আবরণের শতকরা পরিবর্তন ভূমি আবরণের পরিবর্তনকে পরিমাপ করে, যা বিশ্বব্যাপী জিএইচজি ঘনত্ব এবং গ্রিনহাউস প্রভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তনকারী ভূমি আবরণের শতকরা পরিবর্তন ভূমি আবরণের পরিবর্তনকে পরিমাপ করে, যা বৈশ্বিক জিএইচজি ঘনত্ব ও বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে জড়িত জৈব-ভূ রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

জলবায়ু নীতির প্রসার এবং জলবায়ু পরিবর্তনকারী ভূমি আবরণ সম্পর্কিত কর্মোদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি জি২০ দেশগুলির মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

ভারতের কাহিনি: কপ২৭-এর উল্লেখযোগ্য দিক এবং অগ্রাধিকার

জলবায়ু কর্মোদ্যোগ সূচকের পরিপ্রেক্ষিতে জি২০ সদস্যদের মধ্যে ভারত অগ্রগণ্য দেশ রূপে উঠে এসেছে, যা উপরে উল্লিখিত সূচকগুলির উপর নির্ভরশীল। নিম্নলিখিত সূচকগুলির পরিপ্রেক্ষিতে ভারত জি২০ সদস্যদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে: জীবাশ্ম জ্বালানি দহন থেকে মাথাপিছু কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন, মাথাপিছু অ-কার্বন জিএইচজি নির্গমন, বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অংশের তুলনায় বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান কার্বন নির্গমনের অংশ, ২০০০ ওয়াটের তুলনায় মাথাপিছু শক্তি ব্যবহারের হার এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী ভূমি আবরণে শতাংশের পরিবর্তন। মোট চূড়ান্ত শক্তি ব্যবহারের অংশ হিসাবে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত কার্যক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারত জি২০ সদস্যদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। জলবায়ু নীতির প্রসার এবং জলবায়ু পরিবর্তনকারী ভূমি আবরণ সম্পর্কিত কর্মোদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি জি২০ দেশগুলির মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। বৃদ্ধির কার্বন ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত আপেক্ষিক পৃথগীকরণ অর্জন করেছে এবং অন্য জি২০ দেশগুলির তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে, যারা ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ  পৃথগীকরণ অর্জন করেছে। উৎপাদনের শক্তি দক্ষতার ক্ষেত্রেও ভারতের কর্মক্ষমতা উন্নতির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

উপরে উল্লিখিত সূচকগুলি জলবায়ু কর্মোদ্যোগের বিভিন্ন মাত্রা উপস্থাপন করে, কারণ তা সিবিডিআর নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই বিভিন্ন মাত্রায় ভারতের কর্মক্ষমতা কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে তার অবস্থান কী হওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করে। স্পষ্টতই, ভারত সিবিডিআর নীতির বিভিন্ন মাত্রা অনুসরণ করার কথা বিবেচনা করতে পারে, যা এখনও জলবায়ু সংলাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। প্রথমত, উন্নত বিশ্ব শুধু যে ঐতিহাসিক ভাবে কার্বন বাজেটকে কাজে লাগিয়েছে তা-ই নয়, কার্বন বাজেটের বর্তমান ব্যয়ও উন্নত বিশ্বের পক্ষে তির্যক বলে প্রমাণিত  হয়েছে। জলবায়ু ন্যায়বিচারের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি কেবলমাত্র ন্যায্য যে, অবশিষ্ট কার্বন বাজেটের একটি বড় অংশ উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য বরাদ্দ করা হবে, কারণ উন্নয়নের জন্য শক্তির লভ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। কপ২৭  শীর্ষ সম্মেলনে ভারত এই প্রস্তাব পেশ করতে পারে। উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি ন্যায্য কার্বন বাজেট বরাদ্দ করা এই ন্যায্য বরাদ্দ প্রতিফলনকারী জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের বা ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (এনডিসি)-এর পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত।

ভারতীয় উদ্যোগটি একটি উদাহরণ হিসাবেও দর্শানো যেতে পারে যে, কীভাবে আচরণগত ধাক্কা জলবায়ু কর্মসূচিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকর করে তুলতে পারে।

দ্বিতীয়ত, ভারত এবং রাষ্ট্রপুঞ্জ সম্প্রতি যৌথ ভাবে মিশন লাইফ (লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট অর্থাৎ পরিবেশের জন্য জীবনধারা) চালু করেছে, যা এসডিজি১২ অর্থাৎ স্থিতিশীল ব্যবহার ও উৎপাদনে অন্তর্নিহিত। এটি পণ্য এবং শক্তির সীমিতকরণ এবং সামগ্রিকভাবে মোট অত্যধিক ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। ভারত কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে অন্য দেশগুলির মধ্যে মিশন লাইফের জন্য বৃহত্তর সমর্থন এবং গ্রহণের পক্ষে সওয়াল করতে পারে।  মিশন লাইফ নিঃসন্দেহে ভারত এবং গ্লোবাল সাউথের অন্যান্য একাধিক ভোগচালিত অর্থনীতি বৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং জলবায়ু কর্মোদ্যোগের মধ্যে একটি অন্তর্নিহিত ‘দ্বিত্ব’কে উপস্থাপন করে। তাই ভারতকে তার অগ্রাধিকারগুলিকে সচেতনভাবে পরিচালনা করতে হবে যাতে এই উদ্যোগটি দীর্ঘমেয়াদে সফল এবং স্থিতিশীল হয়। ভারতীয় উদ্যোগটি একটি উদাহরণ হিসাবেও দর্শানো যেতে পারে যে, কীভাবে আচরণগত ধাক্কা জলবায়ু কর্মসূচিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকর করে তুলতে পারে। মিশন লাইফ বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক, আর্থিক, নিয়ন্ত্রক এবং প্রযুক্তিগত বাস্তুতন্ত্রের উন্নয়নে সহায়তা করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রশাসনকে কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে, সে সম্পর্কে ভারত একটি আলাপ-আলোচনা শুরু করতে পারে।

তৃতীয়ত, কার্বন বৈষম্য দ্বারা নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত দেশগুলির কথাও জলবায়ু নীতি গ্রহণের সময়ে বিবেচনা করা দরকার। প্রকৃতপক্ষে, যে নীতিগুলি তা করতে ব্যর্থ হয়, সেগুলি জনসংখ্যার দরিদ্র অংশের উপর উন্নয়নের অভাবের বোঝা চাপিয়ে দিতে পারে। দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির জন্য জলবায়ু কর্মসূচি বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রণয়ন করা উচিত নয়। জলবায়ু নীতির এই দৃষ্টিকোণটি কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থাপন করা যেতে পারে।

সর্বোপরি, উন্নয়নশীল দেশগুলির জলবায়ু অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, জ্ঞানের বিতরণ এবং সবুজ প্রবৃদ্ধি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম অনুশীলনের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রয়োজন এবং এর ফলে বৃদ্ধির কার্বন ব্যয় হ্রাস করাও সম্ভব। ভারত কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলির দিকে এই ধরনের সহায়তা প্রসারিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করতে পারে।

কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলন ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব গ্রহণের মাত্র এক মাস আগে শেষ হয়েছে। উপসংহারে বলা চলে, ভারত তার জলবায়ু কর্মসূচির উদ্বোধন করতে কপ২৭ শীর্ষ সম্মেলন ব্যবহার করতে পারে এবং তার জি২০ সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাকে জোরদার করতে পারে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Renita D'souza

Renita D'souza

Renita DSouza is a PhD in Economics and was a Fellow at Observer Research Foundation Mumbai under the Inclusive Growth and SDGs programme. Her research ...

Read More +
Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar is a Junior Fellow with the SDGs and Inclusive Growth programme at the Centre for New Economic Diplomacy at Observer Research Foundation, India. ...

Read More +