Published on May 23, 2023 Updated 0 Hours ago

আইআর২০২৩ কোনও মৌলিক পরিবর্তন না আনলেও এটি মূল পর্যালোচনায় কিছু ঘষামাজা করেছে এবং ব্রিটেনের নতুন চিন্তাভাবনাকেই স্পষ্ট ভাবে প্রতিফলিত করছে

ব্রিটেনের সমন্বিত পর্যালোচনার নবীকরণ: কী পরিবর্তন হয়েছে?

২০২১ সালের মার্চ মাসে ব্রিটিশ সরকার একটি কৌশলগত নথি ‘গ্লোবাল ব্রিটেন ইন এ কম্পিটিটিভ এজ: ইন্টিগ্রেটেড রিভিউ অফ সিকিউরিটি, ডিফেন্স, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন পলিসি’ প্রকাশ করে, যা ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেনের বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিস্তারিত ব্লুপ্রিন্ট তুলে ধরে।

তবু মাত্র দু’বছর পরে ইউক্রেন সঙ্কট বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ক্ষুণ্ণ করার ফলে ব্রিটেন ‘ইন্টিগ্রেটেড রিভিউ রিফ্রেশ ২০২৩: রেসপন্ডিং টু আ মোর কনটেস্টেড অ্যান্ড ভোলাটাইল ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক নথির একটি হালনাগাদ সংস্করণ প্রকাশ  করেছে। এই নথিটিতে আইআর২০২১ প্রকাশের পর থেকে যেসব ঘটনা ভূ-রাজনৈতিক পরিসরকে মৌলিকভাবে পরিবর্তিত করেছে, তার উপর ভিত্তি করে ২০২২ সালে ব্রিটিশ অগ্রাধিকারগুলি পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিল লিজ ট্রাস প্রশাসন।

বিপদবিশৃঙ্খলা এবং বিভাজন

‘দক্ষিণ চিন সাগর এবং তাইওয়ান প্রণালীতে চিনের আগ্রাসী অবস্থানের সঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসন’-এর ফলে সৃষ্ট ‘বিপদ, বিশৃঙ্খলা এবং বিভাজন দ্বারা সংজ্ঞায়িত একটি বিশ্বে’ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিবেশের সম্ভাব্য ক্রমাবনতির বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক করেছে আইআর২০২৩। রাশিয়াকে ব্রিটেনের ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক হুমকি’ এবং ‘সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ’ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হিসাবে চিহ্নিত করার বিষয়টি অব্যাহত রয়েছে। তবে আইআর২০২১-এর তুলনায় এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল যে, নতুন নথিতে ইউক্রেন সংঘাতের ফলাফলের সঙ্গে সম্মিলিত নিরাপত্তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে, এবং ইউরো-আটলান্টিক মঞ্চটি ব্রিটেনের মূল ভৌগোলিক অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গিয়েছে। এটি ইউক্রেনের প্রতি ব্রিটেনের সামরিক সহায়তা থেকেই স্পষ্ট, যার মূল্য ২.৩ বিলিয়ন ইউরো এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ।

আইআর২০২১-এর তুলনায় এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল যে, নতুন নথিতে ইউক্রেন সংঘাতের ফলাফলের সঙ্গে সম্মিলিত নিরাপত্তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে, এবং ইউরো-আটলান্টিক মঞ্চটি ব্রিটেনের মূল ভৌগোলিক অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গিয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে নথিটি ইউরো-আটলান্টিকের সমৃদ্ধিকে ইন্দো-প্যাসিফিকের নিরাপত্তার সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং এই মঞ্চগুলির মধ্যকার ঘটনাপ্রবাহকে সম্পৃক্ত করে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কৌশলের সঙ্গে কিছুটা একই রকমের, যা ইউরোপ মহাদেশের স্থিতিশীলতাকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতার সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই প্রসঙ্গে নথিটিতে অভিন্ন সাধারণ স্বার্থ-সহ ‘আটলান্টিক-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারিত্বের একটি নতুন সংযোগ শৃঙ্খল’-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সমমনস্ক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার উপর জোর দেওয়া কৌশলটির মূল ভাবনায় বার বার ফিরে এসেছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ব্রিটেনের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ মিত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করা এবং ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপনের উপর জোর দেওয়া হয়।

ইন্দো-প্যাসিফিক প্রবণতাকে কেন্দ্রে রেখে আইআর২০২১-এ ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সর্বাধিক সমন্বিত উপস্থিতি-সহ ইউরোপীয় অংশীদার’ হওয়ার জন্য ব্রিটেনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। আইআর২০২৩ এই প্রবণতাকে ব্রিটিশ বিদেশনীতির একটি ‘স্থায়ী স্তম্ভ’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার পাশাপাশি এ কথা স্বীকার করে যে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সংঘাতের বৈশ্বিক পরিণতি ইউক্রেনের সংঘাতের চেয়েও ব্যাপকতর হতে পারে।’ এখানে উল্লেখ্য যে, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো ব্রিটেন কোনও আনুষ্ঠানিক ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রকাশ করেনি।

এই ইন্দো-প্যাসিফিক প্রবণতা এবং সেখানে তার আঞ্চলিক উপস্থিতির প্রক্ষেপণের প্রমাণ হিসাবে ব্রিটেন আসিয়ান আলাপ-আলোচনা অংশীদার হওয়া, এই অঞ্চলে তার ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা, জাপানের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করার পাশাপাশি ‘গ্লোবাল কমব্যাট এয়ার প্রোগ্রাম’ হিসেবে আখ্যায়িত ইতালি-জাপান-ব্রিটেন প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে যুক্ত হওয়া, কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ট্রেড প্যাক্ট-এ যোগদানের জন্য আবেদন করা এবং সম্প্রতি ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য একজন মন্ত্রী নিয়োগ করার পর পরই অঞ্চলটিতে একজন ‘প্রযুক্তি দূত’ বহাল করার অতিরিক্ত পরিকল্পনার মতো একাধিক উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।

আইআর২০২৩ এই প্রবণতাকে ব্রিটিশ বিদেশনীতির একটি ‘স্থায়ী স্তম্ভ’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার পাশাপাশি এ কথা স্বীকার করে যে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সংঘাতের বৈশ্বিক পরিণতি ইউক্রেনের সংঘাতের চেয়েও ব্যাপকতর হতে পারে।’

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে, আইআর২০২৩-এর প্রকাশ প্রাইম মিনিস্টার সুনকের মার্কিন সফরের সঙ্গে সমাপতিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব এবং প্রতিরক্ষা চুক্তি অউকাসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এর মূল লক্ষ্য হল অস্ট্রেলিয়াকে সর্বাধুনিক ব্রিটিশ প্রযুক্তিতে নির্মিত পারমাণবিক শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ জোগান দেওয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করার জন্য আমেরিকার সহায়তায় যৌথ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা। সান দিয়েগোয় সাম্প্রতিক ত্রিপাক্ষিক সংবাদ সম্মেলনে অউকাস-এর উল্লেখ করে সুনকের তাকে ‘অনেক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব’ হিসাবে বর্ণনা করার ঘটনা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য তিনটি দেশের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রিকতাকেই দর্শায়।

নতুন নথিতে ‘তাইওয়ান প্রণালীতে স্থিতিশীলতা’ বজায় রাখাকে সমর্থন করার পাশাপাশি  ‘স্থিতাবস্থা পরিবর্তনকারী যে কোনও একপাক্ষিক প্রয়াস’-এর বিরোধিতা করা হয়। অউকাস এবং অন্য একাধিক কারণে সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কেন্দ্রীয় ইউরোপীয় শক্তি হিসাবে ফ্রান্সের অবস্থানের প্রেক্ষিতে ফ্রাঙ্কো-ব্রিটিশ সম্পর্কের সাম্প্রতিক অচলাবস্থা এক নতুন সমীকরণ।

অন্যান্য পশ্চিমী দেশের মতো, ২০২১ সাল থেকে চিনের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কের ক্রমাবনতির ফলে আইআর২০২৩-এ চিনকে একটি ‘যুগ সংজ্ঞায়িত চ্যালেঞ্জ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবুও স্পষ্টভাবে চিনকে একটি ‘শঙ্কা’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করার অনিচ্ছা সুনকের কনজারভেটিভ পার্টির শ্যেনদৃষ্টি সদস্যদের হতাশ করেছে। কৌশলটিতে ব্রেক্সিটের পরে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর জোর দিয়ে চিনের  ক্ষেত্রে আরও পরিশীলিত ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে এবং বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সাধারণ সমস্যা সংক্রান্ত অভিন্ন পরিসরে সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছে। আরও একবার এই পদ্ধতিটিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে খুব বেশি পৃথক বলা যায় না, যেটিতে চিনকে একই সঙ্গে একটি ‘পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রতিযোগী এবং অংশীদার’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। নথিটিতে এ বিষয়ে আরও জোর দেওয়া হয়েছে যে, চিনের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক বাধ্যতামূলক ভাবে প্রতিকূল নয় অথবা এ হেন কোনও ‘পূর্বনির্ধারিত পথে’ চালিত নয়।

তা সত্ত্বেও ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৫ স্বীকার করে নিয়েছে যে, ‘সিসিপি-র কার্যক্রম ব্রিটেনের জন্য সমীকরণ বদলকারী সর্বোত্তম কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।’ বিশেষ করে, কৌশলটি ‘রাশিয়ার সঙ্গে চিনের গভীরতর অংশীদারিত্ব এবং ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা’কে উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করে। আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে জি২০-র ভূমিকা তুলে ধরার পাশাপাশি এ বিষয়েও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, সহযোগিতার বিষয়টি ‘চিন দ্বারা গৃহীত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।’

কৌশলটিতে ব্রেক্সিটের পরে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর জোর দিয়ে চিনের ক্ষেত্রে আরও পরিশীলিত ভাষা গ্রহণ করা হয়েছে এবং বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সাধারণ সমস্যা সংক্রান্ত অভিন্ন পরিসরে সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছে।

নথিটিতে ‘মধ্যশক্তি’সম্পন্ন দেশগুলির সঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব-সহ ভারতের কথাও একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে জি৭-এর সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি স্থায়ী ইউএনএসসি সদস্যপদের প্রতি জি৪ দেশগুলির জন্য ব্রিটেনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। আইআর২০২১-এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২০২১ সালে প্রকাশিত ২০৩০ পথনির্দেশিকার মাধ্যমে এফটিএ-র লক্ষ্যে কাজ করার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীরতর করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সম্পদের প্রসঙ্গে

অউকাস ঘোষণার পাশাপাশি ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা বাজেট বর্তমান ২ শতাংশ ন্যাটোর প্রতিশ্রুতির ঊর্ধ্বে উঠে জিডিপির ২.২৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতিও কৌশলটিতে দেওয়া হয়েছে। ক্রমবর্ধমান হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ ব্রিটিশ সামরিক আধিকারিকরা বর্তমান বৃদ্ধিকে অবশ্য এখনও অপ্রতুল বলেই মনে করেন।

এক দিকে যখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সব জি৭ অর্থনীতির মধ্যে শুধুমাত্র ব্রিটেনকেই ২০২৩ সালের আর্থিক মন্দার ভাগীদার রূপে অনুমান করছে, তখন দেশীয় অর্থনৈতিক উদ্বেগ সামলে ইউরো-আটলান্টিক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক উভয় পরিসরে স্থিতিশীল প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ উচ্চাভিলাষী বিদেশনীতি বজায় রাখা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে। বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ইউক্রেনকে সমর্থনের ফলে সীমিত সামরিক সংস্থান এবং সম্পদ হ্রাসের প্রেক্ষাপটে ইন্দো-প্যাসিফিকের নিরাপত্তা প্রদানকারী হিসাবে অবদান রাখার জন্য দেশটির প্রচেষ্টা ইউরো-আটলান্টিক পরিসরে তার ভূমিকার গুরুত্ব কমাবে, যেখানে এটি অত্যন্ত মূল্যবান। এ ছাড়াও ২০২৫ সালের আগে ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন না থাকলেও সমীক্ষায় লেবার পার্টির সম্ভাব্য জয়ের দিকেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ন্যাটোকে সমর্থন জোগানোর বিষয়ে দলটির অধিকতর অঙ্গীকার ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ বিদেশনীতির অগ্রাধিকারে ইন্দো-প্যাসিফিককে তালিকার একেবারে নীচের দিকে রাখবে।

এক দিকে যখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সব জি৭ অর্থনীতির মধ্যে শুধুমাত্র ব্রিটেনকেই ২০২৩ সালের আর্থিক মন্দার ভাগীদার রূপে অনুমান করছে, তখন দেশীয় অর্থনৈতিক উদ্বেগ সামলে ইউরো-আটলান্টিক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক উভয় পরিসরে স্থিতিশীল প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ উচ্চাভিলাষী বিদেশ নীতি বজায় রাখা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে।

পরিবর্তনের বদলে ধারাবাহিকতা

সামগ্রিকভাবে আইআর২৩ কোনও মৌলিক পরিবর্তন বা পুনর্মূল্যায়নের পরিবর্তে আইআর২০২১-এ উল্লিখিত একই ধরনের অগ্রাধিকার ও বিস্তৃত দিকনির্দেশনার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। নথিটিতে তার পূর্বতর নথির গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করা হলেও এটি ব্রিটেনের চিন্তাভাবনা ও গত দু’বছরের বিশাল বৈশ্বিক পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত নীতি প্রবণতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করে। ব্রিটেনের ইন্দো-প্যাসিফিক প্রবণতাকে সশক্ত করার পাশাপাশি ইউরো-আটলান্টিকের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার সঙ্গে এটি সামরিক এবং অন্যান্য সম্পদের বিষয়ের উপর আরও বেশি জোর দেয়। ব্রিটেনের ইন্দো-প্যাসিফিক প্রবণতার মূল পরিচয়কে দর্শিয়ে কতকগুলি বাস্তব প্রকল্প ও পদক্ষেপের পথে হেঁটে এই নবীকরণের বিষয়টি ঘটেছে। ইউক্রেনের প্রতি ব্রিটেনের সমর্থন বিশ্বমঞ্চে দেশটির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা এবং ব্রেক্সিট সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গঠনের ক্ষমতার প্রদর্শন করেছে। তত্ত্বগত ভাবে, আইআর২০২৩ এ বিষয়ে যথেষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, আক্ষরিক ভাবেই অস্থির এক পটভূমিতে এগোনোর সময় ডাউনিং স্ট্রিট বাস্তবিক ভাবেই ‘বৈশ্বিক’ মাপকাঠিতে ভাবনাচিন্তা করছে। দেশটি তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারে কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.