-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ইউএসএআইডি-র ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত থাকায় ভারতকে তার স্বাস্থ্যকৌশল পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিগুলি কি এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে?
ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি একক সংস্থা হিসেবে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর শিকড় মার্শাল প্ল্যানের (১৯৪৮) সঙ্গে সম্পর্কিত, যা প্রযুক্তিগত ভাবে ১৯৪৮ সালের ইকোনমি রিকভারি অ্যাক্ট নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউরোপের পুনর্গঠনে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান এই আইনে স্বাক্ষর করেন, যা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ‘উন্নয়নের দশক’ হিসেবে পরিচিত ১৯৭০-এর দশকে এই অঞ্চলে ইউএসএআইডি-র লক্ষ্য ছিল খাদ্য ও পুষ্টি, জনসংখ্যা পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন। এই অগ্রগতি পরবর্তী কালে ব্যক্তিগত সংস্থা (পিভিও) এবং বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়ে বৃহৎ কর্মসূচিতে রূপান্তরিত হয়। ২০১৩ সালের অভিযানমূলক বিবৃতিতে চরম দারিদ্র্যের অবসান ও স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক সমাজ উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি’কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ইউএসএআইডি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে ইউএসএআইডি-র কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে এবং সম্ভবত এটিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের অধীনে স্থানান্তর করবে। ইউএসএআইডি-র সঙ্গে ভারতের স্বাস্থ্য কার্যালয়ের অংশীদারিত্ব থাকার দরুন ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ভারতের স্বাস্থ্য ও সামাজিক ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ গত প্রায় সাত দশক ধরে ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে ইউএসএআইডি বিস্তৃত পরিসরে সম্পৃক্ত রয়েছে। যে সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ইউএসএআইডি সম্পৃক্ত রয়েছে, সেগুলি হল মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য, অপুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, কিশোর স্বাস্থ্য, পোলিও নির্মূল, টিকাদান, যক্ষ্মা, হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি)/ অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (এডস), রোগের নজরদারি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নগর স্বাস্থ্য-সহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার এবং অতিমারি সংক্রান্ত প্রস্তুতি।
ইউএসএআইডি-র সঙ্গে ভারতের স্বাস্থ্য কার্যালয়ের অংশীদারিত্ব থাকার দরুন ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ভারতের স্বাস্থ্য ও সামাজিক ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ গত প্রায় সাত দশক ধরে ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে ইউএসএআইডি বিস্তৃত পরিসরে সম্পৃক্ত রয়েছে।
একটি বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে যে, ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ভারত বছরে গড়ে প্রায় ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা পেয়েছে। কোভিড-১৯ সময়কালে তা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেলেও ২০২৪ সালে তা কমে প্রায় ১৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালে ভারতে স্বাস্থ্য খাতের পরিমাণ ছিল ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ক্ষেত্রে দু’টি প্রাসঙ্গিক বিষয় রয়েছে: (১) কেন্দ্রীয় বাজেটে এই ঘাটতি পূরণের জন্য পর্যাপ্ত বিধান আছে কি না, যার পরিমাণ প্রায় ১২-১৩ বিলিয়ন ভারতীয় টাকা এবং (২) এর কর্মসূচিগত প্রভাব কী?
এফওয়াই২৬-এর (আর্থিক বছর) জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ ৯৫৯.৫৮ বিলিয়ন ভারতীয় টাকা। এটি নামমাত্র বৃদ্ধি দর্শালেও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১৭-র প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে পর্যাপ্ত ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ার জন্য এই বরাদ্দ সমালোচিত হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে, সমকক্ষ অর্থনীতিতে ৩-৫ শতাংশ বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ২ শতাংশ রয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত বাজেটের জন্য ভারতের বহিরাগত উৎসের উপর নির্ভরতা কম, যা এই ব্যবধান পূরণের প্রক্রিয়াটিকে সহজ করে তুলছে। তবে তা কেবল তত্ত্বগত ভাবেই সহজ করেছে। সাম্প্রতিক জাতীয় স্বাস্থ্য হিসাব অনুমান করেছে যে, শতাংশের নিরিখে ভারতের স্বাস্থ্য খাতে বহিরাগত বা দাতাদের তহবিল বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যয়ের (সিএইচই) মাত্র ০.৬৬ শতাংশ, যা বহিরাগত উৎসের উপর কম নির্ভরতাকেই দর্শায়।
কোভিড-১৯ বছরগুলিতে ভারতের স্বাস্থ্য খাতে ইউএসএআইডি-র সর্বোচ্চ অবদান উল্লেখযোগ্য ছিল। অতিমারির সময় এই পরিমাণ এসে দাঁড়ায় ২২৮.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা গত তিন বছরে গড়ে প্রায় ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চাইতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিকেই দর্শায়। প্রথম পর্যায়ে (২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত) ‘নিষ্ঠা’ (ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ ফর স্কুল হেডস অ্যান্ড টিচার্স হোলিস্টিক অ্যাডভান্সমেন্ট) প্রকল্পটি জাতীয় পর্যায়ে এবং ১৩টি প্রকল্প হস্তক্ষেপকারী রাজ্যে কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া জোরদার করার জন্য প্রয়োজনভিত্তিক প্রযুক্তিগত সহায়তা অর্জন করেছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে (২০২১ সালের মে মাস থেকে ২০২৩ সালের মে মাস) জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা শক্তিশালী করার উপর মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল। দেশটি যখন ভাইরাসের ডেল্টা প্রবাহের সম্মুখীন হয়েছিল, তখন অক্সিজেন সংক্রান্ত বাস্তুতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে অতিরিক্ত ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল।
ইউএসএআইডি ভারতের সংশোধিত জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে ধারাবাহিক ভাবে অবদান রেখেছে। যেমন ডায়াগনস্টিকস, ই-ট্রেনিং মডিউল, সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য সরঞ্জাম কিট, অংশীদারিত্ব নির্দেশিকা, কর্মক্ষেত্রের নীতি হস্তক্ষেপ এবং যক্ষ্মাজয়ীদের একটি শৃঙ্খল তৈরি ইত্যাদি।
ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন, অফিস ইন্টারন্যাশনাল ডেস এপিজুটিজ এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (এফএও-ওআইই-ডব্লিউএইচও) ত্রয়ী বহুক্ষেত্রীয় প্রতিক্রিয়া প্রচারের জন্য ‘ওয়ান হেলথ’ বা ‘এক স্বাস্থ্য’ উদ্যোগের মাধ্যমে সহযোগিতা করছে। উদীয়মান অতিমারি হুমকি কর্মসূচি (প্রেডিক্ট) জুনোটিক ভাইরাস শনাক্তকরণ ও আবিষ্কারের জন্য তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে এবং অতিমারির সম্ভাবনার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা, জীবিকা ও সাংস্কৃতিক অনুশীলনের জন্য তাদের উপর নির্ভরশীল গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণী ও গবাদি পশু প্রজাতি এবং সম্প্রদায়ের উপর নির্দিষ্ট নজরদারির কাজ করেছে। এটি ছ’টি রাজ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা এবং এএমআর-এর নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও অবদান রেখেছে।
‘সমগ্র’ কর্মসূচিটি এমন একটি নগরভিত্তিক স্বাস্থ্য বাস্তুতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা সংবেদনশীল, সাশ্রয়ী মূল্যের এবং ন্যায়সঙ্গত ও দুর্বল সম্প্রদায়ের উপর মনোযোগ দিয়ে শহরে বসবাসকারী দরিদ্রদের জন্য গুণমানসম্পন্ন প্রতিরোধমূলক, প্রচারমূলক ও নিরাময়মূলক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
এর পাশাপাশি টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগগুলির উপর ধারাবাহিক ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে পোলিও নির্মূল কর্মসূচি, এবং সম্প্রতি রোটাভাইরাস এবং নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিনের মতো নতুন টিকা প্রবর্তনের কথা উল্লেখযোগ্য। ‘সমগ্র’ কর্মসূচিটি এমন একটি নগরভিত্তিক স্বাস্থ্য বাস্তুতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা সংবেদনশীল, সাশ্রয়ী মূল্যের এবং ন্যায়সঙ্গত ও দুর্বল সম্প্রদায়ের উপর মনোযোগ দিয়ে শহরে বসবাসকারী দরিদ্রদের জন্য গুণমানসম্পন্ন প্রতিরোধমূলক, প্রচারমূলক ও নিরাময়মূলক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
ভবিষ্যতের পরিবর্তন এবং তার অনিশ্চয়তা
বিদ্যমান কর্মসূচিগুলিতে পুনরায় প্রাণসঞ্চার করানো একটি ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ। যদিও মনে করা হচ্ছে যে, নতুন করে প্রাণসঞ্চার হলে সম্পদের ঘাটতি পূরণ হবে। আদর্শ ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে নেতৃত্ব ও শাসন, পরিষেবা সরবরাহ, অর্থায়ন, কর্মীবাহিনী, চিকিৎসা পণ্য, টিকা, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির রূপান্তর আদর্শ ভাবে প্রযুক্তিগত, ব্যবস্থাপনাগত এবং রাজনৈতিক ভাবে জটিল কার্যকলাপ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং রূপান্তরের জন্য একটি কৌশল প্রয়োজন। রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়ন কর্মসূচি বা ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এর (ইউএনডিপি) একটি বিস্তারিত ধাপে ধাপে রূপান্তর কৌশল রয়েছে যার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা প্রয়োজন। কিন্তু এই ধরনের প্রশাসনিক তহবিল জরুরি অবস্থার জন্য উপযুক্ত নয়। তবুও প্রক্রিয়াগুলি শিক্ষণীয় এবং বিবেচনা ও প্রস্তুতির জন্য জরুরি প্রশ্ন উত্থাপন করে। কোন জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় সংস্থা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেবে? সরকার ও নাগরিক সমাজ কি প্রয়োজনীয় সমন্বয় খুঁজে পেতে সক্ষম হবে? অনুমোদনের প্রক্রিয়াগুলিই বা ঠিক কেমন হবে? সমস্ত কার্যাবলির স্থানান্তর কি সম্ভব হবে, এবং যদি তা না হয়, তা হলে কোন কার্যাবলির স্থানান্তর কেমন ভাবে হবে?
স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির রূপান্তর আদর্শ ভাবে প্রযুক্তিগত, ব্যবস্থাপনাগত এবং রাজনৈতিক ভাবে জটিল কার্যকলাপ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং রূপান্তরের জন্য একটি কৌশল প্রয়োজন।
তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের দ্বারা রূপান্তরের বিকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং সম্মত হতে হবে। বিবেচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে আইনি প্রেক্ষাপট ও প্রয়োজনীয়তা, সামাজিক চুক্তি-সহ বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য প্রাসঙ্গিক জাতীয় নীতি, যত্নের ধারাবাহিকতা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি সুবিধাভোগী সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছনোর ক্ষমতা এবং মূল জনসংখ্যার উপগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণের জন্য বাস্তবায়ন মডেলগুলির পরিবর্তন করা।
কিছু চ্যালেঞ্জ অনুমান করা সম্ভব হলেও তা নিয়ে আলোচনা করার কাজটি মোটেও সহজ নয়। নতুন ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে কর্মীদের চুক্তি, পণ্য ও পরিষেবার মুলতুবি সরবরাহের চুক্তি এবং মূল কার্যকরী ও আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার। যে সব বাস্তবায়নকারী অংশীদার অব্যাহত থাকবে, তাদের চুক্তিতে কোনও বাধার সম্মুখীন হওয়া উচিত নয় এবং তাদের নতুন কর্মসূচি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের প্রয়োজন হতে পারে। একটি রূপান্তর সংক্রান্ত সময়সূচি ও মাইলফলক সূচক তৈরি করতে হবে। যতদূর সম্ভব বাধাগুলি এড়াতে হবে এবং ঝুঁকি প্রশমন পরিকল্পনাও তৈরি করতে হবে। অর্থ, প্রতিবেদন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় ও সফটওয়্যার রূপান্তর-সহ বাস্তবায়নের উপাদানগুলিকে মোকাবিলা করার জন্য নতুন অপারেশন ম্যানুয়াল ও স্ট্যান্ডার্ডস অফ প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করতে হবে।
এ কথা বলা যায় না যে, এগুলি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ এবং উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত অনিবার্য হতে পারে। সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বা স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সূচকে ভারত বর্তমানে ১০০-এর মধ্যে ৭১-এ দাঁড়িয়ে আছে, যা আগের পর্যায়ের মূল্যায়নে ৬৬ থেকে পিছিয়ে অবশ্যই। একই সঙ্গে ভারত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচকেও পিছিয়ে আছে, যার ফলে জরুরি পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। বিশ্লেষণে চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ নির্দিষ্ট সূচকগুলির মধ্যে রয়েছে মৌলিক পরিষেবাগুলিতে প্রবেশাধিকার, অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন শিশু, রক্তাল্পতা, বাল্যবিবাহ, সঙ্গীর সহিংস ব্যবহার, তামাক ব্যবহার ও আধুনিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার। ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পগুলি এই ক্ষেত্রগুলির বেশ কয়েকটিতে অবদান রাখে এবং মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার মতো জেলায় এই সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তা হলে এত দিন ধরে যা অর্জন হয়েছে, তা কি নস্যাৎ হয়ে যাবে এবং বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে?
বিশ্লেষণে চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ নির্দিষ্ট সূচকগুলির মধ্যে রয়েছে মৌলিক পরিষেবাগুলিতে প্রবেশাধিকার, অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন শিশু, রক্তাল্পতা, বাল্যবিবাহ, সঙ্গীর সহিংস ব্যবহার, তামাক ব্যবহার ও আধুনিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার।
কোভিড-পরবর্তী বিশ্বে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সুরক্ষা আগের চেয়েও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বিভিন্ন ধরনের সম্পর্কিত কার্যক্রম সমর্থন করে, যার মধ্যে রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরির (আইপিএইচএল) জন্য প্রযুক্তিগত নির্দেশনা, ‘ওয়ান হেলথ’ প্রকল্পের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, গুরুত্বপূর্ণ সংক্রামক রোগ কর্মসূচি বাস্তবায়ন, এএমআর-এর জন্য নজরদারি ও প্রতিবেদনমূলক ব্যবস্থাকে জোরদার করা এবং ফিল্ড এপিডেমিওলজি ট্রেনিং প্রোগ্রাম-এর (এফইটিপি) মাধ্যমে কর্মী উন্নয়ন। ইউএসএআইডি ইন্টিগ্রেটেড হেলথ ইনফরমেশন পোর্টাল (আইএইচআইপি) সম্পর্কিত উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণকেও সমর্থন করে। ‘ওয়ান হেলথ’ পদ্ধতিকে শক্তিশালী করা ও প্যাথোজেনের আন্তঃসীমান্ত সংক্রমণ রোধ করার উপর সামগ্রিক জোর দেওয়া হচ্ছে। কিছু অনিবার্য ধীরগতির কর্মসূচি কি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে মৃত্যুহার বৃদ্ধির দিকে চালিত করতে পারে?
অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ওঠা
ইউএসএআইডিকে ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সফট-পাওয়ার গ্লাভস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, যা পেন্টাগনের (প্রায়) ‘৯০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের হার্ড-পাওয়ার ফিস্ট’-এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে। দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে - ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে – ইউএসএআইডি-র ভূমিকা ঘিরে রাজনৈতিক বাগবিতণ্ডা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বিতর্কের নিষ্পত্তি দ্রুত হবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলস্বরূপ, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলিকে স্বীকার করতে হবে যে, জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে এবং তাদের অবিলম্বে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আসন্ন শিক্ষা পেয়ে সরকারগুলি কি কিছুটা তৎপরতার সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানাবে না কি শিক্ষা নিতে অনিচ্ছুক থাকবে? ইবোলা সঙ্কট স্বাস্থ্য ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতার প্রয়োজনীয়তাকে দর্শিয়েছিল। যদি মানবজীবন রক্ষা করা সম্ভব হয় এবং সঙ্কটের সময় ও তার পরবর্তী সময়ে সকলের জন্য সুস্বাস্থ্যের ফলাফল তৈরি করা সম্ভব হয়, তা হলে স্থিতিস্থাপকতার কথা বিবেচনা করা হয়। স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়মিত পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকৃত হয়েছে, যা ইতিবাচক স্বাস্থ্য ফলাফলের দিকে পরিচালিত করে, যাকে ‘স্থিতিস্থাপকতামূলক লভ্যাংশ’ও বলা হয়। যদিও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পদ্ধতিগত দুর্বলতায় ভুগছে। তবে পোলিও নির্মূল কর্মসূচির কার্যকারিতা বা কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া একটি সহজাত স্থিতিস্থাপকতার সাক্ষ্য বহন করে, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতার কিছু মূল উপাদান প্রদর্শনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে এবং সেগুলি হল দায়বদ্ধতা, কর্মীবাহিনীর প্রতিশ্রুতি এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য অন্তর্নির্মিত ব্যবস্থা-সহ অভিযোজিত প্রক্রিয়া। স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থা হল ‘বিশ্ব স্বাস্থ্যের পরবর্তী বৃহৎ বিবর্তন’ এবং ভারতের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থিতিস্থাপকতা আনার সুযোগ ও প্রয়োজনীয়তা… দুই-ই রয়েছে।
রাজীব দাশগুপ্ত জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ সোশ্যাল মেডিসিন কমিউনিটি হেলথ-এর চেয়ারপার্সন এবং অধ্যাপক। এ ছাড়াও তিনি ন্যাশনাল এইএফআই (অ্যাডভার্স এফেক্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন) কমিটির সদস্য।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Rajib Dasgupta is a Professor and Chairperson at the Centre of Social Medicine Community Health at Jawaharlal Nehru University. He is also a member of ...
Read More +