-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়েছিল এনডিটিভি-তে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর নিজ শহর উইলমিংটনে সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কোয়াড লিডারস সামিটের আয়োজন করেন, যেটি ছিল ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে চতুর্থ অধিবেশন এবং সেই সম্মেলনে সকলে শারীরিক ভাবে উপস্থিত ছিলেন। এই শীর্ষ সম্মেলনটিকে একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, এটি ছিল বাইডেনের জন্য সর্বশেষ সম্মেলন, যিনি নিজে গোষ্ঠীটির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মূল একজন স্থপতি ছিলেন। এবং জাপানের প্রাইম মিনিস্টার ফুমিও কিশিদাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, যিনি মঞ্চটিতে রাজনৈতিক ভারসাম্য জোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালটি মঞ্চটি গঠনের ২০তম বছর। তৃতীয়ত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এই যে, উইলমিংটন শীর্ষ সম্মেলনটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতার মূল ক্ষেত্রগুলিকে সম্প্রসারিত করে মঞ্চটিকে আরও সুসংহত করেছে। প্রকৃতপক্ষে, এই শীর্ষ সম্মেলনটি এই বার্তা দিতে সফল হয়েছে যে, ‘কোয়াড ভবিষ্যতেও সক্রিয় থাকতে চলেছে’।
ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহত যুদ্ধ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসী কার্যকলাপ ও অঞ্চলটিতে অপ্রচলিত নিরাপত্তা ঝুঁকির উদ্ভব কোয়াডের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
এক দিকে যখন জটিলতম আন্তর্জাতিক সঙ্কটগুলি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উঠে আসছে, তখন এই জটিল চ্যালেঞ্জ ও গুরুত্বপূর্ণ সুযোগের প্রেক্ষাপটে কোয়াড নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজিত হয়। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহত যুদ্ধ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসী কার্যকলাপ ও অঞ্চলটিতে অপ্রচলিত নিরাপত্তা ঝুঁকির উদ্ভব কোয়াডের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। উইলমিংটন ডিক্লারেশনে – যা কোয়াড নেতাদের যৌথ বিবৃতিও বটে - এই সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে।
উইলমিংটন বিবৃতি
উইলমিংটনে কোয়াড গোষ্ঠীর নেতাদের যৌথ বিবৃতিতে ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করা হয়েছে, এই সংঘাতের অবসান এবং আন্তর্জাতিক আইনের চেতনাকে সমুন্নত করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে, এই বছরের বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়া দ্বারা পরিচালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রযুক্তির বিস্তার রোধ করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি উইলমিংটন বিবৃতিতে গাজায় বিদ্যমান সংঘাতের উপরও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
গোষ্ঠীটি গাজায় বিদ্যমান মানবিক সঙ্কট সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি সার্বভৌম, কার্যকর ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে সওয়াল করার পাশাপাশি ইজরায়েলের উদ্বেগগুলি নিয়েও সংবেদনশীলতা প্রকাশ করেছে। এর পাশাপাশি এই বিবৃতিতে মায়ানমারের ক্রম অবনমনশীল রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতির পাশাপাশি লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে হুতিদের হামলার বিষয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। যদিও, চিন ইন্দো-প্যাসিফিক প্রেক্ষিতে কোয়াডের জন্য সর্ববৃহৎ প্রশ্ন হয়ে থেকেছে। চিন প্রসঙ্গে এই বছর কোয়াডের প্রতিক্রিয়া অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি চাঁছাছোলা থেকেছে। আগে কোয়াড বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে একতরফা কার্যকলাপ ও আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা করার জন্য নাম না করে গোষ্ঠীটি বেজিংয়ের বহিষ্কারের পক্ষে সওয়াল করে। একই ভাবে কোয়াড নেতারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিতর্কিত অংশগুলির ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণ সম্পর্কে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অঞ্চলটিতে উত্তেজনার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ গোষ্ঠীটি উপকূলরক্ষী এবং সামুদ্রিক সামরিক যান ব্যবহারের নিন্দা করে, যা এত দিন চিনের তরফে বলপূর্বক ও ভয় দেখানোর কৌশল হয়েই থেকেছে।
একগুচ্ছ ঘোষণা
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কোয়াডের সমন্বয়ও এই শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ গতিশীলতা পেয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে চারটি কোয়াড দেশের মধ্যে একটি যৌথ উপকূলরক্ষা স্তরের সহযোগিতার – যা কোয়াড-অ্যাট-সি-শিপ অবজার্ভার মিশন নামেও পরিচিত – প্রস্তাব চারটি দেশের উপকূলরক্ষা পরিষেবার মধ্যে আন্তঃকার্যকারিতা উন্নত করতে চায় এবং সামুদ্রিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উন্নততর সহযোগিতার উপর জোর দিয়েছে। একইভাবে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিপর্যয়ের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের প্রতি সাড়া দিয়ে গোষ্ঠীটি ‘কোয়াড ইন্দো-প্যাসিফিক লজিস্টিকস নেটওয়ার্ক’ চালু করার ঘোষণা করেছে, যার লক্ষ্য হল মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ত্রাণ (এইচএডিআর) কার্যকলাপের ক্ষেত্রে আন্তঃসহযোগিতা উন্নত করার জন্য অভিন্ন সাধারণ এয়ারলিফ্ট ক্ষমতা ব্যবহারের প্রক্রিয়া জোরদার করা।
কোয়াড ফেলোশিপ প্রকল্পটি আসিয়ান দেশগুলির ছাত্রদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চালু করা হয়েছে, যা মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক অংশীদারদের গোষ্ঠীটিতে অন্তর্ভুক্তিকেই দর্শায়।
সর্বোপরি, কোয়াড ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফর মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেসের (আইপিএমডিএ) মাধ্যমে মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস বা সামুদ্রিক পরিসরে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরাম ফিশারিজ এজেন্সিতে অস্ট্রেলিয়ার যোগদানের প্রতিশ্রুতি এই উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করেছে এবং একই সঙ্গে গোষ্ঠীটি মেরিটাইম ইনিশিয়েটিভ ফর ট্রেনিং ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক (মৈত্রী) নামক একটি নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে। এই শীর্ষ সম্মেলন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এবং প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরাম-এর (পিআইএফ) সঙ্গে অব্যাহত সহযোগিতার মাধ্যমে তার আঞ্চলিক অংশীদারিত্বকে আরও সুসংহত করেছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, কোয়াড ফেলোশিপ প্রকল্পটি আসিয়ান দেশগুলির ছাত্রদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চালু করা হয়েছে, যা মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক অংশীদারদের গোষ্ঠীটিতে অন্তর্ভুক্তিকেই দর্শায়।
এই বছরের কোয়াড সম্মেলনে করা বেশ কয়েকটি ঘোষণা এবং এর ফলস্বরূপ উইলমিংটন ডিক্লারেশনে গোষ্ঠীটির অব্যাহত প্রতিশ্রুতি এবং প্রাসঙ্গিকতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এক দিকে যখন কোয়াড বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির প্রতি সংবেদনশীল থেকেছে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে, তখন একই সঙ্গে গোষ্ঠীটি অভিন্ন সাধারণ সুযোগগুলিকে কাজে লাগানোর একটি শক্তিশালী ইতিবাচক কর্মসূচিকেও প্রদর্শন করেছে।
প্রকৃতপক্ষে, কোয়াডের ভবিষ্যৎ আশাব্যঞ্জক এবং এর লক্ষ্য হল এমন এক উন্মুক্ত ও ইন্দো-প্যাসিফিকের অন্বেষণ যা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপকও বটে।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +Sayantan Haldar is a Research Assistant at ORF’s Strategic Studies Programme. At ORF, Sayantan’s research focuses on Maritime Studies. He is interested in questions of ...
Read More +