Published on May 22, 2023 Updated 0 Hours ago
থিঙ্ক২০ ইয়ুথ এনগেজমেন্ট: সামষ্টিক আর্থিক নীতির সমন্বয়, বিশ্ব বাণিজ্য এবং জীবিকা

কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের (স্বায়ত্তশাসিত) সহযোগিতায় অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ)-এর থিঙ্ক২০-র (টি২০) অন্তর্গত সাতটি থিমভিত্তিক টাস্ক ফোর্সের একটি অর্থাৎ ‘সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং জীবিকা: নীতি সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক আন্তঃসহযোগিতা’র উপর জোর দিয়ে ‘ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি কোহেরেন্স, গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড লাইভলিহুডস’ শীর্ষক একটি টি২০ ইয়ুথ এনগেজমেন্টের আয়োজন করেছিল।

অনুষ্ঠানটি মূলত তরুণ প্রজন্মকে জি২০-র কর্মসূচির সঙ্গে পরিচিত করানোর পাশাপাশি টি২০ মঞ্চটির প্রভাব, শক্তি এবং গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করে। এ ছাড়াও এতে বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং উদ্বেগগুলির পাশাপাশি ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির কিছু ভূ-অর্থনৈতিক দিক নিয়ে আলোচনাও করা হয়েছে। পরিশেষে এটি ভারতের বৃদ্ধির স্থিতিশীলতাকেই তুলে ধরেছে এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতি প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ ভূ-অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক এবং উন্নয়নমূলক দিকগুলির উপর আন্তঃশৃঙ্খলা আলাপ-আলোচনাকে উত্সাহ জোগানোর চেষ্টা করেছে।

উদ্বোধনী ভাষণে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যক্ষ ডমিনিক স্যাভিও বলেন, ‘নীতিগুলিকে ইতিমধ্যেই বিদ্যমান উপকরণের মিশ্রণে আর একটি উপকরণ যোগ করার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।’ তাঁর মতে, নীতির কার্যকারিতা সংমেলের চূড়ান্ত ফলাফল দ্বারাই নির্ধারিত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনও নীতি প্রত্যেক ব্যক্তিরই মনোমত হয়, তা হলে সেটি নিঃসন্দেহে একটি ভাল নীতি।’ উদ্বোধনী ভাষণের পর টি২০ সংক্রান্ত একটি উপস্থাপনার বন্দোবস্ত করা হয়, যেখানে ওআরএফ-এর সহযোগী গবেষক প্রত্নশ্রী বসুর দ্বারা স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) জন্য নতুন পথ অন্বেষণের উপর জোর দেওয়া হয়।

বেঙ্গালুরুর ড. বি আর অম্বেডকর স্কুল অফ ইকোনমিক্স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ও টি২০ টাস্ক ফোর্স ‘সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং জীবিকা: নীতি সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক আন্তঃসহযোগিতা’র সভাপতি এন আর ভানুমূর্তি এর পর জি২০ স্থাপনের প্রেক্ষিত ও তার লক্ষ্যগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বিদ্যমান বিশ্বের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং প্রতিবন্ধকতার মাঝেও সমন্বিত আন্তর্জাতিক নীতি প্রতিক্রিয়া গঠনে গোষ্ঠীটির সমসাময়িক ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন।

ওআরএফ-এর সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির ডিরেক্টর এবং টি২০ সেক্রেটারিয়েটের ডিরেক্টর ড. নীলাঞ্জন ঘোষ তার পরে ভারতের বৃদ্ধির আখ্যানে ভূ-রাজনীতি, ভূ-অর্থনীতি এবং ‘সাস্টেনোমিক্স’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা করার পর ড. ঘোষ রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) নিয়ে ভারতের উদ্বেগগুলি ব্যাখ্যা করেন, যা শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের আলাপ-আলোচনা থেকে নয়াদিল্লির প্রত্যাহারের ঘটনার দিকে চালিত করেছিল। তিনি চিনের সঙ্গে দেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে বেশির ভাগ আরসিইপি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রতিকূল ভারসাম্য এবং ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত আরসিইপি দেশগুলির মধ্যে ভারতের সম্ভাবনার নিরিখে ভারতের সরে আসাকে যুক্তিযুক্তভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।

ড. ঘোষ তাঁর ভাষণে ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরশাহি কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট, ভারত-অস্ট্রেলিয়া কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবর্তিত ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফোরাম এবং এগুলির সঙ্গে সংযুক্ত বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে এফটিএ-র মাধ্যমে বিকল্প ভূ-অর্থনৈতিক বিকল্প অনুসন্ধান করছে এবং কী ভাবে এগুলি ভারতকে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সুযোগ প্রদান করছে, তা দর্শান। তাঁর বক্তৃতা শেষ করার সময় ড. ঘোষ উল্লেখ করেছিলেন যে বিদ্যমান বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক গ্লানি সত্ত্বেও ভারত তার সুবিশাল মানব সম্পদের ভাণ্ডার এবং পরিকাঠামোতে অব্যাহত বিনিয়োগের কারণে উচ্চ এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনৈতিক বৃদ্ধি প্রদর্শন করে চলেছে। তাঁর দৃষ্টিতে ভারত তাই একটি হতাশাজনক বিশ্ব অর্থনীতির মধ্যেও একটি স্থিতিশীল সাফল্যের কাহিনি হিসেবে উঠে আসতে পারে এবং ভারতীয় কূটনীতি দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ড. ঘোষের বক্তৃতার পর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্ররা চারটি উপস্থাপনা করেন। এগুলি এফটিএ-র কল্যাণমূলক প্রভাব, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ট্রিকল-ডাউন প্রভাব এবং ভারতের ডিজিটাল জন পরিকাঠামোর ক্রয়ক্ষমতা এবং লভ্যতার কথা তুলে ধরে।

টি২০-র পার্শ্ব অনুষ্ঠানটি একটি প্রশ্নোত্তর অধিবেশনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়, যেখানে শিক্ষার্থী ও দর্শকাসনে উপস্থিত ব্যক্তিরা প্যানেলিস্টদের কাছে প্রশ্ন করার সুযোগ পান। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাশ্বতী চৌধুরীর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।


এই অনুষ্ঠানের প্রতিবেদনটি সঙ্কলন করেছেন ওআরএফ-এর ফেলো আদিত্য ভান।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.