কয়েক দশক ধরে মেরিল্যান্ডে অবস্থিত ক্যাম্প ডেভিড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের জন্য দুরূহ কূটনীতির একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট নর্ম্যান্ডি আক্রমণের পরিকল্পনা করার জন্য ১৯৪৩ সালের মে মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের সঙ্গে দেখা করার সময় থেকে ক্যাটোকটিন মাউন্টেন পার্কের পাথুরে পরিসরে অবস্থিত এই ক্যাম্পটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার প্রতীকী ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এখানে সবচেয়ে প্রতীকী ঘটনা ছিল ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড অ্যাকর্ডস, যখন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ১৩ দিনব্যাপী গোপন আলোচনার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাহেম বেগিন এবং মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আনোয়ার এল-সাদাতের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করতে সমর্থ হন।
এই বৈঠকের রাজনৈতিক ও প্রতীকী তাৎপর্য তিনটি দেশের নেতাদের মধ্যে এই প্রথম স্বতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলনকে দর্শায়।
১৮ অগস্ট আবার ক্যাম্পটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তরফে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সাধনের প্রধান ক্ষেত্র হয়ে ওঠে যখন তিনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি নতুন ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সবচেয়ে ঐতিহাসিক ভাবে চাপানউতোরের সম্পর্কে থাকা দু’টি দেশকে ফের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়। এই বৈঠকের রাজনৈতিক ও প্রতীকী তাৎপর্য তিনটি দেশের নেতাদের মধ্যে এই প্রথম স্বতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলনকে দর্শায়। তিনটি দেশের আধিকারিকরা ইতিমধ্যে ২০২২ সালে ৫০ বারের বেশি বৈঠক করেছেন এবং ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত ১৮টি বৈঠক হলেও ক্যাম্প ডেভিডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে প্রথম স্বতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন উদ্যোগকে গতিশীলতা প্রদান করার পাশাপাশি বাইডেন প্রশাসন উত্তর-পূর্ব এশীয় এবং বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে শক্তিশালী করার অন্বেষণকে প্রণোদনা জুগিয়েছে।
মার্কিন উদ্দেশ্য
তিন নেতার বৈঠক এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে মার্কিন নেতৃত্বের আলোচনার একই টেবিলে আনার বিষয়টি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট উপাদানগুলির ক্ষেত্রে তিনটি সদস্য দেশের মধ্যে একটি বার্ষিক বহুস্তরীয় অনুশীলন উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় সামরিক সহযোগিতাকে একত্র করবে এবং চিন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়াকে একটি অভূতপূর্ব উপায়ে এক ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট হিসেবে উপস্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ত্রিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতার কেন্দ্রীয় স্তম্ভটি একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার প্রতিশ্রুতি, বহু বছরব্যাপী ত্রিপাক্ষিক অনুশীলনের পরিকল্পনা, সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি ত্রিপাক্ষিক ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং তিনটি দেশের মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠিত হটলাইনের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটি সমন্বিত ও সময়োপযোগী প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
তিনটি দেশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বিষয়গুলির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটার জন্য একটি আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা নির্মাণে সম্মত হয়েছে, যা বৈঠকের মূল প্রবিধানের ভিত্তি নির্মাণ করেছে।
ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার অন্য উদ্দেশ্যটি হল ইন্দো-প্যাসিফিক সরবরাহ শৃঙ্খলে অনির্দেশ্যতা মোকাবিলা করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। তিনটি দেশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বিষয়গুলির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটার জন্য একটি আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা নির্মাণে সম্মত হয়েছে, যা বৈঠকের মূল প্রবিধানের ভিত্তি নির্মাণ করেছে। তিনটি দেশ একটি সাপ্লাই চেন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম পাইলট প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে এমনটা করতে ইচ্ছুক, যা অতিমারির মতো সঙ্কটের সময় সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই সঙ্গে সম্পর্কিত হল এই প্রতিশ্রুত সমর্থন, যে এই ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট-এর (পিজিআইআই) জন্য জি৭-এর নেতৃত্বাধীন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রসারিত হবে। পিজিআইআই ভাল অবকাঠামো এবং নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করার মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার আশা রাখে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দরিদ্র এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিকে আর্থিক বিকল্প প্রদান করবে, যাতে অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ঘাটতিগুলি মোকাবিলা করা যায় - বিশেষ করে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সহযোগিতামূলক গবেষণার ক্ষেত্রে। সম্ভবত, পিজিআইআই-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল দীর্ঘমেয়াদে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিআরআই-এর বিকল্প হয়ে ওঠার তার সম্ভাবনা। অবশেষে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা তিনটি সদস্য দেশের জাতীয় পরীক্ষাগারগুলির মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ ভাবে সমালোচনামূলক ও উদীয়মান প্রযুক্তির উপর মনোযোগ দিয়ে একটি অভূতপূর্ব সহযোগিতার পরিকল্পনা করে। এই উদ্যোগটি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে কোয়াড দেশগুলির মধ্যে কয়েকটি যুক্তির সঙ্গে সমাপতিত হয়, যা উভয়েরই মধ্যে আন্তঃ-গোষ্ঠীয় সহযোগিতার সমন্বয়ের একাধিক সুযোগ প্রদান করে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন এবং এই অঞ্চলে তাঁর প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের আশ্বস্ত করাই হয়ে উঠেছে তাঁর প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা তিনটি প্রধান উদ্যোগের মাধ্যমে তিন দেশের ইন্দো-প্যাসিফিক স্বার্থকে সমন্বিত করার চেষ্টা করেছে: পার্টনারস ইন দ্য ব্লু প্যাসিফিক, পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং ফ্রেন্ডস অব দ্য মেকং। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন এবং এই অঞ্চলে তাঁর প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের আশ্বস্ত করাই হয়ে উঠেছে তাঁর প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চিনের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত ধারাবাহিক কঠোর নীতির মাধ্যমে - যা তাইওয়ানকে কৌশলগত প্রতিরক্ষা প্রদানের ইঙ্গিত দেয় এবং চিনের জন্য একটি বহুক্ষেত্রীয় ‘বিনিয়োগ, সাযুজ্য এবং প্রতিযোগিতা'’ কৌশল - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছে, যা দেশটিকে একটি বহুস্তরীয় হুমকির পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। যেমন, চিনের মোকাবিলা করার কৌশলের একটি প্রধান দিক হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টি-ভেক্টর নীতি, যেখানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে কাজ করা অত্যাবশ্যক। এই প্রেক্ষিতে বার্ষিক ত্রিপাক্ষিক ইন্দো-প্যাসিফিক আলোচনা চালানোর জন্য নেতাদের মধ্যে চুক্তিটির গুরুত্ব অনেক। সদস্য দেশগুলি এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে যে, তারা সংশ্লিষ্ট সহকারী সচিবদের নেতৃত্বে একটি বার্ষিক ইন্দো-প্যাসিফিক সম্মেলনের সূচনা করবে, যার লক্ষ্য হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য তাদের পৃথক কৌশলগুলিকে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে একত্রে কাজ করা। এটি বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার উপর মনোনিবেশ করবে।
সিওল-টোকিয়োর জন্য সৌভাগ্যপূর্ণ পরিস্থিতি
তিনটি কারণে টোকিয়ো এবং সিওল উভয়ের দৃষ্টিকোণ থেকেই বৈঠকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, শীর্ষ সম্মেলনটি ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব সংশোধনের জন্য ওয়াশিংটন কর্তৃক প্রদত্ত গুরুত্বকে দর্শায়। অন্যান্য মঞ্চের পাশাপাশি এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এটি উত্তর-পূর্ব এশিয়া ছাড়াও বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতির কথাই তুলে ধরে। কারণ এটি একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রেক্ষিতে সংগঠিত হয়েছে- অস্থির পিয়ংইয়ং; একটি অপ্রত্যাশিত ও যুদ্ধপ্রবণ রাশিয়া; এবং বিশেষ করে তাইওয়ান প্রণালী এবং দক্ষিণ চিন সাগরে একতরফা ভাবে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য বেজিংয়ের মনোযোগী প্রচেষ্টা। তিন সদস্যের মধ্যে এখনও আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা চুক্তি না হওয়া সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই বিদ্যমান। টোকিয়ো এবং সিওলের জন্য ত্রিপাক্ষিক ব্যবস্থার মাধ্যমে শক্তিশালী মার্কিন উপস্থিতি পিয়ংইয়ংয়ের অস্থিরতা, রাশিয়ার অনির্দেশ্যতা এবং চিনের আক্রমণাত্মক অগ্রগতির বিরুদ্ধে নিঃসন্দেহে আশ্বাস ও নিরাপত্তার উৎস হয়ে উঠেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতি দ্বারা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অচলায়তন অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, উত্তর-পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনীতি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ক্রমাগতভাবে উন্মোচিত সম্পর্ক দ্বারা একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। দুই দেশ বারো বছরের বিরতির পরে এই বছরের মার্চ মাসে তাদের প্রথম যৌথ শীর্ষ সম্মেলন করে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটি যাতে উপদ্বীপের জাপানি দখলের কঠিন ইতিহাসকে অতিক্রম করতে পারে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। প্রেসিডেন্ট ইউন এবং প্রধানমন্ত্রী কিশিদার নেতৃত্বে দুই প্রতিবেশী দেশ সহযোগিতার চিরাচরিত শৃঙ্খলগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে এবং অংশীদারিত্বের নতুন ক্ষেত্রেরও সন্ধান পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতি দ্বারা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অচলায়তন অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
তৃতীয়ত, বছরের পর বছর ধরে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় চিনের কৌশলগত সুবিধা জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে— উভয়ই এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। ক্যাম্প ডেভিডের বৈঠক এক দিক থেকে এই সমীকরণের মৌলিক পরিবর্তন ঘটায়, যা টোকিও ও সিওল কৌশলগত ভাবে একজোট হয়ে কাজ করতে পারবে কি না, সেই সংক্রান্ত সকল সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে সম্পর্কের পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে স্পষ্টতই সরে এসেছে। বেজিং প্রত্যাশিত ভাবে ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনকে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ের মধ্যে এমন এক নতুন ঠান্ডা লড়াইয়ের সম্ভাব্য সূচনা হিসাবে ব্যক্ত করেছে, যার পরিণতি করুণ হবে।
ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনের প্রকৃত সাফল্য বেজিংয়ের সঙ্গে প্রতিটি দেশের জটিল সম্পর্কের কারণে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক চাপানউতোরের সম্মুখে আগামী বছরগুলিতে ত্রিপাক্ষিক জোটের স্থিতিশীল অংশীদারিত্ব এবং স্থিতিস্থাপকতার উপর নির্ভর করবে।
উপসংহার
আপাতত, ক্যাম্প ডেভিড বৈঠকটি ওয়াশিংটন দৃঢ় পরিকাঠামো এবং অংশীদারিত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য তিন সদস্যের মধ্যে একটি বার্ষিক বিষয় হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনের প্রকৃত সাফল্য বেজিংয়ের সঙ্গে প্রতিটি দেশের জটিল সম্পর্কের কারণে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক চাপানউতোরের সম্মুখে আগামী বছরগুলিতে ত্রিপাক্ষিক জোটের স্থিতিশীল অংশীদারিত্ব এবং স্থিতিস্থাপকতার উপর নির্ভর করবে। চিন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া অক্ষকে শক্তিশালী করার বিষয়টি নতুন ত্রিপাক্ষিক অবকাঠামোকে সবচেয়ে কঠোর পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় একটি নতুন ত্রিপাক্ষিক অবকাঠামো মৈত্রী শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার বৃহত্তর উদ্দেশ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে। এটি মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক নীতিতে বর্ণিত উদ্দেশ্যই পূরণ করে: ‘আমরা সেই ভূমিকার প্রসার ও আধুনিকীকরণ করছি এবং আমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে ও মার্কিন ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে এবং আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন রোধ করতে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি।’ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত প্রতিরোধ এবং সুরক্ষাবলয় থেকে এমন ভাবে লাভবান হতে পারে, যা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর থেকে সুদূর প্রাচ্য পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় মঞ্চের একটি বিস্তৃত পরিধি পর্যন্ত প্রসারিত। অউকাস জোট চিনের দরুন উদ্ভূত দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন কৌশলগত জোটে মনোনিবেশ করলে ক্যাম্প ডেভিড ত্রিপাক্ষিকটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় মঞ্চের নিরাপত্তা অংশীদারদের বিস্তৃত পরিসরে তার উদ্দেশ্যকে প্রসারিত করার জন্য জোটের হাব-অ্যান্ড-স্পোক (কেন্দ্র থেকে পরিধি বরাবর ক্ষমতার সম্প্রসারণ) ব্যবস্থার শৃঙ্খলকে সমন্বিত করতে ইচ্ছুক।
বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ফেলো।
প্রত্নশ্রী বসু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.