-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ইতিহাস বারবার দেখিয়েছে, সংঘাতের ফলাফলে পৌঁছনর জন্য ওয়াশিংটন তার দায়বদ্ধতাকে — মিত্রের ক্ষেত্রে হোক বা অ-মিত্রের ক্ষেত্রে — নমনীয়ভাবে ব্যাখ্যা করেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধও এর ব্যতিক্রম হবে না।
চলতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত তার ইউরোপীয় মিত্রদের ও কিয়েভের তরফে অস্থিরতা এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেন ওয়াশিংটন ইউক্রেন এবং উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) সম্পর্কে তার নীতি পরিবর্তন করেছে, তার আংশিক কারণ হল কৌশলগত নমনীয়তার আকাঙ্ক্ষা, যা ক্ষমতার পাশাপাশি এজেন্সিরও একটি ভূমিকা। ইউক্রেন ও জোটকে পরিত্যাগ করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন দেশে এবং ওয়াশিংটনের ন্যাটো মিত্রদের কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে মস্কো এই আগ্রাসনের কারণ হওয়া সত্ত্বেও, রাশিয়ার স্বার্থ এবং যুদ্ধের লক্ষ্যগুলিকে বিশেষাধিকার দিয়ে ট্রাম্প ইউক্রেনের উপর "আগ্রাসীর শান্তি" চাপিয়ে দিচ্ছেন। ট্রাম্পের অধীনে ওয়াশিংটন কিয়েভের প্রতি খোলামেলা সমর্থনকে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি নীতিতে আবদ্ধ করার উপকরণ হিসাবে দেখে যা টিকিয়ে রাখা যায় না, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূ-কৌশলগত অগ্রাধিকার আছে। শান্তি মীমাংসার কথা ছেড়েই দেওয়া যাক, একটি টেকসই যুদ্ধবিরতি যা সকল শত্রুতার অবসান ঘটায় তাও এখন অনেক দূরে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নেরও (এসইউ) মধ্যস্থতার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত রোধ করতে যুদ্ধরতদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঐতিহাসিক নজির রয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মতো সংঘাতে বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যস্থতা করতে চাওয়ার একটি মূল কারণ হল কৌশলগত নমনীয়তা বজায় রাখা, যাতে তারা সরাসরি কোনও ঝুঁকির সম্মুখীন না হয়, অথবা যুদ্ধের ফলাফল অনিশ্চিত হলে দৃঢ় সারিবদ্ধতা এড়াতে পারে। এমনকি যেসব ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেখানেও তারা তার মিত্রদের সংযত করেছে বা তিরস্কার করেছে, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, ওয়াশিংটন এমন রাষ্ট্রগুলিকে সাহায্য করেছে যারা হয় নিরপেক্ষ ছিল অথবা মিত্র ছিল না।
চলতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত তার ইউরোপীয় মিত্রদের ও কিয়েভের তরফে অস্থিরতা এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
যদিও ইতিহাস থেকে শিক্ষাগুলি প্রেক্ষাপট-নির্ভর, অভ্রান্ত নয়, এবং অগোছালো, তবে সবচেয়ে প্রত্যক্ষ কিন্তু আংশিক ঐতিহাসিক উদাহরণ ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে এসেছে। এটি কিছু প্রেক্ষাপট প্রদান করবে, এবং কেন ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের অবসান ঘটাতে এবং ন্যাটোর প্রতি তার প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করার জন্য কূটনীতি অনুসরণ করছে তার উপর আলোকপাত করবে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি আগ্রাসনের ফলে শুরু হয়েছিল। এই যুদ্ধের আগে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল, যেমন ১৯৬৫ সালের গোড়ার দিকে কচ্ছের রানে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যুদ্ধের আগের দশকে, অর্থাৎ ১৯৫০-এর দশকে, পাকিস্তান একাধিক চুক্তিতে যোগ দেয় দৃশ্যত কমিউনিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, তবে মূলত ভারতের বিরুদ্ধে তার সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য। এই চুক্তিগুলির মধ্যে ছিল মধ্যপ্রাচ্য প্রতিরক্ষা সংস্থা (এমইডিও), কেন্দ্রীয় চুক্তি সংস্থা (সেন্টো) এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চুক্তি সংস্থা (সিয়াটো)। ১৯৬৫ সালের আগস্টের প্রথম দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি রেখা অতিক্রম করে এবং পাকিস্তান 'অপারেশন জিব্রাল্টার' শুরু করে।
ইতিমধ্যে, গণপ্রজাতন্ত্রী চিন (পিআরসি) বিতর্কিত চিন-ভারত সীমান্তে দ্বিতীয় সামরিক ফ্রন্ট খোলার হুমকি দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেজিংকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে চিন-ভারত সীমান্ত জুড়ে পিআরসি-র কোনও সামরিক পদক্ষেপ ওয়াশিংটন সহ্য করবে না, যা পোল্যান্ডে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন এম ক্যাবটের মাধ্যমে ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫ সালে এক চিনা কমিউনিস্ট প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়েছিল।
যদিও ইতিহাস থেকে শিক্ষাগুলি প্রেক্ষাপট-নির্ভর, অভ্রান্ত নয়, এবং অগোছালো, তবে সবচেয়ে প্রত্যক্ষ কিন্তু আংশিক ঐতিহাসিক উদাহরণ ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে এসেছে। এটি কিছু প্রেক্ষাপট প্রদান করবে, এবং কেন ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের অবসান ঘটাতে এবং ন্যাটোর প্রতি তার প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করার জন্য কূটনীতি অনুসরণ করছে তার উপর আলোকপাত করবে।
রাওয়ালপিন্ডির যুদ্ধের জন্য আমেরিকা পাকিস্তান ও ভারত উভয়ের কাছে একতরফাভাবে সামরিক সরবরাহ বন্ধ করার কথা ঘোষণা করে। পাকিস্তান উপরে তালিকাভুক্ত চুক্তিগুলিতে তার সদস্যপদকে ভারত আক্রমণ করার অনুমতি এবং ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিল, যেখানে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের জন্য ভারতের দুঃখিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। ওয়াশিংটন পাকিস্তানের প্রতি তার চুক্তির বাধ্যবাধকতাকে শুধু সোভিয়েত কমিউনিস্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই বা ভারতের অপ্রীতিকর আক্রমণের প্রেক্ষিতে বিবেচনা করেছিল, যা নিয়ে পাকিস্তানিরা আপত্তি জানিয়েছিল। ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তা বন্ধের প্রভাব পাকিস্তান বেশি অনুভব করেছিল, কারণ ভারতের চেয়ে ওয়াশিংটনের উপর তার নির্ভরতা বেশি ছিল। ঘটনাটি যুদ্ধবিরতি এবং অবশেষে তাসখন্দে সোভিয়েত-মধ্যস্থতায় চুক্তির অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছিল।
"নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা" তখন ভঙ্গুর ছিল এবং এখনও তাই রয়েছে। কারণ রাশিয়ার আগ্রাসনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও কিয়েভকে যুদ্ধের লক্ষ্যগুলি পূরণে অব্যাহত সমর্থনের জন্য একটি লৌহদৃঢ় নিশ্চয়তা প্রদান করতে ট্রাম্প অস্বীকার করছেন। বরং নিরপেক্ষ কিন্তু গণতান্ত্রিক ইউক্রেনকে তিনি যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তিনি বিষয়টিকে আরও জোরদার করেছেন ন্যাটোর ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে, যেখানে চুক্তির প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রকে প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে থাকা যেকোনো সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে, যদি না তারা তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ ব্যয় করে। এর ফলে ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যরা সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছে, এবং তারা সম্ভবত ওয়াশিংটনের থেকে স্বাধীন একটি সাধারণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। ১৯৬০-এর দশকে ওয়াশিংটন যেমন পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির প্রতিশ্রুতি নমনীয়ভাবে ব্যাখ্যা করেছিল, ঠিক তেমনই ন্যাটো এবং ইউক্রেনের সঙ্গেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একই কাজ করেছে।
যদিও কিয়েভ ন্যাটোর সদস্য নয়, তবুও তিন বছর ধরে তারা উদার সামরিক সহায়তা পেয়েছিল, যতক্ষণ না ট্রাম্প ন্যাটোর প্রতি সমর্থনের শর্তাবলি পুনরায় ব্যাখ্যা করার হুমকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইউক্রেনের মতো চুক্তিবহির্ভূত অংশীদারের প্রতি ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তা তাৎপর্যপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য, কারণ কোনও চুক্তিবহির্ভূত অংশীদারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের সহায়তা প্রদানের কোনও উদাহরণ নেই। যদিও রাশিয়ার জন্য যুদ্ধের অগ্রগতি অত্যন্ত ধীর, কিয়েভের জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও বাস্তব সাফল্য স্পষ্ট নয়।
ইউক্রেনের মতো চুক্তিবহির্ভূত অংশীদারের প্রতি ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তা তাৎপর্যপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য, কারণ কোনও চুক্তিবহির্ভূত অংশীদারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের সহায়তা প্রদানের কোনও উদাহরণ নেই।
আমাদের ঐতিহাসিক উদাহরণ থেকে আমরা দেখেছি, ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে নির্জোট ভারতকে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন পাকিস্তানকেও তা বন্ধ করে দিয়েছিল। একই যুদ্ধে, নয়াদিল্লি ওয়াশিংটনের চুক্তিভিত্তিক মিত্র না হওয়া সত্ত্বেও, পাকিস্তানের পক্ষে হস্তক্ষেপ করলে বেজিং সামরিক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমন কিছু তথ্যও রয়েছে যা ইঙ্গিত দেয় যে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ওয়াশিংটন এবং মস্কো নীরবে মাওয়ের চিনকে ভারতের বিরুদ্ধে এগোতে না-দেওয়ার জন্য আঁতাত করেছিল। তার তিন বছর আগে ১৯৬২ সালের চিন-ভারত যুদ্ধের সময়, ভারত যখন নির্জোট হিসাবে সাহায্য চেয়েছিল, তখন আমেরিকা ভারতের সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল। প্রায় এক দশক পরে ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় আমেরিকা পক্ষ পরিবর্তন করে পাকিস্তানের পক্ষে "ঝুঁকে" পড়েছিল — শুধু মিত্রকে সমর্থন করার জন্যই নয়, বরং পিআরসি-র সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এই বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করতে যে নয়াদিল্লিকে সমগ্র পাকিস্তান খণ্ড খণ্ড করতে দেওয়া হবে না।
পূর্ববর্তী ইতিহাস যেমনটি দেখায়, একটি ধ্রুবক বিষয় রয়েছে — ওয়াশিংটন তার মিত্র এবং অ-মিত্র উভয়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিগুলিকে নমনীয়ভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যাতে সংঘাতের অবসান ঘটানোর মতো ফলাফলগুলিকে প্রভাবিত করা যায়। ভারত এবং পাকিস্তানের মতো দুটি প্রতিপক্ষের মধ্যেও আমেরিকা তার সমতা বজায় রেখেছিল, যেমনটি দেশটি এখন করছে একদিকে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় ন্যাটো অংশীদারদের সঙ্গে এবং অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে। পরিশেষে, কৌশলগত বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে এবং আরও বিস্তৃতভাবে ক্ষমতার ভারসাম্যের ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণ অতীত থেকে উল্লেখযোগ্য বিচ্যুতি উপস্থাপন করে না।
ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি অন্য চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রগুলির তুলনায় ভাগ্যবান যে ওয়াশিংটন ন্যাটোর পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছে এবং কয়েক দশক ধরে বোঝার একটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ অংশ বহন করেছে, যা কখনও চিরকাল স্থায়ী হবে না। ট্রাম্প প্রশাসন এবং খুব সম্ভবত তার উত্তরসূরিদের অধীনে একটি শিক্ষা স্পষ্ট যে মিত্র বা কৌশলগত অংশীদার (বিশেষ করে ভারত) বা শত্রু কেউই তাদের সামরিক নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে মার্কিন সমর্থনকে হালকাভাবে নিতে পারে না।
কার্তিক বোম্মাকান্তি অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Kartik Bommakanti is a Senior Fellow with the Strategic Studies Programme. Kartik specialises in space military issues and his research is primarily centred on the ...
Read More +