Published on Feb 01, 2024 Updated 0 Hours ago

নতুন নেতৃত্ব কীভাবে মলদ্বীপের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে তা দেখতে হবে

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর মলদ্বীপ কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবের সম্মুখীন

এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে পিছনে ফেলে আসার পর মলদ্বীপের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডক্টর মোহাম্মদ মুইজ্জু ও তাঁর দল বিদ্যমান ও নতুন করে উঠে আসতে থাকা অর্থনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন। এই ঘটনাটি প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে অনুঘটকের ভূমিকা নিতে পারে, যদিও ভারতই ছিল মুইজ্জুর কোনও দেশের নাম না করে ‘‌বিদেশি সেনা ফেরত পাঠানো’‌ বিষয়ক নেতিবাচক ভোট প্রচারের লক্ষ্য। এর কারণ অনুসন্ধান করা খুব কঠিন নয়। গত বছর শ্রীলঙ্কার যা হয়েছিল, ঠিক সেভাবে না হলেও মলদ্বীপ এখন এক আর্থিক সংকটের দিকে যাচ্ছে। এই বিপদ সম্পর্কে সচেতন প্রতিটি মলদ্বীপবাসী উদ্বিগ্নভাবে শ্রীলঙ্কার ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছিলেন, এবং তাঁরা দেখেছিলেন যে ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ নীতিই শ্রীলঙ্কাকে প্রথম এবং শেষ পর্যন্ত সাহায্য করেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতে, মলদ্বীপের ‘‌আগামী দুই বছরে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি মন্থর হবে, এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দেশটি উচ্চ খরচে ঋণ নেওয়া অব্যাহত রাখলে আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলি আরও বাড়বে’‌। ২০২৩ সালে প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, আর ২০২৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত গড় বৃদ্ধি হবে ৫.৪ শতাংশ। যখন একটি সমৃদ্ধ পর্যটনক্ষেত্র মধ্যমেয়াদে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন ব্যাঙ্ক উল্লেখ করেছে যে দেশটি আর্থিক বছরে চাপের মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ, মূলধনী ব্যয়, ভর্তুকি বৃদ্ধি এবং বাজেট ঘাটতির চলতি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত চাপের কারণে।


সরকার এই বছরের শুরুতে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) হার বাড়িয়েছে, তবে আরও উল্লেখযোগ্য ও তাৎক্ষণিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন, বিশেষত যেহেতু ২০২৩ সালের জন্য পরিকল্পিত ভর্তুকি সংস্কারগুলি প্রত্যাশিতভাবে ঘটেনি।

ব্যাঙ্ক বলেছে যে ঘাটতি হ্রাসের প্রত্যাশা সত্ত্বেও মলদ্বীপের মোট ঋণ অত্যন্ত উচ্চ স্তরে থাকবে, জিডিপি–র ১১৫ শতাংশের বেশি। ‘‌‘‌সরকার এই বছরের শুরুতে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) হার বাড়িয়েছে, তবে আরও উল্লেখযোগ্য ও তাৎক্ষণিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন, বিশেষত যেহেতু ২০২৩ সালের জন্য পরিকল্পিত ভর্তুকি সংস্কারগুলি প্রত্যাশিতভাবে ঘটেনি।’‌’‌ এই কারণে ব্যাঙ্ক চায় সরকার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ‘‌রাজস্ব বাড়ানোর সময় ব্যয়ের উপর নজর রাখুক, আসন্ধ স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের মতো কর্মসূচিগুলির পুনর্নবীকরণ করুক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলির (এসওই) জন্য ভর্তুকি আরও কার্যকরী করে তুলুক, করভিত্তি প্রসারিত করুক, এবং দেশীয় আয়ের উৎসগুলির সন্ধান করুক’‌। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে সরকারের বড় আকারের ঋণ ২০২৬ সালের মধ্যে, অর্থাৎ মুইজ্জু সরকারের শাসনকালে, বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। সেই অনুসারে ২০২৬ সালে মলদ্বীপ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। ব্যাঙ্ক অনুমান করেছে যে বেসরকারি ক্ষেত্রের উপর প্রভাবের একটি কারণ হল দেশের কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২০২৬ সালের ঋণের মধ্যে রয়েছে ২০২১ সালে সরকারের নেওয়া ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (এমভিআর ৭.৭ বিলিয়ন) ঋণ, আর সেইসঙ্গে পূর্ববর্তী সরকারের নেওয়া আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এডিএফডি) থেকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ, যা ২০২৬ সালে পরিশোধযোগ্য।


সরকারের বড় আকারের ঋণ ২০২৬ সালের মধ্যে, অর্থাৎ মুইজ্জু সরকারের শাসনকালে, বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।


ব্যাঙ্ক বলেছে যে সরকারি ও সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত
বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ২০২৬ সালে ১.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে তা ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২৫ সালে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‌‘‌এই বিশাল পরিমাণ সরকারি ঋণ ও সংশ্লিষ্ট পুনঃঅর্থায়ন ঝুঁকি মলদ্বীপের অর্থনীতিকে অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক ধাক্কার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।” ব্যাঙ্ক সতর্ক করেছে যে অ–রেয়াতি শর্তে অতিরিক্ত ঋণ সংগ্রহ এই দুর্বলতাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

বাড়ছে ঋণের বোঝা

এটি ছিল বিশ্বব্যাঙ্কের সর্বশেষ স্থিতি প্রতিবেদন, যা এসেছিল ডিসেম্বর ২০২২–এ। ইতিমধ্যে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (আইএমএফ) মলদ্বীপের কোভিড–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রশংসা করার সময় বিষয়টিকে ‘‌নির্ধারক নীতিমূলক ব্যবস্থা’‌ হিসাবে বর্ণনা করেও কীভাবে আর্থিক দুর্বলতাগুলি রয়ে গেছে এবং রাজস্ব ঘাটতি দ্বি–সংখ্যায় রয়েছে তা নির্দেশ করেছে। সেইসঙ্গেই বলেছে, উচ্চ মূলধনী ব্যয়, বর্ধিত সুদের বোঝা ও উচ্চ মজুরি বিল তা প্রতিফলিত করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলিকে অব্যাহত সমর্থন আর্থিক দুর্বলতা বাড়াচ্ছে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সুদৃঢ় আছে, এবং তা শক্তিশালী রক্ষাকবচ দ্বারা সমর্থিত, কিন্তু সার্বভৌম–ব্যাঙ্ক সম্পর্ক থেকে ঝুঁকি তৈরি হয়।


ডলারের ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে, যা সমান্তরাল বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে বৃহৎ প্রসারের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।


আইএমএফ জানিয়েছে যে, মলদ্বীপ ‘বহিরাগত ঋণজনিত দুরবস্থার উচ্চ ঝুঁকি এবং সামগ্রিক ঋণের কারণে দুরবস্থার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে...।’ বৈদেশিক অর্থায়নের চাহিদা বাড়তে পারে এবং তা ইতিমধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়া রিজার্ভের উপর নির্ভরতা বাড়াবে, আর তার ফলে ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণ নেওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। ডলারের ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে, যা সমান্তরাল বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে বৃহৎ প্রসারের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। আইএমএফ ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জিএসটি ও ট্যুরিজম জিএসটি (টিজিএসটি) হার বাড়ানোর জন্য (প্রেসিডেন্ট সোলি-র) সরকারের প্রশংসা করেছে। তারা চেয়েছে আন্তর্জাতিক রিজার্ভ ও দামের উপর চাপ কমাতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের, অর্থাৎ মলদ্বীপ মনিটারি অথরিটির, (এমএমএ) সরকারকে ঋণ দেওয়া পর্যায়ক্রমে বন্ধ হোক। তবে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ মলদ্বীপের দীর্ঘমেয়া্দি বৈদেশিক মুদ্রা ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘‌বি–মাইনাস’‌–এই রেখে দিয়েছে, যা দেশটির  শক্তিশালী পর্যটন সম্ভাবনা এবং ভূ–রাজনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব দ্বারা সমর্থিত অবিরত দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক অর্থায়নের উপর ভিত্তি করে একটি অনুকূল জিডিপি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। তবে ফিচ বলেছে যে, এর বিপরীতে রয়েছে দেশের উচ্চ ও ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের বোঝা, কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ধাক্কাগুলির সম্মুখে অরক্ষিত থাকা, যা পর্যটন শিল্পের জন্য আন্তর্জাতিক সম্ভাবনাকে দুর্বল করতে পারে। ফিচ আরও বলেছে যে ‘‌নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’‌ বর্ধিত বাহ্যিক অর্থায়ন ও তারল্য সংক্রান্ত চাপের ঝুঁকি প্রতিফলিত করে, এবং তা ক্রমবর্ধমান বহির্দেশীয় ঋণ পরিষেবা, দুর্বল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, এবং কঠোর বৈশ্বিক আর্থিক অবস্থার মধ্যে মার্কিন ডলারে মুদ্রার বিনিময় হারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তারা আরও যোগ করেছে যে শক্তি এবং খাদ্যের চড়া দামের কারণে বড় আকারের আমদানি বিল এবং কারেন্সি পেগ সমর্থন করার জন্য এমএমএ দ্বারা অব্যাহত হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট চাপের মধ্যে থাকবে।


এটুকু বলাই যথেষ্ট যে ভোট–প্ররোচিত বিভ্রান্তির মধ্যেও সরকার এখনও তার আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য ২.৪ বিলিয়ন এমভিআর মূল্যের ট্রেজারি বিল (টি–বিল) ইস্যু/বিক্রয় করতে সক্ষম হয়েছে৷


ফিচ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এমএমএ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে তাদের ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুদ্রা–অদলবদল বোঝাপড়া থেকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়েছে। মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৬.৬ শতাংশ কমে ৬৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। অর্থমন্ত্রক অনুমান করেছে যে ডিসেম্বরে
অর্থবছরের শেষ নাগাদ অফিসিয়াল রিজার্ভ ৬০৬.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে। এমএমএ–র মতে, সরকারি রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাদ দিয়ে আগস্টের শেষে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা এই বছরের জুলাইয়ে ছিল ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবুও, বর্তমান বাহ্যিক অর্থপ্রদানের বৈদেশিক রিজার্ভের কভারেজ ২০২৩ সালে মাত্র ১.১ মাসে দাঁড়িয়েছে, যা ‘‌বি’‌ মধ্যমাত্রা ৩.৫ মাসের থেকে অনেক কম। ইতিবাচক দিক থেকে, সংস্থাটি বলেছে যে ২০২৩ সালে পর্যটকদের আগমন রেকর্ড সর্বোচ্চ ১.৯ মিলিয়ন বা প্রাক–কোভিড ২০১৯ স্তরের তুলনায় ১১.৬ শতাংশ বেশি হবে, যা ২০২৩ সালে অর্থনীতিকে ৭.২ শতাংশ এবং পরের দুই অর্থবছরে গড় ৬.৬ শতাংশ করে বৃদ্ধির পথ তৈরি করবে। এটুকু বলাই যথেষ্ট যে ভোট–প্ররোচিত বিভ্রান্তির মধ্যেও সরকার এখনও তার আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য ২.৪ বিলিয়ন এমভিআর মূল্যের ট্রেজারি বিল (টি–বিল) ইস্যু/বিক্রয় করতে সক্ষম হয়েছে
৷ অর্থ মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য ইঙ্গিত করে যে সরকারের টি–বিল ও বন্ড থেকে ৭৬ বিলিয়ন এমভিআর বকেয়া ঋণ রয়েছে।

সাধ্যের বাইরে বেঁচে থাকা

বিস্তারিত বিবরণ সরিয়ে রাখলে, তিনটি রিপোর্ট থেকে বোঝা যায় যে সরকার তার সাধ্যের বাইরে জীবনযাপন করছে। তারা বলেছে যে সরকারের পুনরাবৃত্ত ব্যয় বাড়ছে এবং মূলধনী ব্যয় হয় বৈদেশিক ঋণ দ্বারা অর্থায়ন করা হচ্ছে, যেমন ভারত ও চিন থেকে, অথবা ঘাটতি–অর্থায়নের মাধ্যমে। পরেরটি হয় পর্যায়ক্রমিক স্বল্পমেয়াদি টি–বিলের মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছে, প্রায়শই ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র থেকে উচ্চ সুদের হারে ক্রয় করে, বা আরও নোট ছাপিয়ে, বা উভয়ই।


তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে ভারতের ট্র্যাক রেকর্ড চিনের তুলনায় প্রশংসনীয়, কারণ চিন শুধু পুঁজিই নয় শ্রমও আনে, এবং এইভাবে স্থানীয় জনগণকে চাকরি ও পারিবারিক আয় থেকে বঞ্চিত করে।

যদিও মুইজ্জু সরকার বর্তমান ঋণ পুনর্গঠনের জন্য ভারত ও চিনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে অনুমান করা যায়, তা হলেও নতুন করে বহির্দেশীয় তহবিল প্রয়োজন হতে পারে নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য, যা সম্পদ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং অর্থনীতিকে এগিয়ে রাখে। এখানে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে ভারতের ট্র্যাক রেকর্ড চিনের তুলনায় প্রশংসনীয়, কারণ চিন শুধু পুঁজিই নয় শ্রমও আনে, এবং এইভাবে স্থানীয় জনগণকে চাকরি ও পারিবারিক আয় থেকে বঞ্চিত করে। তবুও, সরকার এখনও আবর্তিত (‌রেকারেন্ট)‌ ব্যয় মেটাতে আর্থিক তহবিলের জন্য চারপাশে তাকাতে বাধ্য হতে পারে। বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ–কে সর্বোত্তম উপায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যদিও তারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে জনপ্রিয় নয় এই কারণে যে সহায়তা দেওয়ার আগেই কর ও শুল্ক বৃদ্ধির দাবি জনগণের কাছে আপত্তিকর। সুতরাং, বন্ধু দেশগুলির কাছ থেকে বাজেটের সহায়তা চাওয়া একটি বিকল্প। প্রাক–গণতন্ত্র যুগে এবং এখন পর্যন্ত এমনটিই হয়ে আসছে। এখানে আবার ভারতের চিনের চেয়ে বেশি প্রমাণিত ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে, এবং মলদ্বীপের ক্ষেত্রে আরও বেশি।


বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ–কে সর্বোত্তম উপায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যদিও তারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে জনপ্রিয় নয় এই কারণে যে সহায়তা দেওয়ার আগেই কর ও শুল্ক বৃদ্ধির দাবি জনগণের কাছে জনপ্রিয় নয়।

যাদের মলদ্বীপের মাটি থেকে ‘‌বিদেশি সৈন্যদের’‌ অপসারণের ক্রমাগত দাবি শুধুই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল, সেই নতুন নেতৃত্বের অধীনে কীভাবে এই সব কিছু বিকশিত হয়, তা দেখা বাকি আছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই প্রথম বিদেশি নেতা যিনি মুইজ্জুকে তাঁর নির্বাচনী জয়ের জন্য সামাজিক মাধ্যমে অভিনন্দন  জানিয়েছিলেন, এবং তারপর মুইজ্জুর সঙ্গে ভোট–পরবর্তী বৈঠকের সময় ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মুহাওয়ার মোদীর একটি চিঠি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। মুইজ্জুর পিপিএম–পিএনসি জোট এই বৈঠককে ‘‌ফলপ্রসূ’‌ বলে প্রশংসা করে, এবং বলে যে ‘‌দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও প্রসারিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে’‌। এই মুহূর্তে একে দ্বিপাক্ষিক ফ্রন্টে আশার ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, কারণ মলদ্বীপের অর্থায়নের জন্য ভারতের প্রয়োজন অব্যাহত রয়েছে, আর নতুন দিল্লির পরস্পর–সম্মত নিরাপত্তা সহযোগিতায় মালেকে প্রয়োজন। প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর ভবিষ্যৎ সরকারের ‘‌সন্তুষ্টি’‌র জন্য ‘‌বিদেশি সৈন্য’‌ ইস্যুটি সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।



এন সত্য মূর্তি একজন চেন্নাই–ভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.