Published on Jun 19, 2024 Updated 0 Hours ago

ভারতের দীর্ঘ পারমাণবিক যাত্রাকে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, প্রযুক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং নৈতিক দ্বিধাগুলির দিক থেকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত

পোখরান ১-এর ৫০ বছর: ভারতের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরণ ফিরে দেখা

চলতি ২০২৪ সালটি ১৯৭৪ সালের পোখরান-১ পারমাণবিক পরীক্ষার ৫০তম বার্ষিকী চিহ্নিত করে — যে পরীক্ষাটি ভারতীয় ইতিহাসের একটি সন্ধিক্ষণ ছিল এবং ভারতের পারমাণবিক যাত্রাপথের সূচনা করেছিল। এই 'শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরণ' (পিএনই) বৈশ্বিক অ-‌প্রসারণ আদেশের প্রতিরোধের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলির অভিজাত গোষ্ঠীতে ভারতের প্রবেশকে চিহ্নিত করেছিল। পোখরান-১ পরীক্ষা ভারতকে প্রযুক্তি-প্রত্যাখ্যানের মুখে ফেলেছিল, যা ভারতের উপর প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, নিষেধাজ্ঞা এবং নিজস্বভাবে পারমাণবিক বিকল্প গড়ে তোলার জন্য ভারী মূল্য আরোপ করেছিল। পাঁচ দশক পরে এখন এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপের মূল্যায়ন, এবং পরবর্তী বছরগুলিতে ভারতের পারমাণবিক নীতির পরিবর্তনগুলি এমন একটি দৃশ্যপট তৈরি করে যা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, প্রযুক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও নৈতিক দ্বিধাগুলির পারস্পরিক ক্রিয়া-‌প্রতিক্রিয়ায় পূর্ণ, এবং তা ভারতের বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের পরমাণু যাত্রাকে সংজ্ঞায়িত করে। 


পোখরান-১ পরীক্ষা ভারতকে প্রযুক্তি-প্রত্যাখ্যানের মুখে ফেলেছিল, যা ভারতের উপর প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, নিষেধাজ্ঞা এবং নিজস্বভাবে পারমাণবিক বিকল্প গড়ে তোলার জন্য ভারী মূল্য আরোপ করেছিল।



১৯৬০-এর দশকে পারমাণবিক অ-‌প্রসারণ চুক্তি (এনপিটি) রূপ নেওয়ার পর ভারত মৌলিকভাবে যোগদানের বিরোধিতা করেছিল, এবং বিষয়টিকে এমন একটি বৈষম্যমূলক শাসন হিসাবে দেখেছিল যা ভারতের পারমাণবিক বিকল্পগুলি অন্বেষণ করার অধিকার কেড়ে নেয়। প্রাথমিকভাবে পারশিয়াল টেস্ট ব্যান ট্রিটি (পিটিবিটি) ও কম্প্রিহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি)-‌র মতো বেশ কিছু
অ-‌প্রসারণ উদ্যোগ সমর্থন করলেও, ভারত ১৯৬০-‌এর মাঝামাঝি সময় থেকে মনে করেছিল যে এনপিটি-তে স্বাক্ষর করা চিরকালের জন্য ‘‌পারমাণবিক শক্তি’‌ এবং ‘‌অ-‌পারমাণবিক শক্তি’‌র একটি অন্যায্য পারমাণবিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা করবে। ভারতের অভ্যন্তরে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রশ্নে মতের ভিন্নতা ছিল। হোমি ভাবার মতো বিজ্ঞানী, যিনি পারমাণবিক পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, খনি এবং মাটি-খনন প্রকল্পের মতো বেসামরিক উদ্দেশ্যে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরক (পিএনই) বিকাশের বিকল্পটি বজায় রাখার পক্ষে ছিলেন। যাই হোক, পিএনই কাজকর্ম সুবিধাজনকভাবে অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়ানোর সুবিধাও প্রদান করতে পারে।

এমনকি রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যেও ভারতের পারমাণবিক পথে কীভাবে অগ্রসর হওয়া উচিত তা নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী নেহরু ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা উদ্বেগ সত্ত্বেও, বিশেষ করে চিনের সঙ্গে যুদ্ধ এবং ১৯৬৪ সালে লোপ নুরে চিনের পারমাণবিক পরীক্ষার পরেও, অস্ত্র তৈরির বিষয়ে
দ্বিধান্বিত ছিলেন। নেহরুর উত্তরসূরি লালবাহাদুর শাস্ত্রীও চিনা পরীক্ষার পর পারমাণবিক পরীক্ষা করার জন্য অভ্যন্তরীণ চাপ প্রতিরোধ করেছিলেন, এবং ১৯৬৪ সালে তাঁর ব্রিটেন সফরের সময় পারমাণবিক শক্তিগুলির কাছ থেকে বিকল্প নিরাপত্তার জন্য আশ্বাস চেয়েছিলেন। যাই হোক, ১৯৬৬ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সময়কালে, তিনি আকর্ষণীয়ভাবে একটি ভিন্ন পথ নির্ধারণ করেছিলেন। তাঁর পূর্বসূরিদের থেকে ভিন্ন পথে গিয়ে গান্ধী বৈষম্যমূলক এনপিটি-র বিরুদ্ধে কঠোর বাস্তব রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি প্রয়োজনে শান্তিপূর্ণ বিকল্পের অন্বেষণে পরবর্তী কয়েক বছর ধরে কার্যকর পারমাণবিক বিস্ফোরক ক্ষমতা অর্জনের জন্য ভারতীয় পারমাণবিক সংস্থার ব্যাপক প্রচেষ্টার অনুমোদন দেন।

১৯৬০-‌এর দশকের শেষের দিকে ভারতীয় পরমাণু বিজ্ঞানীদের নিবিড় পরিশ্রমের পর, প্রোগ্রামটি শেষ পর্যন্ত বড় মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত ছিল। ১৮ মে ১৯৭৪ তারিখে, পোখরান-১, সাংকেতিক নাম "স্মাইলিং বুদ্ধ", প্রত্যন্ত রাজস্থান মরুভূমিতে ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার মাধ্যমে বিস্ফোরিত হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে একটি "শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরণ" (পিএনই) হলেও পোখরান-১ ছিল ভারতের পারমাণবিক প্রযুক্তির একটি বাস্তব প্রদর্শন, যা ভারতকে অভিজাত পারমাণবিক ক্লাবে স্থান করে দিয়েছিল। সফল ভূগর্ভস্থ বিস্ফোরণটি বিপুল জাতীয় গর্বকে উস্কে দিয়েছিল, তবে উপমহাদেশের পারমাণবিকীকরণ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও উদ্বেগও সৃষ্টি করেছিল।


প্রাথমিকভাবে পারশিয়াল টেস্ট ব্যান ট্রিটি (পিটিবিটি) ও কম্প্রিহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি)-‌র মতো বেশ কিছু অ-‌প্রসারণ উদ্যোগ সমর্থন করলেও, ভারত ১৯৬০-‌এর মাঝামাঝি সময় থেকে মনে করেছিল যে এনপিটি-তে স্বাক্ষর করা চিরকালের জন্য ‘‌পারমাণবিক শক্তি’‌ এবং ’‌পারমাণবিক শক্তি নয়’‌-‌এর একটি অন্যায্য পারমাণবিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা করবে।



তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে সম্মান অর্জনের পরিবর্তে ভারত পরীক্ষার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের প্রথম দিকে মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্র নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপ (এনএসজি) তৈরি করে নন-এনপিটি রাষ্ট্রগুলিতে পারমাণবিক উপকরণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কার্টেল প্রতিষ্ঠা করতে প্রধান পারমাণবিক সরবরাহকারীদের সমাবেশ করেছিল। এনএসজি অত্যন্ত কঠোর সুরক্ষা ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, যা ভারতের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য কার্যকর প্রযুক্তি অস্বীকারের সামিল ছিল। নয়াদিল্লি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অন্যদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক জ্বালানি ও সরঞ্জাম পাওয়ার সুযোগ হারিয়েছিল। আমেরিকার মধ্যে পোখরান-১ বিস্ফোরণ কার্টার প্রশাসনকে
১৯৭৮ সালের যুগান্তকারী নিউক্লিয়ার নন-‌প্রলিফারেশন অ্যাক্ট (এনএনপিএ) পাস করতে উৎসাহিত করেছিল। এনএনপিএ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ বা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ-সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত যে কোনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এটি ছিল অস্ত্র উন্নয়নের মূল চোকপয়েন্ট, যা ভারত অতিক্রম করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যদের দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপগুলি ভারতের উপর ভারী বিধিনিষেধ আরোপ করে, যা পরবর্তী দশকগুলিতে বিশ্বব্যাপী অ–প্রসারণ আদেশের মধ্যে ভারতকে অচ্ছুত করে তুলেছিল। পরীক্ষাটি ভারতের পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন করেছিল, কিন্তু প্রতিষ্ঠিত পারমাণবিক শক্তিগুলির তরফে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি অস্বীকার করার মূল্যে। নয়াদিল্লির শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিকল্পটি প্রচুর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মূল্যে এসেছিল, এবং একটি বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছিল যা ১৯৯৮ সালে পরবর্তী পারমাণবিক পরীক্ষার পরে কেটে যায়।

১৯৮০-র দশকে ভারত আবার পারমাণবিক উপকরণ পরীক্ষা করার ধারণা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, বিশেষ করে ১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতায় ফিরে আসার পর। ১৯৮১ সালে, প্রধানমন্ত্রী
ইন্দিরা গান্ধী একটি অতিরিক্ত পারমাণবিক পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সিদ্ধান্ত বদল করেন। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পরিণতি বড় আকার ধারণ করতে পারত যদি ভারত এমন একটি সময়ে পারমাণবিক পরীক্ষা আবার শুরু করত যখন নয়াদিল্লি বৈদেশিক সাহায্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। এটি ছিল ভারতের ১৯৭৪ পিএনই-র সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উত্তরাধিকারগুলির মধ্যে একটি, যা নিষেধাজ্ঞা-সম্পর্কিত হুমকি এবং সম্ভাব্য সাহায্য রদের আশঙ্কার কারণে ভারতকে পরীক্ষা করা থেকে বেঁধে রেখেছিল, এবং এনএসজি ও এনএনপিএ-র মতো রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিধিনিষেধের মাধ্যমে প্রযুক্তি-অস্বীকার জমানার সূচনা করেছিল।


পরীক্ষার বিষয়ে বিতর্ক পরবর্তী দশকে, ১৯৯০-এর দশকেও চলতে থাকল, যখন পারমাণবিক অ-‌প্রসারণ যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অ্যাজেন্ডায় শীর্ষে ছিল।



ইন্দিরা গান্ধীর উত্তরসূরি রাজীব গান্ধী কখনোই পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন না; তবে তিনি অবশ্য পারমাণবিক উপকরণের ডিজাইনে পরিমার্জন ও উন্নতির অনুমতি দিয়েছিলেন এবং ল্যাব-ভিত্তিক প্রযুক্তিগত কাজকে তাঁর মেয়াদে  গতিশীল করেছিলেন। ১৯৮০-র দশকে পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার চাপ তৈরি হয়েছিল আশ্চর্যজনকভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্বরান্বিত হওয়ার সময়। পরিহাসের বিষয়, এটি আবার ১৯৭৪ পিএনই-এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিকাশ এবং উত্তরাধিকার ছিল, এবং এটি পাকিস্তানের উপর এমনভাবে একটি চাপসৃষ্টিকারী প্রভাব ফেলেছিল যে 
পাকিস্তান ভারতের আগেই অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা অর্জন করেছিল। যেখানে ভারত নিজেকে গিঁটে বেঁধে ফেলেছিল, যার মধ্যে ছিল একটি শ্রমসাধ্য ও কঠিন বিতর্ক যে পরীক্ষা করা উচিত কিনা এবং নয়াদিল্লি পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন করলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি কী হবে। পরীক্ষার বিষয়ে বিতর্ক পরবর্তী দশকে, ১৯৯০-এর দশকেও চলতে থাকল, যখন পারমাণবিক অ-‌প্রসারণ যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অ্যাজেন্ডার শীর্ষে ছিল। তবুও, ১৯৮৯ সালের মার্চের মধ্যে এমনকি পারমাণবিক বোমা-‌বিরোধী রাজীব গান্ধীও সিদ্ধান্ত নেন যে চিনা সহায়তার মধ্যে পাকিস্তানি অস্ত্র কর্মসূচির বৃদ্ধি ও শক্তি ভারতের জন্য যথেষ্ট বিপদের কারণ হয়ে উঠছে, যা তাঁকে পরীক্ষা ছাড়াই ভারতের পরমাণু কর্মসূচির অস্ত্রায়নের অনুমোদন দিতে বাধ্য করেছিল।

১৯৯০-এর দশকে ভারত তার পারমাণবিক সক্ষমতাকে পরিমার্জিত ও উন্নত করতে এবং সেইসঙ্গে উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ক্ষমতা তৈরি করতে পেরেছিল, কিন্তু দেশটি তখনও পারমাণবিক পরীক্ষা পরিচালনার উপর সংযম প্রদর্শন করেছিল। তা সত্ত্বেও, ঠান্ডাযুদ্ধের সমাপ্তি এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর, যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের অস্ত্র কর্মসূচির "
ক্যাপ, ফ্রিজ অ্যান্ড রোলব্যাক" করার জন্য একটি তীব্র প্রয়াসের মধ্যে পারমাণবিক অ–প্রসারণ গতিশীল হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের মধ্যে পারমাণবিক অ–প্রসারণ চুক্তি (এনপিটি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়েছিল ভারতকে এ কথা বুঝিয়ে দিয়ে যে পাঁচটি মনোনীত পারমাণবিক অস্ত্রসম্পন্ন রাষ্ট্র তাদের পারমাণবিক ক্ষমতা বজায় রাখবে, এবং তারা ভারতকে নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা রাওয়ের সময় ভারত একটি পারমাণবিক পরীক্ষা পরিচালনার কাছাকাছি এসেছিল, কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা ভারত সরকারের দ্বারা পরীক্ষার প্রস্তুতি সনাক্ত করে ফেলায় তা ব্যর্থ হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার পরিণতিগুলি রাও সরকারকে চাপে রেখেছিল — যেমন পূর্ববর্তী ভারতীয় সরকারগুলির ক্ষেত্রেও ঘটেছিল অনেকের এই কারণে আপত্তির জন্য — বিশেষ করে এই কারণে যে ভারত যথেষ্ট অর্থনৈতিক চাপ থেকে পুনরুদ্ধার করছিল। ১৯৯৬ সালে, কম্প্রিহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি) নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল, যার ফলে নতুন দিল্লি পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার জন্য আরও চাপে পড়ে গিয়েছিল। পরিহাসের কথা, যে অ-প্রসারণ ব্যবস্থা ১৯৭৪ সালের পিএনই দিয়ে ভারতকে পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করা থেকে বিরত করতে চেয়েছিল, সেটিই ১৯৯৮ সালের মে মাসে পাঁচটি পারমাণবিক পরীক্ষা করার পথ তৈরি করল।


নিষেধাজ্ঞার পরিণতিগুলি রাও সরকারকে চাপে রেখেছিল — যেমন পূর্ববর্তী ভারতীয় সরকারগুলির ক্ষেত্রেও ঘটেছিল অনেকের এই কারণে আপত্তির জন্য — বিশেষ করে এই কারণে যে ভারত যথেষ্ট অর্থনৈতিক চাপ থেকে পুনরুদ্ধার করছিল।



প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর অধীনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা পরিচালিত ১৯৯৮ সালের পারমাণবিক পরীক্ষার পর ভারত পারমাণবিক পরীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ ‌জারি করেছিল। দ্বিতীয় পোখরান-পরবর্তী সময়ে নয়াদিল্লি ক্লিনটন প্রশাসনের অধীনে ওয়াশিংটনের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় নিযুক্ত হয়; এবং এর উত্তরসূরী, জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন, এমন একটি চুক্তির জন্য উন্মুক্ত ছিল যা নয়াদিল্লিকে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি বর্জন না-‌করে পারমাণবিক বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার অনুমতি দেবে, যদিও ভারতকে তার অসামরিক পারমাণবিক এস্টেটের একটি অংশ আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পূর্ণ সুরক্ষার অধীনে রাখতে হবে। ১৮ জুলাই ২০০৫-এ জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ও মনমোহন সিং সরকারের মধ্যে
১২৩ চুক্তিতে এর পরিসমাপ্তি ঘটে। তিন বছর পরে, ভারত এনএসজি থেকে একটি পরিচ্ছন্ন ছাড় লাভ করে, যা ভারতের মতো দেশগুলিকে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন থেকে প্রতিরোধ করা ও শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আজ ভারতও এনএসজিতে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। ১৯৭৪ পিএনই শুধু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতকে একটি অচ্ছুৎ ও সংশোধনবাদী রাষ্ট্র হিসাবে বিবেচনা করে বৈশ্বিক পরমাণু শৃঙ্খলাকে চ্যালেঞ্জ করেনি, বরং কয়েক দশক পরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতকে একটি প্রকৃত পারমাণবিক অস্ত্রসম্পন্ন রাষ্ট্র হিসাবে স্থাপন করে যা পারমাণবিক বাণিজ্যের সমস্ত সুবিধা ভোগ করতে পারে।



অঙ্কিত কে হলেন নয়াদিল্লি-ভিত্তিক বিশ্লেষক যিনি ওয়ারফেয়ার এবং স্ট্র্যাটেজির সংযোগে বিশেষজ্ঞ।
কার্তিক ব্যোমকান্তি অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের একজন সিনিয়র ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Ankit K

Ankit K

Ankit K is New Delhi-based analyst who specialises in the intersection of Warfare and Strategy. He has formerly worked with a Ministry of Home Affairs ...

Read More +
Kartik Bommakanti

Kartik Bommakanti

Kartik Bommakanti is a Senior Fellow with the Strategic Studies Programme. Kartik specialises in space military issues and his research is primarily centred on the ...

Read More +