Published on Jun 12, 2023 Updated 0 Hours ago

জি২০ সভাপতিত্বের সময় ভারতের উচিত সদস্য দেশের সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার পাশাপাশি এই ক্ষেত্রের সম্মুখীন নিয়ন্ত্রক সীমাবদ্ধতার সমাধান করা।

গ্লোবাল সাউথের সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য সওয়াল

বৈঠকখানার দেওয়ালে শিল্পকলার সমাহারের পাশাপাশি যোগব্যায়াম এবং সঙ্গীত, সকালবেলার এক কাপ চা এবং সংবাদপত্র, সৃজনশীল পণ্য এবং পরিষেবা… এ সবই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত… তা সে দেওয়ালে প্রদর্শিত শিল্পকলাই হোক অথবা আমাদের পছন্দের সঙ্গীত। ভৌত পরিসরের সীমা ছাড়িয়ে সরাসরি সম্প্রচার, বাণিজ্য, সাহিত্যমেলা ও জাদুঘরের সঙ্গে সংযোগকারী পরিকাঠামোগুলির সঙ্গে আমাদের সংযুক্ত করে গেমিং এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মতো অসংখ্য অ্যাপের মাধ্যমে। সেগুলি আমাদের ডিজিটাল বিশ্বেও প্রবেশ করেছে। সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্যের একটি ভাণ্ডার সরবরাহ করার জন্য জ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে একত্র করে ‘সৃজনশীল অর্থনীতি’ মানুষের উদ্ভাবন এবং বুদ্ধির একটি ক্ষমতাপুঞ্জ। এ ক্ষেত্রে ‘কমলা অর্থনীতি’র মতো জনপ্রিয় তকমা অর্জনের জন্য এটির যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। উইলিয়াম বাউমল এবং উইলিয়াম বোয়েনের রচনায় প্রায়শই যেটিকে ৬০-এর দশকে অর্থনীতির মধ্যে স্বাধীন প্রবাহ হিসাবে উল্লেখ করা হলেও জন হাউকিন্সকে ‘ধারণার ব্যবসা’ হিসাবে সৃজনশীল অর্থনীতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়, যা ২০০৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষা প্রতিবেদনের অনুসারে সৃজনশীলতা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তির এক সঙ্গমে নিহিত। প্রতিবেদনটির উপসংহারে আরও বলা হয়েছে যে, এই ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের (প্রথাগত কারুশিল্পে), সামাজিক মূল্য (প্রতিভা এবং জ্ঞান নির্মাণ) এবং স্থিতিশীলতা (মেধা পুঁজি তৈরি এবং সঞ্চালনের মাধ্যমে) তৈরি করার জন্য একটি ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে। এই সম্পদগুলি তখন আয়, জীবিকা এবং রফতানিকে সহায়তা জোগানোর জন্য শক্তির সূত্রগুলিকে সামাজিক ভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনীতির প্রচার করে।

৬০-এর দশকে অর্থনীতির মধ্যে স্বাধীন প্রবাহ হিসাবে উল্লেখ করা হলেও জন হাউকিন্সকে ‘ধারণার ব্যবসা’ হিসাবে সৃজনশীল অর্থনীতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

এর ফলস্বরূপ, সৃজনশীল অর্থনীতির ধারণাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগের কেন্দ্রে উঠে আসতে সক্ষম হয়েছে, যখন রাষ্ট্রপুঞ্জের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (ইউএনসিটিএডি) সৃজনশীল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বাণিজ্য, শ্রম এবং উৎপাদন-সহ এই শিল্পের জন্য তৈরি সমস্ত উপাদানের সমষ্টি হিসাবে বর্ণনা করে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ক্ষেত্রটি সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি, যা বৈশ্বিক জিডিপিতে ৫-১০ শতাংশ অবদান রাখে। এটি বার্ষিক ২.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি উৎপাদন করতে সক্ষম, ১৫-২৯ বছর বয়সি আরও বেশি মানুষকে নিয়োগ করে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় এ ক্ষেত্রে কর্মীশক্তির প্রায় অর্ধেক হলেন নারীরা। রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০২১ সালে স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক সৃজনশীল অর্থনীতির বছর ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে এটি বিশ্ব মঞ্চে তার সঠিক স্থান সুরক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছে।

বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলির অন্যতম হয়ে ওঠার আশাবাদী অনুমানগুলি সত্ত্বেও অতিমারি এটির অধীনস্থ একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসাকে ধ্বংস করেছে, যার ফলে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ১০ মিলিয়ন কর্মী  চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছেন। এটি হঠাৎ করেই এই ক্ষেত্রের অগ্রগতি স্তব্ধ করে দিয়েছে, যেখানে আগে এর লক্ষ্য ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণ পণ্যের প্রায় ১০ শতাংশ উৎপাদন করা। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগগুলি (এমএসএমই) তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল, শ্রম সরবরাহ এবং পণ্য ও পরিষেবার চূড়ান্ত চাহিদার ক্ষেত্রে এই ক্ষেত্রের বৃহত্তর সংস্থাগুলির তুলনায় নেতিবাচক ধাক্কার প্রেক্ষিতে বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়েছে। এগুলি নানা সুবিধা প্রদান করার দরুন এই বহুমুখী ক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করা অপরিহার্য। এই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের বাধা ন্যূনতম এবং যুবক ও মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অপরিসীম সম্ভাবনা রয়েছে, যখন তরুণদের জন্য চাকরি দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ-দক্ষিণ বাণিজ্য সম্প্রসারিত হতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে জি২০ ভবিষ্যতের বৃদ্ধিকে চালনা করার বাহন হিসাবে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য সমর্থন জোগাতে একত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ক্রিয়েটিভ ইকোনমি (ডব্লিউসিসিই) লাতিন আমেরিকার দেশগুলির জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় কমলা অর্থনীতির সঙ্গে অভিযোজিত হওয়া এবং সৌদি আরবের সভাপতিত্বের সময় থেকে জি২০ সদস্য দেশগুলির অভ্যন্তরে ঘটা আন্তর্জাতিক আলাপ-আলোচনায় একটি সংবেদনশীল এবং সক্রিয় বাস্তুতন্ত্র নির্মাণ ইতিমধ্যেই একটি উদীয়মান ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে জি২০-র নিরিখে ভারত এই পরিসরে পথ প্রদর্শক হিসাবে নেতৃত্ব প্রদান করতে পারে। ইন্দোনেশিয়া তার সভাপতিত্বে এটিকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তঃক্ষেত্রীয় ঘটনা রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের মূল্যবোধকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে। ভারত সেখান থেকেই এটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। চিন, ভারত, তুর্কিয়ে এবং মেক্সিকো সৃজনশীল বৃদ্ধির পণ্যগুলিতে বিশ্ব বাণিজ্যকে উদ্দীপিত করে এমন কয়েকটি শীর্ষ কার্য সম্পাদনকারী জি২০ সদস্য দেশগুলির অন্যতম, ফলে ভারতের নেতৃত্ব বাঁকবদলের সূচনা ঘটাতে পারে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ক্রিয়েটিভ ইকোনমি (ডব্লিউসিসিই) দক্ষিণ আমেরিকায় দেশগুলির জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় কমলা অর্থনীতির সঙ্গে অভিযোজিত হওয়া এবং সৌদি আরবের সভাপতিত্বের সময় থেকে জি২০ সদস্য দেশগুলির অভ্যন্তরে ঘটা আন্তর্জাতিক আলাপ-আলোচনায় একটি সংবেদনশীল এবং সক্রিয় বাস্তুতন্ত্র নির্মাণ ইতিমধ্যেই একটি উদীয়মান ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।

সৃজনশীল অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ভারতের জন্য লাভজনক হতে পারে

তা ছাড়া ভারতের পক্ষে তার সৃজনশীল ক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য নিজস্ব যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত সৃজনশীল ভাল রফতানি এবং পরিষেবাগুলির নিরিখে শীর্ষ ১০টি দেশের অন্যতম, যা শুধুমাত্র চলচ্চিত্র এবং বিনোদনকেই অন্তর্ভুক্ত করে না, বরং গবেষণা ও উন্নয়নের পাশাপাশি যোগ, সুস্বাস্থ্য, বস্ত্র, হস্তশিল্প, রন্ধনশিল্প, ঐতিহ্যবাহী পর্যটনকেও অন্তর্ভুক্ত করে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় তুর্কিয়ে (১ শতাংশ), মেক্সিকো (১.৫ শতাংশ), দক্ষিণ কোরিয়া (১.৯ শতাংশ) এবং এমনকি অস্ট্রেলিয়ার (২.১ শতাংশ) সমান অংশের তুলনায় প্রায় ৮.০৩ শতাংশ উচ্চ হারে সামগ্রিক শ্রমশক্তির ইঙ্গিত করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি ১৫-২৯ বছর বয়সিদের জীবিকার সংস্থান করে, ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে এই সেক্টরের ব্যতিক্রমী ক্ষমতা প্রদর্শন করে। এটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, নারীরা অ-সৃজনশীল কাজের তুলনায় সৃজনশীল ব্যবসায় বেশি অংশগ্রহণ (২৭.৮৯ শতাংশ) করেছে। ২০০৩-২০১২ সালের মধ্যে ১.৯ শতাংশ থেকে ৫.৫ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে সৃজনশীল পণ্য এবং পরিষেবাগুলি বৈশ্বিক রফতানির অংশে ব্যতিক্রমী ভাল ফলাফল করে। পরবর্তী কালে অতিমারির সময়ে এটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং ২০১৯-২০২০ সালে ৫০০ কোটি ভারতীয় টাকা থেকে ৩৯ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২০২০-২০২১ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০৪ কোটি ভারতীয় টাকায়। আর একটি নির্ভরযোগ্য সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সৃজনশীল অর্থনীতির প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ে গঠিত ভারতের এমএসএমই, সভা-সমাবেশ ও বিনোদন ব্যবস্থাপনা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রগুলি অতিমারির সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সমস্ত প্রবণতাগুলি তখন মানব সম্পদ এবং সৃজনশীলতায় ভারতের বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরে এবং ক্ষেত্রটির জন্য একটি অভিন্ন নীতিকাঠামো প্রণয়ন করা প্রয়োজন যার মধ্যে রয়েছে সংজ্ঞায়ন এবং পরিমাপ করা, সৃজনশীল কেন্দ্র এবং শৃঙ্খলের স্থাপনা, ডিজিটালকরণের প্রচার, কপিরাইটিংয়ের সমস্যা সমাধান, অর্থায়নে
আরও বেশি সম্ভাবনা সৃষ্টি এবং সৃজনশীল অর্থনীতি সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নীতি প্রবিধান ও বিভাগ-সহ ব্রিটেন (ইউকে), অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো জি২০-র সদস্য দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা স্থাপন করা।

ভারতের জি২০ সভাপতিত্বের সময় সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য একটি পরিসর নির্মাণ

জি২০ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের মধ্যে ৯৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক মূল্যায়নে পৌঁছনোর অনুমান করা হয়েছে, যা বৈশ্বিক জিডিপি-র ১০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করবে। জি২০ সদস্যদের কাছে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদেরকে পথের বাধা এবং নিয়ন্ত্রক সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা এবং মোকাবিলা করার সুযোগ রয়েছে সেই ক্ষেত্রে, যেগুলি এত দিন এই দ্রুত বর্ধনশীল পরিসরটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এর একটি স্পষ্ট উদাহরণ হল, ডিজিটাল বিনোদন বাজারের উত্থান যা ওভার-দ্য-টপ এন্টারটেনমেন্টকে (ওটিটি) ইন্ধন জুগিয়েছে এবং প্রভাবশালী ও সামাজিক গণমাধ্যমে নির্মাতাদের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে আনুমানিক ২০২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বিশ্বব্যাপী ওটিটি বাজার আগামী পাঁচ বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ১৬.৫ শতাংশের একটি চক্রবৃদ্ধি বার্ষিক বৃদ্ধির হারকে (সিএজিআর) নিবন্ধন করে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই ক্ষেত্রের সক্ষমতা অত্যাবশ্যক হবে কারণ বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের (৪আইআর) চাহিদার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেবে।

মাল্টিমিডিয়া, অ্যানিমেশন, শিল্প, হস্তশিল্প এবং দক্ষতা অর্জনের পর্যাপ্ত লব্ধতা-সহ সুস্থতার বিভিন্ন স্তর জুড়ে সৃজনশীল শিল্পীদের জন্য পারস্পরিক ডিজিটাল মঞ্চগুলি বিকাশের সম্ভাব্য পথগুলি অন্বেষণ আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

একটি সোপান হিসেবে সৃজনশীল অর্থনীতির আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলা এমন নীতি প্রণয়নে সহায়তা করতে পারে, যা প্রাতিষ্ঠানিক বিভাগের মাধ্যমে প্রমাণভিত্তিক নীতি প্রণয়নকে সুনিশ্চিত করে, অর্থ ও মেধাস্বত্ব অধিকারে প্রবেশাধিকার সুলভ করে, গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহ জোগায় এবং ডিজিটাল টুলসম্পন্ন নির্মাতাদের একটি সুযোগশৃঙ্খল তৈরি করে। জি২০ দেশগুলি একটি ‘সৃজনশীল অর্থনৈতিক সূচক’ বিকাশে সহযোগিতা করতে পারে, যা এই ক্ষেত্র সম্পর্কে পরিসংখ্যান, গবেষণা এবং প্রারব্ধ জ্ঞানকে একত্র করতে সাহায্য করে। মাল্টিমিডিয়া, অ্যানিমেশন, শিল্প, হস্তশিল্প এবং দক্ষতা অর্জনের পর্যাপ্ত লব্ধতা-সহ সুস্থতার বিভিন্ন স্তর জুড়ে সৃজনশীল শিল্পীদের জন্য পারস্পরিক ডিজিটাল মঞ্চগুলি বিকাশের সম্ভাব্য পথগুলি অন্বেষণ আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া উচিত। উপযুক্ত বাস্তুতন্ত্রের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়ে এই কর্মসূচিগুলিকে আরও সশক্ত করা যেতে পারে। এটি একটি অবিস্মরণীয় সত্য যে, বিশ্বব্যাপী অতিমারি আমাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করেছিল, এই ক্ষেত্রটি ব্যক্তিগত কল্যাণ, স্থায়িত্ব এবং সম্প্রদায়ের স্থিতিস্থাপকতা সংরক্ষণের জন্য সৃজনশীল কার্যকলাপের তাত্পর্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে সহায়ক ছিল। এই প্রেক্ষিতেই ভারতকে অবশ্যই সুনিশ্চিত করতে হবে যে গ্লোবাল সাউথ এবং তার পরিসরের বাইরের সৃজনশীল অর্থনীতিগুলি ‘মিশন লাইফ’-এর নিজস্ব আন্তর্জাতিক প্রচারণার পাশাপাশি সি২০, বি২০, জি২০ এমপাওয়ারের মতো জি২০ এনগেজমেন্ট গ্রুপগুলিতে সংমেল করার সুযোগ পাবে। এবং একই সঙ্গে স্থিতিশীল আলাপ-আলোচনার জন্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি এই বহুমুখী ক্ষেত্রে নিযুক্ত নির্মাতাদের আয় সুনিশ্চিতকারী একটি সহায়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের সংযুক্তকারী একটি জ্ঞান ব্যবস্থাপনা স্থাপন করবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.