জুন মাসের শুরুতে বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা প্রদানের নিশ্চয়তা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতালিতে জি৭ বৈঠকের সময় ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এবং দ্বন্দ্বে থাকা দেশটিকে ত্রাণ অনুমোদনের পর পরবর্তী ১০ বছরের জন্য নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেন। চুক্তিতে এখন এবং ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে রক্ষা করার পরিকল্পনা রয়েছে, যে নতুন শক্তি রাশিয়াকে আটকাতে সক্ষম হবে। এটি ইউক্রেনকে পশ্চিমী মানদণ্ডে নির্মিত একটি সামরিক বাহিনী সরবরাহ করবে এবং ন্যাটোতে কিয়েভের সদস্যপদ সম্পর্কিত সমস্যাটিকে কিছু দিনের জন্য হলেও পিছিয়ে দেবে।
কিন্তু যিনি নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধারণা ভিন্ন। তিনি এক দিনের মধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ট্রাম্পের বিজয় বিশ্বে না হলেও, ইউরোপের মার্কিন নীতিতে অবশ্যই একটি বড় পরিবর্তন আনবে।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ট্রাম্প তাঁর দুই উপদেষ্টার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এমন একটি পরিকল্পনা আনতে পারেন, যা ইউক্রেনকে শান্তি স্থাপনে বাধ্য করবে। যদি ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় না আসে, তা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দেবে এবং একই সঙ্গে মস্কোকে নাটকীয় ভাবে কিয়েভের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর চাপ সৃষ্টি করে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনবে।
পরিকল্পনাটি মূলত বিদ্যমান পরিস্থিতির সমান্তরালে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাবে। যদিও পরিকল্পনাকারীরা এ কথা বলছেন না যে, ইউক্রেনকে ভূখণ্ড হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২৪ সালের যে কোনও সময় যুদ্ধ বন্ধ করা আসলে পরিস্থিতিকে আরও স্থবির করে দেবে, যার ফলে পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের বিশাল এলাকা রাশিয়ার কাছে হস্তান্তরিত হতে পারে।
পরিকল্পনাটি মূলত বিদ্যমান পরিস্থিতির সমান্তরালে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাবে। যদিও পরিকল্পনাকারীরা এ কথা বলছেন না যে, ইউক্রেনকে ভূখণ্ড হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২৪ সালের যে কোনও সময় যুদ্ধ বন্ধ করা আসলে পরিস্থিতিকে আরও স্থবির করে দেবে, যার ফলে পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের বিশাল এলাকা রাশিয়ার কাছে হস্তান্তরিত হতে পারে।
জুনের মাঝামাঝি সময়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন যে, কিয়েভ যদি ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা ত্যাগ করে এবং রাশিয়ার দ্বারা সংযুক্ত করা চারটি পূর্ব এবং দক্ষিণ প্রদেশ হস্তান্তর করে, তা হলে তিনি যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন।
অন্য দিকে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বারবার স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি মস্কোর সঙ্গে তত দিন আলোচনায় বসবেন না, যতক্ষণ না রাশিয়া ক্রিমিয়া-সহ বিজিত অঞ্চলগুলি ছেড়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
জুনের মাঝামাঝি সময়ে একটি প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সমর্থনের মাত্রাকে আক্রমণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, তিনি যদি নভেম্বর মাসে ক্ষমতায় আসেন তবে তিনি অবিলম্বে ‘এটির নিষ্পত্তি করবেন’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা কিয়েভকে প্রদত্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ত্রাণের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরিওয়ালা’ বলে অভিযুক্ত করেন। এই ত্রাণের বৃহৎ অংশই মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র এবং সরঞ্জাম উত্পাদনের কাজে ব্যবহৃত হবে। জুন মাসের একটি পডকাস্ট সাক্ষাত্কারে ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার পথ তৈরির বিষয়েও সন্দিহান হয়েছিলেন।
যুদ্ধের বর্তমান অবস্থা এবং পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প উপদেষ্টাদের পরিকল্পনা খানিক আত্মসমর্পণেরই সমতুল্য। রুশরা ২০২৩ সালের ইউক্রেনের উপর গ্রীষ্মকালীন আক্রমণ হানা বন্ধ করে দিলেও, প্রতি-আক্রমণের বিষয়টিও খানিক অনির্দিষ্ট ঠেকছে।
সরেজমিনে যুদ্ধ
বর্তমান যুদ্ধের মূল মনোযোগ খারকিভের ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষার সঙ্গে জড়িত। এই বছরের শুরুতে রুশবাহিনী রাশিয়ার সীমান্ত এবং শহরের মধ্যে সামান্য দূরত্ব বজায় রেখেছিল। সুতরাং, রাশিয়ার আক্রমণ তীব্রতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেন তাদের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে।
মে মাসের শেষে, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে শুধুমাত্র খারকিভ অঞ্চলের কাছাকাছি কিছু রুশ লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করার জন্য মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। এটি খারকিভের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হ্রাসের মতো নাটকীয় প্রভাব ফেলেছে এবং মে মাসে হওয়া ২৫টি হামলার সংখ্যা জুন মাসে শূন্যতে নেমে আসে। এইচআইএমএআরএস এবং এটিএসিএমএস-এর মতো মার্কিন সরবরাহকৃত করা যুদ্ধাস্ত্রের ফলে সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির ভয়ে রুশ এস-৩০০ এবং এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ইউনিটগুলি ধ্বংস বা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা এখনও বিদ্যমান এবং এটি রুশ বোমা হামলার প্রচারকে প্রভাবিত করেনি, যারা তাদের মারাত্মক ইউএমপিকে গ্লাইড বোমা ব্যবহার করছে এবং সেগুলি বিস্তৃত পরিসর জুড়ে ইউক্রেনের সামরিক এবং বেসামরিক স্তরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
দুই দেশের তরফেই প্রথম সারিতে থাকা আক্রমণকারী বা প্রতিরোধকারী বাহিনী ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছে। কারণ বিমান, কামান এবং রকেটের মাধ্যমে বোমাবর্ষণ ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং কোনও এলাকায় আগ্রাসন ঘটাতে পারে। উভয় পক্ষই সদা উপস্থিত ড্রোনের ওভারহেডের সংস্পর্শে আসা সৈন্যদের সংখ্যা হ্রাস করতে চায়। তাই তারা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে এবং ড্রোন ও আর্টিলারির সাহায্যে ০.১ থেকে ২ কিমি পর্যন্ত এগোনোর জন্য নিরীক্ষণমূলক প্রতিরক্ষা হিসাবে পর্যাপ্ত সংখ্যক সৈন্য বৃদ্ধি করে।
সমর্থন
ইউক্রেন এখন আটক করা রুশ সম্পদের জমা হওয়া সুদ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে প্রস্তুত। এটি এপ্রিল মাসে মার্কিন সহায়তায় ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিলম্বিত হওয়ার শীর্ষে রয়েছে যা ইউক্রেনীয় আর্টিলারিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
ইউরোপীয় এবং মার্কিনরা তাদের গোলাবারুদ উত্পাদন তীব্র ভাবে বৃদ্ধি করেছে। এটি তাদের নিজস্ব ভাণ্ডার পুনরায় পূরণ করার পাশাপাশি ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদানেও সাহায্য করবে। ইইউ-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, যেখানে গোষ্ঠীটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে বছরে ৫ লক্ষ শেল তৈরি করেছিল এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে ১০ লক্ষ উৎপাদন করেছে, সেখানে গোষ্ঠীটি বছরের শেষ নাগাদ ১৪ লক্ষ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ লক্ষ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে।
ইউক্রেনের জন্য ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্যাকেজ পাস হওয়ার পরে গোষ্ঠীটি এখন কেবল তার উত্পাদন বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে, গোষ্ঠীটি ২০২৫ সালের মধ্যে তার মাসিক ১৫৫ এমএম-এর গোলাবারুদ উৎপাদন তিনগুণ করে ১২ লক্ষ করতে সক্ষম হবে।
তার পরে বিশ্ব বাজার থেকে ইউক্রেনের জন্য ১০ লক্ষ গোলাবারুদ ক্রয় করার জন্য এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১ লক্ষ ৮০ হাজার গোলাবারুদের প্রথম চালান জুন মাসে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে আরও এ হেন গোলাবারুদ ইউক্রেনে পাঠানোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ইউক্রেন দিনে ২০০০ গোলাবারুদ নিক্ষেপ করছে, যেখানে রাশিয়া তার তিনগুণ গুলি চালাচ্ছে। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ১০০০০ শিপিং কনটেনার পাঠিয়েছে যা সম্ভবত ৫০ লক্ষ গোলাবারুদ ধারণ করতে পারে। আশ্চর্যজনক ভাবে, রাশিয়াপন্থী সার্বিয়া পরোক্ষ ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও চেকিয়াকে সার্বিয়া দ্বারা তৈরি ৮৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের গোলাবারুদ প্রদান করেছে, যারা এই গোলাবারুদ ইউক্রেনকে পাঠাতে পারে।
এখনও পর্যন্ত ইউক্রেন দিনে ২০০০ গোলাবারুদ নিক্ষেপ করছে, যেখানে রুশ সেই সংখ্যার তিনগুণ গুলি চালাচ্ছে। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ১০০০০ শিপিং কনটেইনার পাঠিয়েছে যা সম্ভবত ৫০ লক্ষ গোলাবারুদ ধারণ করতে পারে।
যাই হোক, রাশিয়ার প্রধান সুবিধা হল এই যে, তার ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (ইডব্লিউ) ব্যবস্থা রয়েছে, যা ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যাহত করেছে। এটি ইউক্রেনীয়দের তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে প্রথম সারি থেকে পর্যুদস্ত করতে বাধ্য করেছিল এবং রুশ গ্লাইড বোমা আক্রমণগুলিকে সক্ষম করে তুলছিল, যা আসলে ইউক্রেনীয়দের জন্য ধ্বংসাত্মক ছিল।
সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ইউক্রেন আগামী মাসগুলিতে মার্কিন এফ-১৬ পেতে শুরু করবে। এগুলি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র এবং নির্দেশিত যুদ্ধাস্ত্রগুলির সঙ্গে সমন্বিত রুশ ইডব্লিউ সক্ষমতার কারণে ইউক্রেনীয়রা যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হয়, তার কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম করবে। অন্তর্বর্তী সময়ে, বিমান প্রতিরক্ষায় সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মিত্রদেরকে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর পাশাপাশি মার্কিন মিত্রদের জন্য বিদ্যমান প্রতিশ্রুতিগুলির আগে ইউক্রেনে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
ইউক্রেনের জন্য আর একটি ইতিবাচক দিক হল ডাচ প্রাইম মিনিস্টার মার্ক রুটেকে ন্যাটোর পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে নির্বাচন করা। তিনি একজন অত্যন্ত সম্মানিত প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ইউক্রেনের এক শক্তিশালী সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাঁর নেতৃত্বে ওলন্দাজরা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যয় ২ শতাংশ মাত্রা বৃদ্ধি করেছে এবং ইউক্রেনকে এফ-১৬ বিমানের পাশাপাশি গোলাবারুদ এবং ড্রোন সরবরাহ করার জন্য নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেছে।
অন্য ইউরোপীয় দেশগুলিও যোগ দিচ্ছে। ফ্রান্স বছরের শেষের মধ্যে ২৬ ইউক্রেনীয় পাইলটকে প্রশিক্ষণ দেবে। এফ-১৬-এর মিরাজ-৫ উড়ানোর জন্য এই পাইলটদের ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং রোমানিয়াতে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পরোক্ষ সাহায্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও আসছে, যে দেশটি নীতিগত ভাবে যুদ্ধরত দেশগুলিকে সাহায্য করে না। দক্ষিণ কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ১৫৫ এমএম গোলাবারুদ সরবরাহ করবে, যাতে মার্কিনরা তা ইউক্রেনে পাঠাতে সক্ষম হয়। উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া চুক্তি দক্ষিণ কোরিয়াকে তার নীতি পরিবর্তন করতে এবং সরাসরি কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহ করতে বাধ্য করতে পারে।
ইউরোপীয়রা তাদের সামরিক পরিস্থিতির জন্য প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা ইউক্রেনের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলবে। ন্যাটো সদস্যরা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যয় ২ শতাংশ মাত্রার উপর নিয়ে গিয়েছে।
কূটনীতি
তবুও বাস্তবে ইউক্রেনের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমী অংশীদার উভয়ই উপলব্ধি করছে যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিশাল আর্থিক, সামরিক এবং মানবসম্পদের প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।
তবুও বাস্তবে ইউক্রেনের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমী অংশীদার উভয়ই উপলব্ধি করছে যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিশাল আর্থিক, সামরিক এবং মানবসম্পদের প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।
এই সময়ের মধ্যে, কিছু পদক্ষেপ প্রচেষ্টাকে পুনরুজ্জীবিত করবে। সদস্যপদ নিয়ে ইউক্রেন এবং ইইউ-এর মধ্যে আলোচনার সূচনার মতো পরোক্ষ পদক্ষেপ রয়েছে। ঘটনাটি কয়েক বছর দূরে হলেও আলোচনার সূত্রপাত জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনের জন্য মনোবল বৃদ্ধি করবে। যদিও ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিষয়টি এখনও বিশ বাঁও জলে।
আর একটি পরোক্ষ সমর্থনমূলক পদক্ষেপ ছিল সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন। রাশিয়া বা চিনের অংশগ্রহণ ছাড়া এর কোনও বাস্তব ফলাফল ছিল না। কিন্তু প্রায় ৯০টি দেশের উপস্থিতি কিয়েভের মনোবল বৃদ্ধি করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত মাত্র ৮৪টি দেশ চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছিল। সৌদি আরব, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা এই সম্মেলনে অনুপস্থিত থেকেছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে পুতিন তাঁর শান্তি পরিকল্পনা সামনে রেখেছিলেন, যাকে ইউক্রেনীয় আত্মসমর্পণের সমতুল্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি শীর্ষ সম্মেলনের কার্যপ্রণালীতে সামান্যই গুরুত্ব পেয়েছে।
উপসংহার
অস্ত্র হোক বা অর্থ… ইউক্রেনের আরও অনেক সাহায্য দরকার। গোলাবারুদের ক্ষেত্রে সরবরাহের পরিমাণ ইউক্রেনীয় প্রয়োজনীয়তা পূরণ করলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে এবং সাময়িক পদক্ষেপ সে ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। মার্কিন মিত্ররা এবং কিছু কূটনীতিকরা চান যে, বাইডেন মার্কিন-প্রদত্ত অস্ত্রের উপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন।
যুদ্ধের মাত্রা মূলত অচলাবস্থায় রয়েছে এবং সুইস শান্তি সম্মেলনের ফলাফলের অভাবের দরুন ২০২৪ সালে ইউক্রেনে শান্তি আসার সম্ভাবনা খুব কম। রুশরা নিরলস এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো উপায় তাদের রয়েছে। ইউক্রেনের জন্য এত দিন পর্যন্ত পশ্চিমী সহায়তা একটি সাময়িক স্বস্তি প্রদান করলেও তা নিয়মিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছে।
যাই হোক, নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনের ফলে এক অনভিপ্রেত শক্তিশালী প্রভাব পড়তে পারে যা এই প্রবণতায় পরিবর্তন আনতে পারে।
মনোজ জোশি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিস্টিঙ্গুইশড ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.