Author : Kabir Taneja

Published on Dec 12, 2024 Updated 0 Hours ago

আসাদের সিরিয়া সরকারের পতন এবং মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর পরিবর্তন বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে চলেছে, যদি না আঞ্চলিক সমস্যাগুলি আঞ্চলিক সমাধান খুঁজে পায়।

আসাদের পতন এবং সিরিয়ার ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ: আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রভাব

Image Source: Getty

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ – যা বহু বছর ধরে সুপ্ত আকারে ছিল – নিতান্ত তাসের ঘরের মতো বাশার আল-আসাদের দীর্ঘস্থায়ী সরকারের পতন ঘটার মাধ্যমে তা প্রবল পরাক্রমে ফিরে এসেছে। র ফলে আসাদ পরিবার আরব সমাজতান্ত্রিক বাথ পার্টির ৬০ বছরের শাসনের অবসান ঘটে, যারা ১৯৬৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসে। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতৃত্বে বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠীদের একটি জোট – যেটি ৪২ বছর বয়সি আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির নেতৃত্বাধীন আল কায়েদার একটি শাখা -বর্তমান সরকারের শীর্ষভাগে রয়েছে। দেশের সশস্ত্র বাহিনী আপাতদৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে, আত্মসমর্পণ করেছে কিংবা নিছক পক্ষ পরিবর্তন করেছে।

আশাতীত ভাবে এইচটিএস তার নিজস্ব পদ্ধতিতে চকিত আঘাত হানার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির পদ্ধতি কাজে লাগিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে রায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং গাজা, ইয়েমেন, লেবানন ইরানে পরবর্তী ভূ-রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে শুরু হওয়া সিরিয়ার সঙ্কট গত বছর ধরে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণে তীব্র আকার ধারণ করেছে। সিরিয়ার যুদ্ধ কখনওই থেমে যায়নি, বরং সেটিকে ধাপাচাপা দিয়ে দেওয়া, নিয়ন্ত্রণ করা, এমনকি ভুলিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা চালানো হয়। তবে আঞ্চলিক ভাবে এটি বরাবরই স্থানীয় গোষ্ঠী এবং বিদেশি শক্তিগুলির মধ্যে, বিশেষ করে আরব রাষ্ট্র, তুর্কিয়ে, ইরান, রায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে সংঘর্ষের একটি বিন্দু হয়ে থেকেছে।

সংক্ষেপে বললে, ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া সংঘাতকে তিনটি প্রধান কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বোঝা যেতে পারে: অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক।

অভ্যন্তরীণ

এইচটিএস এবং তার প্রধান জোলানি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে। বিগত বছরগুলিতে এইচটিএস তার নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, কর রাজস্ব ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা সহ একটি আধা-রাষ্ট্র তৈরি করেছে। অবশ্য এইচটিএস এই ধাঁচকে আকার প্রদানকারী প্রথম গোষ্ঠী  নয়। সোমালিয়ায় আল-শাবাব কিছু দিন ধরে একই ধরনের কৌশল নিয়েছে। আফগানিস্তানের তালিবান ২০২১ সাল থেকে দেশের একমাত্র আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক শক্তি হিসাবেও এই কৌশল অব্যাহত রেখেছে। সর্বোপরি, জোলানি নিজেও একটি ইসলামি সরকারপ্রতিষ্ঠার দিকে ইঙ্গিত করার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত বিভাজনের প্রতি তাঁর কোন আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি তাঁর অনুসারীদের এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানের (হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসেবা, পুলিশ ও অন্যান্য) ক্ষতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন।

সিরিয়ার রাজনৈতিক শৃঙ্খলার ভবিষ্য বিশ বাঁও জলে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবস্থা দেশটিকে আরও অতল গহ্বরে ঠেলে দিয়েছে।  এইচটিএস ক্ষমতা দখল করলে জোলানি পরবর্তী থিওক্র্যাট হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে যাবেন এবং ইতিমধ্যে অশান্তির আগুনে জ্বলতে থাকা এক অঞ্চলের অনিশ্চয়তা একটি নতুন অধ্যায় যোগ করবেন।

যাই হোক, কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-সহ এইচটিএস এবং অন্যান্য বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠী সিরিয়ার শহরগুলির রাস্তায় উচ্ছ্বাসের বন্যা বইয়ে দিয়েছে, যা প্রাক্তন রাষ্ট্রের পশ্চাদমুখী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান চাপকেই দর্শায়। সেনাবাহিনীর ব্যাপক ভাবে সামরিক অবস্থান পরিত্যাগের প্রতিবেদনগুলি নিরাপত্তা কাঠামোর কৌশলগত, পরিকল্পনামূলক এবং নৈতিক অবক্ষয়ের উপর আলোকপাত করে, যেগুলির পুনর্নির্মাণে রুশদের সাহায্য করার কথা ছিল। অন্য দিকে, এইচটিএস সামরিক অ্যাকাডেমি, হাইব্রিড বা সঙ্কর ধরনের অস্ত্র এবং আনুষ্ঠানিক আদেশ ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ব্যবহার করে যথেষ্ট প্রস্তুত ছিল। এই সামরিক অ্যাকাডেমি পূর্বে আসাদের অধীনে কর্মরত প্রাক্তন জেনারেল এবং কম্যান্ডারদের সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল।

সিরিয়ার রাজনৈতিক শৃঙ্খলার ভবিষ্য বিশ বাঁও জলে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবস্থা দেশটিকে আরও অতল গহ্বরে ঠেলে দিয়েছে। এইচটিএস ক্ষমতা দখল করলে জোলানি পরবর্তী থিওক্র্যাট হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে যাবেন এবং ইতিমধ্যে অশান্তির আগুনে জ্বলতে থাকা এক অঞ্চলের অনিশ্চয়তা একটি নতুন অধ্যায় যোগ করবেন। জোলানির হাতে শহরের ক্ষমতা হস্তান্তর করার বাস্তবতার সম্মুখে দাঁড়িয়ে সিরিয়ার প্রাইম মিনিস্টার মোহাম্মদ গাজি আল-জালালির অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের হ্বান দেশটি আগামিদিনে কোন পথে হাঁটবে, সেই সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জন্ম দিতে পারে। জোলানির একমত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও এসডিএফ-এর মতো অন্যরা যদি নির্বাচনের গতিশীলতার পক্ষাবলম্বন করে, তা হলে এটিকে আঞ্চলিক পশ্চিমা শক্তি উভয়ের জন্যই আসন্ন ফলাফলকে প্রভাবিত করার এক সুযোগ বলে মনে করা যেতে পারে।

আঞ্চলিক

গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দামাস্কাস যাতে তেহরানের ঘনিষ্ঠ থাকে, সে কথা সুনিশ্চিত করতে ইরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কয়েক বছর ধরে সিরিয়া ইরান-সমর্থিত প্রক্সিদের জন্য গ্রাউন্ড জিরো হয়ে উঠেছে এবং একই সঙ্গে লেবাননে হিজবুল্লাহকে অস্ত্র পাঠানোর ক্ষেত্রে অস্ত্র সরবরাহের পথ হিসেবে কাজ করেছে। ইরানের প্রাক্তন সামরিক জেনারেল কাসেম সোলেইমানি - যিনি ২০২০ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় বাগদাদে নিহত হন - এই পরিস্থিতির প্রধান স্থপতি হিসাবে ব্যাপক ভাবে পরিচিত ছিলেন।

আসাদ নিজেও অধিকাংশ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অজনপ্রিয় ছিলেন। ক্ষমতা ধরে রাখার বিনিময়ে ইরানের (এবং রাশিয়া) প্রতি তাঁর আনুগত্যকে সমস্যাযুক্ত বলে মনে করা হলেও ২০২৩ সাল থেকে আরব গোষ্ঠীতে ধীর গতিতে আসাদের প্রত্যাবর্তন লক্ষ করা গিয়েছে। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে বিক্ষোভকারীদের হিংসা বন্ধ করতে ব্যর্থ ও অনিচ্ছুক হওয়ার দরুন সিরিয়াকে আরব লিগ থেকে সাসপেন্ড করা হয়। আরব দেশগুলির জন্য প্রাথমিক বছরগুলিতে আসাদ-বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন অনিবার্য হয়ে ওঠে কারণ দেশের সুন্নি আরব সংখ্যাগরিষ্ঠরা আসাদ পরিবারের কয়েক দশক ধরে চলা শাসনের বিরোধী হয়ে উঠেছিল। কারণ আসাদের পরিবার আলাউইট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশ অর্থাৎ এমন একটি জাতি-ধর্মীয় গোষ্ঠীর শাখা, যারা শিয়া ইসলামের একটি শাখার অনুসারী

বর্তমানে আসাদ যখন ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠেছেন, তখন জোলানি একটি বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করেছেন। তাঁর বক্তৃতায় এইচটিএস নেতা বলেছেন যে, তিনি ইরান এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে চান।

বর্তমানে আসাদ যখন ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠেছেন, তখন জোলানি একটি বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করেছেন। তাঁর বক্তৃতায় এইচটিএস নেতা বলেছেন যে, তিনি ইরান এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে চান। এই সমস্ত পদক্ষেপ কৌশলগত ভাবে আরব রাজধানী এবং ইরায়েলের কাছে একই রকমের প্রশংসনীয় হলেও তাদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে জোলানির আদর্শগত অবস্থান এখন একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) এবং সৌদি আরবের মতো আরব শক্তিগুলি সক্রিয় ভাবে মুসলিম ব্রাদারহুড ও মধ্যপ্রাচ্য ব্যাপী তার বাস্তুতন্ত্রের বিরোধিতা করে এসেছে। রায়েল হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, যা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের নেতৃত্বাধীন মুজামা আল-ইসলামিয়া থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও গাজায় ব্রাদারহুডের সঙ্গে কর্মরত একটি জনহিতমূলক সংস্থা। দীর্ঘ মেয়াদে সিরিয়ার প্রধান হিসেবে জোলানির স্থিতি বিভিন্ন কারণে প্রায় সকলের জন্যই অস্বস্তিকর বাস্তবতা হবে

তা সত্ত্বেও, ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মাধ্যমে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা ইতিমধ্যেই চলছে। রাশিয়া, তুর্কিয়ে এবং ইরান সম্প্রতি সিরিয়ার ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আলোচনা করতে কাতারে বৈঠক করেছে, যেখানে তিনটি রাষ্ট্রেরই বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাধ্যমে অভিন্ন সাধারণ স্বার্থ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আঙ্কারা সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে সমর্থন করেছে এবং সম্মান জানিয়েছে, যা আসাদ-বিরোধী সংগঠনগুলির একটি জোট। এর আগে রায়েল এবং রাশিয়া ইরান-সমর্থিত প্রক্সিদের লক্ষ্য করে সিরিয়ার অভ্যন্তরে পূর্ববর্তী বিমান হামলার বিষয়ে আলাপ-আলোচনার একটি শৃঙ্খল বজায় রেখেছিল। বারুদের স্তূপের উপর বসে থাকা গোষ্ঠী এবং স্বার্থগুলির বিভিন্নতার প্রেক্ষিতে একটি পক্ষের কোনো ভুল পদক্ষেপ সকলের জন্যই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

আন্তর্জাতিক

সিরিয়া যদি এইচটিএস শাসনের অধীনে আসে, তবে এটি হবে আফগানিস্তানের পরে দ্বিতীয় রাষ্ট্র যেটিকে জঙ্গিরা সফল ভাবে দখল করল এবং যা দুই দশকব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর বিরুদ্ধেই আঙুল তোলে। কাবুলে তালিবান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির মতোজোলানির মাথার উপরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পুরস্কার ধার্য করা রয়েছে। দুজনকেই সম্প্রতি পশ্চিমী গণমাধ্যমে দেখা গেছে যেখানে তাঁরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

সিরিয়া যদি এইচটিএস শাসনের অধীনে আসে, তবে এটি হবে আফগানিস্তানের পরে দ্বিতীয় রাষ্ট্র যেটিকে জঙ্গিরা সফল ভাবে দখল করল এবং যা দুই দশকব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর বিরুদ্ধেই আঙুল তোলে।

আফগানিস্তানে তালিবানের বিজয় ইসলামপন্থী দলগুলিপর যে প্রভাব ফেলেছে, তাকে খাটো করে দেখা যাবে না। ২০২১ সালে ইদলিবের মতো এইচটিএস-অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে মসজিদ থেকে লাউডস্পিকারের সাহায্যে প্রচারিত প্রার্থনার মাধ্যমে তালিবানদের অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। একই সময়ে এইচটিএস-এর তাত্ত্বিক নেতা আবদ আল-রহিম আতুন ‘একটি মডেল হিসেবে’ তালিবানের বিষয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। তাদের বিজয়কে অন্যদের জন্য একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী নীলনকশা হিসাবে দেখা হয়েছিল। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করা যায়, তা হলে অবশ্যই আসাদের মতো নেতাদের অপসারণ করা যাবে। তালিবান নিজেই এইচটিএস-কে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং এগিয়ে যাওয়ার পথে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আসাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইরানের ভূমিকাকে ছোট করা যাবে না। ২০১৫ সালে দামাস্কাস তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের (ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড অ্যাশ-শাম (আইএসআইএস) বা আরবি ভাষায় ‘দায়েশ’) সঙ্গে দেশের যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য মস্কোকে আমন্ত্রণ জানায়। মস্কোর সমর্থন থাকলেও ইউক্রেনের যুদ্ধের পর থেকে তা নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে রুশ সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন যে, সিরিয়াকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া যায় না। কিন্তু তিনি ইরানের মতোই আসাদকে বাস্তবে কোনো সাহায্যের দিকে পা বাড়াননি। তবে তা সত্ত্বেও রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এখনও গুরুত্বপূর্ণ পারেকারণ রাশিয়া সে দেশের টারতুস এবং লাতাকিয়া প্রশাসনিক অঞ্চলে তার বিমান ও নৌ ঘাঁটি বজায় রাখতে চাইবে মধ্যপ্রাচ্য ভূমধ্যসাগর উভয় অঞ্চলে মস্কোর একমাত্র অবশিষ্ট কৌশলগত উপস্থিতি এখানেই রয়েছে।

উপরে উল্লেখিত জটিলতার ঊর্ধ্বে উঠে জোলানির নেতৃত্বাধীন সিরিয়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য একটি বড় ধাক্কা। সোমালিয়া, আফগানিস্তান, ইয়েমেন এবং এখন সম্ভাব্য সিরিয়া সাফল্যের আখ্যান হিসাবে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি, বিশেষ করে আফ্রিকাসাহেলে, পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দুর্বল রাষ্ট্র দখল করার চেষ্টা করতে এবং শেষ পর্যন্ত হয়তো দখল করতে সাহস জোগাতে পারে এই সমস্ত বাস্তবতা বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ব্যর্থতা সক্রিয় ভাবে আন্তর্জাতিক নজরদারির ভূমিকা পালনে মার্কিন রেসিডিভিজমের বৈশিষ্ট্যগুলির ফলাফলে স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক নজরদারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়… আগত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ হেন বিবৃতিতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

উপসংহার

সিরিয়া, ইয়েমেন বা গাজা ও লেবানন, যে সঙ্কটই হোক না কেন, পরিকল্পিত নতুনমধ্যপ্রাচ্য ‘পুরনো’ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ। বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ আকস্মিক নয়, বরং আরব বসন্ত যুগের চোরা স্রোত-সহ বিগত দশকের বৈশিষ্ট্যও বটে। দেশের নিজস্ব ভাগ্যের ঊর্ধ্বে উঠে আঞ্চলিক সমস্যাগুলির আঞ্চলিক সমাধান খুঁজে না পেলে আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক উভয় ভূ-রাজনীতিতে যে কোনও রকম মন্থন বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারেমধ্যপ্রাচ্যের সম্ভাব্য পারমাণবিকীকরণও একটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয়। সিরিয়াযা-ই ঘটবে, তা এই অঞ্চলের বাইরেও প্রভাব ফেলবেকারণ আগামী মাসগুলিতে অঞ্চলটির নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রকাশ পাবে।

 


কবীর তানেজা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.