Author : Rajen Harshé

Published on Jan 06, 2024 Updated 0 Hours ago

ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনার সঙ্গে রাজনৈতিক-কূটনৈতিক ফায়দা তোলার প্রয়োজন এই সংঘর্ষের প্রতি আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির প্রতিক্রিয়াকে আকার দিয়েছে।

ইজরায়েল-হামাস দ্বন্দ্ব: এক বিভক্ত আফ্রিকান প্রতিক্রিয়া

বিদ্যমান রায়েল-হামাস সংঘর্ষের মাঝেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের তরফে একটি নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১৪০০রায়েলি প্রাণ হারান। হামাসের বিরুদ্ধে ইরায়েলের প্রতিশোধের ফলে ১০০০০ প্যালেস্তাইনি মৃত্যুবরণ করেছেন। শিশু নাগরিকদের উপর নিষ্ঠুরতম হিংসাত্মক ঘটনার তীব্র মাত্রার  কারণে এই দীর্ঘায়িত যুদ্ধ মানবিক আইন এবং মানবাধিকারের ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মতোই রায়েল-প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্ব আফ্রিকাকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। সংঘাতের প্রতি তাদের ভিন্ন ভিন্ন মনোভাব বিশ্লেষণ করার আগে কয়েকটি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য।

 

প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ

অনেক আফ্রিকান দেশ ১৯৭৩ সালের আরব-ইরায়েল যুদ্ধের পর ইরায়েলের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলেও বর্তমানে অন্তত ৩০টি আফ্রিকান রাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে তেল আভিভে এবং ৫৪টি আফ্রিকান রাষ্ট্রের মধ্যে ৪৪টি আনুষ্ঠানিক ভাবে ইরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পষ্টতই ইরায়েল আফ্রিকায় বিচারগত স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য লড়াই করছে না। তা ছাড়া, রায়েল ইতিমধ্যে আফ্রিকান দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের শৃঙ্খল সম্প্রসারিত করেছে, যা পারস্পরিক ভাবে লাভজনক। এই ধরনের সম্পর্কগুলি সেই সব আফ্রিকান দেশের সঙ্গে রায়েলি কৃষি প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ করে দেয়, যেখানে শুষ্ক এবং আধা-শুষ্ক জমি রয়েছে রায়েল আফ্রিকার দেশগুলিকে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত অবকাঠামো জোরদার করতে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। ধর্ম ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পবিত্র শহর জেরুজালেম সারা বিশ্ব থেকে, বিশেষ করে আফ্রিকার খ্রিস্টান, ইহুদি এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের আকর্ষণ করে। বর্তমানে আঞ্চলিক সংগঠন, আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং বেশিরভাগ আফ্রিকান রাষ্ট্র ইরায়েল হামাসের মধ্যে অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করা এবং শান্তি ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধারের জন্য আলাপ-আলোচনার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। যাই হোক, এই ধরনের বাহ্যিক ভঙ্গি অন্তর্নিহিত জটিলতাগুলিকে তুলে ধরে না, যা প্যালেস্টাইন এবং ইজরায়েল উভয়ের প্রতি আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির মনোভাবকে আকার দান করে।

 

রায়েলপন্থী রাষ্ট্র

সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে কেনিয়া, ঘানা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি,) এবং রোয়ান্ডা অনতিবিলম্বে হামাসের হামলার নিন্দা করেছে। কেনিয়ার ইরায়েলপন্থী অবস্থানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কের আলোকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কেনিয়া কৌশলগত ভাবে পশ্চিম ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬৪ সাল থেকে কেনিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেনিয়াকে পূর্ব আফ্রিকায় কমিউনিজম বা সাম্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল। ১৯৯৮ সালের গস্ট মাসে যখন আল-কায়েদা নাইরোবি (কেনিয়া) দার এস সালামের (তানজানিয়া) মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলা চালায় – যাতে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন – তখন রায়েল কেনিয়াকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে সহায়তা করেছিল। উগ্র ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে  লড়াইয়ের লক্ষ্য মার্কিন-ইরায়েল এবং কেনিয়াকে সংগঠিত করেছে। আল কায়েদার সঙ্গে সংযুক্ত একটি সোমালিভিত্তিক উগ্র ইসলামবাদী সংগঠন আল শাবাবকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেনিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। গোষ্ঠীটি পূর্ব আফ্রিকায় সক্রিয় ছিল কেনিয়ার মতো আফ্রিকার অন্যান্য দেশও ইরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ঘানা প্রথম আফ্রিকান দেশ, যে ১৯৫৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ইরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। আরব-ইরায়েল যুদ্ধের পর এই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেলেও ঘানা দ্রুতই তা পুনরুজ্জীবিত করতে সফল হয়। একই ভাবে, ডিআরসি এবং রোয়ান্ডাও ইরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের মধ্যে মরক্কো ইরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। মার্কিন মধ্যস্থতার কারণে মরক্কো ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে রায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে পশ্চিম সাহারার উপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই ভাবে, মরক্কো এবং ইরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক দানা বাঁধতে শুরু করলে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ইজরায়েল পশ্চিম সাহারার উপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়। এর ফল স্বরূপ, ২০২৩ সালের শেষের দিকে ইরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে মরক্কোর আতিথেয়তা জানানোর কথা ছিল। প্রকৃতপক্ষে, মরক্কোর সুবিধার জন্য পশ্চিম সাহারায় পলিসারিও ফ্রন্টের অধীনে স্থাপিত সাহারউই আরব ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক-কে (এসএডিআর) স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জরায়েল।  মরক্কো রায়েল ২০২০ সালের পরে ড্রোন, ট্যাঙ্ক এবং এমনকি স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদার করতে শুরু করে। এ ছাড়া মরক্কোর জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত এবং খরা ও দুর্ভিক্ষের সঙ্গে যুঝছে। জল নিরাপত্তা অর্জনের জন্য মরক্কোও ইরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করেছিল যা কৃষি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কৌশল তৈরি করেছে।

মার্কিন-ইরায়েল এবং মরক্কো সম্পর্ক গভীর হওয়া সত্ত্বেও হামাসের ভূখণ্ডে নিরলস ইরায়েলি আক্রমণ, বিশেষ করে হাসপাতালের মতো জায়গায় জনগণের উপর রায়েলি আগ্রাসন উত্তর আফ্রিকায় বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটায়। রাবাতে ইরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মানুষ পথে নামেন। মরক্কো ব্যাপক বিক্ষোভেও দুই দেশের মধ্যে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে হওয়া চুক্তি বাতিলের দাবি করা হয়েছে। এই ভাবে, মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদের রাজনৈতিক দক্ষতা নির্বিশেষে ইরায়েল এবং মরক্কোর মধ্যে সম্পর্ক যথেষ্ট বড় ধাক্কা খেয়েছে। ইসলামিস্ট জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ইরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের হামলাকে বীরত্বপূর্ণ কাজ বলে প্রশংসা করার দরুন মরক্কো অভ্যন্তরীণ ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। ইরায়েলের মতো প্যালেস্তাইনও আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয়েছে

 

মার্কিন-ইরায়েল এবং মরক্কো সম্পর্ক গভীর হওয়া সত্ত্বেও হামাসের ভূখণ্ডে নিরলস ইরায়েলি আক্রমণ, বিশেষ করে হাসপাতালের মতো জায়গায় জনগণের উপর রায়েলি আগ্রাসন উত্তর আফ্রিকায় বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটায়।

 

প্যালেস্তাইনপন্থী রাষ্ট্র

লিগ অফ আরব স্টেটস-এর সদস্য এবং উত্তর আফ্রিকায় মরক্কোর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আলজেরিয়া তার ইহুদিবাদ-বিরোধী অবস্থানকে পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং নিজেদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে প্যালেস্তাইনের জনগণের প্রচেষ্টাকে দ্ব্যর্থহীন ভাবে সমর্থন করেছে। একই ভাবে, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ ইরায়েলকে গণহত্যার অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন এবং মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তা আল সিসি নিজের প্রশাসনের পতন রুখতে রায়েলের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলগুলির কার্যকলাপ থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ইরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯৯৭ সালে স্পষ্টতই জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, প্যালেস্তাইনিদের স্বাধীনতা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ হবে। ফিদেল কাস্ত্রো, ইয়াসির আরাফাত এবং মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল, যাঁরা একত্রে প্যালেস্তাইনি স্বদেশ গড়ার কাজে সাহায্য করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন যে, প্যালেস্তাইনের ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু শাসনের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ-বিরোধী সংগ্রামের প্রতিধ্বনি রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি পান্ডর ইরায়েলকে একটি বর্ণবাদী রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউএন) কাছে অনুরোধ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ইরায়েল থেকে তার রাষ্ট্রদূত কূটনৈতিক মিশন প্রত্যাহার করেছে এবং গাজা উপত্যকায় ইরায়েলের বোমাবর্ষণকে গণহত্যা বলে অভিহিত করে তার নিন্দা করেছে। দেশটি আরও ঘোষণা করেছে যে, প্রিটোরিয়ায় ইরায়েলি কূটনীতিকদের অস্তিত্ব আর টিকবে না। প্রকৃতপক্ষে, উত্তর আয়ারল্যান্ডে একটি সমঝোতা মীমাংসা সংক্রান্ত সাফল্যের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা প্যালেস্তাইনের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলির মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে।

 

আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ইরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯৯৭ সালে স্পষ্টতই জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, প্যালেস্তাইনিদের স্বাধীনতা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ হবে।

 

তবে দক্ষিণ আফ্রিকাও প্যালেস্তাইনের প্রসঙ্গে অভ্যন্তরীণ ভাবে বিভক্ত থেকেছে। ইহুদি বোর্ড অফ ডেপুটিজ, সাউথ আফ্রিকান জিয়োনিস্ট ফেডারেশন এবং প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স-সহ (ডিএ) সংস্থাগুলি সরকারি নীতির বিরোধিতা করছে তারা দাবি করে যে, রায়েলের কূটনীতিকদের প্রিটোরিয়া ছাড়তে বললেই দক্ষিণ আফ্রিকা সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবে না। এ ছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ইরায়েলের সবচেয়ে কড়া সমালোচক হয়ে উঠলেও তারা ২০২১ সালে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য করার দরুন আফ্রিকার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।

 

নিরপেক্ষ রাষ্ট্র

নাইজেরিয়া হল এমন কয়েকটি আফ্রিকান রাষ্ট্রের অন্যতম, যারা সংঘাতের বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও অবিলম্বে হিংসাত্মক ঘটনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। একই ভাবে, উগান্ডা নিরপেক্ষ থাকলেও প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি ব্যক্তিগত ভাবে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করেন।

 

নাইজেরিয়া হল এমন কয়েকটি আফ্রিকান রাষ্ট্রের অন্যতম, যারা সংঘাতের বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও অবিলম্বে হিংসাত্মক ঘটনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

 

এ ছাড়াও, লোহিত সাগরে অবস্থিত দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ইজরায়েল ইহুদি ইথিওপিয়ানদের মানবিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। লোহিত সাগর ইরায়েলের জন্য কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেশটির এক-চতুর্থাংশ আকাবা উপসাগরে অবস্থিত, যা লোহিত সাগরের একটি খাঁড়ি। ইজরায়েল লোহিত সাগর অঞ্চলের জর্ডন, মিশর, সৌদি আরব, ইয়েমেন, সুদান, ইরিত্রিয়া এবং জিবুতির মতো দেশগুলির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে প্রায় বাধ্য। এই প্রেক্ষাপটে ইজরায়েলকে সুয়েজ খাল, ইলাত এবং এডেন উপসাগরের উন্নয়নের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এর পাশাপাশি আফ্রিকার সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের প্রচেষ্টায় জরায়েল ২০২১ সালে এইউ-তে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেতে ক্ষণিকের জন্য সফল হলেও এইউ আলজেরিয়ার প্রতিবাদের কারণে সেই মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এর বিপরীতে প্যালেস্তাইন এইউ-তে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা ভোগ করে।

 

উপসংহার

হামাস-ইরায়েল দ্বন্দ্ব আফ্রিকা মনোভাবগত বিভাজনকে প্রকাশ্যে এনেছে। দেশগুলি নিজেদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত এবং মরক্কো দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কিছু দেশ এই প্রসঙ্গে অভ্যন্তরীণ ভাবে দ্বিধাবিভক্ত। ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক-কূটনৈতিক ফায়দা তোলার প্রয়োজন এই সংঘর্ষের প্রতি আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির প্রতিক্রিয়াকে আকার দিয়েছে।

 


রাজেন হর্ষে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অফ এলাহাবাদ প্রয়াগরাজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর এবং জি বি পন্থ সোশ্যাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.