Author : Pratnashree Basu

Published on Apr 08, 2024 Updated 7 Days ago

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলি অভিন্ন সাধারণ স্বাস্থ্য প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝছে এবং স্বাস্থ্য কূটনীতি এই অঞ্চলে জনস্বাস্থ্যের উদ্দেশ্যগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রধান শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে

উপযুক্ত ভারসাম্যের অভিমুখে: ইন্দো-প্যাসিফিকে রোগ ও কূটনীতি

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্বাস্থ্য কূটনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণকে চিহ্নিত করে, যেখানে জনস্বাস্থ্য উদ্যোগগুলি ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের জটিল বিন্যাসের মাঝে পড়ে দ্বিধাবিভক্ত। এই বিস্তীর্ণ ও ঘটনাপ্রবণ অঞ্চলের দেশগুলি যখন উদ্ভূত সংক্রামক রোগ থেকে শুরু করে অসংক্রামক স্বাস্থ্য সঙ্কট এবং অনন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করছে, তখন স্বাস্থ্য কূটনীতি জনস্বাস্থ্যের উদ্দেশ্যগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপর রোগের প্রাদুর্ভাবের প্রভাব হ্রাস করতে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাকে উত্সাহিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করতে একটি প্রধান শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক স্বাস্থ্য ফলাফল অর্জনের জন্য স্বাস্থ্য বৈদেশিক নীতির আন্তঃনির্ভরতার প্রয়োজনীয়তার কথা দর্শিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঘোষণা এবং রেজোলিউশন দ্বারা সমর্থিত বৈদেশিক নীতি আলোচনায় স্বাস্থ্যের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

 

অতিমারি প্রতিক্রিয়ার সময়ে প্রথম সারি থেকে গৃহীত শিক্ষা

বিশ শতকের শেষের দিকে এবং একুশ শতকের গোড়ার দিকে ইন্দো-প্যাসিফিকের স্বাস্থ্য কূটনীতির পরিসরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে এবং তা বিশ্বায়ন নতুন জনস্বাস্থ্য হুমকির উত্থানের দ্বারা চালিত হয়েছে। ২০০৩ সালে সার্স প্রাদুর্ভাব, ২০০৯ সালে এইচ১এন১ অতিমারি এবং আরও সাম্প্রতিক কালে কোভিড-১৯ অতিমারির মতো বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সঙ্কটে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরিসরটি এগিয়ে রয়েছে। এই ঘটনাগুলি একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার পর জোর দিয়েছে এবং স্বাস্থ্য কূটনীতিকে ভূ-রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে উত্থাপন করেছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য উদ্যোগের ক্ষেত্রেও একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি হয়ে উঠেছে এবং মেধা সম্পত্তির অধিকার, টিকা সমতা ও মূলধারার স্বাস্থ্যসেবায় চিরাচরিত ওষুধের সমন্বিতকরণ সংক্রান্ত আলোচনায় অবদান রেখেছে।

 

২০০৩ সালে সার্স প্রাদুর্ভাব, ২০০৯ সালে এইচ১এন১ অতিমারি এবং আরও সাম্প্রতিক কালে কোভিড-১৯ অতিমারির মতো বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সঙ্কটে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরিসরটি এগিয়ে রয়েছে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপ-এর (কোয়াড) মতো উদ্যোগগুলি স্বাস্থ্য কূটনীতিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাদের মনোযোগের ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে এবং কোভিড-১৯ অতিমারি দ্বারা সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার আলোকে বিদেশনীতিতে স্বাস্থ্যের কৌশলগত গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। কোয়াড-এর একটি মূল প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী টিকার ন্যায্য প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করছে, যেখানে প্রধানত নিম্ন এবং মধ্যম আয়ক্ষম দেশগুলি এ হেন টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। কোয়াড ভ্যাকসিন পার্টনারশিপ এবং গ্লোবাল প্যান্ডেমিক রাডারের মতো সমর্থনমূলক উদ্যোগগুলিতে যৌথ টিকা গবেষণায় গোষ্ঠীর মনোযোগকে দর্শিয়েছে। উপরন্তু, কোয়াড সর্বাত্মক জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান এবং বৈজ্ঞানিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে টিকা সংক্রান্ত দ্বিধা ভুল তথ্যের মোকাবিলা করেছে এবং টিকায় মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করেছে। এ ছাড়াও কোয়াড সদস্য দেশগুলির মধ্যে নীতির সারিবদ্ধতাকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সমতার পক্ষে সওয়াল তুলেছে এবং টিকা সরবরাহের ঘাটতি ও বণ্টনের অদক্ষতার মতো সমস্যাগুলি মোকাবিলা করেছে। প্রতিশ্রুত টিকা সরবরাহে ঘাটতির মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও কোয়াড ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের আঞ্চলিক অতিমারিগুলির জন্য টিকা তৈরির সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে তার উদ্দেশ্যগুলিকে পুনরুদ্ধার করেছে।

গ্লোবাল ফার্মেসি ডিপো যেহেতু বিশ্বের টিকা সরবরাহের ৬০ শতাংশ উত্পাদন করে এবং বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ টিকা বণ্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই নয়াদিল্লির স্বাস্থ্য কূটনীতি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থানগুলিতে ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়েছে। ভ্যাকসিন মৈত্রী কর্মসূচির অধীনে, ভারত শুধু মাত্র অভ্যন্তরীণ ভাবে ব্যবহারের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বণ্টনের জন্যও টিকা তৈরি করতে তার উল্লেখযোগ্য ফার্মাসিউটিক্যাল উত্পাদন ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছে। ভারত মহাসাগর অঞ্চল, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান-সহ বিভিন্ন মহাদেশ জুড়ে ৯০টিরও বেশি দেশে লক্ষ লক্ষ টিকার ডোজ প্রদানের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগটি গুরুত্বপূর্ণ। যাই হোক, উদ্যোগটি ভারতের অভ্যন্তরে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেশীয় টিকার ঘাটতি-সহ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল, যা সাময়িক ভাবে টিকাফতানির উপর প্রভাব ফেলেছিল। এই প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কর্মসূচিটি সামঞ্জস্য বজায় রেখেছে এবং বিশ্বব্যাপী টিকা সরবরাহে অবদান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি টিকার আরও ন্যায়সঙ্গত বণ্টসুনিশ্চিত করতে কোভ্যাক্স সুবিধাকে সমর্থন জুগিয়েছে।

 

ভ্যাকসিন মৈত্রী কর্মসূচির অধীনে, ভারত শুধু মাত্র অভ্যন্তরীণ ভাবে ব্যবহারের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বণ্টনের জন্যও টিকা তৈরি করতে তার উল্লেখযোগ্য ফার্মাসিউটিক্যাল উত্পাদন ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছে।

 

দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নিউজিল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো ইন্দো-প্যাসিফিকের অন্যান্য দেশ কোভিড-১৯ অতিমারিতে কার্যকর প্রতিক্রিয়ার উদাহরণ এবং প্রাথমিক পদক্ষেপের তাত্পর্য, প্রযুক্তিগত গ্রহণ, জনবিশ্বাস এবং স্বাস্থ্য পরিচালনায় স্বচ্ছ যোগাযোগের তাত্পর্য দর্শিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যাপক পরীক্ষা, উদ্ভাবনী যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নজরদারি এবং সম্পূর্ণ লকডাউন এড়িয়ে তার শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা জনসাধারণের সহযোগিতার উপর নির্ভর করেছে। কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, কার্যকর জনস্বাস্থ্য বার্তা এবং স্বাস্থ্য ও অভিবাসন তথ্য সমন্বিতকরণ-সহ তাইওয়ানের সক্রিয় পদক্ষেপগুলি অতিমারি রুখতে সাহায্য করেছে। নিউজিল্যান্ড তার ‘দৃঢ় ও দ্রুত’ কৌশলের মাধ্যমে একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রাথমিক অবস্থান গ্রহণ করেছিল, যার মধ্যে বিশ্বব্যাপী কঠোর লকডাউন এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভিয়েতনামের কৌশলের মধ্যে রয়েছে সীমান্ত বন্ধের অনুরূপ ব্যবস্থা, স্পষ্ট জনস্বাস্থ্য যোগাযোগ এবং সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য তৃণমূল স্তরের শৃঙ্খলের ব্যবহার, যা আদতে অতিমারির ৎসের কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও দেশটিতে সংক্রমণ প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য রকমের কম রাখতে সাহায্য করেছে।

এই দেশগুলি দেখিয়েছে যে, প্রাক-অনুশীলিত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, জনস্বাস্থ্যের প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা ও নজরদারির জন্য প্রযুক্তির দ্রুত ব্যবহার বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য হুমকির প্রভাবকে উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস করতে পারে। অতিমারিটি স্বাস্থ্য এবং বৈদেশিক নীতির আন্তঃসম্পর্কের উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলির জন্য একটি সহযোগিতামূলক, বহুপাক্ষিক পদ্ধতির পক্ষে সওয়াল করেছে। এই ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলির অভিজ্ঞতাগুলি বিশ্বব্যাপী সংহতি, প্রস্তুতি এবং একে অপরের সাফল্য চ্যালেঞ্জগুলি থেকে শিক্ষা গ্রহণের সদিচ্ছার উপর জোর দিয়ে অতিমারির নিরিখে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি পথনির্দেশিকা সরবরাহ করে।

 

ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রধান স্বাস্থ্য কূটনীতির উদ্যোগ

উদ্যোগ

বর্ণনা

প্রধান দেশ

দ্য কোয়াড ভ্যাকসিন পার্টনারশিপ

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বণ্টনের জন্য ভারতে কোভিড-১৯ টিকা উত্পাদন সম্প্রসারণের জন্য অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা

অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

কোভ্যাক্স ফেসিলিটি

ইন্দো-প্যাসিফিক-সহ সমস্ত অংশগ্রহণকারী দেশগুলির জন্য কোভিড-১৯ টিকাগুলিতে সমান প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করার একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ

জিএভিআই, হু, সিইপিআই, ইউনিসেফ

দি ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ফর হেলথ সিকিউরিটি

মার্কিন-নেতৃত্বাধীন কৌশল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ, অতিমারি প্রস্তুতির উন্নতি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাড়ানোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

দি এশিয়া-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ফর ইমার্জিং ডিজিজেস অ্যান্ড পাবলিক হেলথ এমার্জেন্সি (এপিএসইডি)

 

ডব্লিউএইচও-র নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের লক্ষ্য উদীয়মান রোগ এবং জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার ব্যবস্থাপনা ও সাড়া দেওয়ার জন্য আঞ্চলিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (হু)

আসিয়ান ওয়ান হেলথ ইনিশিয়েটিভ

এই অঞ্চল জুড়ে স্বাস্থ্যের ফলাফলের উন্নতির জন্য একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতি বিশ্বায়িত বিশ্বে স্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলির সমন্বিত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিফলিত করে, যেখানে মানুষ, প্রাণী এবং বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য অবিচ্ছেদ্য ভাবে যুক্ত

অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান)

দ্য প্যাসিফিক হেলথ সিকিউরিটি পার্টনারশিপ

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে এবং টিকা ব্যবস্থা-সহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়ার জন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের দেশগুলিকে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা

অস্ট্রেলিয়া

দি ইন্ডিয়া-আসিয়ান হেলথ কোঅপারেশন

চিরাচরিত ঔষধ, ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি প্রতিক্রিয়া বিষয়ে ভারত এবং আসিয়ান দেশগুলির মধ্যে স্বাস্থ্য সহযোগিতার প্রচার

ভারত, আসিয়ান দেশ

দ্য রিজিওনাল ইমার্জিং ডিজিজেস ইন্টারভেনশন (আরইডিআই) সেন্টার

গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উদীয়মান সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সিঙ্গাপুর-মার্কিন যৌথ উদ্যোগ

সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

সূত্র: লেখকের সঙ্কলন

 

প্রতিবন্ধকতা প্রশমন

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্বাস্থ্য কূটনীতি তার বৈচিত্র্য, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, অর্থনৈতিক বৈষম্য আন্তঃসীমান্ত স্বাস্থ্য হুমকির বিস্তৃত বর্ণালী দ্বারা জর্জরিত। রাজনৈতিক পার্থক্য এবং দেশগুলির মধ্যে চিরাচরিত উত্তেজনা সম্ভাব্য ভাবে স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিতে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যখন অর্থনৈতিক বৈষম্য স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সংস্থানগুলিতে অসম বণ্টনের দিকে চালিত করে। সংক্রামক রোগ, পরিবেশগত বিপদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের প্রতি এই অঞ্চলের সংবেদনশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অবকাঠামোগত এবং সক্ষমতার বৈষম্যের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে সমন্বিত স্বাস্থ্য কৌশল বাস্তবায়নকে আরও জটিল করে তোলে।

 

রাজনৈতিক পার্থক্য এবং দেশগুলির মধ্যে চিরাচরিত উত্তেজনা সম্ভাব্য ভাবে স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিতে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যখন অর্থনৈতিক বৈষম্য স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সংস্থানগুলিতে অসম বণ্টনের দিকে চালিত করে।

 

আসিয়ান, হু আঞ্চলিক অফিস এবং কোয়াডের মতো মঞ্চের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা শুধুমাত্র তাত্ক্ষণিক স্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবিলা করার জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সহযোগিতামূলক স্বাস্থ্য উদ্যোগকে উত্সাহিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ-সহ সক্ষমতা নির্মাণের প্রচেষ্টা দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রচারের জন্য অপরিহার্য। জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং তথ্যের গোপনীয়তার প্রতি সম্মান সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি রিজিওনাল ডেটা-শেয়ারিং ফ্রেমওয়ার্ক বা আঞ্চলিক তথ্য বণ্টনকারী অবকাঠামো এবং প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থার বিকাশ স্বাস্থ্যের হুমকির জন্য সময় মতো প্রতিক্রিয়া প্রদানে সক্ষম করবে। সর্বোপরি, স্থানীয় সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করা, চিরাচরিত স্বাস্থ্য অনুশীলনকে সম্মান করা এবং কার্যকর যোগাযোগ কৌশল ব্যবহার করা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং শিক্ষা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে, ইন্দো-প্যাসিফিকের স্বাস্থ্য কূটনীতিতে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করারই সম্ভাবনা নেই, বরং স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তির বৃহত্তর লক্ষ্যে অবদান রাখারও সম্ভাবনা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং স্বাস্থ্য বৈষম্য মোকাবিলা করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য কূটনীতি আঞ্চলিক সংহতি এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

 


প্রত্নশ্রী বসু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.