-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
যুক্তরাজ্যের চাগোসকে মরিশাসের কাছে হস্তান্তর ভারতের জন্য সেই কৌশলগত প্রশ্নগুলি আবার উস্কে দিয়েছে, যেখানে চিনের ছায়া প্রকট।
২০২৫ সালের ২৩ মে ভারত চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরের জন্য যুক্তরাজ্য ও মরিশাসের মধ্যে চুক্তিকে স্বাগত জানায় এবং এটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মভিত্তিক শৃঙ্খলার চেতনা’য় দ্বীপরাষ্ট্রের উপনিবেশমুক্তকরণ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসাবে বর্ণনা করে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই উন্নয়ন আফ্রিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের অবসানকেই চিহ্নিত করে।
গত এক দশক ধরে ভারত বিদেশ মন্ত্রক (এমইএ) এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (এমওডি) উভয় স্তরেই ‘ভারত মহাসাগর অঞ্চল’ (আইওআর) বিভাগ নামে একটি পৃথক ডেস্ক তৈরি করেছে। সম্প্রসারণের পর এতে এখন শ্রীলঙ্কা ও মলদ্বীপ ছাড়াও মরিশাস, সেশেলস, মাদাগাস্কার, কোমোরোস এবং ফরাসি রিইউনিয়ন দ্বীপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা এই অঞ্চলের উপর নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকেই দর্শায়।
ভারত এই বিষয়ে ধারাবাহিকতা দর্শিয়েছে। কারণ ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাজ্য ও মরিশাস একটি সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষর করার সময় ভারত প্রায় একই রকম বিবৃতি জারি করেছিল। মরিশাসের নতুন সরকার পূর্বের সম্মতির চেয়ে বেশি বার্ষিক অর্থ দাবি করলে যুক্তরাজ্যকে সমঝোতাপত্রের বেশ কিছু দিক পুনর্বিবেচনা করতে হয়েছিল। এই চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্য দিয়েগো গার্সিয়া সামরিক ঘাঁটির মালিকানা ধরে রাখে, যা চাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি অংশ এবং যেখানে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও সক্রিয় অংশীদার ছিল।
১৯৬৬ সালে দিয়েগো গার্সিয়া নিয়ে মূল অ্যাংলো-আমেরিকান চুক্তিটি ৫০ বছরের জন্য ছিল এবং এতে মরিশাস জড়িত ছিল না। ২০১৬ সালে এটি আরও ২০ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল এবং এমনটা মূলত হয়েছিল বিতর্কের কারণে। মরিশাস ও স্থানীয় চাগোসিয়ান বাসিন্দারা উভয়ই আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলাদা ভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। চাগোসের বাসিন্দারা ব্রিটিশ আদালতেও গিয়েছিলেন। ষাটের দশকে বলপূর্বক উচ্ছেদের প্রতিবাদকারী চাগোসিয়ানরা এখন বঞ্চিত বোধ করছেন। তবে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন আখ্যান, অন্ততপক্ষে আপাতদৃষ্টিতে তা-ই মনে হচ্ছে।
নতুন চুক্তি দিয়েগো গার্সিয়া-সহ সমগ্র চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব মরিশাসকে হস্তান্তর করেছে এবং সামরিক ঘাঁটির মার্কিন ব্যবহারের জন্য যুক্তরাজ্য কর্তৃক অতিরিক্ত ৯৯ বছরের ইজারা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছে। চুক্তিটিতে ইজারার মেয়াদ শেষে যুক্তরাজ্যের জন্য ৪০ বছরের লিয়েনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন ও তাঁর শপথ গ্রহণের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর বিলম্বিত করে। এই মধ্যবর্তী সময়ে ট্রাম্পের মনোনীত সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স মার্কো রুবিও মূল সমঝোতাপত্র সম্পর্কে আপত্তি প্রকাশ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, চুক্তিটি আদতে চিনকে সাহায্য করবে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের প্রাইম মিনিস্টার কায়ার স্টারমার ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি নমনীয় হন। রুবিও পরে স্বীকার করেন যে, দিয়েগো গার্সিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ‘দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের জন্য চুক্তিটির প্রয়োজন।’
তবুও যুক্তরাজ্যের ভেতরেই মতপার্থক্য রয়েছে, যেখানে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি এই চুক্তিকে ‘ব্যয়বহুল’ বলে সমালোচনা করেছে। দিয়েগো গার্সিয়ার দখল ও ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর ১৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বর্ধিত বার্ষিক ব্যয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, যা সরকারি বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করলে ৯৯ বছরের সময়কালে ৪.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাঁড়ায়। এই বার্ষিক আয় মরিশাসের নামমাত্র জিডিপি-র সঙ্গে তুলনীয়, যা ২০২৫ সালের হিসাবে ১৬.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মরিশাসের আলোচকরা বলেছেন যে, অর্থনীতিকে দাঁড় করানোর জন্য তাদের অর্থের প্রয়োজন ছিল। কারণ ‘পূর্ববর্তী সরকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল।’
কূটনৈতিক টানাপড়েন
২০১৯ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ (ইউএনজিএ) আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) কর্তৃক চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর মরিশাসের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত ‘পরামর্শমূলক মতামত’ অনুমোদন করে। ইউএনজিএ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে নয়াদিল্লি মরিশাসের দাবির ‘উপনিবেশকরণের’ দিকটি তুলে ধরে। ইউএনজিএ যখন বিষয়টি আইসিজে-তে পাঠায় এবং পরে যখন তারা মরিশাসকে সমর্থন করে আইসিজে-র পরামর্শমূলক মতামতের পক্ষে ভোট দেয়, উভয় ক্ষেত্রেই ভারতের অবস্থান একই ছিল।
যাই হোক, মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিজে-র ‘অ-বাধ্যতামূলক পরামর্শ প্রদানকারী মতামতের’ বিরোধিতা করেছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল (আইওআর) থেকে মলদ্বীপ প্রাথমিক ভাবে অস্বীকৃতিকারীদের সঙ্গেই যোগ দিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিহের সরকার মরিশাসের সঙ্গে অভিন্ন সাধারণ জলসীমার কিছু দাবি ছেড়ে দেওয়ার আগে এই মনোভাব পোষণ করেছিল, যা রাষ্ট্রপুঞ্জের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত কনভেনশন-এর (আনক্লজ) অধীনে সমুদ্র আইনের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল-এর (আইটিএলওএস) কাছে বিচারাধীন ছিল।
ইউএনজিএ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে নয়াদিল্লি মরিশাসের দাবির ‘ঔপনিবেশীকরণের’ দিকটি তুলে ধরে। ইউএনজিএ যখন বিষয়টি আইসিজে-তে পাঠায় এবং পরে যখন তারা মরিশাসকে সমর্থন করে আইসিজে-র পরামর্শমূলক মতামতের পক্ষে ভোট দেয়, উভয় ক্ষেত্রেই ভারতের অবস্থান একই ছিল।
এ কথা অবশ্য অন্য যে, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর বর্তমান প্রশাসন আইটিএলওএস-এ মলদ্বীপের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (ইইজেড) সম্পর্কে মরিশাস/চাগোসের পক্ষের আগেকার অবস্থান প্রত্যাহার করার পদক্ষেপ করেছে। বর্তমান সরকারের দাবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম এবং জুমহুরি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা গাসিম ইব্রাহিমের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মলদ্বীপের কিছু প্রবীণ সদস্য ব্রিটিশ হাই কমিশনার নিক লো-কে চিঠি লেখেন। চিঠিতে যুক্তরাজ্য ও মরিশাসের বিরুদ্ধে ‘চাগোস দ্বীপপুঞ্জের উপর মলদ্বীপের শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে এমন একটি অভ্যন্তরীণ আইনি কল্পকাহিনি টিকিয়ে রাখা’র অভিযোগ করা হয়েছে এবং ‘ব্যাপক ভাবে উপনিবেশমুক্তকরণের’ আহ্বান জানানো হয়েছে, যার অর্থ অ্যাংলো-মরিশিয়ান চুক্তি খারিজ করা।
অঞ্চলের বাইরেও ‘উপনিবেশমুক্তকরণ’ প্রসঙ্গটিকে প্রাসঙ্গিক করে রাখার জন্য কেউ কেউ যুক্তি দিচ্ছেন যে, চাগোসিয়ানদের ‘ন্যায়সঙ্গত দাবি’ এবং তাঁদের দ্বীপপুঞ্জের ক্ষেত্রে তাঁদেরই সার্বভৌমত্বের বিষয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। কেউ কেউ দুই সরকারের চুক্তির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করার পরিকল্পনাও প্রকাশ করেছেন। চিন এখনও অ্যাংলো-মরিশিয়ান চুক্তি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি এবং চিনের প্রতিক্রিয়ার জন্য সকল পক্ষই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
চিনকে দূরে রাখা
নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে প্রাইম মিনিস্টার স্টারমার বলেন, যদি যুক্তরাজ্য এখনই পদক্ষেপ না করত, তা হলে উদাহরণস্বরূপ চিন হয়তো সেই শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করত। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাজ্য এর আগে আইসিজে-র ‘পরামর্শমূলক মতামত’ এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ভোট উপেক্ষা করলেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এ বার শেষমেশ তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে।
স্টারমার রাষ্ট্রীয় সীমার মধ্যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বলয়ের ব্যবস্থাপনার উপর সার্বভৌম অধিকারের উদাহরণ দর্শিয়ে সতর্ক করে দেন যে, এই ধরনের জটিলতাগুলি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে গুরুতর পরিণতি হতে পারে। তিনি স্পষ্টতই চিনের দিকে ইঙ্গিত করছিলেন। তবে যুক্তরাজ্যের বিরোধী নেতারা যুক্তি দিয়েছেন যে, মরিশাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কার্যকর ভাবে ‘চিনের নিয়ন্ত্রণ অনুযায়ীই পদক্ষেপ’ করছে।
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
মরিশাসে চাগোসের সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরকে স্বাগত জানানোর পর ভারত এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের কৌশলগত উন্নয়নের উপর নজর রাখবে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য ও মরিশাস উভয়ই চুক্তিটি বাস্তবায়নে নয়াদিল্লির অবদান স্বীকার করেছে।
নয়াদিল্লিতে কেউই ৯৯ বছরের দীর্ঘ দিয়েগো গার্সিয়া চুক্তির সঙ্গে চিনের তরফে শ্রীলঙ্কায় ৯৯ বছরের জন্য হাম্বানটোটা বন্দরের ইজারা নেওয়ার মধ্যে তুলনা করছে না। বরং ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, দিয়েগো গার্সিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ধারাবাহিকতাকে স্বাগত জানানো উচিত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন তাঁর সাগর প্রচারের পরিধি মহাসাগরে প্রসারিত করেছেন – সমুদ্র থেকে মহাসাগর পর্যন্ত – তখন তিনি ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও সম্পৃক্ততার পরিধি প্রসারিত করেছেন। বাস্তবে এটি নয়াদিল্লির নিজস্ব ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ সংস্করণকেই দর্শায়, যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের সঙ্গে স্বতন্ত্র অথচ সমান্তরাল এবং যেখানে ভারতও একটি অংশীদার।
তবে ভারতীয় কৌশলগত অভিজ্ঞরা এখনও ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় মার্কিন সপ্তম নৌবহর মোতায়েনের প্রেক্ষাপটে দিয়েগো গার্সিয়ার কথা স্মরণ করেন, যাকে ভারতের সামরিক সাফল্যকে বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে মনে করা হয়েছিল। বর্তমানে নয়াদিল্লি সম্ভবত এই অঞ্চলে আরও উন্নয়নের দিকে নজর রাখবে, যা তার চিরাচরিত প্রভাবক্ষেত্রে তারই অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে, বিশেষ করে যে অবস্থানটি তারা এখনও ঠান্ডা লড়াই-পরবর্তী যুগে পুনরুদ্ধার করার জন্য কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন তাঁর সাগর প্রচারের পরিধি মহাসাগরে প্রসারিত করেছেন – সমুদ্র থেকে মহাসাগর পর্যন্ত – তখন তিনি ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও সম্পৃক্ততার পরিধি প্রসারিত করেছেন। বাস্তবে এটি নয়াদিল্লির নিজস্ব ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ সংস্করণকেই দর্শায়, যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের সঙ্গে স্বতন্ত্র অথচ সমান্তরাল এবং যেখানে ভারতও একটি অংশীদার। ফ্রান্স, ইইউ এবং এমনকি কানাডা তাদের নিজস্ব ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ কাঠামো প্রস্তাব করেছে। বর্ধিত প্রতিবেশ দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া তার সামুদ্রিক উদ্যোগ অনেক আগেই শুরু করেছিল, যদিও তার বিশেষ ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ শীর্ষক মোড়ক এখনও পর্যন্ত নেই।
‘একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ বজায় রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ (কোয়াড) এবং অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অউকাস ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব এই ধরনের কাঠামোরই উদাহরণ। কোয়াড কোনও চিরাচরিত সামরিক জোট নয়। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মরিশাসের সঙ্গে সরাসরি অ্যাংলো-আমেরিকান সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা তাই আগ্রহের বিষয় হবে।
ভারত ইতিমধ্যেই যৌথ ব্যবহারের জন্য মরিশাসের আগালেগা দ্বীপে একটি বিমানঘাঁটি তৈরি করছে। তবে ভিক্টোরিয়ায় সরকার পরিবর্তনের পর নিকটবর্তী সেশেলসের অ্যাসাম্পশন দ্বীপে একই ধরনের প্রচেষ্টা প্রাথমিক পর্যায়ের চেয়ে বেশি দূর এগোয়নি। এর পরিবর্তে এখন একটি হোটেল তৈরির প্রকল্প চলছে।
তবুও সামগ্রিক ভাবে ভারতের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক বাহিনীর অব্যাহত উপস্থিতি - যেমন দিয়েগো গার্সিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফরাসি বিদেশি অঞ্চল রিইউনিয়ন দ্বীপে ফ্রান্স - একটি স্বাগত প্রস্তাব হিসেবেই থেকেছে। এই অঞ্চলে ফ্রাঙ্কো-মার্কিন উচ্চাকাঙ্ক্ষার ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। এর ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই বৃদ্ধি পাবে। ভারত ও ফ্রান্স নিয়মিত ভাবে রিইউনিয়ন দ্বীপে সামরিক মহড়া পরিচালনা করে আসছে এবং যৌথ টহলও দিয়েছে, বিশেষ করে এই অঞ্চলে চিনা উপস্থিতি বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায়।
সামগ্রিক ভাবে ভারতের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক বাহিনীর অব্যাহত উপস্থিতি - যেমন দিয়েগো গার্সিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফরাসি বিদেশি অঞ্চল রিইউনিয়ন দ্বীপে ফ্রান্স - একটি স্বাগত প্রস্তাব হিসেবেই থেকেছে।
বর্তমানে ভারতের সীমান্তে - আন্দামান ও লক্ষদ্বীপ দুই জায়গাতেই - শক্তিশালী সামরিক অবকাঠামো এবং দিয়েগো গার্সিয়া ও রিইউনিয়নে বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক বাহিনী থাকায় ভারত মহাসাগরের এই অংশটিকে ‘ভারতীয় জলাধার’ হিসেবে কল্পনা করা যেতেই পারে। এর আগে চিন দাবি করেছিল যে, ‘ভারত মহাসাগর ভারতের মহাসাগর নয়’। অবশ্য চিন দক্ষিণ চিন সাগর এবং পূর্ব চিন সাগরকে ‘চিনের’ অংশ বলতে একটুও দ্বিধা করেনি।
ইতিমধ্যেই সমস্ত অংশীদার চাগোস জলসীমার চারপাশে চিনা ‘অনুপ্রবেশের’ যে কোনও প্রাথমিক লক্ষণের জন্য নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, তা সে সরাসরি হোক বা প্রক্সির মাধ্যমে। মরিশাসের সঙ্গে বিতর্কিত ইইজেড-এর উপর মলদ্বীপের দাবি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়টিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চেয়ে ভূ-কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বেশি পর্যবেক্ষণ করা দরকার।
এই অঞ্চলে চিনের আগ্রহ তার ‘দুই মহাসাগর’ কৌশলগত তত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার লক্ষ্যই হল জলপথ নিয়ন্ত্রণ করা। এই কৌশলটি ‘স্ট্রিং অফ পার্লস’ দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং তার পর থেকে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) ও ‘নিউ সিল্ক রোড’-এর মাধ্যমে প্রসারিত হয়েছে। এই উদ্যোগগুলি ততটাও অর্থনীতি-কেন্দ্রিক নয়, যতটা বেজিং গোটা বিশ্বকে বোঝাতে চায়।
এই সম্ভাবনাগুলিই এই অঞ্চলের জন্য ভারতের কৌশলগত চিন্তাভাবনাকে আকার দিয়েছে এবং কেন নয়াদিল্লি ক্রমশ অস্বস্তিতে পড়ে, যখন চিনা ‘গুপ্তচর জাহাজ’ ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় এমন এক স্থিতিশীল ও অপ্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে, কিন্তু ভবিষ্যতে অঞ্চলটি তেমন না-ও থাকতে পারে।
এন সত্য মূর্তি চেন্নাইভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক এবং ধারাভাষ্যকার।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
N. Sathiya Moorthy is a policy analyst and commentator based in Chennai. ...
Read More +