বলিভারিয়ান রিপাবলিক অফ ভেনেজুয়েলার শাসনের সমসাময়িক ইতিহাস জুড়ে দীর্ঘ সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য হল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। আনুষ্ঠানিক ভাবে ফেডারেল প্রেসিডেনশিয়াল প্রজাতন্ত্র হিসেবে পরিচিত দেশটি ২০১৩ সাল থেকে হুগো শ্যাভেজের অনুগামী এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে রয়েছে। মাদুরোর বিতর্কিত কার্যকালটি অর্থনৈতিক পতন, ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণ অভিবাসন, খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধের ঘাটতি এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনের কারণে খবরের শিরোনামে থেকেছে। এই বছরের ২৮ জুলাই বিতর্কিত নির্বাচনের পরে মাদুরোর আরোপিত বিজয় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় স্তরে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
মাদুরোর বিতর্কিত কার্যকালটি অর্থনৈতিক পতন, ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণ অভিবাসন, খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধের ঘাটতি এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনের কারণে খবরের শিরোনামে থেকেছে।
চাভিস্তার দ্বিধাবিভক্ত জনসমর্থনের উপর ভিত্তি করে মাদুরো একাধিক উপায়ে শ্যাভেজের উত্তরাধিকার অব্যাহত রেখেছেন, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রতিপক্ষের অবস্থান বজায় রাখার ক্ষেত্রে এমনটাই করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত তিন প্রেসিডেন্টের অধীনে ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, অবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গুরুতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা উচ্চস্তরের দুর্নীতি, নির্বিচারে গ্রেফতার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে মাদুরো প্রশাসনের প্রধান সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। ওবামা এক দিকে যখন মাদুরোকে মোকাবিলা করার সময় রক্ষণাত্মক মনোভাব পোষণ করেছিলেন, আবার অন্য দিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ২০১৯ সালে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। ট্রাম্প শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, ইরান, চিন ও রাশিয়া-সহ অন্য নানা জায়গায় মাদুরোর আওতাধীন সংস্থার সঙ্গে তেল সংক্রান্ত বাণিজ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল সংস্থা পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলা, এসএ (পিডিভিএসএ)-র উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে মাদুরোর রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎসটিকে বন্ধ করে দিয়েছে। আমেরিকা অবশ্য ‘ভেনেজুয়েলার জনসাধারণের জন্য’ রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে।
ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্রাণ প্রদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদো ২০১৯ সালে বিজয়ী হন। তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে স্বীকৃত দেয় এবং মাদুরোর পুনঃনির্বাচনের বিষয়টিকে জালিয়াতি বলে অভিযোগ করে। যাই হোক, মাদুরো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং সেনাবাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলেন, যার ফলে ২০২২ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় গণতান্ত্রিক রূপান্তর শুরু করতে না পারার দরুন অনেকেই গুয়াইদোর সমালোচনা করেন।
মাদুরো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং সেনাবাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলেন, যার ফলে ২০২২ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় গণতান্ত্রিক রূপান্তর শুরু করতে না পারার দরুন অনেকেই গুয়াইদোর সমালোচনা করেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। তা সত্ত্বেও এই বছরের নির্বাচনে মাদুরো আবারও ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছে যে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসাবে তৃতীয় মেয়াদেও ক্ষমতায় আসার জন্য মাদুরো কারসাজি করেছেন। বিরোধী নেতাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা ও নির্বাসিত করার ঘটনার মতো মাদুরোর বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। আরও এক বার মাদুরো দেশীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রমবর্ধমান বাহ্যিক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছেন।
নির্বাচনের উপর নিষেধাজ্ঞা: যৌক্তিক না কি অযৌক্তিক?
বার্বাডোস চুক্তিটি ভেনেজুয়েলার জন্য আশার আলোকবর্তিকাসম ছিল, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা বাতিল এবং তেল বাণিজ্য ও রফতানির জন্য একটি সাধারণ অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যাই হোক, মাদুরোর ক্ষমতায় ফিরে আসার দরুন সেই চুক্তির অবসান ঘটে। জনপ্রিয় বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া করিনা মাচাদোকে - যিনি ২০২৩ সালে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে প্রাথমিক নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন – শাসকের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্গানাইজেশন অফ আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) এই সিদ্ধান্তকে ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছে এবং এমনকি মাচাদো নিজেও আদালতের রায়কে মেনে নিয়েছেন। এই বিষয়টিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদুরো প্রশাসনের প্রতিযোগিতার অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টা বলে মনে করেছিল। এ ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বার্বাডোস শর্তাবলি মেনে চলতে ভেনেজুয়েলার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেছে এবং সাধারণ অনুমোদন বা শংসাপত্র প্রত্যাহার করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও পেরু-সহ অন্যান্য দেশ নির্বাচনের ফলাফলের নিন্দা করেছে এবং গঞ্জালেসকেই নির্বাচনের প্রকৃত বিজয়ী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই) মাদুরোকে ২৮ জুলাইয়ের নির্বাচনে ৫১.২ শতাংশ ভোট পাওয়ার দরুন বিজেতা বলে ঘোষণা করে। মাচাদোর পদপ্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেস উরুতিয়া ৪৪.২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। যাই হোক, বিরোধীদের ট্যালি শিট প্রকাশ করেছে যে, মাচাদোর পদে প্রার্থী গঞ্জালেস মাদুরোর ৩০ শতাংশের তুলনায় ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর গঞ্জালেস স্পেনে পালিয়ে যান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও পেরু-সহ অন্যান্য দেশ নির্বাচনের ফলাফলের নিন্দা করেছে এবং গঞ্জালেসকেই নির্বাচনের প্রকৃত বিজয়ী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
নিম্নগামী সর্পিল সম্পর্ক
বছরের পর বছর ধরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও তা পুনর্বহাল রাখা আসলে কারাকাস ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কের উপর একটি চক্রাকার চাপ সৃষ্টি করেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম তেলের ভাণ্ডার ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির ৯০ শতাংশেরও বেশি তেল রফতানির উপর নির্ভর করে, যা দেশটিকে বৈদেশিক মূলধন প্রবাহের উপর নির্ভরশীল একটি পেট্রোস্টেট বা তৈলরাষ্ট্র করে তুলেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিধি ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল সংস্থা ও ভেনেজুয়েলার রাজস্বের প্রাথমিক উৎস পিডিভিএসএ-র উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় এবং এটিকে আন্তর্জাতিক ডলার বাস্তুতন্ত্রের অধিকাংশ ক্ষেত্র জুড়ে ব্যবসা করা থেকে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনার অনুরণন অ-মার্কিন সংস্থার উপরেও পড়েছে, যার ফলে মাদুরো প্রশাসন তার দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ইরান, রাশিয়া এবং চিনের মতো প্রতিপক্ষ দেশগুলির মুখাপেক্ষী হতে বাধ্য হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলের সর্ববৃহৎ ক্রেতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ ব্যারেল (বিপিডি) আমদানি করত। তবে নিষেধাজ্ঞাগুলি পিডিভিএসএ-র উত্পাদন এবং রফতানি ক্ষমতাকে পঙ্গু করে দিয়েছে বলে মনে করা হয়। ২০০১ সালে ৩ মিলিয়ন বিপিডি উৎপাদন থেকে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ আনুমানিক ৯ লক্ষ বিপিডি-তে নেমে আসার কারণ হিসেবে মাদুরো সরকার অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে এবং নিষেধাজ্ঞাগুলিকে এমন ‘মিসাইল হামলা’র সঙ্গে তুলনা করেছে, যা দেশের অর্থনীতি ও জীবিকার সুযোগকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
মাচাদোকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়ার পরে ও নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার পর ভেনেজুয়েলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। মাদুরো অর্থনীতিতে ব্যাঘাত ঘটানো ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে স্পষ্টতই বলেছেন যে, ওয়াশিংটনের উচিত ‘ভেনেজুয়েলার বিষয়ে নাক না গলানো!’
চিন ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে তেল কিনে চলেছে, যা চিনকে ভেনেজুয়েলার প্রাথমিক ক্রেতা করে তুলেছে।
এই নিষেধাজ্ঞাগুলির প্রভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সম্পর্কের ঊর্ধ্বে উঠে প্রসারিত হয়েছে। মার্কিন তেলের সরবরাহ তুলনামূলক ভাবে স্থিতিশীল থাকলেও ভেনেজুয়েলার তেল আমদানির পরিমাণ নিষেধাজ্ঞার আগে ও পরে উল্লেখযোগ্য ভাবে পরিবর্তিত হয়নি। তবে বৃহত্তর সমস্যা কারাকাসে রাজস্ব বৃদ্ধির মধ্যে নিহিত। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও চিন ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে তেল কিনে চলেছে, যা চিনকে ভেনেজুয়েলার প্রাথমিক ক্রেতা করে তুলেছে। যাই হোক, বেজিং সম্ভবত কম প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কথা বিবেচনা করে আলোচনার মাধ্যমে কম দামে তেল কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে, যা ভেনেজুয়েলার নগদ প্রবাহকে প্রভাবিত করবে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ওয়াশিংটনের সঙ্গে কারাকাসের ব্যবসাকেও প্রভাবিত করবে, যাতে অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলের ব্যবহার অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে নিষেধাজ্ঞার থেকে দূরে থাকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিতে বাধ্য হয়।
ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফলের পরে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে এবং দেশের সঙ্কট তীব্রতর হয়েছে। ২০১৩ সালে মাদুরোর সামান্য ব্যবধানে জয়ী হওয়ার পর ৭.৭ মিলিয়নেরও বেশি নাগরিক ভেনেজুয়েলা ছেড়ে পালিয়ে যান, যার মধ্যে ৬.৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী লাতিন আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলিতে আশ্রয় নেন এবং প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অভিবাসন সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে বাইডেন প্রশাসন সেই সকল ভেনেজুয়েলানদের প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্ত নেন, যাঁরা আইনি স্বীকৃতি ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছিলেন। যাই হোক, তেল নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পরে ভেনেজুয়েলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যপর্ণকারী মানুষদের গ্রহণ করার বিষয়টি বন্ধ করে দিয়েছে, যা ওয়াশিংটনের জন্য অভিবাসন সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আগামী দিনের পথ?
এত দিনে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞাগুলি কেবলমাত্র অর্থনৈতিক বা আইনি কৌশল নয়, বরং সেগুলি ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে যুদ্ধে রাজনৈতিক সুবিধা প্রদান করে। এই সম্পর্কটি একটি কুইড প্রো কুয়ো সমীকরণের ভিত্তিতে টিকে আছে, যেখানে উভয় দেশই তাদের সম্পদকে দর কষাকষির সাধনী হিসাবে ব্যবহার করে চলেছে। এক দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক সংস্কার চায়, অন্য দিকে মাদুরো ক্ষমতায় থাকাকালীন আর্থিক জরিমানার অবসান ঘটাতে চান। যাই হোক, এটি একটি বিপরীতমুখী খেলায় পরিণত হয়েছে, যেখানে উভয় শক্তিই একে অপরের কোনও না কোনও ক্ষতি সাধন করছে: তেল বাণিজ্য, রাজনৈতিক নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা অথবা এমনকি অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনে বাধা দেওয়া।
এক দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক সংস্কার চায়, অন্য দিকে মাদুরো ক্ষমতায় থাকাকালীন আর্থিক জরিমানার অবসান ঘটাতে চান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে একটি জটিল ইতিহাস রয়েছে, যা হস্তক্ষেপবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নীতির জালে আবদ্ধ এবং যা এই অঞ্চল জুড়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত সৃষ্টি করেছে। এই টানাপড়েনের সমীকরণ প্রায়শই লাতিন আমেরিকাকে মার্কিন বিদেশনীতির সিদ্ধান্তের দ্বন্দ্বে আবদ্ধ করেছে। আর্জেন্টিনা, চিলি, কোস্টারিকা এবং আরও অনেক লাতিন আমেরিকার দেশ মাদুরোর জয়ের দাবিকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করলেও কিউবা মাদুরোকে জয়ের পরে অভিনন্দন জানায়, যা বৃহত্তর আঞ্চলিক বিভাজনকেই দর্শায়। এবং এই সব কিছুই এই অঞ্চলে রাশিয়া ও চিনের জন্য আরও বড় সুযোগ করে দিতে পারে, যে প্রবণতা ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ওয়াশিংটন এই চাপগুলির মধ্যে পথ খুঁজে নেওয়ার সময় দেখার বিষয় হবে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কী ভাবে আমেরিকার নিজের জমিতে এই দ্বিপাক্ষিকতার মোকাবিলা করেন।
বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।
রিয়া নায়ার অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.