Author : Gurjit Singh

Published on Apr 21, 2023 Updated 0 Hours ago

অতীতে কখনওই এত ছোট একটি দ্বীপরাষ্ট্র আফ্রিকার নেতৃত্ব দেয়নি, এবং সেইজন্য এই ঘটনাটি পরিবর্তনের জোয়ার নিয়ে এসেছে, আর ছোট উন্নয়নশীল দেশগুলির সমস্যাসমূহের দিকেও সম্ভবত দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে

৩৬তম আফ্রিকান ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলনের মূল্যায়ন

আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) তার ১১তম বছরে আদ্দিস আবাবায় বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন করে ১৮–১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩–এ। পূর্ব আফ্রিকার প্রতিনিধিত্বকারী আফ্রিকার ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি কমোরোস এইবার সংগঠনের পরিবর্তমান প্রেসিডেন্সিতে উঠে এসেছে।

এইভাবে আফ্রিকার নেতৃত্ব দেওয়ার চ্যালেঞ্জিং কাজে সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল–এর, যিনি পশ্চিম আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করে গত বছর এইউ–এর সভাপতিত্ব করেছিলেন, উত্তরসূরি হলেন কোমোরোসের প্রেসিডেন্ট আজালি আসুমানি। তার আগে দুই প্রেসিডেন্ট ছিলেন মধ্য আফ্রিকা থেকে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর (ডিআরসি) প্রেসিডেন্ট শিসেকেদি, এবং আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার রামাফোসা। এবার ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত ছিল যে কেনিয়া পূর্ব আফ্রিকার পক্ষে সভাপতিত্ব করবে, কিন্তু সম্ভবত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রুটো নিজেকে তুলে না–ধরার সিদ্ধান্ত নিয়ে কমোরোসকে সুযোগ করে দেন। অতীতে কখনওই এত ছোট একটি দ্বীপরাষ্ট্র আফ্রিকার নেতৃত্ব দেয়নি, এবং সেইজন্য এই ঘটনাটি পরিবর্তনের জোয়ার নিয়ে এসেছে, আর ছোট উন্নয়নশীল দেশগুলির সমস্যাসমূহের দিকেও সম্ভবত দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এই বছর আফ্রিকা নিজেকে আবিষ্কার করেছে আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি ও সেগুলির ফলাফলের ঘূর্ণির মধ্যে। জ্বালানি, খাদ্য ও সারের সরবরাহে ব্যাঘাতের কারণে আফ্রিকার কোভিড–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে নতুন করে গুরুতর সমস্যায় ফেলেছে ইউক্রেন সঙ্কট। একই সময়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রেরা রাশিয়ার সমালোচনা করায় আফ্রিকা রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউএন) ভোটে চাপের মুখে পড়ে। আফ্রিকা, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, সঙ্কট মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। ৭ এপ্রিল ২০২২–এর রাশিয়া ও মানবাধিকার কাউন্সিলের বিষয়ে প্রস্তাবের উপর আফ্রিকার নয়টি দেশ–সহ বিশ্বব্যাপী ২৪ টি দেশ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে; ভোটদানে অনুপস্থিত ১৬ দেশের মধ্যে ১১ দেশ ছিল আফ্রিকার; ভোটদানে বিরত ৫৮ দেশের মধ্যে ২৩ দেশ ছিল আফ্রিকার। শীর্ষ  সম্মেলনের পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউএনজিএ প্রস্তাবে আফ্রিকার দুটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়, ছয়টি দেশ অনুপস্থিত ছিল এবং ভোটদানে বিরত ৩২ দেশের মধ্যে ১৫ ছিল আফ্রিকার। অতএব, ঐক্যের বাতাবরণ সত্ত্বেও, আফ্রিকা কৌশলগতভাবে সঙ্কট মোকাবিলায় একজোট নয়, যদিও এর ফলাফলের মোকাবিলা করার চেষ্টায় তারা ঐক্যবদ্ধ।

জ্বালানি, খাদ্য ও সারের সরবরাহে ব্যাঘাতের কারণে আফ্রিকার কোভিড–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে নতুন করে গুরুতর সমস্যায় ফেলেছে ইউক্রেন সঙ্কট।

এই শীর্ষ সম্মেলন তার অংশীদারদের বিস্তীর্ণতা তুলে ধরেছে, যারা বিশ্ব আবার বিভক্ত হওয়ায় নতুন করে প্রভাব ফেলতে চাইছে। অনেক আফ্রিকান দেশকে তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সঙ্কটের সঙ্গে সামঞ্জস্য তৈরি করতে হবে। অনিশ্চিত আর্থিক ভবিষ্যৎ তাদের অগ্রাধিকারের উপর একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। উপযুক্ত পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক সঙ্কট মোকাবিলা করার জন্য এইউ–এর নিজস্ব ব্যবস্থা ও শক্তির দিকে নজর দেওয়া দরকার

শীর্ষ সম্মেলনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলও ছিল।

সম্মেলনটি আফ্রিকা মহাদেশীয় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা (এএফসিএফটিএ) বাস্তবায়ন এবং তা ত্বরান্বিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। নাইজারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহামাদউ ইসোফউ এএফসিএফটিএ নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিলেন। মুক্ত বাণিজ্য এলাকা একটি গাইডেড ট্রেড ইনিশিয়েটিভ (জিটিআই)–এর মাধ্যমে একটি পরীক্ষা করার চেষ্টা করছে, যা আগের শীর্ষ সম্মেলনে অনুমোদিত হয়েছিল। এটি আটটি দেশের ৯৬টি পণ্য নিয়ে ব্যবসা ফাস্টট্র্যাক করে। এটাকেই সম্মেলনের বিষয়বস্তু করার পিছনে ধারণাটি ছিল যে আফ্রিকার নিজের প্রচেষ্টাধীন সবচেয়ে বড় উদ্যোগটিকে অবশ্যই রাজনৈতিক প্রেরণা দিতে হবে। ঘানায় আফ্রিকা প্রসপারিটি ডায়ালগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন উন্নত করার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। আয়োজকরা  সেই সম্মেলনের আউটকাম ডকুমেন্ট অ্যান্ড কমপ্যাক্ট শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন।

এইউ সভাপতি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘‌‘‌অভ্যন্তরীণ স্থিতিস্থাপকতা, আন্তঃ–আফ্রিকান সংহতি, আফ্রিকান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির দ্রুত বাস্তবায়নের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সক্রিয়করণ, যা সৎ শাসন দ্বারা সমর্থিত, আমার দৃষ্টিতে পরিত্রাণের পথ বলে মনে হয়।’‌’‌ ঋণের চাপ কমানো, অ্যাডজাস্টমেন্টের চেয়ে বড় আকারের রাইট অফ চাওয়া, এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (আইএমএফ) বনাম চিন ইস্যুতে না–ঢোকাই ছিল প্রধান বিষয়। কিছু আফ্রিকান দেশ এখন চিনের সঙ্গে সরাসরি সমন্বয় চাইছে, কারণ চিন তাদের বৃহত্তম ঋণদাতা। এইউ কমিশনকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থাপত্যের সংস্কারের ব্রিজটাউন উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। সার্বভৌম নিশ্চয়তাযুক্ত ঋণের চেয়ে বাজার থেকে মূলধন আকর্ষণের দক্ষতা বাড়াতে আফ্রিকা তার নিজস্ব রেটিং এজেন্সিও চায়।

এইউ সভাপতি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘‌‘‌অভ্যন্তরীণ স্থিতিস্থাপকতা, আন্তঃ–আফ্রিকান সংহতি, আফ্রিকান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির দ্রুত বাস্তবায়নের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সক্রিয়করণ, যা সৎ শাসন দ্বারা সমর্থিত, আমার দৃষ্টিতে পরিত্রাণের পথ বলে মনে হয়।’‌’‌

এর পাশাপাশি, সদস্য রাষ্ট্রগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব সহকারে নজর দেওয়া হয়েছিল। এইউ থেকে সুদানের সাসপেনশন অব্যাহত রয়েছে; মালি, গিনি ও বুরকিনা–ফাসোকে এইউ ও ইকনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মৌলবাদী গোষ্ঠীসমূহের মুখোমুখি দাঁড়ানো এই দেশগুলির গণতন্ত্রে উত্তরণের ভবিষ্যৎ কণ্টকাকীর্ণ।

২০২৩ সালে ছয়টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আছে:‌ নাইজেরিয়ায় সবেমাত্র ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে, সিয়েরা লিওন জুনে, লাইবেরিয়ায় অক্টোবরে, মাদাগাস্কার নভেম্বরে, ডিআরসি ও গ্যাবনে বছরের শেষার্ধে শেষ হবে। লিবিয়া ও দক্ষিণ সুদানে নির্বাচন সম্ভবপর হয়নি। নির্বাচন বা নির্বাচন না–হওয়া, দুটোই এইউ যে সম্প্রীতি চায় তা ব্যাহত করতে পারে।

এবারের শীর্ষ সম্মেলনটি আরও সমঝোতামূলক ছিল। যদিও কারও সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয়নি, তবে অভ্যুত্থান ঘটেছে এমন কোনও দেশের উপর নিষেধাজ্ঞার জন্য চাপও দেওয়া হয়নি।

ইথিওপিয়ার সমস্যাগুলি, বিশেষ করে টাইগ্রের, এখনও অমীমাংসিত;‌ ইতিমধ্যে এম২৩ নিয়ে ডিআরসি ও রুয়ান্ডার সমস্যার প্রেক্ষিতে ইস্ট আফ্রিকান ফোর্স মোতায়েন করতে হয়েছিল, এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদ সেই অপারেশনের জন্য শান্তি তহবিলের প্রথমবার ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের  তহবিলের মধ্যে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যাবে মোতায়েনে, যা একটি সমাধান নয়, একটি লক্ষণ।

আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলায় আফ্রিকার স্থান গুরুত্বপূর্ণ, এবং এইউ–এর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও অংশীদাররা সাইড–লাইনে মিটিং করার জন্য এইউ শীর্ষ সম্মেলন কাজে লাগায়। ভারত অতীতে সেই সুযোগ ছেড়ে দিয়েছে। ২০২১ সাল থেকে এ যাবত মার্কিন–আফ্রিকা নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, চিন–আফ্রিকা সহযোগিতার ফোরাম, ইউরোপ–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন, আফ্রিকার উন্নয়ন সম্পর্কিত টোকিও আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৩ সালের জুনে এবং ভারত আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন এই বছর হতে পারে। এই শীর্ষ সম্মেলনগুলিতে আফ্রিকার জন্য বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিকভাবে আফ্রিকার জন্য সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এইউ কি এই শীর্ষ সম্মেলনগুলি থেকে তৈরি হওয়া প্রত্যাশা পরিচালনা করতে পারে?

এইউ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় আসন চায়, যার মধ্যে রয়েছে গ্রুপ অফ টোয়েন্টি (জি২০) ও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন। সিয়েরা লিওনের সভাপতিত্বে দশ জনের কমিটি ২০০৫ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে আসন চাওয়ার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের বিষয়ে ইজুলউইনি কনসেনশাস দাবি করেছিল আফ্রিকার জন্য ভেটো–সহ দুটি স্থায়ী এবং তিনটি অস্থায়ী আসন দিতে হবে, এবং বলেছিল কারা সদস্য হবে তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ নয়, আফ্রিকা সিদ্ধান্ত নেবে। স্পষ্টতই এ নিয়ে কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না। এখন ১০–এর কমিটি (সি১০) জি২০ থেকে পাওয়া স্থায়ী আমন্ত্রণকে সদস্যপদে উন্নীত করার দায়িত্বও পেয়েছে। বর্তমানে জি২০ বৈঠকে যোগ দেন এইউ চেয়ারপারসন, বর্তমানে কমোরোসের প্রেসিডেন্ট, ও আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের (এইউসি) চেয়ারপারসন। শীর্ষ সম্মেলন তাঁদের অংশগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে।

নিউ পার্টনারশিপ ফর আফ্রিকান ডেভলপমেন্ট (নেপাড)–এর জন্য সাধারণত একটি আমন্ত্রণ থাকে, কিন্তু যেহেতু এটি এখন এইউ–এর একটি বিভাগ (এইউডিও–নেপাড), তাই তা সাধারণত এইউসি চেয়ারের কাছে যায়। এটি মূলত মেলেস জেনাভিকে আনার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং স্বপ্নদর্শী নেপাড প্রধান ছিলেন। যেহেতু ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি সদস্য, তাই চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এইউ–এর সদস্যপদ সমর্থন করে;‌ তবে তারাও এইউ–এর সদস্যতার জন্য  ঐকমত্য তৈরি করতে অগ্রসর হয়নি, কারণ তা করা হলে অতিথি তালিকায় থাকা অন্যদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি করবে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, ‘‌‘‌জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত, (আফ্রিকা) জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা বহন করছে এবং তার জলবায়ু সক্রিয়তার প্রয়োজন ছিল।’‌’‌ কপ২৭ অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিশরে। প্রত্যাশা ছিল যে এটি একটি আফ্রিকা–কেন্দ্রিক কপ হবে। যদি বিশ্ব হতাশ হয়ে থাকে, তবে সম্ভবত আফ্রিকার এমন অনুভূতির আরও কারণ ছিল। আফ্রিকা বিশ্বাস করে যে জলবায়ু ইস্যুতে তার একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে, এবং আফ্রিকান গ্রিন ব্যাঙ্ক এমন সুযোগ প্রদান করে যা জলবায়ুর চ্যালেঞ্জগুলি কমাতে সাহায্য করে। প্রকৃতপক্ষে, আফ্রিকার সবুজ আচ্ছাদন বছরের পর বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত জনসম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যর্থতার জন্য ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। প্রতি বছর আফ্রিকার জন্য ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ উদ্ভূত হয় কার্বন শোষণের মূল্য থেকে, যা বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন সিঙ্ক কঙ্গো বেসিনের অবদান। এর মধ্যে আফ্রিকার ছয়টি দেশ পড়ে। তবে এর নগদীকরণ কখনও হয়নি, প্রধানত একটি স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির অভাবে এবং আরও সরাসরি জলবায়ু অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ হিসাবে একে ব্যবহার করার ক্ষমতা না–থাকার কারণে।

২০২৩ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কঙ্গোর আনা আফ্রিকা ও বিশ্ব অরণ্যায়নের দশক প্রবর্তনের প্রস্তাবকে এইউ স্বাগত জানিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এইউ কমিটি শীর্ষ সম্মেলনের সময় বৈঠক করে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট রুটো সবুজ প্রযুক্তির জন্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও প্রচুর খনিজের জন্য আফ্রিকার ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে চেয়েছেন। বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের কাছে তাঁর সরাসরি বার্তা ছিল ‘‌হয় আফ্রিকানাইজ করো, অথবা ধ্বংস হও’‌! শীর্ষ সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইবুনাল ফর দ্য ল অফ দ্য সি–তে জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কিত ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির কমিশন কর্তৃক সূচিত আইনি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ অনুমোদন করেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। ন্যায্য রূপান্তরকে স্বাগত জানিয়ে শীর্ষ সম্মেলন লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতি তহবিল চালু করার জরুরি প্রয়োজনের কথা জানিয়েছিল। ২০২৩ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কঙ্গোর আনা আফ্রিকা ও বিশ্ব অরণ্যায়নের দশক প্রবর্তনের প্রস্তাবকে এইউ স্বাগত জানিয়েছে।

শীর্ষ সম্মেলন অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে উপস্থাপিত এইউ–এর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রতিবেদন, শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিবেদন, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল দ্বারা বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক, আর্থিক, ও শক্তি  নীতি শাসনের প্রতিবেদন, এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কটের প্রতিবেদন বিবেচনা করেছে। এ ছাড়াও সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়োর আফ্রিকান পিয়ার রিভিউ মেকানিজম–এ অংশগ্রহণকারী নেতাদের ফোরামের রিপোর্ট, এইউডিএ–নেপাড রিপোর্ট ও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার সংক্রান্ত এইউ কমিটির দশটি রিপোর্টও  শীর্ষ সম্মেলনের সময় উল্লেখিত হয়েছে।

এইউসি চেয়ারপারসন ঘোষণা করেছেন যে এই বছর অর্গানাইজেশন অফ আফ্রিকান ইউনিটি প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী এবং তার পাশাপাশি অ্যাজেন্ডা ২০৬৩–র প্রথম দশকের পূর্তি উদযাপিত হবে। এর আগে ২০২২ সালে এইউ–এর বিশতম বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সদস্যদের স্বতন্ত্র উদ্দেশ্যগুলি অনুসরণের পরিবর্তে এইউ–কে অ্যাজেন্ডা ২০৬৩ পূরণে সহায়তা করার জন্য সেই অংশীদারদের পেতে হবে যারা তার প্রধান অর্থদাতা। বছরের পর বছর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, এইউ বাজেটের ৬৬ শতাংশ এখনও দাতাদের দ্বারা অর্থায়িত। তবে এইউ ইকনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস –এর উদাহরণ অনুসরণ করে অর্থায়নের জন্য তার সদস্য দেশগুলির আমদানির উপর ০.২ শতাংশ কর নিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে  ৷

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.