Image Source: Indian Express
ওয়াশিংটনে তিব্বতের স্ব-নিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য একটি নতুন সম্মিলিত কণ্ঠস্বর জোরালো হচ্ছে, যা সম্ভবত মার্কিন-চিন সম্পর্কের উপর নতুন চাপ সৃষ্টি করছে। মার্কিন কংগ্রেসের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিদলীয় প্রতিনিধিদল ১৮ জুন ভারতের ধর্মশালায় নির্বাসিত তিব্বতি আধ্যাত্মিক নেতা দলাই লামার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ কথা সত্যি যে, বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনীতির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ চাপের মুখে পড়েছে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ, কোভিড-১৯ অতিমারি ও ২০২২ সালে চিনের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রাক্তন মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে এই সম্পর্ক সর্পিল গতিতে নিম্নমুখী হয়েছে।
ধর্মশালায় একটি উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের বর্তমান সফরের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রিজল্ভ টিবেট অ্যাক্ট, যা আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘তিব্বত-চিন বিরোধের সমাধানের প্রচার’ নামে পরিচিত। এই বিলটি তিব্বতের একটি সংবিধিবদ্ধ সংজ্ঞার প্রস্তাব করে, যা শুধু মাত্র তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলই (টিএআর) নয়, কিংহাই, সিচুয়ান, গানসু এবং ইউনান প্রদেশের মতো চিনের তিব্বতি এলাকাগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে। তিব্বত সম্পর্কে চিনা সরকারের সাধারণ উল্লেখের বিপরীতে - যা টিএআর-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ - এই বিস্তৃত সংজ্ঞাটি চিরাচরিত ভাবে তিব্বতি হিসাবে স্বীকৃত অঞ্চলগুলির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ।
বিলটিতে চিনকে দলাই লামা এবং অন্যান্য তিব্বতি নেতার সঙ্গে তিব্বতের মর্যাদা ও শাসন সংক্রান্ত বিরোধ শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধানের উদ্দেশ্যে পুনরায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আইনটি প্রেসিডেন্টের সম্মতি পেলে তিব্বতের বিষয়ে একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান অর্জনের জন্য যৌথ প্রচেষ্টায় অন্যান্য সরকারের সঙ্গে কাজ করা স্টেট ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বের আওতাভুক্ত হবে। এই প্রচেষ্টাগুলি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকে শুরু করে তিব্বত সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলাতেও পরিলক্ষিত হয়েছে। ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যকে শুধু মাত্র চিনের সঙ্গে তার প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। সর্বোপরি, ২০১০ সাল থেকে তিব্বতি এবং চিনা কর্মকর্তাদের মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়নি এবং এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যম জোগাতে পারে।
ওয়াশিংটনের সঙ্কেত
মার্কিন সরকার এবং কংগ্রেস প্রায়শই তিব্বত ও তাইওয়ানে চিনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, যা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তাঁদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে বাধা দেয়। ওয়াশিংটন চিরাচরিত ভাবে তিব্বতকে চিনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও তিব্বতের অভ্যন্তরে অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির দমন নিয়ে আওয়াজ তুলেছে। এই নতুন আইন প্রকৃতপক্ষে তিব্বত সংক্রান্ত প্রশ্নকে ফের উস্কে দিতে পারে এবং চিনের তীব্র প্রতিক্রিয়া উস্কে দিয়ে বৃহত্তর মার্কিন-চিন সম্পর্কের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে।
মার্কিন সরকার এবং কংগ্রেস প্রায়শই তিব্বত ও তাইওয়ানে চিনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, যা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তাঁদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে বাধা দেয়।
প্রাক্তন মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি - যিনি এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন - তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবনে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শাসন ও অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছেন। চিনের কর্তৃত্ববাদ এবং এর অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে পেলোসির প্রতিবাদের কেন্দ্রে ছিল তাইওয়ান এবং কখনও কখনও এই প্রতিবাদ ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রচেষ্টায় মিশে গেছে। সম্ভবত রাজনৈতিক ভাবে তাঁর সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে তাঁকে প্রায়শই তাঁর ১৯৯১ সালের চিন সফরের জন্য মনে রাখা হয়, যেখানে তিনি নিহত বিক্ষোভকারীদের উপর চিনের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি ব্যানার তুলে ধরেছিলেন। এ কথা আশ্চর্যের নয়, প্রাক্তন হাউস স্পিকার আরও এক বার চিনের সঙ্গে লেগে থাকার জন্য একটি দ্বিদলীয় মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সহ-নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন।
হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককল ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে মিলে তিব্বতের বিষয়টিকে পুনরায় আলোচনার কেন্দ্রে তুলে আনার ওয়াশিংটনের তরফে নতুন উদ্যম দেখিয়েছেন এবং এমনটা করার জন্য ওয়াশিংটনের অনুপ্রেরণাও দ্বি-স্তরীয়। প্রথমত, এটি তার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও বিশ্বব্যাপী মত প্রকাশ এবং ধর্মের স্বাধীনতাকে সমর্থন করার দীর্ঘস্থায়ী নীতি থেকে উদ্ভূত। মাইকেল ম্যাককল এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘তিব্বতের জনগণ একটি স্বতন্ত্র ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক পরিচয়ের অধিকারী এবং তাঁদের নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বক্তব্য শুধু মাত্র তাঁদেরই থাকা উচিত। সেখানে সকলের স্বাধীন ভাবে নিজের ধর্ম পালন করার অধিকার থাকা জরুরি।’
দ্বিতীয় প্রেরণাটি তাইওয়ানের প্রতি চিনের মনোভাবের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, বিশেষ করে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে-এর নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে। এই পরিবর্তন উত্তেজনা বাড়িয়েছে এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকারের সমস্যাগুলি মোকাবিলার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র তিব্বতে নয়, যেখানে এই জাতীয় নীতিগুলি হুমকির সম্মুখীন হয়েছে, সেখানেও গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক সংরক্ষণকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। তিব্বতের উপর এই নতুন মনোযোগ চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনকে প্রতিহত করা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক নিয়মকে সমর্থন করার জন্য একটি বৃহত্তর কৌশলেরও অংশ বটে।
শেষ বার যখন ন্যান্সি পেলোসি ২০২২ সালে তাইওয়ান সফর করেছিলেন, তখন মার্কিন-চিন সম্পর্ক একটি বড় ধাক্কা খেয়েছিল। দ্বিপাক্ষিক কূটনীতি সে সময় অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে এবং দুই পক্ষের মধ্যে সামরিক আলোচনা বাতিল হয়। চিন এমনকি ২০২৩ সালে শাংরি-লা ডায়লগের পাশাপাশি ইউএস ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিনের একটি বৈঠকের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিল। চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আলোচনার পাশাপাশি ফেন্টানাইল ড্রাগ সংক্রান্ত অন্যান্য কথোপকথন শুরু করতেও কয়েক মাস সময় লেগেছিল।
নির্বাহী, আইন প্রণয়ন ও বিচার বিভাগীয় শাখার মধ্যে ক্ষমতার সুস্পষ্ট বিভাজন-সহ মার্কিন কংগ্রেসের গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন প্রকৃতি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী বিতর্ক ও সম্পৃক্ততাকে সহজতর করে তোলে। এই স্পষ্ট বিভাজন সত্ত্বেও তিনটি শাখাই ভারসাম্য ও সমতা বজায় রাখার জন্য একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এই স্বাধীনতা কিছু স্বায়ত্তশাসিত পদক্ষেপের অনুমতি প্রদান করলেও দায়বদ্ধতাও প্রদর্শন করে।
নির্বাহী, আইন প্রণয়ন ও বিচার বিভাগীয় শাখার মধ্যে ক্ষমতার সুস্পষ্ট বিভাজন-সহ মার্কিন কংগ্রেসের গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন প্রকৃতি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী বিতর্ক ও সম্পৃক্ততাকে সহজতর করে তোলে।
কার্যনির্বাহী শাখা প্রায়শই প্রেসিডেন্টের উপর অর্পিত ক্ষমতার মাধ্যমে স্বাধীন পদক্ষেপের নেতৃত্ব দেয়, যদিও এই ধরনের উদ্যোগ সাধারণত সাময়িক নির্দেশনামার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। স্থায়ী নীতিগত প্রভাব-সহ যে কোনও সিদ্ধান্তকে অবশ্যই আইনসভার মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে। এর একটি উদাহরণ হল ওয়ার পাওয়ারস অ্যাক্ট বা যুদ্ধ ক্ষমতা আইন দ্বারা প্রেসিডেন্টকে দেওয়া ক্ষমতা। উপরন্তু, কার্যনির্বাহী শাখা কখনও কখনও কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে আসে, যেগুলির প্রতি মনোযোগ প্রয়োজন এবং সেগুলি বুঝতে ও সমর্থন করার জন্য সেই অনুযায়ী কাজ করে। এই পদক্ষেপগুলি প্রায়শই গণতান্ত্রিক নীতি দ্বারা চালিত হয় এবং বৈদেশিক শক্তি, অংশীদার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সহযোগীর প্রয়োজনে এই সমর্থন দেওয়া হয়। এই প্রচেষ্টাগুলি বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক আদর্শের সঙ্গে নীতি ও মূল্যবোধকে সাযুজ্যপূর্ণ করে তোলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিকেই দর্শায়।
বেজিংয়ের আশঙ্কা
চিন কংগ্রেসে একটি চিঠি পাঠিয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরকে পূর্ব উদ্যোগে খারিজ করার চেষ্টা করেছিল। চিনের সতর্কতা এবং বেজিং থেকে প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া নির্বিশেষে মার্কিন প্রতিনিধিদল ধর্মশালায় ভ্রমণ করে এবং এটি একটি বৃহত্তর অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও বৃহত্তর ভূ-রাজনীতির জন্য নির্দেশক হিসাবেও কাজ করতে পারে, যা ফল প্রদান করতে সক্ষম।
তিব্বত নিয়ে চিনের উদ্বেগের কারণ হল এই যে, এই অঞ্চলে দলাই লামার প্রভাব পুরোপুরি তারা মুছে ফেলতে পারেনি। চিন জুড়ে, বিশেষ করে তিব্বতে সংগঠিত ধর্মের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করার চেষ্টা করেছে। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এমন একটি ‘রাজনৈতিক ভাবে নির্ভরযোগ্য’ ধর্মীয় শ্রেণি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন, যাঁরা তাঁদের জাতি ও ধর্মের প্রতি অনুরাগ পোষণ করেন। কৌতূহলবশত কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল ধর্মশালা সফর করার সময়ই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কিংহাইয়ের প্রাদেশিক রাজধানী জিনিং-এ একটি তিব্বতি বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শন করেন, যেখানে তিনি ‘চিনা জাতির জন্য সম্প্রদায়ের বোধ তৈরি করা’ এবং ‘জাতীয় ঐক্যের প্রচার’ সম্পর্কে নিজের বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করেন। সিপিসি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ও পুনর্জন্মের আখ্যানে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১১তম পাঞ্চেন লামা। ১৯৯০-এর দশকে অবতার রূপে তাঁকে তুলে ধরার সময়ে তিনি শিশু ছিলেন এবং হঠাৎ করেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। এর পরে বেজিং তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য দলের নিজস্ব প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল। দলাই লামার উত্তরাধিকারের প্রশ্নটি ফের উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজিং তার কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে না, সে কথাও জোর দিয়ে বলা যায় না।
রাজনৈতিক ভাবে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের ধর্মশালায় সফর আমেরিকা ও চিনের মধ্যে একটি নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্ষেত্রের উন্মোচন ঘটাতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ফিলিপিন্স এবং চিনের মধ্যে দক্ষিণ চিন সাগরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার মধ্যেই এই সফর ঘটেছে। সার্বভৌমত্বের বিষয়, তাইওয়ান সংক্রান্ত উত্তেজনা, হংকং-এর উপর চিনের নিরবচ্ছিন্ন দে-জ্যুর (অর্ধেকের চেয়ে অধিক) নিয়ন্ত্রণ, তার পরে রাজনৈতিক দমনপীড়ন ও অভ্যন্তরীণ আইনে পরিবর্তন… সবই বেজিংয়ের জন্য অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন করে প্রেরণা জুগিয়েছে। পশ্চিমীদের জন্য বেজিংয়ের সঙ্গে সমতা ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা চিনের অনিয়ন্ত্রিত আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রমবর্ধমান রাশিয়া-চিন অক্ষ এবং রাশিয়ার প্রতি বেজিংয়ের সূক্ষ্ম সমর্থন ইতিমধ্যেই একাধিক ক্ষেত্রে চিনের মোকাবিলায় পশ্চিমের বিকল্পগুলিকে জটিল করে তুলেছে।
রাজনৈতিক ভাবে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের ধর্মশালায় সফর মার্কিন ও চিনের মধ্যে একটি নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্ষেত্রের উন্মোচন ঘটাতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ফিলিপিন্স এবং চিনের মধ্যে দক্ষিণ চিন সাগরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার মধ্যেই এই সফর ঘটেছে।
বাইডেন প্রশাসন তার ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষত চিনের তরফ থেকে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক আগ্রাসন এবং ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধের দিকে তাঁর মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার কারণে এমনটা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে, চিনের বিরুদ্ধে একটি আইনি উদ্যোগ বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যানকে ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যা ধারাবাহিক ভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।
এ দিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পিপলস লিবারেশন আর্মি উভয়ই সীমান্তে অচলাবস্থায় আটকে থাকার বিষয়টি বিবেচনা করলে এই সমীকরণে ভারতের বাজির পাল্লা ভারী। এ ছাড়াও, অবশ্যই এ কথা মনে রাখতে হবে যে, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের প্রাথমিক উস্কানিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল চিনের এই সন্দেহ যে, ভারত তিব্বতের উপর চিনের দখলকে দুর্বল করে দিতে চায়। তিব্বতকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত চিনকে যৌথ ভাবে চাপ দিচ্ছে… চিনের এ হেন মানসিকতা থেকে উদ্ভূত যে কোনও পদক্ষেপের জন্য ভারতকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।
কল্পিত এ মানকিকর অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.