Published on Mar 27, 2025 Updated 0 Hours ago

প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার বিশ্বব্যাপী জলবায়ু শাসনের জন্য একটি বড় পরীক্ষার ইঙ্গিত দেয়, যা বহুপাক্ষিকতার স্থিতিস্থাপকতা ভবিষ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

একটি ভঙ্গুর ঐকমত্য: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর জলবায়ু কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

Image Source: Getty

এই নিবন্ধটি রাইসিনা এডিট ২০২৫-এর অংশ।


২০২৫ সালে প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক জলবায়ু শাসনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত, যা জলবায়ু সঙ্কটের বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া সমন্বয়ের জন্য বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টার স্থিতিস্থাপকতাকে পরীক্ষা মুখে ফেলেছে। এর পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার কেবল বিশ্বব্যাপী জলবায়ু শাসনের স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নয়, বরং ক্রমবর্ধমান খণ্ডিত ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটে ধারাবাহিকতা কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য সমগ্র বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার ক্ষমতা সম্পর্কে বৃহত্তর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। ওয়াশিংটনের সরে যাওয়া কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং, এটি জাতীয় রাজনৈতিক ওঠানামা উন্নয়ন মডেলগুলির ভেতরে চলতে থাকা ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে এক গভীর সঙ্কটের ইঙ্গিত দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ কেবল জলবায়ু নীতিতে একটি বিচ্যুতি নয়, বরং বহুপাক্ষিক চুক্তির কাঠামোগত ভঙ্গুরতার ইঙ্গিত দেয়, যা পৃথক রাষ্ট্রের অস্থিরতা প্রভাবের বৈশ্বিক ক্ষেত্রগুলির পুনর্নির্ধারণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণও বটে

২০১৭ সালে প্রথম প্রত্যাহার ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছামূলক প্রতিশ্রুতির উপর নির্মিত একটি ব্যবস্থার কাঠামোগত দুর্বলতা প্রকাশ করে দিয়েছিলআজকের এই বিচ্ছিন্নতা আরও বেশি অনিশ্চিত প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, যেখানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী শক্তির গতিশীলতার পুনর্গঠনের সঙ্গে একত্রিত হয়েছে, যা বহুপাক্ষিকতার কার্যকারিতাকে আরও ক্ষুণ্ণ করে। ২০১৭ সালের বিপরীতে ঝুঁকি এখন বেশি। কারণ বিশ্বব্যাপী শক্তির পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে, দূষণহীন শিল্পনীতিগুলি অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলি পুনর্নির্মাণ করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতির ফলে নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা প্যারিস চুক্তির বিশ্বাসযোগ্যতার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব  পড়তে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ কেবল জলবায়ু নীতিতে একটি বিচ্যুতি নয়, বরং বহুপাক্ষিক চুক্তির কাঠামোগত ভঙ্গুরতার ইঙ্গিত দেয়, যা পৃথক রাষ্ট্রের অস্থিরতা প্রভাবের বৈশ্বিক ক্ষেত্রগুলির পুনর্নির্ধারণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণও বটে

তাই জলবায়ু নেতৃত্ব কে গ্রহণ করবে তা নিয়ে নয়, বরং বর্তমান শাসন কাঠামো কি এখনও বিশ্বব্যাপী গতিপথ পরিবর্তন করতে পারবে না কি ক্রমাগত তার প্রভাব হারাচ্ছে, প্রশ্ন এখন তা নিয়ে।

প্রভাব এবং সীমাবদ্ধতার মাঝে: প্যারিস-পরবর্তী ব্যবস্থায় চিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন

মার্কিন প্রত্যাহার অনিবার্য ভাবে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নেতৃত্বের বণ্ট অন্য প্রধান শক্তিগুলি আদৌ শূন্যস্থান পূরণের জন্য প্রস্তুত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। চিন শক্তি পরিবর্তনে নিজেকে দৃঢ় ভাবে প্রভাবশালী শিল্পশক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, দূষণহীন প্রযুক্তি উৎপাদনে একটি নির্ণায়ক নেতৃত্ব প্রদান করছে। বর্তমানে চিন বিশ্বের কার্যকরী সৌর ক্ষমতার ৪১ শতাংশ এবং বায়ু বিদ্যুতের ৫৫ শতাংশের জন্য দায়বদ্ধ। এর পাশাপাশি চিনের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের ৭০ শতাংশেরও বেশি জায়গা নিয়ে রয়েছে একই সঙ্গে চিন উদীয়মান অর্থনীতি, অবকাঠামো জ্বালানি সহযোগিতা জোটে কৌশলগত বিনিয়োগের  মাধ্যমে তার আর্থিক প্রভাব প্রসারিত করেছে।

তবে কম কার্বন অর্থনীতি পুনর্গঠনে চিন অপরিহার্য হলেও, তার জলবায়ু কৌশল অস্পষ্ট রয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র ২০২৩ সালে চিন মোট ১০০ গিগাওয়াট (জিডব্লিউ) নতুন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন করেছে, যা বেশ কয়েকটি উন্নত অর্থনীতির কার্যকরী ক্ষমতা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই আপাত দ্বন্দ্ব এমন একটি নীতিকেই প্রকাশ করে, যেখানে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিতে শিল্পের শ্রেষ্ঠত্ব মূলত কার্বনমুক্তকরণের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে না, বরং ভূ-রাজনৈতিক সাধনী হিসেবে কাজ করে।

ইতিমধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে একটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তার নীতি কাঠামোকে একটি কার্যকর ভূ-রাজনৈতিক হাতিয়ারে রূপান্তরিত করতে যুঝছেইউরোপিয়ান গ্রিন ডিল উচ্চাভিলাষী পরিবেশগত মান প্রবর্তন করলেও এর বাস্তবায়ন ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। দুর্বল পরিবেশগত নিয়মকানুন প্রয়োগকারী দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা থেকে ইউরোপীয় শিল্পগুলিকে রক্ষা করার জন্য তৈরি কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম) বাণিজ্যিক চাপানউতোর সৃষ্টি করেছে এবং শিল্প প্রতিযোগিতার সঙ্গে জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষার সমন্বয় ঘটানোর জন্য ইইউ-এর ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সর্বোপরি, ইউরোপীয় রাজনৈতিক দৃশ্যপট - ফ্রান্সের অস্থিরতা, জার্মানিতে অনিশ্চয়তা সদস্য রাষ্ট্রগুলিতে ক্রমবর্ধমান মেরুকরণ দ্বারা চিহ্নিত - বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নেতা হিসাবে ইইউ-এর বিশ্বাসযোগ্যতাকে দুর্বল করে তোলে।

ইউরোপিয়ান গ্রিন ডিল উচ্চাভিলাষী পরিবেশগত মান প্রবর্তন করলেও এর বাস্তবায়ন ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।

সুতরাং, এখন দ্বিধা হল, জলবায়ু নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ইউরোপ কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান গ্রহণ করতে পারবে এবং অভ্যন্তরীণ সংহতি বজায় রাখতে পারবে? কারণ জ্বালানি পরিবর্তন ক্রমশ ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দানে পরিণত হচ্ছে।

ক্ষমতার পরিবর্তনশীল ভারসাম্য: ভারত, ব্রাজিল এবং উদীয়মান জলবায়ু ব্যবস্থা

চিরাচরিত জলবায়ু শক্তির ঊর্ধ্বে উঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতা শক্তি পরিবর্তনে অন্যান্য কৌশলগত শক্তির উত্থানকে ত্বরান্বিত করতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ ভারত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে: অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি ৫০০ গিগাওয়াট কার্যকরী পুনর্নবীকরণযোগ্য ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য স্থির করেছে। তবে কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উৎস হিসেবে রয়ে গিয়েছে এবং দ্রুত পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি বহন করতে পারে। ব্রাজিল - যা ২০২৫ সালে বেলেমে কনফারেন্স অফ দ্য পার্টিজ (কপ) ৩০-এর আয়োজন করবে - ২০২২ সালের তুলনায় আমাজন অরণ্যবিনাশের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ হ্রাস ঘটিয়েছে, যা পূর্ববর্তী নীতি থেকে পরিবর্তনকেই দর্শায়। তবুও, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং কৃষি ব্যবসায়িক স্বার্থের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা এখনও একটি অন্যতম কারণ, যা জলবায়ু শাসনে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণে দেশের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি কেবল অন্যান্য পক্ষের কাছে নেতৃত্ব হস্তান্তর নয়, বরং জলবায়ু কূটনীতির বৃহত্তর রূপান্তরের জন্য একটি অনুঘটকও বটে। উদীয়মান অর্থনীতিগুলি আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করলেও তাদের অগ্রাধিকারগুলি প্রায়শই দীর্ঘমেয়াদি ডিকার্বনাইজেশন বা কার্বনমুক্তকরণ কৌশলের পরিবর্তে তাৎক্ষণিক উন্নয়ন জ্বালানি নিরাপত্তা চাহিদা দ্বারা নির্ধারিত হয়। এখন ঝুঁকি হল এই যে, জলবায়ু আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতি ছাড়া শিল্পোন্নত উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে বিভাজন গভীরতর হবে এবং একটি ঐকমত্যে পৌঁছনোর বিষয়ে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টাকে বিলম্বিত করবে।

খণ্ডিত উচ্চাকাঙ্ক্ষা: চাপের মুখে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা

স্বল্পমেয়াদে প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার তাৎক্ষণিক ভাবে আন্তর্জাতিক জলবায়ু কাঠামোর ভিত্তি স্থাপনকারী আর্থিক ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রভাবিত করবে। বেলেমে (১০-২১ নভেম্বর, ২০২৫) কপ৩০-এ সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম হবে দুর্বল দেশগুলিকে সহায়তা করার জন্য একটি নতুন আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা। ওয়াশিংটনের অবদান ছাড়া - ইতিমধ্যে পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতিগুলি থেকে পিছিয়ে থাকা - একটি শক্তিশালী চুক্তি নিশ্চিত করার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পায়। কপ৩০-এর মনোনীত প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে আরানহা কোরিয়া দো লাগোর মতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলবে, যা উন্নত উন্নয়নশীল অর্থনীতির মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।

ওয়াশিংটনের অবদান ছাড়া - ইতিমধ্যে পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতিগুলি থেকে পিছিয়ে থাকা - একটি শক্তিশালী চুক্তি নিশ্চিত করার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পায়।

তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক পরিণতির ঊর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর ঝুঁকি হল বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার উপর আস্থার ধীরে ধীরে ক্ষয়, যার ফলে শক্তি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সমন্বয়ের দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি ঘটবে। যদি জলবায়ু শাসন ওয়াশিংটনের  অনুপস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ হয়, তা হলে সর্বজনীন প্রতিশ্রুতি থেকে খণ্ডিত আঞ্চলিক জোটের দিকে একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে, যেখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ অভিন্ন সাধারণ বৈশ্বিক দায়িত্বের পরিবর্তে জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আকার দেয়। বহুপাক্ষিক জলবায়ু শাসনের সঙ্কট একটি খণ্ডিত ব্যবস্থার দিকে চালিত করতে পারে, যেখানে ভুল ভাবে সংযুক্ত আঞ্চলিক কৌশলগুলি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতিগুলিকে প্রতিস্থাপন করে। একটি সুসংগত শাসন কাঠামোর অনুপস্থিতিতে বিশ্ব উষ্ণায়নের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা বিচ্ছিন্ন উদ্যোগের দিকে চালিত করেছে, যা প্রকৃতিগত ভাবে বহুজাতিক একটি চ্যালেঞ্জ পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত দৃষ্টিভঙ্গির অভাবকেই দর্শায়।

শাসনের সঙ্কট: জলবায়ু আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভবিষ্য

প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার কেবল জলবায়ু শাসনের জন্য বিপত্তি নয়, এটি আরও গভীর রূপান্তরের লক্ষণও বটে, যা বৈশ্বিক শক্তি গতিশীলতার জন্য একটি নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা হিসাবে বহুপাক্ষিকতার সঙ্কটকেই প্রকাশ্যে এনেছেনৈতিক প্ররোচনা স্বেচ্ছামূলক জাতীয় ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি (এনডিসি) উপর নির্মিত একটি চুক্তি কাঠামোগত ভাবে জাতীয় রাজনৈতিক উত্থান-পতনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অতএব, ওয়াশিংটনের নেতৃত্বের ভূমিকা কে গ্রহণ করবে তা নয়, বরং প্যারিস চুক্তি ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক খণ্ডিত বিশ্ব ব্যবস্থার চাপ সহ্য করতে পারবে কি না, সেটিই হল আসল প্রশ্ন।

নৈতিক প্ররোচনা স্বেচ্ছামূলক জাতীয় ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি (এনডিসি) উপর নির্মিত একটি চুক্তি কাঠামোগত ভাবে জাতীয় রাজনৈতিক উত্থান-পতনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

যদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি রাষ্ট্রগুলিকে তাদের প্রতিশ্রুতির জন্য জবাবদিহি করার ক্ষমতা জোরদার করতে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে ঝুঁকিটি শক্তি স্থানান্তরকে বিলম্বিত করার চেয়েও অনেক বেশি প্রসারিত হবে। এটি বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার বৈধতাকে হুমকির মুখে ফেলবে, যার প্রভাব পরিবেশগত ক্ষেত্র ছাড়িয়ে বিশ্ব ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার উপরও পড়বে

এই প্রেক্ষাপটে, জলবায়ু বহুপাক্ষিকতা বিশ্বব্যাপী শক্তি সম্পর্কের বৃহত্তর  পুনর্নির্মাণের প্রতীক হয়ে ওঠে। যদি আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির অধীন থাকে, তা হলে আঞ্চলিকতা দ্বিপাক্ষিক লেনদেনগুলি ক্রমবর্ধমান ভাবে একটি সমন্বিত বৈশ্বিক কাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রাধান্য পাবে। এর ফলাফল কেবল একটি খণ্ডিত ব্যবস্থাই নয়, বরং এমন একটি দৃশ্যপট হবে, যেখানে শক্তি স্থানান্তর সহযোগিতার মঞ্চের পরিবর্তে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সাধনী হয়ে উঠবে। জলবায়ু শাসনের ক্ষয় কেবল একটি বৃহত্তর সঙ্কটকে প্রতিফলিত করে এবং তা হল প্রতিযোগিতা খণ্ডিতকরণ দ্বারা ক্রমবর্ধমান ভাবে আকার পাওয়া একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার আশ্বাসদানকারী হিসাবে নিজেদের জাহির করতে বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলির অক্ষমতা। জলবায়ু জরুরি অবস্থার মতো পদ্ধতিগত বাস্তব সঙ্কট পরিচালনা করার ক্ষমতা সুসংহত প্রক্রিয়া ছাড়া বহুপাক্ষিকতা একটি উদ্দেশ্যমূলক কূটনীতিতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে

 


স্তেফানিয়া পেত্রুজ্জেল্লি ইতালির একজন স্বাধীন গবেষক, বিশ্লেষক ও বকলম-লেখিকা। তিনি স্থিতিশীলতা, উদ্ভাবন ও ভূ-রাজনীতি বিষয়ে লেখালিখি করেন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Stefania Petruzzelli

Stefania Petruzzelli

Stefania Petruzzelli, PhD, has extensively researched Italian and Comparative Literature with a focus on anthropological, historical, and social issues. She now explores epistemological changes in ...

Read More +