পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর তীরের রাজ্যগুলি এখন অভূতপূর্ব জলের সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ এক দীর্ঘকালীন ঐতিহাসিক খরা। সম্প্রতি ইউএস ব্যুরো অফ রেক্ল্যামেশন সরকারি ভাবে জানিয়েছিল হুভার বাঁধের লেক মীড এ জল খুব কমে গিয়েছে। এটি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় জলাধার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০৬৭ ফিট উচ্চতার এই লেকে জল আছে মেরেকেটে ৩৫%, যা ১৯৩০–এর দশকে এটি তৈরির পর থেকে সবচেয়ে কম। দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাধার লেক পাওয়েল–এ জলের স্তর রয়েছে পূর্ণ ক্ষমতার ৩২%। এই লেকটিও কলোরাডো নদীর জলে পুষ্ট। কলোরাডো নদী ব্যবস্থায় এত কম জলের প্রবাহ থাকার ফলে নিচের দিকে গ্লেন ক্যানিয়ন বাঁধ ও হুভার বাঁধ থেকে ২০২২ সালে জল ছাড়ার পরিমাণ অনেক কমে যাবে, কারণ জলাধারে বেশি জল থাকবে না।
এর ফলে কলোরাডো নদীর আরও নিচের দিকে অবস্থিত রাজ্যগুলি — যেমন ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা, নেভাডা — এবং তারও নিচে মেক্সিকো রাষ্ট্রের জন্য জল বণ্টন বাধ্যতামূলক ভাবে হ্রাস পাবে। ২০১৯ সালে খরা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি করা যুক্তরাষ্ট্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, লেক মিড থেকে আরিজোনার প্রাপ্য জল ১৮ শতাংশ কমে যাবে, আর নেভাডা রাজ্য ও মেক্সিকো রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা কমবে যথাক্রমে ৭% ও ৫%। এমনিতে নেভাডা ইতিমধ্যেই এই ঘাটতি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাধার লেক পাওয়েল–এ জলের স্তর রয়েছে পূর্ণ ক্ষমতার ৩২%। এই লেকটিও কলোরাডো নদীর জলে পুষ্ট।
এখানে খেয়াল করা দরকার, কলোরাডো নদী ব্যবস্থার দীর্ঘকালীন প্রবণতা থেকে এটা স্পষ্ট যে জলের পরিমাণ কমছে, আর তার জন্য অনেকটাই দায়ী মানুষের তৈরি করা জলবায়ুগত পরিবর্তন। ‘সায়েন্স’ পত্রিকার একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধে বলা হয়েছে, প্রতি এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কলোরাডো নদী ব্যবস্থার উপরের দিকে বার্ষিক গড় জলপ্রবাহ কমছে ৯.৩ শতাংশ। এর মূলে রয়েছে বরফ কমে যাওয়া এবং তার পরিণতিতে সূর্যের বিকিরণের প্রতিফলন কমতে থাকার কারণে বেড়ে–যাওয়া বাষ্পীভবন। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। বরং মার্ক রিজনারের ‘ক্যাডিলাক ডেজার্ট’ এবং ফিলিপ ফ্র্যাডকিনের ‘আ রিভার নো মোর’ এই নদীর উন্নয়নের অনেক ঐতিহাসিক বিবরণ তুলে ধরে, এবং সেই সঙ্গেই দেখিয়ে দেয় পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান জলের চাহিদা মেটাতে নদী নিয়ন্ত্রণে কাঠামোগত প্রকৌশলের এক দৃষ্টান্ত কত ভয়ঙ্কর দীর্ঘকালীন ঋণাত্মক প্রভাব ফেলেছে পরিবেশ ও জলের পরিমাণের উপর। জল সংরক্ষণের জন্য, জলধারা অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের নির্মাণকাজের ফলে নদীর মূল প্রবাহ খণ্ড খণ্ড হয়ে গেছে, এটাও দীর্ঘ মেয়াদে জল প্রবাহ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে কলোরাডো নদী ব্যবস্থায় জল কমে যাওয়ার প্রবণতা বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন ও জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে এখন আরও খারাপ ও অনিশ্চিত অবস্থায় পৌঁছেছে।
অনেক দিন ধরেই পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানা ধরনের নিয়মবিধির মাধ্যমে চাহিদা মোকাবিলার চেষ্টা করেছে। এর শেষতম উদাহরণ ২০১৯ সালে নেওয়া ব্যবস্থা, যার উল্লেখ আগেই করা হয়েছে। তবে সবথেকে চিত্তাকর্ষক ব্যবস্থাটি তৈরি হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে, যখন সিএমই গোষ্ঠী ও ন্যাসড্যাক নিয়ে আসে ন্যাসড্যাক ভেলেস ক্যালিফোর্নিয়া ওয়াটার ইন্ডেক্স ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট (ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট হল সম্পদের জন্য এক বিশেষ চুক্তি যা মূলত পণ্য বা শেয়ারের সম্মত মূল্যে কেনা হয় কিন্তু বিতরণ করা এবং পরিশোধ করা হয় পরে)। এই ডেরিভেটিভ কন্ট্রাক্টটি ক্যালিফোর্নিয়ার কথা ভেবে তৈরি, যেখানে ২০১৯–২০ সালে ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থের সহজে–বিনিময়যোগ্য ও চাঙ্গা প্রকৃত জল–বাজার ছিল (ডেরিভেটিভ হল দুটি পক্ষের মধ্যে এমন এক চুক্তি যা সম্পদের অন্তর্নিহিত মূল্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এখানে সম্পদ স্টক, বন্ড, পণ্য, মুদ্রা, সুদের হার, সূচক ইত্যাদিও হতে পারে)। এই ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট ব্যবস্থাটি প্রকৃত বাজারের ভিত্তিভূমির উপরে দাঁড়িয়ে আছে এই ন্যাসড্যাক ভেলেস ক্যালিফোর্নিয়া ওয়াটার ইন্ডেক্স–এর মাধ্যমে। এটি একটি মূল্যসূচক যেখানে ক্যালিফোর্নিয়ার পাঁচটি সবচেয়ে সহজে–বিনিময়যোগ্য জল-বাজারে জলের দামের ভিত্তিতে জলের পরিমাণ–নির্ভর গড় দাম নির্ধারিত হয়। প্রকৃত বাজারে ডেলিভারির ক্ষেত্রে যা ঘটে তার পরিবর্তে ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট টাকাপয়সা আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়, আর তার ফলে ডেলিভারি–সহ সব ক্ষেত্রেই লেনদেন খরচ কম হয় এবং ব্যবস্থাপনা ভাল হয়।
প্রতি এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কলোরাডো নদী ব্যবস্থার উপরের দিকে বার্ষিক গড় জলপ্রবাহ কমছে ৯.৩ শতাংশ। এর মূলে রয়েছে বরফ কমে যাওয়া এবং তার পরিণতিতে সূর্যের বিকিরণের প্রতিফলন কমতে থাকার কারণে বেড়ে–যাওয়া বাষ্পীভবন।
ওয়াটার ফিউচারস মার্কেটের সুবিধা
ওয়াটার ফিউচার্স মার্কেট (ডব্লিউ এফ এম)–এর অনেকগুলো সুফল থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, জলের ফিউচার মার্কেট প্রকৃত দাম নির্ধারণ করতে পারবে (সম্পদের দুষ্প্রাপ্যতা মূল্যের মাধ্যমে)। তার ফলে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হবে। এই ভাবে বরাদ্দের যথাযথ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ও সুষম বণ্টনে বাজার সাহায্য করবে, এবং সেই সঙ্গেই সামাজিক ভাবে ভোগ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনুকূল অবস্থা তৈরি হবে। দ্বিতীয়ত, ওয়াটার ফিউচার্স কন্ট্র্যাক্ট ভবিষ্যতে সঞ্চিত জলের দাম নির্ধারণের সূচক হয়ে উঠবে, এবং তার ফলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া বা ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সুফল পাওয়া যাবে। তৃতীয়ত, ফিউচার্স মার্কেটে যে দাম পাওয়া যাবে তা ভবিষ্যতে কতটা সম্পদ পাওয়া যাবে তার একটা সূচক হয়ে উঠবে, যার দৌলতে চাহিদার তুলনায় কতটা দুষ্প্রাপ্যতা রয়েছে তা বোঝা যাবে। সেই অর্থে দেখলে যাকে বলা হয় জলের দুষ্প্রাপ্যতা মূল্য তা এই দক্ষ ফিউচার্স মার্কেট প্রতিফলিত করবে। অর্থাৎ দুষ্প্রাপ্যতার কারণে প্রান্তিক মূল্যহ্রাসের পরিমাণ স্পষ্ট হবে। চতুর্থত, এই বাজারকে (অথবা এই বাজারের কারণে প্রাপ্ত পণ্যসমূহ) ব্যবহার করে সেচনির্ভর বা বৃষ্টিনির্ভর কৃষি (যা নির্ভরশীল কতটা জল পাওয়া যাবে তার উপর) ওয়াটার ফিউচার্স মার্কেটে দাম বেঁধে দিয়ে খরা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারবে। এই ভাবে বেসরকারি ক্ষেত্রে ঝুঁকি স্থানান্তর হয়ে গেলে সরকারকে এখন খরাত্রাণে যে খরচ করতে হয় তা অনেক কমে যাবে। পঞ্চমত, ওয়াটার ফিউচার্স নিয়ে আসবে সেই আর্থিক ব্যবস্থা যা বিনিয়োগকারীদের এবং ব্যাঙ্কগুলিকে গ্রামীণ ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিনিয়োগ করার পথ খুলে দেবে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের সূচনা হবে, আর তার মাধ্যমে শুধু দুষ্প্রাপ্যতার বিরুদ্ধে বিমার পরিবর্তে যে সব জায়গায় প্রয়োজন সেখানে জল পৌঁছে যাবে। ওয়াটার ফিউচার্স মার্কেট ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক মধ্যস্থ সংস্থাগুলিও ক্রেতাদের উপযোগী আরও অনেক পণ্য তৈরি করতে পারবে। ষষ্ঠত, ওয়াটার ফিউচার্স মার্কেট জলের সবচেয়ে দক্ষ ব্যবহারের উপযোগী প্রযুক্তি তৈরিতে সাহায্য করবে। সপ্তমত, মার্কেটে যে দাম পাওয়া যাবে তা ন্যায়সঙ্গতি ও সীমিত বাজেটের মধ্যে সংরক্ষণের অগ্রাধিকারগুলি চিহ্নিত করার পদ্ধতি হয়ে উঠবে। কাজেই এই প্রত্যাশা রয়েছে যে ফিউচার্স মার্কেট যোগান ও চাহিদার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারবে, দামের ঝুঁকিকে স্থিতিশীল করতে পারবে, এবং সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারবে।
শুধু ক্যালিফোর্নিয়ায় কেন
সাম্প্রতিক পদক্ষেপসমূহ যথেষ্ট নিশ্চয়তার সঙ্গে কলোরাডো নদী ব্যবস্থায় জলের যোগান কতটা থাকবে তা আগাম বলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। এখানে চেষ্টা করা হচ্ছে জলের প্রাপ্যতা সম্পর্কে ঝুঁকির অবসান ঘটায় না এমন একটি জলবায়ু মডেল ব্যবহার করে একটি দশকব্যাপী স্থিতিশীল পূর্বাভাসের ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এইটাই হল একটা ওয়াটার ফিউচার্স মার্কেটের প্রকৃত উপযোগিতা। কিন্তু এখন যে ভাবে সব কিছু ভাবা হয়েছে তাতে ওয়াটার ফিউচার্স মনে হচ্ছে শুধুমাত্র ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য তৈরি, এবং এই সূচকটি পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য জায়গায় পরিস্থিতি কী তা সূচিত করবে না। অথচ এই খরার সমস্যাটিকে সঠিক ভাবেই বলা হয়েছে ‘পুরো নদী উপত্যকাব্যাপী সাধারণ আঞ্চলিক’ সমস্যা। বিভিন্ন মাত্রায় হলেও এটি সব কটি রাজ্যের, সব কটি ক্ষেত্রের এবং সব অংশীদারদেরই ক্ষতি করছে। সেই অর্থে সব কটি রাজ্যেরই এই ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন। আরও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল যে হেতু দুষ্প্রাপ্যতার মাত্রা স্থানবিশেষে ভিন্ন, তাই প্রয়োজন প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব প্রয়োজনের নিরিখে ফিউচার্স মার্কেট তৈরি করা। অতএব বাজারের দামে যদি দুষ্প্রাপ্যতা মূল্যের প্রতিফলন ঘটবে বলে ধরে নেওয়া হয়, তা হলে বিশেষ ভাবে ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য তৈরি কোনও কন্ট্রাক্ট মোটেই আপার কলোরাডোর, এমনকি নেভাডা বা আরিজোনার খরা পরিস্থিতিকেও সঠিক ভাবে প্রতিফলিত করবে না।
শুখা মরসুমে বা সেচের মাধ্যমে ধানচাষের ক্ষেত্রে ডব্লিউএআই ও দুষ্প্রাপ্যতা মূল্যের পারস্পরিক গুণাঙ্ক ছিল -০.৯২, যা যথেষ্ট বেশি। কিন্তু সেইটাই ভরা বর্ষার মরসুমে ধানচাষের ক্ষেত্রে ছিল -০.৬৫।
আরও বৃহত্তর ব্যবহারের জন্য
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, সেই পরিস্থিতিতে কী হবে যেখানে প্রকৃত জলের বাজার নেই? তা হলেও কি সেখানে একটা ডেরিভেটিভস মার্কেট থাকতে পারে? এই প্রশ্নটা শুধু পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রাসঙ্গিক এমন নয়। সেখানে ইতিমধ্যেই জলের প্রকৃত বাজার আছে, আর সেখানে ক্যালি্ফোর্নিয়ার মূল্যসূচকের ভিত্তিতে ট্রেডিং হয়। প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক পৃথিবীর সব জলসঙ্কটাপন্ন অর্থনীতির ক্ষেত্রে, যেখানে জলের প্রকৃত বাজার নেই। এই প্রশ্নটার উত্তর এর আগে একটা গবেষণাপত্রে দেওয়া হয়েছে, যেখানে ভারতের কাবেরী নদী উপত্যকার কর্নাটক রাজ্যের বিভিন্ন জলাধারে কতটা জল পাওয়া যাচ্ছে (ডব্লিউএআই) তার ভিত্তিতে একটা সূচক তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে ধানচাষের জন্য জলের দুষ্প্রাপ্যতা মূল্য কী হবে তার হিসাব কষা হয়েছিল, এবং তা থেকে যা পাওয়া গিয়েছিল তা চিত্তাকর্ষক এবং একই সঙ্গে দুষ্প্রাপ্যতা মূল্যের অর্থনৈতিক যৌক্তিকতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। শুখা মরসুমে বা সেচের মাধ্যমে ধানচাষের ক্ষেত্রে ডব্লিউএআই ও দুষ্প্রাপ্যতা মূল্যের পারস্পরিক গুণাঙ্ক ছিল -০.৯২, যা যথেষ্ট বেশি। কিন্তু সেইটাই ভরা বর্ষার মরসুমে ধানচাষের ক্ষেত্রে ছিল -০.৬৫। ঋণাত্মক পারস্পরিক গুণাঙ্ক স্বাভাবিক। জলের প্রাপ্তি বা ডব্লিউএআই বেশি হওয়ার অর্থ দুষ্প্রাপ্যতা মূল্য কম। এমনকি শুখা মরসুমের বা ধানের উচ্চতর ঋণাত্মক পারস্পরিকতাও স্বতঃসিদ্ধ। এটা পুরোপুরি নির্ভরশীল সেচের উপর, আর সেই জন্যই সেচের উপর নির্ভরশীল নয় এমন বর্ষার ধানের থেকে যেখানে দুষ্প্রাপ্যতা বেশি সেখানে ডব্লিউএআই নিম্নতর হবে। এই গবেষণায় দেখা গেছিল ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে ডব্লিউএআই ছিল ০.৮ থেকে ০.৯–এর মধ্যে, আর দুষ্প্রাপ্যতা মূল্য ছিল প্রতি ঘন মিটারে ০.৪ থেকে ০.৬ ভারতীয় টাকা। উপত্যকায় যে বছর খরা হয়েছিল সেই ১৯৯৯ সালে ডব্লিউএআই পড়ে গিয়ে হয়েছিল ০.৭১–এর মতো, এবং সেই সঙ্গেই দুষ্প্রাপ্যতা মূল্য বেড়ে গিয়ে প্রতি ঘন মিটারে হয়েছিল ১.৩১ ভারতীয় টাকা। অতএব, এই সম্ভাবনা খুবই বেশি যে প্রকৃত বাজার না–থাকলেও ফিউচার্স মার্কেটকে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বাজারে দখলদারি বা মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব নিয়ন্ত্রিত করা যায়।
এখানে মনে রাখা প্রয়োজন যে ওয়াটার ফিউচার্স জলের দুষ্প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে একটি বাজারভিত্তিক বিমা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারে। অন্য ভাবে বললে, যদি কৃষকসমাজ, ব্যাঙ্ক, কৃষকদের ভাল রকম ঋণ দেয় এমন আর্থিক সংস্থা এবং ইনসিওরেন্স ও রিইনসিওরেন্স সংস্থাগুলির ঝুঁকি জলের উপলব্ধতার উপর নির্ভরশীল হয়, তা হলে জলের ফিউচার্স তাদের সকলের জন্যই হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ একটা রক্ষাকবচ। তারা ন্যূনতম লাভ নিশ্চিত করতে পারবে এবং খরাজনিত পরিস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবে এই ধরনের নগদে নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া ফিউচার্স কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.