Author : Passang Dorji

Published on Apr 16, 2024 Updated 0 Hours ago

বিশ্বের অনেক অংশের নির্বাচনের বিপরীতে ভুটান তার সাম্প্রতিক নির্বাচনের সময় একটি নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতা হস্তান্তরের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে

ভুটানের চতুর্থ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনের বিশ্লেষণ

দক্ষিণ হিমালয়ের প্রত্যন্ত দেশ ভুটানের দুই দিকে রয়েছে চিন এবং ভারত। ভুটান সেই ৭৮টি দেশের অন্যতম, যার নাগরিকরা ২০২৪ সালে তাদের রাজনৈতিক নেতা নির্বাচন করেছেন। এই নির্বাচনের ফলাফলগুলি বিশ্ব জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। এখনও পর্যন্ত সব দেশের নির্বাচন সম্পন্ন হয়নি। আমাদের পৃথিবীর নথিবদ্ধ ইতিহাসে একই বছরে এত পরিমাণে নির্বাচন আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত না-ও হতে পারে।

ভুটান এশিয়ার ১৫টি দেশের অন্যতম। গত ৯ জানুয়ারি দেশটির চতুর্থ গণতান্ত্রিক জাতীয় পরিষদ (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) দেশের ৭২ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের একটি নির্বাচনের আয়োজন করে। ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্টারি ঐতিহ্যের নিম্ন কক্ষের মতো এনএ-তে শাসক ও বিরোধী দুটি রাজনৈতিক দল রয়েছে।

প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলগুলির অন্যতম পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) ৪৭টির মধ্যে ৩০টি আসন পেয়ে একটি দারুণ বিজয়ের সঙ্গে আবির্ভূত হয়েছে এবং বাকি আসনগুলি পেয়েছে ভুটানের রাজনৈতিক পরিসরের সবচেয়ে নতুন দল ভুটান টেন্ড্রেল পার্টি (বিটিপি) পাঁচটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে তিনটি দল গত বছরের ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাথমিক দফায় বাদ পড়ে।

 

প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলগুলির অন্যতম পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) ৪৭টির মধ্যে ৩০টি আসন পেয়ে একটি দারুণ বিজয়ের সঙ্গে আবির্ভূত হয়েছে এবং বাকি আসনগুলি পেয়েছে ভুটানের রাজনৈতিক পরিসরের সবচেয়ে নতুন দল ভুটান টেন্ড্রেল পার্টি (বিটিপি)

 

ভুটানের ভোটারদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতাবিরোধী রাজনৈতিক চেতনার ইঙ্গিত প্রদান সত্ত্বেও তৃতীয় এনএ-র শাসক (ড্রুক নিমড্রপ শোগপা) এবং বিরোধী দল (ড্রুক ফুয়েনসুম শোগপা) উভয়ই প্রাথমিক পর্যায়ে বাদ পড়ে। এক সময় শাসক দল থাকা পিডিপি-কে একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রাথমিক পর্যায়ে সেই দলও বাদ পড়েছিল। তবে ইতিহাস গড়েছে বিটিপি। ভুটানের ১৫ বছরের গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতায় বিটিপি হল সবচেয়ে নতুন দল, সবে এক বছর বয়সী, যে পার্লামেন্টে জায়গা করে নিয়েছে। এবং এর আগে বিটিপি কোন নির্বাচনে হারেনি। গত চারটি নির্বাচনী চক্র ভুটানে সাতটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে অংশ নিতে দেখেছে। তাদের মধ্যে মাত্র চারটি দল ক্ষমতাসীন বা বিরোধী দল হিসেবে পার্লামেন্টে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তাদের মধ্যে আবার দু’টি দল স্বেচ্ছায় ভুটানের নির্বাচন কমিশন (ইসিবি) থেকে নিবন্ধন বাতিল করেছে।

নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বে পিডিপি-র জয় অবশ্য বিস্ময়কর ছিল না। প্রাথমিক পর্যায়ের ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে-র নেতৃত্বে দলটি দেশের নির্বাচনী মানচিত্রে বিধ্বংসী জয় লাভ করেছে। ৩৯টি আসনে (১৩৩২১৭ বা ৪২.৫৩ শতাংশ) ভোট পেয়ে এগিয়ে থেকেছে পিডিপি, যা প্রায় অন্য চারটি রাজনৈতিক দলের মোট ভোটের সমান। চারটি দলের প্রাপ্ত মোট ভোট হল ১৭৯৯৪৫ বা ৫৭.৪৬ শতাংশ যাই হোক, চূড়ান্ত পর্যায়ের ফলাফলগুলি দর্শায় যে, লড়াই ততটা সহজ ছিল না, যতটা মনে করা হচ্ছিল। পিডিপি ৩০টি আসন জিতলেও প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এটি এ কথাই দর্শায় যে, চূড়ান্ত লড়াইয়ের বাইরে থাকা অন্য তিনটি দলের সমর্থকদের একটি বড় অংশ বিটিপি-কে সমর্থন করেছিল। বিটিপি ১৭টি আসন এবং মোট ভোটের ৪৫ শতাংশ পেতে সক্ষম হয়েছে। মোট উপস্থিত ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩২৬৭৭৫

 

পরিসংখ্যা কী দর্শায়?

দুটি দল যে নির্বাচনী অঞ্চল থেকে জয়লাভ করেছে, সে দিকে তাকালে বোঝা যাবে এই পরিসংখ্যান ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই থেকেছে, যেখানে দ্রুক নামদ্রুপ শোগপা ৩০টি এবং দ্রুক ফুয়েনসুম শোগপা ১৭টি আসন পেয়েছিলেন। তবে এ বারের ভোটের ধর আরও বিভক্ত। ছটি পূর্বাঞ্চলীয় জেলার একটি নির্বাচনী এলাকা বাদে বাকি ১৬টি জায়গাতেই বিরোধী দল বিটিপি-র পক্ষে ভোট পড়েছে। ত্রংসা জেলার একটি আসন বাদে বাঁচান কেন্দ্রীয়, পশ্চিম দক্ষিণ অঞ্চলের ভোটাররা পিডিপি-কে ভোট দিয়েছেন। পিডিপি-ই এখন পর্যন্ত একমাত্র দল যারা দ্বিতীয় বার সরকার গঠনের জনমত পেয়েছে।

 

ত্রংসা জেলার একটি আসন বাদে বাঁচান কেন্দ্রীয়, পশ্চিম দক্ষিণ অঞ্চলের ভোটাররা পিডিপি-কে ভোট দিয়েছেন।

 

এনএ-র গঠন বিশ্লেষণ করলে এ কথা বলা জরুরি, নির্বাচনী রাজনৈতিক পরিসরে ভোটারদের ভোট যাতে বিভক্ত না পড়ে, সে কথা নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলিকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যে কোন জাতীয় বিষয়ে আঞ্চলিকতার তাস খেলা রীতিমতো অসাংবিধানিক। যাই হোক, অবিলম্বে বিগত দুটি নির্বাচনের গতিপথ অনুসরণ করে আঞ্চলিক ব্লক হিসাবে কোনও দলকে ভোট দেওয়া যেতে পারে। পশ্চিম, পূর্ব এবং দক্ষিণের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে দক্ষিণ অঞ্চলটি গত চারটি নির্বাচনে কিংমেকারের ভূমিকা পালন করেছে কারণ এই অঞ্চলের ১২টি নির্বাচনী আসনে প্রতি বারই ক্ষমতাসীন দলজয়লাভ করেছে। আগামী নির্বাচনেও দক্ষিণাঞ্চল ব্লকটি নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করবে।

এই নির্বাচনে বিটিপি-র পক্ষে অনানুষ্ঠানিক ভাবে একটি শক্তিশালী আখ্যান প্রচারিত হয়েছিল। আখ্যানটি ছিল এই যে, বিটিপি-র হয়ে লড়া প্রার্থী অর্থাৎ দলের সভাপতি দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে কার্যত প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হয়ে লড়ছেন। তিনি ট্রাশিগাং জেলার কাংলুং-উদজোরং-সামখার আসনের প্রতিনিধিত্ব করেন। অঞ্চলের জনগণের মধ্যে থেকেই কেউ যে সরকার-প্রধান বা প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেই ইচ্ছার প্রকাশ ভোটের ধরনেও স্পষ্ট। পূর্বাঞ্চল তুলনামূলক ভাবে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া একটি অঞ্চল। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত চার জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শুধুমাত্র এক জনই পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধি। অন্যরা পশ্চিমাঞ্চল থেকে এসেছেন। মনে হয়, এই যুক্তি ভবিষ্যতের নির্বাচনে অঞ্চলের জনগণের ভোটদানের আচরণকে প্রভাবিত করবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক দিক থেকে।

নতুন সরকার ২৮ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করে। যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, পন্থা ভিন্ন হলেও দেশেসামনে সমস্যাগুলি একই থাকবে। ভুটান এখনও অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝঞ্ঝায় জড়িয়ে। দেশের অর্থনীতি এখনও কোভিড-১৯ অতিমারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। যুব বেকারত্বের হার নতুন উচ্চতায় অর্থাৎ ২৮.৬ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ক্ষীণ এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। দেশকে শিক্ষিত শ্রমশক্তির ব্যাপক হারে দেশ ছেড়ে প্রস্থান এবং সংশ্লিষ্ট জনসংখ্যা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করার জন্য দৃঢ়সংকল্প অভিজ্ঞ সরকারের প্রয়োজন ছিল। পিডিপি সেই রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন সরকারকে ভুটানের অর্থনীতিকে আরও স্থিতিস্থাপক উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন করে তোলার জন্য পুনরুজ্জীবন এবং নির্মাণের কাজে মোট প্রচেষ্টার ৭০ শতাংশ প্রদান করতে হবে। এটির মূল্য অনেক বেশিএর থেকে কম কিছু করলে তা তার ভবিষ্য নির্বাচনী সম্ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করবে।

 

দেশকে শিক্ষিত শ্রমশক্তির ব্যাপক হারে দেশ ছেড়ে প্রস্থান এবং সংশ্লিষ্ট জনসংখ্যা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

 

নির্বাচনী সংস্কারের আহ্বান

ভুটান সর্বনিম্ন ভোটারসম্পন্ন দেশগুলির অন্যতম। বছরের নির্বাচনে ভুটানের যোগ্য নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৯৭০৫৮, যার মধ্যে ৬৩ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। ২০০৮ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ, অর্থাৎ ৭৯.৩৮ শতাংশ। কিন্তু এই বছরের নির্বাচনে ভোটারদের ভোটদানের এত কম হার আসলে তাঁদের উদাসীনতাকেই দর্শায়। ২০০৮ সালের পরবর্তী দুটি সাধারণ নির্বাচনে যথাক্রমে ৬৬.১ এবং ৭১.৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। বেশির ভাগ নির্বাচনী চক্রে ভোটারদের ভোটদানের হার কমে যাওয়া দুটি অর্থ হতে পারে: ভোটারদের মধ্যে ক্লান্তি তৈরি হয়েছে এবং ভোট দেওয়া একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ বেশির ভাগ যোগ্য ভোটার তাঁদের নাগরিক নিবন্ধনের নির্বাচনী এলাকার বাইরে থাকেন (যদি পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা না দেওয়া হয়, তা হলে একজন ভোটারকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় যেতে হবে, যেখানে নাগরিক হিসেবে তাঁর নিবন্ধন করা হয়েছে) এবং পোস্টাল ব্যালট সুবিধা পাওয়ার জন্য কঠোর যোগ্যতার মানদণ্ড থাকাপরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতির নিম্নমুখী হার অব্যাহত থাকলেও ২০১৮ সালে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এর জন্য পোস্টাল ব্যালট ফেসিলিটেশন বুথ চালু করার বিষয়ে ইসিবি-র উদ্যোগকে কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে। ইসিবি নিজেদের বসবাসের জায়গা থেকে বিপুল সংখ্যক ভোটারকে নিজেদের প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অনুমতি প্রদান করেছে। ২০২৩-২৪ সালের নির্বাচনে এই সুবিধাটি বাতিল করে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ছাত্র হিসাবে নিবন্ধিত ব্যক্তিরা ব্যতীত সেই সব ব্যক্তি ভোট দিতে পারেননি, যাঁরা বিদেশে থাকেন। এই সমস্যাটি গভীর ভাবে অধ্যয়ন করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভুটানিরা অন্যান্য দেশে, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডায় অভিবাসন অব্যাহত রেখেছে। যত বেশি ভুটানি তাঁদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ছেন, তা দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের দেশ এবং জাতিসত্তার প্রতি তাঁদের স্বাতন্ত্র্যবোধকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে।

 

পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতির নিম্নমুখী হার অব্যাহত থাকলেও ২০১৮ সালে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এর জন্য পোস্টাল ব্যালট ফেসিলিটেশন বুথ চালু করার বিষয়ে ইসিবি-র উদ্যোগকে কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে।

 

নাগরিক নিবন্ধনের স্থান থেকে দূরে বসবাসকারী ভোটারদের কাছে তাঁদের শারীরিক উপস্থিতির নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বও ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। এটি দেশের ভবিষ্য নির্বাচনী কাঠামোর উপরেও প্রভাব ফেলবে কারণ আরও বেশি করে গ্রামীণ মানুষ শহুরে কেন্দ্র তার পরে অন্যান্য দেশে পাড়ি জমান। এই পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে পোস্টাল ব্যালটের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড পুনর্বিবেচনা করা এবং পোস্টাল ব্যালট ফেলিসিটেশন বুথগুলি পুনঃস্থাপন করা কার্যকর হবে। অন্যথায়, নির্বাচনী দিক থেকে বলতে গেলে, ৫০ শতাংশের কম যোগ্য ভোটার দ্বারা নির্বাচিত যে কোন সরকার (প্রবণতার দিকে তাকালে সেই সম্ভাবনাকে খারিজ করা যায় না) গণতান্ত্রিক বিশ্বাস এবং বৈধতার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে। দেশের অভ্যন্তরে, পোস্টাল ব্যালট ফেলিসিটেশন বুথ ভোটারদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করবে এবং ভোটারদের নিজেদের সত্তা ভোটের রাজনৈতিক মূল্য সম্পর্কে সচেতন হতে সাহায্য করবে। দেখা যাচ্ছে যে, ভুটানের ভবিষ্যৎ এবং এর গণতন্ত্র পরস্পর অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। ইসিবি-কে নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগকে আরও সুবিধাজনক সহজতর করে তোলার মাধ্যমে ভোটারদের জন্য তাঁদের অবিচ্ছেদ্য এবং সাংবিধানিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

 

উপসংহার

ভুটানের চতুর্থ এনএ নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি ক্রমহ্রাসমান ভোটার উপস্থিতি, উচ্চ মাত্রার ক্ষমতা বিরোধিতা, ভোটিং বিন্যাসে আঞ্চলিক বিভাজন দেখা গিয়েছে। যাই হোক, বিশ্বের অনেক জায়গায় নির্বাচনের বিপরীতে ভুটানে একটি মসৃণ ক্ষমতার উত্তরণ পরিলক্ষিত হয়েছে। এটি দেশের নির্বাচনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিঃসন্দেহে। ভবিষ্যতে বছরের পর বছর ধরে নির্বাচনে জনগণের হ্রাসপ্রাপ্ত অংশগ্রহণের দিকে গুরুত্ব সহকারে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ইসিবি-কে পোস্টাল ব্যালট ফেলিসিটেশন বুথ বন্ধ করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবেকারণ এই সুবিধাটির উচ্চ চাহিদা রয়েছে। ভোটারদের ক্লান্তি পোস্টাল ব্যালট সংক্রান্ত সুবিধার কঠোর মানদণ্ডের সমন্বয় গণতন্ত্র নির্বাচনের প্রতি জনসাধারণের উদাসীনতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ভুটানের ভবিষ্য এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি শক্তিশালী পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে বলে এই ধরনের পরিণতি যথেষ্ট ক্ষতিকারক হবে। অর্থনীতি, প্রযুক্তি, গণতন্ত্র এবং প্রশাসনের প্রেক্ষিতে ভুটানকে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এবং এই সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সাফল্য।


পাসাং দোরজি ভুটানের প্রাক্তন পার্লামেন্ট সদস্য এবং চিন ও ভারতের সঙ্গে ভুটান ও নেপালের সম্পর্ক সংক্রান্ত গবেষণা করেন। লেখকের মতামত একান্ত নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.