-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত উত্তর-পূর্ব ভারতে ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাণিজ্য, সংযোগ ও জলবায়ু কর্মকাণ্ডে অব্যবহৃত সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারত এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে বাণিজ্য, জলবায়ু ও সংযোগ তার ভবিষ্যৎ গঠনে ভূমিকা পালন করছে। অ্যাক্ট ইস্ট নীতির মাধ্যমে গৃহীত বাণিজ্য ও সংযোগ উদ্যোগের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে জায়গাটি অপরিহার্য। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি এই অঞ্চলের দুর্বলতা অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এই সংযোগস্থলে উদ্ভূত উদ্বেগ ও সুযোগগুলি তুলে ধরার জন্য এই অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাণিজ্য সংযোগের মধ্যে জটিল সম্পর্ক অন্বেষণ করা প্রয়োজন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুখোমুখি চ্যালেঞ্জ
ভূ-রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা: এই অঞ্চলের কৌশলগত অবস্থান এবং জটিল সামাজিক-রাজনৈতিক ভূদৃশ্য থেকে এটি উদ্ভূত হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সীমান্ত ভাগ করে নেয় চিন, মায়ানমার, ভুটান, বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে, যা এটিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার করে তোলে। ২০২৫ সালের রাইজিং নর্থ ইস্ট ইনভেস্টরস সামিট -এ প্রধানমন্ত্রী মোদী ৪.৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ উন্মোচন করেন, যা এই অঞ্চলটিকে একটি নতুন অর্থনৈতিক অক্ষ হিসেবে স্থাপন করেছে। তবে, এই রূপান্তরটি এই অঞ্চলটিকে চিন ও মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির কাছ থেকে তীব্র নজরদারির মধ্যে রেখেছে, বিশেষ করে অমীমাংসিত সীমান্ত বিরোধ এবং বিদ্রোহের বিস্তারের মধ্যে। ভারত এবং অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে টানাপড়েনের ফলে এই অঞ্চলের বাণিজ্য, পরিকাঠামোগত প্রকল্প এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ব্যাহত হয়েছে।
তবে, এই রূপান্তরটি এই অঞ্চলটিকে চিন ও মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির কাছ থেকে তীব্র নজরদারির মধ্যে রেখেছে, বিশেষ করে অমীমাংসিত সীমান্ত বিরোধ এবং বিদ্রোহের বিস্তারের মধ্যে।
অসংখ্য জনগোষ্ঠী এবং বিদ্রোহী আন্দোলনের উপস্থিতি এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে জটিলতার স্তর যোগ করে। ঔপনিবেশিক সীমান্ত জনসম্প্রদায়গুলিকে দেশের সীমান্ত পেরিয়ে বিভক্ত করেছে, যার ফলে চলতি উত্তেজনা ও সংঘাত দেখা দিয়েছে। এই অঞ্চলটিকে জাতীয় মূলধারায় একীভূত করার জন্য ভারত সরকারের প্রচেষ্টা ভূ-রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা: দুর্গমতা এবং দূরবর্তিতা ঐতিহাসিকভাবে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের অর্থনৈতিক একীকরণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার উদাহরণ অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি, যেখানে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে কেবল পায়ে হেঁটে বা হেলিকপ্টারে করেই যাওয়া যায়। নতুন মহাসড়ক নির্মাণ এবং বিদ্যমান রাস্তা প্রশস্তকরণের মতো সড়ক নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ আরও ভাল যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। উদাহরণস্বরূপ, অরুণাচল প্রদেশে সেলা টানেলের চলতি নির্মাণের লক্ষ্য তাওয়াংয়ের সঙ্গে সর্ব-আবহাওয়া সংযোগ প্রদান করা, যেখানে ভারী তুষারপাতের সময় পৌঁছনো কঠিন।
পরিবেশগত অবক্ষয়: অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বন উজাড় হয়েছে, যা এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যকে প্রভাবিত করেছে এবং অসংখ্য প্রজাতির আবাসস্থলকে ব্যাহত করেছে। মেঘালয়ে যেমন দেখা গিয়েছে, অবৈধ খননের ফলে মাটির ক্ষয়, জল দূষণ ও কৃষি জমির অবক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে। শিল্প বর্জ্য, কৃষিজমি ও গৃহস্থালির পয়ঃনিষ্কাশন থেকে জলাশয় ক্রমশ দূষিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদী বিভিন্ন উৎস থেকে দূষণের সম্মুখীন হচ্ছে, যা এর জলজ জীবন এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপদস্বরূপ। পাহাড়ি অঞ্চলগুলি ভূমিক্ষয়ের জন্য সংবেদনশীল, যা বন উজাড় এবং অস্থিতিশীল কৃষি পদ্ধতির কারণে আরও বেড়ে যায়। অসম ও মণিপুর বর্ষাকালে মাটির ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং কৃষি উৎপাদনশীলতা প্রভাবিত হয়। আবাসস্থল ধ্বংস, চোরাশিকার ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য বিপদের মুখে পড়ে। গুয়াহাটি ও ইম্ফলের মতো শহরে নগরায়ণের ফলে সবুজ স্থান ধ্বংস হয়েছে, বায়ু ও জল দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে।
জলবায়ু ঝুঁকি: বর্ষাকালে তীব্র বন্যা সহ জলবায়ু-সম্পর্কিত ঝুঁকির প্রতি এই অঞ্চলের উচ্চ সংবেদনশীলতা ব্যাপক ফসল ধ্বংস এবং জনসম্প্রদায়ের স্থানচ্যুতির দিকে চালিত করেছে। বন্যা, ভূমিধস ও খরার ক্রমবর্ধমান ঘনত্ব পরিবহণ নেটওয়ার্ক ব্যাহত করেছে এবং বাণিজ্য রুট ও পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অনিয়মিত বর্ষাকাল কৃষি উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করেছে এবং অর্থকরী ফসলের রপ্তানিকে প্রভাবিত করেছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও বন উজাড়ের ঘটনা স্থানীয় প্রজাতিগুলিকে বিপদের মুখে ফেলেছে এবং ইকো-ট্যুরিজম ও স্থানীয় অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করেছে। তার উপর, হিমবাহ গলে যাওয়া এবং অনিয়মিত নদীর প্রবাহ এই অঞ্চলের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করেছে।
মেঘালয়ে যেমন দেখা গিয়েছে, অবৈধ খননের ফলে মাটির ক্ষয়, জল দূষণ ও কৃষি জমির অবক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে। শিল্প বর্জ্য, কৃষিজমি ও গৃহস্থালির পয়ঃনিষ্কাশন থেকে জলাশয় ক্রমশ দূষিত হচ্ছে।
পরিকাঠামোগত ঘাটতি: এই অঞ্চলের অপ্রতুল পরিকাঠামো, যেমন রাস্তা, সেতু এবং সরবরাহ সুবিধা, মসৃণভাবে পণ্য ও মানুষের চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা বৃদ্ধির জন্য সড়ক, রেল এবং বন্দর সংযোগ উন্নত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে ভারতমালা এবং সাগরমালা প্রকল্পের মতো বহুমুখী পরিবহণের উন্নয়ন আশাব্যঞ্জক হলেও, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখনও গভীর কাঠামোগত এবং প্রশাসনিক বাধার মুখোমুখি, যার জন্য টেকসই, স্থানীয়ভাবে সংবেদনশীল সমাধান প্রয়োজন। ভারত-মায়ানমার-তাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কসহ প্রধান প্রকল্পগুলির অগ্রগতি ধীর হয়ে গিয়েছে, যা আঞ্চলিক সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যগুলিকে ক্ষুণ্ণ করছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন, বাজার প্রাপ্যতা ও অর্থনৈতিক সংযুক্তিকরণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতি, যা কিনা বাণিজ্য প্রবাহ ও আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য সীমান্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে চালিত করে, তা এখন নিরাপত্তা উদ্বেগের মুখোমুখি হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহ ও সীমান্ত উত্তেজনা, যা ঐতিহাসিকভাবে বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং প্রকল্পের সময়সীমা ব্যাহত করেছে।
পরিকাঠামোগত ঘাটতি এবং দুর্গম ভূখণ্ড থেকে শুরু করে ভূ-রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা পর্যন্ত ব্যাপ্ত এই ধরনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, উত্তর-পূর্ব ভারত রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। এর সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ, কৌশলগত অবস্থান এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক করিডোরের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান একীকরণ অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী সুযোগ উপস্থাপন করে।
পরিকাঠামোগত ঘাটতি এবং দুর্গম ভূখণ্ড থেকে শুরু করে ভূ-রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা পর্যন্ত ব্যাপ্ত এই ধরনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, উত্তর-পূর্ব ভারত রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
উত্তর-পূর্বের জন্য সুযোগ
যোগাযোগ বৃদ্ধি: নতুন সড়ক, রেলপথ ও বিমান যোগাযোগের উন্নয়নের মাধ্যমে যোগাযোগ উন্নত করার প্রচেষ্টা উত্তর-পূর্ব ভারতকে জাতীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে সংযুক্ত করার সম্ভাবনা রাখে। কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প (কেএমএমটিটিপি) হল ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির অধীনে একটি কৌশলগত উদ্যোগ, যা মায়ানমারের থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের মাধ্যমে কলকাতা বন্দরকে সংযুক্ত করার জন্য সমুদ্র, নদী ও সড়ক পরিবহণকে একীভূত করে। প্রকল্পটিতে সিত্তয়ে বন্দরে একটি সমুদ্র পথ, পালেতোয়ায় একটি নদী পথ এবং শিলিগুড়ি করিডোর বাইপাস করে মিজোরামে একটি সড়ক সংযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এবং সম্ভাব্যভাবে এভাবে পরিবহণ সময় চার দিন পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আসামে বোগিবিল সেতুর সমাপ্তি যোগাযোগের উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে এবং পণ্য ও মানুষের দ্রুত চলাচলকে সহজতর করেছে। এই ধরনের পরিকাঠামোগত অগ্রগতি বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগকে উদ্দীপিত করতে পারে।
আগরতলা-আখাউড়া রেলপথের চলতি নির্মাণকাজ ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, যার ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর ধুবড়ি-ফুলবাড়ি সেতুও নির্মাণাধীন। ১৯.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি ভারতের দীর্ঘতম নদী সেতু হবে, যা অসমের ধুবড়িকে মেঘালয়ের ফুলবাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত করবে, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে, এবং উত্তর-পূর্বে বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য একটি প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। ২২,৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি মহাসড়ক অনুমোদন করা হয়েছে, যা মেঘালয়ের রাজধানীকে অসমের বরাক উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত করবে এবং ত্রিপুরা, মিজোরাম মণিপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। অতিরিক্তভাবে, মাওলিংখুং (মেঘালয়) ও পঞ্চগ্রাম (অসম)-এর মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রিত-চলাচল মহাসড়ক অনুমোদন করা হয়েছে, যা গুয়াহাটি থেকে শিলচর পর্যন্ত ভ্রমণের সময় ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করবে। ভারতনেট দ্বিতীয় পর্যায়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত উন্নত ইন্টারনেট ও টেলিকম পরিকাঠামো উত্তর-পূর্বের গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করবে।
রাস্তা, সেতু ও রেলপথগুলিকে চরম আবহাওয়ার পরিস্থিতি সহ্য করার জন্য ডিজাইন করা উচিত, যাতে প্রতিকূল জলবায়ু ঘটনাগুলির সময়ও নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য রুট নিশ্চিত করা যায়।
পরিকাঠামোগত স্থিতিশীলতা তৈরি: বাণিজ্য রুট, মহাসড়ক ও রেলপথ ভূমিধ্বস ও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু-সহনশীল পরিকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তা, সেতু ও রেলপথগুলিকে চরম আবহাওয়ার পরিস্থিতি সহ্য করার জন্য ডিজাইন করা উচিত, যাতে প্রতিকূল জলবায়ু ঘটনাগুলির সময়ও নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য রুট নিশ্চিত করা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমান্ত ছাড়িয়ে যায়। প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং বাণিজ্যকে শক্তিশালী করতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং বাণিজ্য চুক্তিতে যৌথ উদ্যোগগুলি ভাগ করা চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় একটি সমন্বিত কৌশল তৈরি করতে পারে।
পরিচ্ছন্ন শক্তির জন্য জলবিদ্যুতের মতো জলবায়ু-সহনশীল ও টেকসই পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে। পরিচ্ছন্ন শক্তি সরবরাহের জন্য ৫৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তর-পূর্ব গ্যাস গ্রিড এবং বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইন ২০২৫ সালের এপ্রিলে চালু করা হয়েছিল। আদানি ও রিলায়েন্সের মতো সংস্থাগুলি অসমে প্রত্যেকে এককভাবে ৫০,০০০ কোটি টাকা এবং এই অঞ্চলে রাস্তা ও জলবিদ্যুতের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে। সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট (এসইউএমপি) উত্তর-পূর্ব ভারতে স্থিতিশীল উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে অপরিসীম সম্ভাবনার অধিকারী। ১১,০০০ মেগাওয়াটের সম্ভাব্য ক্ষমতাসহ, এটি দেশের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠবে, যা ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির লক্ষ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মিজোরামের চাম্ফাই জেলায় ২০ মেগাওয়াট সৌর পার্ক এবং আসামে ২৫ মেগাওয়াট সবুজ হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট চালু হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। পরিবেশ-পর্যটনের প্রচার বিকল্প জীবিকা তৈরি করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করলে বাণিজ্য পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যময় হতে পারে, এবং জলবায়ু-সংবেদনশীল শিল্পের উপর নির্ভরতা কমানো যেতে পারে। উপরন্তু, বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ এই ক্ষেত্রের উন্নতিতে সহায়তা করতে পারে।
স্থিতিশীল উন্নয়ন: সিকিমের ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগ, মেঘালয়ে পরিবেশ-বান্ধব পর্যটনের প্রসার এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি দেখায় এই অঞ্চলটি কীভাবে তার বাস্তুতন্ত্রগত ভারসাম্য রক্ষা করে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি চালাতে পারে। সিকিমে ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করার ফলে এই অঞ্চলের জলসম্পদ স্থিতিশীলভাবে ও বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজে লাগানো হচ্ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পিত পর্যটন প্রকল্পগুলি — যেমন মেঘালয়ে হোমস্টে — স্থানীয় অর্থনীতিকে সমর্থন করার সময় পর্যটকদের একটি খাঁটি ও মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বাণিজ্যের অন্যান্য সম্ভাব্য উন্নয়নমূলক সুযোগের মধ্যে রয়েছে পানীয় শিল্প (চা, কফি ও স্থানীয় ওয়াইন), বাঁশ শিল্প, স্থানীয় জনসম্প্রদায়ের তাঁত ও বয়ন দক্ষতা, হস্তশিল্প, ইকো-ট্যুরিজম সার্কিট এবং একটি বিনিয়োগ কেন্দ্র।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করলে বাণিজ্য পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যময় হতে পারে, এবং জলবায়ু-সংবেদনশীল শিল্পের উপর নির্ভরতা কমানো যেতে পারে।
উত্তর-পূর্ব ভারত তার কৌশলগত অবস্থান, অব্যবহৃত সম্পদ, এবং অন্তর্ভুক্তি, সংযোগ ও স্থায়িত্বের উপর কেন্দ্রীভূত একটি রূপান্তরমূলক উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা চালিত একটি প্রাণবন্ত বৃদ্ধি কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এই অঞ্চলের নৈকট্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য একে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার করে তোলে। এই উদ্যোগগুলি মহাসড়ক, জলপথ ও শক্তি গ্রিডের মাধ্যমে সংযোগ বৃদ্ধির জন্য উত্তর-পূর্বের ভৌগোলিক সুবিধাকে পুঁজি করে, যার ফলে এই অঞ্চলটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সারিবদ্ধ হয়। জৈব কৃষি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও ইকো-ট্যুরিজমের মতো উচ্চ-মূল্যবান ক্ষেত্রগুলিকে প্রসারিত করে উত্তর-পূর্ব তার প্রাকৃতিক শক্তিকে পুঁজি করছে। ব্যাপক উন্নয়ন উত্তর-পূর্বকে একটি প্রান্তিক অঞ্চল থেকে ভারতের অর্থনৈতিক ম্যাট্রিক্সের একটি গতিশীল ও অবিচ্ছেদ্য অংশে রূপান্তরিত করতে পারে। স্থায়িত্ব এবং সাংস্কৃতিক সংরক্ষণের সঙ্গে আধুনিক অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষার ভারসাম্য বজায় রেখে, এটি শুধু তার ভৌগোলিক অবস্থানকেই কাজে লাগাতে পারে না, বরং ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে ভারতের যাত্রায় অবদান রাখতে পারে। এই রূপান্তর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের টেকসই বৃদ্ধির একটি বৈশ্বিক মডেল হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনাকে তুলে ধরে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশগত স্থায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রাখে।
আলবার্ট চিয়াং মেঘালয় বেসিন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং মেঘালয় জলবায়ু পরিবর্তন কেন্দ্রের কো-প্রোজেক্ট ইনভেস্টিগেটর
বিবেক লিংডো মেঘালয় জলবায়ু পরিবর্তন কেন্দ্রের প্রধান প্রকল্প সহযোগী
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Dr Albert Chiang is an Officer on Special Duty at Meghalaya Basin Development Authority (MBDA), Govt of Meghalaya with primary association to the Meghalaya Climate ...
Read More +
Vivek Lyngdoh is a Principal Project Associate at the Meghalaya Climate Change Centre (MCCC), which operates under the Meghalaya Basin Development Authority. His work contributes ...
Read More +