Published on Jan 07, 2025 Updated 0 Hours ago
দামাস্কাসের পতন এবং ট্রাম্প ২.০

২৭ নভেম্বর লেবানন জরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়ার পর - যা মধ্যপ্রাচ্যে স্বস্তির ঝলক এনেছিল - এই অঞ্চলে বাইডেনের উত্তরাধিকার কিছুটা হলেও ইতিবাচক অভিমুখ পেয়েছে। কিন্তু এই স্বস্তি আপাতভঙ্গুর বলেই মনে হয়। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার দুদিন পর সিরিয়ার যুদ্ধ গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করে সিরিয়ার বৃহত্তম বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং এর সহযোগীরা ২৯ নভেম্বর সিরিয়ার দ্বিতীয় শহর আলেপ্পো দখল করে নেয়পরবর্তী আট দিনে তারা হামা এবং হোমস দখল করে। এর পর ৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ মস্কো পালিয়ে যান কারণ দামাস্কাস বিরোধী বাহিনীর হস্তগত হয়, যা তাঁর পরিবারের পাঁচ দশক দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটায়। মধ্যপ্রাচ্যের এই অংশে আমেরিকার ভূমিকা এখন আগের চেয়ে বেশি আলোচিত।

এইচটিএস মূলত ২০১১ সালে আল-কায়েদা-অনুষঙ্গী আল-নুসরা ফ্রন্ট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও আল-জোলানির নেতৃত্বে দলটি পরে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, সিরিয়ার অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জুড়ে ‘হায়াত তাহরিআল-শাম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এর পর ২০১৭ সালে গোষ্ঠীটি আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ব্রতী হয়।

আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষের দরুন ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশব্যাপী বিক্ষোভ দমন করার জন্য সরকার হিংসাত্মক উপায় ব্যবহার করেছিল এবং এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে বিরোধী বাহিনী অস্ত্র হাতে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে। এইচটিএস মূলত ২০১১ সালে আল-কায়েদা-অনুষঙ্গী আল-নুসরা ফ্রন্ট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও আল-জোলানির নেতৃত্বে দলটি পরে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, সিরিয়ার অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জুড়ে ‘হায়াত তাহরিআল-শাম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এর পর ২০১৭ সালে গোষ্ঠীটি আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ব্রতী হয়।

যুদ্ধটি ক্রমশ আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করতে শুরু করে এবং শাসনকে স্থিতিশীল রাখা বা তার বিরোধিতা করার বাইরেও প্রক্সি যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার এবং তেলের মতো একাধিক কারণের জন্য একগুচ্ছ অংশীদারের সম্পৃক্ততাকে উস্কে দিয়েছে। ইরান হিজবুল্লাহ সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে বিদ্রোহীদের হাতে হৃত অঞ্চলগুলির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য প্রথমে আসাদকে সমর্থন করেছিলএই ইরান-হিজবুল্লাহ-সিরিয়া জোটটি প্রতিরোধের অক্ষ হিসাবে পরিচিত হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে ইরায়েলি এবং পশ্চিমা স্বার্থের মোকাবিলা করা। পরবর্তী কালে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে আসাদের অনুরোধে সিরিয়ার বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু হয়েছিলকারণ ২০১১ সাল থেকে বিরোধী বাহিনীকে মোকাবিলা করতে করতে আসাদের সম্পদ ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকে। বিশেষ করে সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশটি হাতছাড়া হওয়ার পরে এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে অক্ষে যোগদানের পর এমনটা ঘটে।

রায়েল অন্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে মিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৪ সালে আইএসআইএস-কে প্রতিহত করার লক্ষ্যে যুদ্ধে প্রবেশ করেছিল, যেখানে ওবামা প্রশাসন সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও বিরোধী দলগুলিকে সমর্থন করেছিল। যেহেতু সিরিয়ার সরকার যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল, তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৭ সালে প্রথম বারের মতো প্রত্যক্ষ ভাবে সিরিয়াকে নিশানা করে। একই বছর আইএসআইএস তার অধিকৃত ভূখণ্ডের ৯৮ শতাংশ হারালে আমেরিকা মূলত আসাদ প্রশাসনের পদ্ধতির নিন্দা করে এবং আইএসআইএস-এর পুনরুত্থান রোধের উপর বিশেষ করে মন দেয়। এর পাশাপাশি আমেরিকা অঞ্চলটিতে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস-কে (এসডিএফ) সমর্থন জোগানোর মাধ্যমে সিরিয়ায় নিজেদের ভূমিকা প্রসারিত করেছে।

এ কথা লক্ষ করার মতো যে, মার্কিনবাহিনী মূলত সিরিয়ার পূর্ব সীমান্তে তেল সমৃদ্ধ এলাকা মোতায়েন রয়েছে

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ২০১৯ সালে আইএসআইএস-কে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্মূল করার কথা ঘোষণা করেন এবং সিরিয়া থেকে প্রচুর সংখ্যক মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সেই সময় থেকে মাত্র ৯০০ মার্কিন সৈন্য সে দেশে মোতায়েন রয়েছে। এ কথা লক্ষ করার মতো যে, মার্কিনবাহিনী মূলত সিরিয়ার পূর্ব সীমান্তে তেল সমৃদ্ধ এলাকা মোতায়েন রয়েছে। অবশিষ্ট সৈন্যদের সিরিয়ার অন্যত্র মোতায়েন করা হয়েছিল কারণ ট্রাম্প সিরিয়ার তেলকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার-এর তকমা দিয়েছেন এবং আইএসআইএস, সিরিয়ার প্রশাসন রাশিয়ার কাছ থেকে তৈলক্ষেত্রগুলিকে রক্ষা করার উপর জোর দিয়েছেন।

একটি নতুন সিরিয়ার মধ্য দিয়ে পথ খুঁজে নেওয়া

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সত্ত্বেও সিরিয়ায় ওয়াশিংটনের দাপট অব্যাহত রয়েছে।

ডিসেম্বর যখন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একটি সাংবাদিক বিজ্ঞপ্তিতে সিরিয়ার জন্য ওয়াশিংটনের পরিকল্পনার রূপরেখা দেন, তখন সিরিয়ার বিষয়ে বাইডেন ও আগত ট্রাম্প প্রশাসনের আপাতবিরোধী নীতি প্রকট হয়ে ওঠে। ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে, সিরিয়ায় বাইডেনের যথেষ্ট নিরাপত্তামূলক স্বার্থ রয়েছেআইএসআইএস-এ‘ভৌগোলিক খিলাফত-এর পুনরুত্থান রোধ করা প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছাড়াও বাইডেন সিরিয়ায় হিংসার অবসান ঘটাতে ওয়াশিংটনকে সম্পৃক্ত করতে এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসান করতে সেখানকার অন্তর্বর্তী প্রশাসনের সঙ্গে একজোটে কাজ করে সহযোগিতা করতে চান। ডিসেম্বর থেকে ওয়াশিংটন সিরিয়ায় আইএসআইএস-কে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে।

বর্তমানে সিরিয়ার জন্য বাইডেনের দীর্ঘমেয়া্দি কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও ট্রাম্প চান, আমেরিকা কেবল দর্শক হয়ে থাকুক।

তা সত্ত্বেও যেহেতু ট্রাম্প ২.০ সিরিয়ার সঙ্গে ‘কোনও ভাবেই সম্পর্কিত’ হতে চায় না, তাই সম্পূর্ণ রূপে প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করার জন্য আগে বেশ কয়েকটি বিষয় খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সিরিয়া ট্রাম্পকে কিছু নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক বিবেচনার বিষয়গুলি পুনরায় খতিয়ে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে:

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে চি-সহ বেশ কয়েকটি দেশ সিরিয়ায় বিনিয়োগের সুযোগগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সিরিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০২২ সালে বিআরআই-তে যোগ দিলেও চিন এখনও সেখানে কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেনি। যাই হোক, পরিস্থিতি স্বাভাবিকীকরণের প্রচেষ্টা চলছে এবং অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকরী হওয়ার চেষ্টা করছে। তাই চিন সম্ভবত সিরিয়ায় তার কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

সিরিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০২২ সালে বিআরআই-তে যোগ দিলেও চিন এখনও সেখানে কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেনি।

সর্বোপরি, সৌদি আরব সিরিয়া ২০২৩ সালে বিনিয়োগের সুযোগগুলি অন্বেষণ করতে সম্মত হয়েছিল এবং একই বছর আরব লিগে সিরিয়ার পুনঃপ্রবেশের সঙ্গে এই ঘটনা সমাপতিত হয়। উপরন্তু, ১৪ ডিসেম্বর সিরিয়ার সরকার পরিবর্তনকে সমর্থন করার জন্য আরব লিগের আটজন নেতা জর্ডনে বৈঠক করেছিলেন, যার ফলে উপসাগরীয় দেশের সম্ভাব্য বিনিয়োগগুলি সিরিয়ায় প্রবাহিত হতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দরুন ট্রাম্প ২.০ প্রশাসন সিরিয়ার সঙ্গে একটি ব্যবসায়িক চুক্তির আলোচনার সুযোগ নিতে পারে। বিশেষ করে যদি জর্ডন, মিশর সৌদি আরবের মতো উপসাগরীয় অংশীদাররা সিরিয়ার পুনরুন্নয়নে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করে, তা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইটুইউটু উদ্যোগের মতো সহযোগিতার পথগুলিও খতিয়ে দেখতে পারে।

সর্বোপরি, ট্রাম্প যদি অর্থনৈতিক স্বার্থে নিহিত মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির মাধ্যমে শান্তি কৌশলের বাস্তবায়ন ঘটান, তা হলে সিরিয়া একটি সম্ভাব্য ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে উঠতে পারে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করবে এবং রায়েলের পাশাপাশি এই অঞ্চলে আর কটি গণতান্ত্রিক মিত্র হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যখন অন্তর্বর্তী প্রাইম মিনিস্টার মহম্মদ আল-বশির সিরিয়ায় সমান অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন পরবর্তী কালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সঙ্গে একটি তেল চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ট্রাম্পকে সুযোগ প্রদান করতে পারে, যদি তিনি আদৌ এমনটা করতে ইচ্ছুক হন। 

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে নিজের অবস্থান বাস্তবায়িত করতে গেলে ট্রাম্পকে আরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, যার মধ্যে প্রথমটি হল সিরিয়ায় থাকা অবশিষ্ট মার্কিন সৈন্যদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত রাখা। ফলস্বরূপ, এটি মুখ্য বিবেচনার বিষয় হয়ে উঠবে যে, তিনি এখনও তেলক্ষেত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চান কি না। এটি এমন এক কর্মসূচি যা তিনি তাঁর প্রথম মেয়াদে অনুসরণ করেছিলেন।

কুর্দি বাহিনীর প্রতি সমর্থনের অবসান ঘটানো আর কটি চ্যালেঞ্জ হবেকারণ এই সহযোগিতা সিরিয়ায় মার্কিন প্রভাব বজায় রাখতে এবং ইরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ ছিল

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে নিজের অবস্থান বাস্তবায়িত করতে গেলে ট্রাম্পকে আরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, যার মধ্যে প্রথমটি হল সিরিয়ায় থাকা অবশিষ্ট মার্কিন সৈন্যদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত রাখা।

সর্বোপরি, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্ব যখন ভেঙে পড়েছে এবং তাদের তরফে আপাতত সিরিয়ায় অনুপ্রবেশের কোনও পরিকল্পনা নেই, তখন গোষ্ঠীটির প্রত্যাবর্তন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতির জন্য এমন এক ভবিষ্য উদ্বেগ হয়ে উঠতে পারে, যার সমাধান করা প্রয়োজন।

রায়েল গোলান হাইটসের আশপাশে রাষ্ট্রপুঞ্জের তত্ত্বাবধানে থাকা ডি-মিলিটারাইজড বাফার জোন দখল করে নিয়েছেকারণ নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে, তিনি এই অঞ্চলে শত্রুবাহিনী’র মোতায়েন চান না। উল্লেখ্য যে, এই অঞ্চলটি ইরায়েলের সঙ্গে সীমানা ভাগ করে। নেতানিয়াহু এই দাবি করে তাঁর দখলকে আরও ন্যায্যতা দিয়েছিলেন যে, ১৯৭৪ সালের মে মাসে সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সীমান্ত বিচ্ছিন্নকরণ চুক্তিটি আর বৈধ নয় কারণ সিরিয়ার সরকারের পতন হয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী সে দেশ দখল করেছে।

রায়েলও ডিসেম্বর ইরানের সম্পদকে লক্ষ্য করে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে, যা দামাস্কাসের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। পরবর্তী কালে, ১০ ডিসেম্বর থেকে ইজরায়েল সারা সিরিয়া জুড়ে ৪৮০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনও ইঙ্গিতই দেয় না। রায়েলের উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে আকারপ্রদানকারী সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরামিতি এবং ট্রাম্পের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে তাঁবিচ্ছিন্নতাবাদী নীতির আলোকে তেল আভিভের উচ্চ ও অন্যায্য প্রত্যাশার মাঝে পথ খুঁজে নেওয়া।

তুরস্কের বিরোধিতা সিরিয়ায় আমেরিকা-সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর উপর সাম্প্রতিক বিমান হামলার কারণে ন্যাটোর সংহতি প্রক্রিয়াও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আসাদের পতনের পর থেকে তুর্কি-সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) উত্তর সিরিয়া থেকে মার্কিন-সমর্থিত এসডিএফ-কে সরানোর কাজে ব্রতী হয়েছে এবং একটি স্বায়ত্তশাসিত মুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে। যাই হোক, আইএসআইএস-এর পুনরুত্থান রোধ করার প্রচেষ্টায় ওয়াশিংটন নিজেকে এসডিএফ-এসঙ্গে সংযুক্ত করেছে। ট্রাম্প ২.০ প্রশাসন তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে, যদি আলোচনা চলাকালীন ট্রাম্প সিরিয়ায় আইএসআইএস-এর বিরুদ্ধে লক্ষ্যে স্থির থাকতে চান।

ইইউ সিরিয়ার উন্নয়নের জন্য সমর্থন সুনিশ্চিত করেছে। এটি এমন একটি প্রচেষ্টা যার জন্য সরাসরি সেনা প্রেরণের প্রয়োজন হতে পারে। এটি ন্যাটোর উপর আরও চাপ বাড়াতে পারে, বিশেষত ট্রাম্প ২.০ যখন ন্যাটো থেকে ‘বেরিয়ে আসা’র অথবা আরও বাস্তবসম্মত ভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন সীমিত করার পন্থা বিবেচনা করছে।

উপরন্তু, আমেরিকার প্রাথমিক দায়িত্বগুলির মধ্যে অন্যতম হবে সিরিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা, যা ট্রাম্পের করণীয় তালিকার শীর্ষে রয়েছে। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাথমিক ভাবে সিরিয়া রাষ্ট্রের গণতন্ত্র সুনিশ্চিত করা এবং সে দেশের উন্নয়নকে সহজতর করে তোলা গুরুত্বপূর্ণ হবে।

ইইউ সিরিয়ার উন্নয়নের জন্য সমর্থন সুনিশ্চিত করেছে। এটি এমন একটি প্রচেষ্টা যার জন্য সরাসরি সেনা প্রেরণের প্রয়োজন হতে পারে। এটি ন্যাটোর উপর আরও চাপ বাড়াতে পারে, বিশেষত ট্রাম্প ২.০ যখন ন্যাটো থেকে ‘বেরিয়ে আসা’র অথবা আরও বাস্তবসম্মত ভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন সীমিত করার পন্থা বিবেচনা করছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে ট্রাম্প ২.০-কে দেখতে হবে যে, কী ভাবে এক নতুন সিরিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য বাইডেনের প্রচেষ্টাকে স্তিমিত করা যায়, যদি ট্রাম্প চান যে, পরিস্থিতি নিজে থেকেই শুধরে যাক। বাইডেন এবং ট্রাম্প যখন এক পথসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন ট্রাম্পের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচিকে অবশ্যই মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান চিনা প্রভাব, রায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যবস্থাপনা, কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বজায় রাখা, সিরিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে এর পাশাপাশি তেল সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য প্রশ্নটি তো রয়েছেই।

এই বিবেচনাগুলি ট্রাম্প ২.০-র তরফে একটি আরও সূক্ষ্ম পদ্ধতির দাবি করতে পারে। কারণ ট্রাম্প আমেরিকা ফার্স্ট’ পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদ কৌশলগত সম্পৃক্ততার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা একটি সুসঙ্গত সিরিয়া নীতিকে আকার দেওয়ার জন্য অপরিহার্য হবে।

 


কাশভি চৌধুরী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.