Author : Mandeep Rai

Published on Jul 17, 2025 Updated 0 Hours ago

প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রেক্ষাপটে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মহাকাশ জোটকে শক্তিশালী করছে — কূটনীতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও দিগন্তপ্রসারী উদ্ভাবনের মিশ্রণের মাধ্যমে।

মার্কিন-ভারত মহাকাশ সহযোগিতা: উদীয়মান দিগন্ত থেকে একটি দৃষ্টিকোণ

১৯৬২ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ (ইনকোস্পার) গঠনের পর থেকে চূড়ান্ত দিগন্তের শীর্ষস্থানীয় দেশ হিসাবে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ সহযোগিতার ঐতিহ্য ভাগ করে নিয়েছে। সেই সময় ভারত মার্কিন সহায়তায় থুম্বা থেকে প্রথম সাউন্ডিং রকেট উৎক্ষেপণ করে। নাসা-র এটিএস-৬ ব্যবহার করে স্যাটেলাইট ইন্সট্রাকশনাল টেলিভিশন এক্সপেরিমেন্ট (সাইট) এবং তারপরে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্যাটেলাইট সিস্টেম (ইনস্যাট) এর মতো যুগান্তকারী প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্থায়ী অংশীদারি প্রসারিত হয়। যদিও ভারতের জোটনিরপেক্ষ নীতি এবং পূর্ববর্তী সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি ঝোঁক সাময়িকভাবে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়, ঠান্ডা যুদ্ধ-পরবর্তী সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। ২০০৪ সাল ভারতের জন্য একটি 'মহাকাশ নবজাগরণ' মুহূর্ত হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল, যখন দুটি পেশাদার সমাজ মহাকাশ ক্ষেত্রে কৌশলগত অংশীদারি পুনর্গঠনের সুযোগের পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। ২০০৫ সালে সিভিল স্পেস জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ    (সিএসজেডব্লিউজি) প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরবর্তী বছরগুলিতে যৌথ উদ্যোগের পথ তৈরি করে। এটি চন্দ্র অন্বেষণ, স্যাটেলাইট নেভিগেশন এবং পৃথিবী পর্যবেক্ষণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার মধ্যে রয়েছে চন্দ্রযান-১, নিসার (নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার), মঙ্গল অনুসন্ধান এবং আর্টেমিস চুক্তিতে ভারতের অংশগ্রহণ।


এই বছর নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার (নিসার) স্যাটেলাইটের আসন্ন উৎক্ষেপণ বিশ্বজুড়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ এবং পরিকাঠামো মূল্যায়নে দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।



নতুন মহাকাশ যুগের প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে, উভয় দেশই
ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেকনোলজিস (আইসেট) কাঠামোর অধীনে একটি নতুন দিগন্ত তৈরি করছে, যা নাগরিক, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সময়, প্রতিরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সেমিকন্ডাক্টর ও জৈবপ্রযুক্তির পাশাপাশি মহাকাশে সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার জন্য আইসেট-কে ট্রান্সফর্মিং রিলেশনস ইউজিং স্ট্র‌্যটেজিক টেকনোলজিস (ট্রাস্ট) নামে পুনঃনামকরণ করা হয়েছিল। মহাকাশে তাদের সহযোগিতামূলক পদচিহ্নকে শক্তিশালী করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-‌র দুই মহাকাশচারীকে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-‌এ প্রশিক্ষণ দেয়, যা এই বছর নির্ধারিত একজিয়ম-৪ মিশনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-‌এ প্রথম যৌথ মার্কিন-ভারত মিশনের পথ প্রশস্ত করে। এই বছর নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার (নিসার) স্যাটেলাইটের আসন্ন উৎক্ষেপণ বিশ্বজুড়ে দুর্যোগ  ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ এবং পরিকাঠামো মূল্যায়নে দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা ত্বরণ বাস্তুতন্ত্র (ইন্ডইউএস-এক্স)-‌এর অধীনে একটি প্রস্তাবিত 'মহাকাশ উদ্ভাবন সেতু'র লক্ষ্য হল স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও মহাকাশ সংক্রান্ত পরিস্থিতিগত সচেতনতায় মার্কিন-ভারত স্টার্টআপ অংশীদারিকে উৎসাহিত করা। মার্কিন মহাকাশ কমান্ডের গ্লোবাল সেন্টিনেল মহড়ায় ভারতের অংশগ্রহণ এবং বাণিজ্যিক উপগ্রহ উৎক্ষেপণকে সমর্থন করার জন্য চলতি ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি রপ্তানি পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান মহাকাশ সহযোগিতা আরও গভীর হয়, যা ক্রমবর্ধমান মহাকাশ অর্থনীতিতে বিশিষ্ট খেলোয়াড় হিসেবে তাদের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করে।

মহাকাশ অর্থনীতির অন্তর্দৃষ্টি

মহাকাশ প্রতিবেদনের সর্বশেষ অনুমান অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মহাকাশ অর্থনীতির পরিমাণ
৫৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে সবচেয়ে বেশি মহাকাশ বাজেটের নেতৃত্ব দিয়েছিল, তবুও বিশ্বব্যাপী মহাকাশ বাজেটে এর অংশ ২০০০ সালের ৭৫ শতাংশেরও বেশি থেকে কমে ২০২৩ সালে ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ অর্থনীতির বর্তমানে মূল্য প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব মহাকাশ বাজারের ২ শতাংশ। ভারত ২০৩৩ সালের মধ্যে মহাকাশ অর্থনীতিকে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি অন্তর্ভুক্ত। এমন করা গেলে তা হবে বিশ্বব্যাপী বাজেটের ৭-৮ শতাংশ। বাজেটের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, এবং নাসার ১৫ ভাগের ১ ভাগের মতো কম বাজেটে, ইসরো কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য প্রদর্শন করেছে, যেমন চন্দ্রযান-৩ মিশন স্পাডেক্স


ভারতীয় মহাকাশ অর্থনীতির বর্তমানে মূল্য প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব মহাকাশ বাজারের ২ শতাংশ।



অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-‌র 
২০৪০ সাল পর্যন্ত মহাকাশ অর্থনীতির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি  প্রতিফলিত করে যে, মহাকাশ ক্ষেত্রের রূপান্তরের জন্য পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব প্রয়োজন, যার লক্ষ্য হবে নিরাপদ মহাকাশ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বাণিজ্যিক ও রাষ্ট্রীয় মিশনের জন্য উপযুক্ত চুক্তি তৈরি করা। একইভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের জন্য মহাকাশ অর্থনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা সহযোগিতা, উদ্ভাবন এবং একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে উভয় দেশের অভিন্ন মহাকাশ উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি সমন্বিত ও সহযোগিতামূলক কৌশলের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে।

শুল্কের প্রভাব

ভারতীয় আমদানির উপর সম্ভাব্য শুল্কের হুমকির ফলে মহাকাশ ক্ষেত্র এই প্রভাব সহ্য করতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের
২০২৫-২৬ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে উৎক্ষেপণ যানবাহন তৈরির জন্য পণ্যের পাশাপাশি স্থল স্থাপনা ও উপগ্রহ উৎক্ষেপণের উপর শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে, যার ফলে ইনপুট খরচ কমেছে এবং উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন-স্পেস-এর চেয়ারম্যান পবন কুমার গোয়েঙ্কার মতে, ভারত কৌশলগতভাবে তার মহাকাশ ক্ষেত্রকে শুল্ক-সম্পর্কিত ব্যাঘাত থেকে রক্ষা করেছে, এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনার বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা বজায় রেখেছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, স্থল পরিকাঠামো এবং উৎক্ষেপণ যানবাহনের উপাদানগুলির উপর শুল্কের উল্লেখযোগ্য হ্রাস ভারতের মহাকাশ শিল্পকে বিশ্বব্যাপী উৎসের ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এনে দিয়েছে।  যদিও কিছু উপাদান আমদানির ক্ষেত্রে ছোটখাটো পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, গোয়েঙ্কা জোর দিয়ে বলেছেন যে অন্যান্য শিল্পকে প্রভাবিত করার মতো প্রতিশোধমূলক শুল্কের থেকে ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্র প্রভাবিত হয়নি। মহাকাশ প্রযুক্তি শিল্প বিশেষজ্ঞরা এই ধাক্কাগুলির বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতার প্রশংসা করেছেন, এবং এটিকে কৌশলগত উৎস, শক্তিশালী নীতি, সমর্থন এবং সম্প্রসারণকারী বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের সংমিশ্রণ হিসাবে দেখছেন।


মঙ্গল মিশন ও নিসার-এর মতো সরকার-সমর্থিত উদ্যোগের জন্য ক্রমবর্ধমান ব্যয় প্রকল্প-‌বাস্তবায়নকে আরও বিলম্বিত করার বিপদের মধ্যে ফেলে, এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও জটিল করে তোলে।



যে কোনও পারস্পরিক নির্ভরশীল বাস্তুতন্ত্রের মতো মহাকাশ ক্ষেত্রও তার সমগ্র মূল্য শৃঙ্খলে ‌ক্রমান্বয়ী (‌ক্যাসকেডিং)‌ প্রভাবের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যার মধ্যে আছে কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিকিরণ-কঠিন উপাদান তৈরি পর্যন্ত  বিভিন্ন স্তর, যা জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোগের জন্য ক্ষতিকারক প্রভাবের ঝুঁকি তৈরি করে। মঙ্গল মিশন ও নিসার-এর মতো সরকার-সমর্থিত উদ্যোগের জন্য ক্রমবর্ধমান ব্যয় অবশ্যই প্রকল্প-‌বাস্তবায়নকে আরও বিলম্বিত করার বিপদের মধ্যে ফেলে, এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও জটিল করে তোলে। একই সময়ে, অর্থনৈতিক চাপ স্টার্টআপ প্রতিযোগিতা হ্রাস করা, মূলধনের প্রাপ্যতা সীমাবদ্ধ করা, এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মহাকাশ অর্থনীতির মধ্যে রূপান্তরমূলক উদ্ভাবনের গতি ধীর করার ঝুঁকি তৈরি করে। যাই হোক, যেহেতু উভয় দেশ মহাকাশ অংশীদারিত্বকে ভবিষ্যৎ-কেন্দ্রিক ক্ষেত্র হিসাবে মূল্য দেয়, তাই মহাকাশ অংশীদারিত্বে একটি মসৃণ যাত্রা এগিয়ে নেওয়ার জন্য কূটনৈতিক ব্যস্ততা, একচেটিয়া ছাড়, বাণিজ্য পুনর্বিন্যাস ও প্রযুক্তিগত কাঠামোর মাধ্যমে যে  কোনও পরোক্ষ শুল্ক ধাক্কা থেকে একে রক্ষা করার জরুরি প্রয়োজন।

এআই এবং মহাকাশ: হারানো সুযোগ

মহাকাশ ক্ষেত্র এআই এবং মহাকাশ প্রযুক্তির এক অবিচ্ছিন্ন সংমিশ্রণ প্রত্যক্ষ করছে, এবং মিশন পরিকল্পনা, স্বায়ত্তশাসিত নেভিগেশন, জ্যোতির্বিদ্যাগত ডেটাসেট বিশ্লেষণ, রোবোটিক্স ও পৃথিবী পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করছে। তবে, উভয় দেশের জন্য মহাকাশে বেশ কিছু অব্যবহৃত সুযোগ রয়েছে যেখানে এআই ব্যবহার করা যেতে পারে, বিশেষ করে মহাকাশ মিশন এবং মহাকাশ খনির প্রযুক্তির জন্য শক্তি সমাধান।

উপগ্রহের বিদ্যমান সাবসিস্টেমগুলি ছাড়াও, ভবিষ্যতের উপগ্রহগুলিকে অ্যাডভান্সড এজ কম্পিউটিং এবং অন্তর্নির্মিত এআই পরিকাঠামো দিয়ে — যেমন গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) এবং অ্যালগরিদম — সজ্জিত করা হবে যাতে উড়ানের সময় উন্নত বুদ্ধিমত্তা প্রদান করা যায়। এটি সক্ষম করার জন্য, জ্বালানি শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন ফ্যাক্টর হিসাবে রয়ে গিয়েছে। ট্রিটিয়াম ও নিকেল ৬৩-‌র মতো আইসোটোপ থেকে বিটা বিকিরণ এআই-সক্ষম উপগ্রহ নকশায় শক্তি চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে ওঠার বিকল্প হতে পারে। নাসা
অতি-উচ্চ শক্তি ঘনত্বের ব্যাটারিতে এই অগ্রগতিকে ভবিষ্যতের বিভিন্ন প্রয়োগের জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে রয়েছে গভীর-মহাকাশ মিশন, কিউবস্যাট, মহাকাশযানের জন্য স্বয়ংচালিত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, এবং স্যাটকম (স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনস) নেটওয়ার্ক। মহাকাশে জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সহযোগিতার একটি আশাব্যঞ্জক পথ হল এআই-সক্ষম গভীর মহাকাশ অভিযানের জন্য বিটা-ভোল্টাইক ব্যাটারি প্রযুক্তির সহ-উন্নয়ন এবং ভাগাভাগি, যা ২০ বছরের জীবনকাল বিবেচনা করলে প্রচলিত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির তুলনায় প্রায় ১০০ গুণ বেশি ভলিউমেট্রিক শক্তি ঘনত্ব প্রদান করে।


চন্দ্রযান ও নাসার ওসিরিস-রেক্স ডেটাসেটগুলিকে একীভূত করার সময় বিদ্যমান হাইপারস্পেকট্রাল ও টেলিমেট্রি ডেটার উপর উন্নত অ্যালগরিদম তৈরি করা হলে তা গ্রহাণু অনুসন্ধানের জন্য ভবিষ্যদ্বাণীমূলক এআই মডেল তৈরির একটি অনন্য সুযোগ এনে দেবে।



মহাকাশ খনির একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ক্ষেত্রে এআই একটি মূল সহায়ক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। যদিও ইসরো-র বর্তমান মনোযোগ চন্দ্র এবং মঙ্গলগ্রহ অনুসন্ধানের উপর রয়ে গিয়েছে, ভারত তার শক্তিশালী এআই বাস্তুতন্ত্রের দ্বারা সমর্থিত আর্টেমিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী হিসাবে গ্রহাণু খনির ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র অন্বেষণ করার জন্য সু-অবস্থানে রয়েছে। ভারত সাশ্রয়ী মহাকাশ প্রযুক্তি (স্পাডেক্স মিশন ও
আদিত্য এল ১-‌এর মাধ্যমে প্রদর্শিত), প্রপালশন, বস্তু বিজ্ঞান ও রোবোটিক্সে অগ্রগতি বিকাশে দক্ষতা প্রমাণ করেছে। একটি শক্তিশালী মহাকাশ গবেষণা পুল ও এআই প্রতিভার সঙ্গে এই শক্তিগুলি মহাকাশ খনির ক্ষমতার জন্য একটি পোক্ত ভিত্তি প্রদান করে। চন্দ্রযান ও নাসার ওসিরিস-রেক্স ডেটাসেটগুলিকে একীভূত করার সময় বিদ্যমান হাইপারস্পেকট্রাল ও টেলিমেট্রি ডেটার উপর উন্নত অ্যালগরিদম তৈরি করা হলে তা গ্রহাণু অনুসন্ধানের জন্য ভবিষ্যদ্বাণীমূলক এআই মডেল তৈরির একটি অনন্য সুযোগ এনে দেবে। উভয় দেশই পরবর্তী প্রজন্মের রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর তৈরির মাধ্যমে উত্তোলন ও পরিশোধনের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে সর্বোত্তম করতে এমন বুদ্ধিমান খনির সমাধান এবং ইন-সিটু রিসোর্স ব্যবহারের অন্বেষণ করতে পারে যা শক্তির উৎস হিসাবে তাপ ব্যবহার করে। বিরল খনিজ পদার্থ নিয়ে প্রতিযোগিতার কারণে গ্রহাণু খনির প্রতি বিশ্বব্যাপী আগ্রহ তীব্রতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সক্ষম মহাকাশ অনুসন্ধানের এই পরবর্তী দিগন্তে দ্বিপাক্ষিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসাবে অবস্থান নেওয়ার জন্য কৌশলগত উৎসাহ অর্জন করতে হবে।

উপসংহার

 
বর্তমান বৈশ্বিক নিরাপত্তা দৃশ্যপট এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারত-মার্কিন সহযোগিতার পথ অপরিসীম কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত মূল্য বহন করে। উদ্ভাবনকে চালিত করে, সহযোগিতাকে গভীর করে এবং একটি টেকসই মূল্য শৃঙ্খল তৈরি করে এমন একটি প্রাণবন্ত ও স্থিতিস্থাপক মহাকাশ বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলা এখন আর ঐচ্ছিক বিকল্প নয়, বরং অপরিহার্য। অভূতপূর্ব প্রযুক্তিগত ব্যাঘাত এবং এআই একটি শক্তি গুণক হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার মধ্যে স্পেস ২.০ দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এই সময়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়কেই একটি সাহসী, অভিযোজিত এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত অগ্রগামী পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। নতুন মহাকাশ যুগের এক-‌চতুর্থ শতাব্দী পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিকট ভবিষ্যৎ দূরদর্শী বিবৃতির চেয়েও বেশি কিছু দাবি করে। এটি একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক  অর্থনীতি গড়ে তোলার মূল ভিত্তি হিসাবে দুই দেশের জন্য কার্যকর কৌশল, দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্বের আহ্বান জানায়। এগিয়ে থাকার জন্য উভয় দেশকে কূটনৈতিক প্রয়াসের বাইরে যেতে হবে, অংশীদারদের একত্রিত করতে হবে, এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে বাস্তব প্রভাবে রূপান্তরিত করতে হবে, এবং মহাকাশ অগ্রগতির জন্য একটি সম্মিলিত এআই দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা সংজ্ঞায়িত উত্তরাধিকার তৈরি করতে হবে।



মনদীপ রাই ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা উপগ্রহ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (ডিএসসিসি)-‌এর পরিচালক।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.