Author : Don McLain Gill

Published on Nov 01, 2025 Updated 0 Hours ago

তাইওয়ান সংঘাতে মিত্রদের ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক প্রশ্ন উত্থাপন করা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসনের লেনদেনমূলক পদ্ধতি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিশ্বাসযোগ্য জরুরি পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক আস্থা ক্ষুণ্ণ করার ঝুঁকি তৈরি করে।

ট্রাম্পের তাইওয়ান সংক্রান্ত জরুরিপরিকল্পনা: প্রশ্ন সঠিক, পদ্ধতি ভুল

২০২৫ সালের ১৩ জুলাই প্রকাশিত ফিন্যানশিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বিষয়ক ডিফেন্স আন্ডার সেক্রেটারি এলড্রিজ কোলবি ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্রদের, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া জাপানকে তাইওয়ানের উপর মার্কিন-চি চাপানউতোরের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য রাজি করানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন। কথা সহজেই অনুমেয় যে, উভয় মিত্রই সরাসরি কোনও উত্তর দেওয়া থেকে বিরত ছিল। এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরির জন্য দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি মিত্রদের মধ্যে আস্থা তৈরির প্রয়োজন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তার ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের কাছে সঠিক সঙ্কেত প্রেরণ করছে না।

চি কি আদৌ এবং কখন তাইওয়ান আক্রমণ করতে চায়, এই প্রশ্নটি তীব্র জল্পনা-কল্পনার বিষয় হলেও যে স্পষ্ট সময়সীমা প্রায়শই প্রকাশ্যে আসে তা হল ২০২৭, যা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) প্রতিষ্ঠার ১০০তম বার্ষিকীর সঙ্গে মিলে যায়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সময়কালকে সেই সময় হিসাবে বিবেচনা করেন, যখন চিন তার জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা উন্নয়ন স্বার্থ রক্ষার জন্য কৌশলগত ক্ষমতা ব্যাপকভাবে উন্নত করতে পারত। ২০২১ সালে প্রাক্তন মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কম্যান্ড অ্যাডমিরাল ফিলিপ ডেভিডসনের সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে - যাকে ডেভিডসন উইন্ডোও বলা হয় - ট্রাম্প প্রশাসনও এই সময়সীমাটিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

যদি তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা ও চিন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তা হলে ওয়াশিংটন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে তার মিত্র শৃঙ্খলকে কাজে লাগাতে চাইবে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে হাব-অ্যান্ড-স্পোক শৃঙ্খলের মধ্যে ত্রুটিগুলি প্রকাশ পেয়েছে, বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্র - জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতি ছন্নছাড়া দৃষ্টিভঙ্গির কারণে।

পরিশেষে, যদি তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা ও চিন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তা হলে ওয়াশিংটন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে তার মিত্র শৃঙ্খলকে কাজে লাগাতে চাইবে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে হাব-অ্যান্ড-স্পোক শৃঙ্খলের মধ্যে ত্রুটিগুলি প্রকাশ পেয়েছে, বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্র - জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতি ছন্নছাড়া দৃষ্টিভঙ্গির কারণে।

প্রথমে যা প্রতিষ্ঠিত করা দরকার তা হল, যদিও জাপান অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে, কিন্তু ওয়াশিংটনের সঙ্গে মিত্রের কোনও নিরাপত্তা চুক্তিতেই আইনত এবং স্পষ্ট ভাবে তাদের প্রশাসনের অধীনে থাকা অঞ্চলের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ জড়িত নয়, এমন কোনও সংঘাতে সামরিক ভূমিকা পালনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে না।  যাই হোক, চুক্তির পাঠ্যগুলিতে কিছু সূক্ষ্মতা রয়েছে উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন-জাপান প্রতিরক্ষা চুক্তির ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, টোকিও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখার জন্য জাপানের মাটিতে মার্কিন বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি গ্রহণ করবে এবং সমর্থন করবে তবে এটি জাপানের প্রতিরক্ষা পরিস্থিতির বাইরে জাপান স্ব-প্রতিরক্ষা বাহিনী (জেএসডিএফ) সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করে না। একই ভাবে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমেরিকার ১৯৫১ সালের জোট চুক্তি সাধারণ বিপদ মোকাবিলায় পারস্পরিক পরামর্শের চারপাশে আবর্তিত হয়।

তা সত্ত্বেও, চুক্তিগুলিতে স্পষ্ট আইনি বাধ্যবাধকতার অনুপস্থিতির অর্থ এই নয় যে, কোনও সম্ভাব্য মিত্র পদক্ষেপ সম্ভব নয়। এই শূন্যস্থান পূরণে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমন্বয় আত্মবিশ্বাস তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গত কয়েক বছরে জাপানের জাতীয় নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পুনরুজ্জীবিত প্রচেষ্টার পাশাপাশি দেশটির প্রতিরক্ষা মহল স্বীকার করতে শুরু করেছে যে, তাইওয়ানের উপর আক্রমণ পূর্ব এশিয়ার দেশটির জন্য সরাসরি প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে যদি পিএলএ জাপানে মার্কিন ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। ২০২২ সালে, জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাইওয়ানের উপর তার কৌশলগত অস্পষ্টতাপরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়া তার দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সংযত করেছে, মূলত চিনের সঙ্গে তার বাণিজ্য সম্পর্কের কারণে। তবে ক্যানবেরা ক্রমশ সচেতন হয়ে উঠেছে যে, তাইওয়ানে চিনা আক্রমণ কেবল সেই ভৌগোলিক স্থানে সীমাবদ্ধ না-ও থাকতে পারে, বিশেষ করে গত চার বছরে চিন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তার উস্কানিমূলক আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ বাড়িয়েছে।

চুক্তিগুলিতে স্পষ্ট আইনি বাধ্যবাধকতার অনুপস্থিতির অর্থ এই নয় যে, কোনও সম্ভাব্য মিত্র পদক্ষেপ সম্ভব নয়। এই শূন্যস্থান পূরণে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমন্বয় আত্মবিশ্বাস তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে জরুরি পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ওয়াশিংটন তার মিত্রদের সঙ্গে এই ধরনের একটি কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার জন্য সঠিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে, ট্রাম্প প্রশাসন তার মিত্রদের সঙ্গে একটি অন্যায্য পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক হিসাবে বিবেচিত শর্তাবলি পুনর্বিবেচনায় স্পষ্ট ভাবে নিজের আধিপত্য জাহির করেছে। এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন প্রশাসন তার ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্রদের তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পাঁচ শতাংশে উন্নীত করার দাবি করে, যা ক্যানবেরা, সিল এবং বিশেষ করে টোকিওর কাছে অপ্রীতিকর ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত অউকাস চুক্তির পর্যালোচনাও প্রসারিত করবে, যার ফলে অস্ট্রেলিয়ার নীতিনির্ধারকরা আরও অনিশ্চিত বোধ করবেন। অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখলে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে প্রশাসনের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নির্বিচারে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করে। জাপান আমেরিকার সঙ্গে একটি ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য চুক্তি করতে না পারার কারণে, ট্রাম্প ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ওয়াশিংটনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্রের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, বাণিজ্য চুক্তির জন্য তার শর্তাবলি মেনে না চলার জন্য এটিকে নষ্টবলে অভিহিত করেন।

যদিও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি বজায় রেখেছে, তবুও ট্রাম্প প্রশাসনের তার গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্রদের সাথে ন্যায়সঙ্গত শর্তে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতে অক্ষমতা এই অঞ্চলে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সংঘাতের জন্য একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার জন্য আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা প্রত্যাশা অর্থনৈতিক দাবির মধ্যে স্পষ্ট অসঙ্গতি সমন্বিত পরিকল্পনা সমন্বয়কে বাধাগ্রস্ত করে যদিও জাপান অস্ট্রেলিয়া উভয়ই তাইওয়ানে চিনা আক্রমণের প্রভাব সম্পর্কে ভাল রকমের অবগত। সর্বোপরি, আঞ্চলিক গতিশীলতার অনিশ্চয়তার কারণে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও একটি অস্পষ্ট অবস্থান বজায় রাখে তাই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষার প্রতি স্পষ্ট ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া মূল মিত্রদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে জরুরি পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ওয়াশিংটন তার মিত্রদের সঙ্গে এই ধরনের একটি কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার জন্য সঠিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি।

অতএব, হাব-অ্যান্ড-স্পোক শৃঙ্খলের সকল সদস্য তাইওয়ান প্রণালীতে সংঘাতের পরিস্থিতির জন্য জরুরি পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে নিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই তার কূটনৈতিক পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে যে কোন সফল মিত্র প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে কোনও লিখিত চুক্তির বাধ্যবাধকতার চেয়ে সম্মিলিত রাজনৈতিক ইচ্ছার মাত্রার উপর। পরিশেষে, ওয়াশিংটনকে যদি একটি সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে য়, তবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার মিত্রদের সঙ্গে কী ভাবে যোগাযোগ করতে হবে, সেটিও পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

 


ডন ম্যাকলেন গিল দে লা সালে ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক এবং ফিলিপিন্সভিত্তিক ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক লেখক।


নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.