যখন ভারতের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই এমন একটি সংঘাতের কারণে মূল্যস্ফীতির আমদানি হচ্ছে, য়খন বিশ্বজুড়ে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অর্থের প্রবাহ স্তব্ধ হওয়ার বিপদের সম্মুখীন, সবাই ধীরলয়ের বৃদ্ধির সাগরে সাঁতার কাটছে এবং কিছু ক্ষেত্রে এমনকি সংকোচনও ঘটছে, সেই সময় একটি জাতীয় বাজেট রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থা পরিচালনার জন্য সামান্যই কিছু করতে পারে। একটি যে ফলাফল বাজেট নিশ্চিত করতে পারে তা হল অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা। ভারতের জন্য তাই ২০২৩ বাজেটকে একটি বিস্তৃত আর্থিক নীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, যার শিকড় ও সেইসঙ্গে শাখাগুলিও অর্থ মন্ত্রকের আওতার বাইরে।
প্রথমত, মূল্যস্ফীতি
উচ্চ মূল্যের চেয়ে জোরালো কিছু নেই যা ক্ষমতার সামনে সত্য তুলে ধরে। অবশ্যই এ কথা শুধু গণতন্ত্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, চিনের মতো কর্তৃত্ববাদী শাসনের ক্ষেত্রে নয়। উচ্চ মূল্য শাসক জোটগুলিকে পরিবারগুলির অসন্তোষের মুখে ফেলে, এবং রাজনৈতিক চাপের সামনে দুর্বল করে দেয়। এগুলো আগামী নির্বাচনের চক্রে পরিবর্তনের স্লোগান হিসাবে দেখা দেয়।
তাই বলা যায় এটি একটি বাস্তবতা যে ভারতের মুদ্রাস্ফীতির হার গড়ে ৫ শতাংশ থেকে আজ ৭ শতাংশের মতো দাঁড়ালেও তা খুব চড়া নয়। কিন্তু এই বাস্তবতার মধ্যে বেশ কিছু বিপদ বাহিত হচ্ছে। এই বিপদগুলির মোকাবিলা করা, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল জ্বালানি-মূল্যের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ করা, এখন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতেও তাই থাকবে।
দৃঢ়ভাবে শান্তির পক্ষে থেকেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা এবং স্বল্পমেয়াদে দেশটিকে ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি সরবরাহকারীতে পরিণত করাও সেই ভারসাম্যের একটি ধাপ।
তেলের দাম গোড়ায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১৩০ মার্কিন ডলারে উঠে যাওয়া, অর্থাৎ মাত্র এক মাসে ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির পরে, এখন আটের ঘরে (মার্কিন ডলার ৮১.৪৫) নেমে গেছে। এই অস্থিরতা এখনও চলছে একটি দ্বন্দ্বের কারণে, যার এক মেরুতে রয়েছে জ্বালানি উৎপাদক রুশ ফেডারেশন ও অন্যদিকে ইউরোপ ও মার্কিন সমর্থিত ইউক্রেন। এদিকে নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার চেয়ে ইউরোপকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ভারত, দুই প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রেই তার স্বার্থ আছে। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তার মূল্যবোধের অংশীদার—গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং একটি সাধারণ প্রতিপক্ষ চিন। অন্যদিকে, রুশ ফেডারেশন ভারতের কাছে অস্ত্রের একটি মূল্যবান সরবরাহকারী ছিল এবং থেকে গেছে, বিশেষ করে সেই সময় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমীরা ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখন ভারতকে একদিকে মূল্যবোধ এবং অন্যদিকে যে তার কাছে মূল্যবান তাদের মধ্যে যত্ন সহকারে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। দৃঢ়ভাবে শান্তির পক্ষে থেকেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা এবং স্বল্পমেয়াদে দেশটিকে ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি সরবরাহকারীতে পরিণত করাও সেই ভারসাম্যের একটি ধাপ। শক্তিক্রয়ের জন্য ভারতের নিন্দা এখনও পর্যন্ত কাজ করেনি; ভবিষ্যতেও করবে না।
২০২৩ সালের বাজেটে সরবরাহের দিকের মূল্যস্ফীতি চাপ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। জ্বালানি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান দামের প্রবণতাও রোধ করতে হবে। এমনকি এক্ষেত্রেও বাজেটে জ্বালানি বিক্রয় সহ সামগ্রিক কর সংগ্রহের ভারসাম্য এমনভাবে বজায় রাখতে হবে যাতে দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে গৃহস্থালির উপর প্রভাব ফেলতে না–পারে। সরকার তেল ও গ্যাস সরবরাহ লাইন চালু রাখতে যা যা করতে পারে তা করার পাশাপাশি ২০২৩ বাজেটের কাজ হবে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক বিপদ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির দিক থেকে ভারত স্বস্তিতে রয়েছে। তবে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, যা উৎপাদিত হয় তা যেন নষ্ট না–হয়। ২০২৩ বাজেটে খাদ্য সংরক্ষণে দক্ষতার উপর জোর দেওয়া উচিত, এবং প্রয়োজনে নতুন গুদাম তৈরির জন্য তহবিল বরাদ্দ করা উচিত। খাদ্যের দাম আজ আর শুধু একটি অর্থনৈতিক সূচক নয়; তা সমানভাবে কৌশলগত স্থিতিশীলতা সূচকের মধ্যেও অবদান রাখে।
রুশ ফেডারেশন ভারতের কাছে অস্ত্রের একটি মূল্যবান সরবরাহকারী ছিল এবং থেকে গেছে, বিশেষ করে সেই সময় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমীরা ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
দ্বিতীয়ত, সুদের হার
যাতে পরিবারগুলি কম খরচ করে এবং দাম স্থিতিশীল হয় তার জন্য সুদের হার বাড়ানো বা অর্থব্যবস্থায় নগদের পরিমাণ হ্রাস করা ছাড়া রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া খুব কমই কিছু করতে পারে। কিন্তু যখন ভারত ক্রমবর্ধমান, নির্মীয়মাণ এবং সম্প্রসারণরত, সেই সময়ে সুদের হার বাড়ানো এই কর্মক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ভারতকে নিশ্চিত করতে হবে যে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে, বৃদ্ধির দিগন্তে যথেষ্ট কালো মেঘ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের অনুমান, ২০২২–২৩ সালে প্রতি পাঁচটির মধ্যে দুটি বা ৪৩ শতাংশের বেশি অর্থনীতি (৭২টির মধ্যে ৩১টি) তাদের প্রকৃত জিডিপি–তে সংকোচন দেখতে পাবে। যাদের ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি জিডিপি তেমন তিনটি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে: রাশিয়ান ফেডারেশন ২.৩ শতাংশ, জার্মানি ০.৩ শতাংশ, এবং ইতালি ০.২ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে বলে ধরা হচ্ছে৷
ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি নীতিগত হার বাড়াচ্ছে। সব বড় অর্থনীতি গত বছরে সুদের হার বাড়িয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ৭৫ বেসিস পয়েন্ট, এবং ভারত ও ব্রিটেন ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে। ব্রাজিলে পলিসি রেট ১৩.৭৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপে হাঙ্গেরির মতো ছোট দেশগুলি সুদের হার ১৩.০ শতাংশে উঠতে দেখছে, আর দক্ষিণ আমেরিকার চিলি ১০.৭৫ শতাংশ হারের সঙ্গে লড়াই করছে৷ এর ব্যতিক্রম হল চিন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া ও তুরস্ক।
সুদের হারের দিকে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শূন্যের কাছাকাছি থেকে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ ২০২২ সালে পাঁচবার সুদের হার বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করেছে। এর অর্থ হল বিশ্বব্যাপী অর্থের একটি বড় অংশ, যা ঝুঁকিমুক্ত বৃদ্ধি চায়, তা মার্কিন কোষাগারে স্থানান্তরিত হবে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলোকে ৭ থেকে ৯ শতাংশ সুদ দিতে হবে। এগুলি ইক্যুইটি বাজার থেকে প্রত্যাশাকে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশে ঠেলে দেবে। এবং অবশেষে, এই উচ্চঝুঁকিপূর্ণ উদ্যোগ বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্তির সুযোগ প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করবে, যা ২৩ থেকে ২৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। যে অর্থনীতিগুলি সঙ্কোচনশীল বা ধীরগতিতে চলছে, সেগুলির পক্ষে এ হল মিশন ইমপসিবল। ফলাফল: নিরাপত্তার জন্য দৌড় সিস্টেমের রিস্ক ক্যাপিটাল, এবং তার মাধ্যমে স্টার্ট–আপ বাস্তুতন্ত্রকে গ্রাস করবে।
করগুলিকে এমন নীতিনকশা দ্বারা চালিত করা দরকার যা অর্থকে স্বাগত জানায়, চাকরি দেয়, উদ্যোগ ও সম্পদ তৈরি করে, এবং অতীতের তারিখ থেকে চালু হবে এমন আইনের মাধ্যমে সিস্টেমকে বিকৃত করে না।
এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশে ভারতকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় হবে বৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত করা। ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, এবং ভারতকে বৃদ্ধির হার বাড়াতে না–পারলেও অন্তত ধরে রাখতে হবে। ২০২৩ বাজেট বৃদ্ধির পথ পরিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে। কর হ্রাস বা প্রণোদনা ছাড়াও এটি ভারতীয় আমলাতন্ত্রের লাল ফিতাকে খুলে দিতে পারে এবং এটিকে একটি সবুজ গালিচায় পরিণত করতে পারে, যা শুধু দ্রুত চলমান অর্থই নয়, কোম্পানিগুলির দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়, বিশেষ করে সেই কর্পোরেট উদ্বাস্তুদের যারা চিন থেকে বেরোতে চায় এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের সুবিধাযুক্ত বড় আয়তনের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে চায়।
অবশেষে, সামনের পথ
‘জন ভাগিদারি’–র অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রকের অর্থনীতি বিষয়ক বিভাগ বাজেট তৈরির প্রক্রিয়াকে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য নাগরিকদের কাছ থেকে পরামর্শ আহ্বান করেছে। সেই অনুযায়ী এখানে ২০২৩ সালের বাজেটের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হল।
এক, ২০২৩ বাজেটে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যা দেশি ও বিদেশি পুঁজির জন্য আকর্ষণীয়। শুধুমাত্র নিম্ন কর এক্ষেত্রে সাহায্য করবে না। করগুলিকে এমন নীতিনকশা দ্বারা চালিত করা দরকার যা অর্থকে স্বাগত জানায়, চাকরি দেয়, উদ্যোগ ও সম্পদ তৈরি করে, এবং অতীতের তারিখ থেকে চালু হবে এমন আইনের মাধ্যমে সিস্টেমকে বিকৃত করে না।
দুই, বাজেট ২০২৩ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের সরকারি অর্থায়ন পরিচালনা করতে পারে। নীতি গ্রহণ এবং গ্রিনফিল্ড প্রকল্প রূপান্তর করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারগুলির। চারটি বৃহৎ বিজেপি–শাসিত রাজ্য রয়েছে যাদের বিনিয়োগ আমন্ত্রণ ও একত্র করার ক্ষমতা রয়েছে: উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ভূপেন্দ্রভাই পটেল, মনোহরলাল খট্টর এবং শিবরাজ সিং চৌহানের মতামত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত, এবং এই সরকারগুলির সঙ্গে মিলে ব্যবসার জন্য ভৌত, নিয়ন্ত্রক ও বাজারের জায়গা তৈরি করা উচিত।
তিন, ২০২৩ বাজেটের জন্য আর্থিক ভারসাম্য নিয়ে চাপের প্রয়োজন নেই। জি২০ বালি সম্মেলনে নেতাদের ঘোষণায় বলা হয়েছে, সরকারগুলিকে একযোগে কাজ করতে হবে ‘একটি সুবিন্যস্ত, সুপরিকল্পিত ও সুব্যক্ত নীতির জন্য, এবং তার মধ্যে দেশ–নির্দিষ্ট পরিস্থিতি যথাযথ বিবেচনায় রাখতে হবে’। এর অর্থ হল, রাজস্ব নীতির প্রতিক্রিয়ায় নমনীয়তা রাখা, জ্বালানি ও খাদ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকা নিশ্চিত করা, এবং মূল্যস্ফীতি কম থাকা। ভারতের জন্য এর অর্থ পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন ব্যবহার করা, যেমনটি ২০১৯ সালে করা হয়েছিল কোভিড–১৯ সংকট মোকাবিলা করার জন্য। যে সব ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ভারতবিরোধী পক্ষপাতিত্ব বহন করে, তারা নিজেরাই ক্লান্ত হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২০–২১ বলেছিল, ‘‘অতএব, ভারতের আর্থিক নীতির কখনওই ভারতের মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে কোলাহলপূর্ণ/পক্ষপাতমূলক পরিমাপের দিকে নজর দেওয়া উচিত নয়, এবং পরিবর্তে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্ভীক মনের অনুভূতিকে প্রতিফলিত করা উচিত৷’’
নিফটি ও সেনসেক্স যখন সর্বকালের উচ্চতায় এবং বাজেটের মাত্র দুই মাস দূরে, তখন চলতি আর্থিক বছরেই উচ্চমূল্যে অতীতের বিলগ্নিকরণের ঘোষণাগুলি কার্যকর করা উচিত।
চার, ২০২৩ বাজেটকে বিলগ্নিকরণের ক্ষেত্রে জোরদারভাবে উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্বজুড়ে হতাশা ও সর্বনাশ সত্ত্বেও ভারতের বাজারগুলি খুব ভাল ফল করছে। নিফটি ও সেনসেক্স যখন সর্বকালের উচ্চতায় এবং বাজেট মাত্র দুই মাস দূরে, তখন চলতি আর্থিক বছরেই উচ্চমূল্যে অতীতের বিলগ্নিকরণের ঘোষণাগুলি কার্যকর করা উচিত।
পাঁচ, ২০২৩ বাজেটে কোম্পানিগুলির জন্য একটি আধার–এর মতো পরিচয়-পরিকাঠামো তৈরি করা উচিত। ঋষি আগরওয়ালের যুক্তি অনুসারে, প্রতিটি ব্যবসাকে একটি অনন্য এন্টারপ্রাইজ নম্বর দেওয়া উচিত যা সব কিছুর জন্য তার পরিচয় হিসাবে কাজ করবে—সব কিছুর জন্য, অর্থাৎ ৬৯,২৩৩টি অনুবর্তিতা বিধির জন্য, যার মধ্যে ২৬,১৩৪টিতে কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে৷ এই নম্বরটি কেন্দ্রীয় স্তরে বা রাজ্যগুলিতে সমস্ত আইন, বিধি ও প্রবিধান দ্বারা গৃহীত এবং প্রযোজ্য হওয়া উচিত। ব্যবসা করার এই ধরনের ব্যবস্থা জিটুসি (সরকার থেকে কোম্পানি) যোগাযোগের গতিবেগ ও দক্ষতা বাড়াবে, তা সে একটি প্ল্যান্ট স্থাপনের ক্ষেত্রে হোক, একটি বার-এর লাইসেন্স পাওয়া হোক বা কর প্রদান। এটি হবে: এক নম্বর, এক কোম্পানি, এক দেশ।
পরিশেষে, ২০২৩ বাজেটকে অবশ্যই জনপ্রিয়তাবাদী হওয়ার প্রলোভন এড়াতে হবে। বাজেটে কর কমাতে হবে না, যতক্ষণ না তা আরও চাকরি বা পরিকাঠামোর দিকে নিয়ে যায়। একটি উত্থানশীল অর্থনীতি, যা বৈশ্বিক ক্ষেত্রে এখনও একটি বহিরাগত এবং যার কাছ থেকে শুধু আরও ভাল করার প্রত্যাশা রয়েছে, তার প্রণোদনা হিসাবে কর কমানোর প্রয়োজন নেই। অর্থনীতি থমকে গেলে তখন বিষয়টি আবার দেখা যেতে পারে। অবশ্যই, পারিবারিক কর সম্পর্কিত ক্ষেত্রে বর্তমান ১১টি স্ল্যাব থেকে তিন–স্ল্যাব কাঠামোতে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। করদাতাদের জন্য জটিলতার চেয়ে সরলতা ভাল—তিন সংখ্যাটি ১১–র থেকে বেশি।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.