Published on Jul 18, 2022 Updated 0 Hours ago

উপসাগর নিরাপত্তা উদ্বেগের সম্মুখীন হওয়ায় সামুদ্রিক এলাকা সচেতনতার গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে।

বিমস্টেকের নিরাপত্তা সহযোগিতার মূল বিষয়: সামুদ্রিক এলাকা সচেতনতা

এই বছরের ৬ জুন বঙ্গোপসাগরের নিজস্ব আঞ্চলিক সংগঠন বে অফ বেঙ্গল মাল্টি–সেকটোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কো–অপারেশন (বিমস্টেক) তার ২৫তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। বিগত মাসগুলিতে সংগঠনটি এই উপলক্ষে নানা কাজকর্মে ব্যস্ত ছিল। এটির পঞ্চম শীর্ষ বৈঠকে প্রথম বারের মতো একটি সনদ গ্রহণ করা হয়েছে এবং আরও ভাল কার্যকারিতার জন্য সহযোগিতার ১৪টি ক্ষেত্রকে যুক্তিযুক্ত ভাবে চিহ্নিত করে বিস্তারিত সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷  এই সাতটির মধ্যে একটি হল ‘‌নিরাপত্তা’‌, যার মধ্যে আগের ‘সন্ত্রাসবাদ–বিরোধী ব্যবস্থা ও একাধিক দেশব্যাপী অপরাধ’‌, ‘‌বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা’‌ এবং ‘‌শক্তি’‌র পূর্ববর্তী স্বাধীন ক্ষেত্রগুলিকে একত্র করা হয়েছে, আর এর নেতৃত্বে আছে ভারত। তবে যে কোনও নিরাপত্তা কাঠামো কার্যকর করার জন্য সেই এলাকার চলতি কাজকর্ম সম্পর্কে তথ্য বা সচেতনতা প্রয়োজন। যে হেতু বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতার এলাকাটি মূলত উপসাগর, তাই সামুদ্রিক এলাকা সচেতনতা বা মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস (এম ডি এ) বিমস্টেকের জন্য এই সময়ে খুবই জরুরি।

এই সাতটির মধ্যে একটি হল ‘‌নিরাপত্তা’‌, যার মধ্যে আগের ‘সন্ত্রাসবাদ–বিরোধী ব্যবস্থা ও একাধিক দেশব্যাপী অপরাধ’‌, ‘বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা’‌ এবং ‘‌শক্তি’‌র পূর্ববর্তী স্বাধীন ক্ষেত্রগুলিকে একত্র করা হয়েছে, আর এর নেতৃত্বে আছে ভারত।

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আই এম ও) অনুসারে, এম ডি এ-কে সংজ্ঞায়িত করা হয় ‘‌সামুদ্রিক পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনও কাজকর্মের, যা সুরক্ষা, নিরাপত্তা, অর্থনীতি বা পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তার কার্যকর অনুধাবন’‌ হিসেবে। অতএব এটি হল এমন কোনও উদ্যোগ সম্পর্কে জ্ঞান যা প্রভাব ফেলছে বা সংঘটিত হচ্ছে সামুদ্রিক এলাকার উপর। সামুদ্রিক এলাকা বলতে বোঝায়  ‘‌সাগর, মহাসাগর, বা নৌযানযোগ্য জলপথ, যার মধ্যে সমুদ্র–সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপ, পরিকাঠামো, মানুষ, পণ্যসম্ভার, জাহাজ এবং অন্যান্য যানবাহনও অন্তর্ভুক্ত, তার সংক্রান্ত, তার উপরের, নিচের, সম্পর্কিত, সংলগ্ন বা সীমান্তবর্তী সমস্ত অঞ্চল ও বস্তুকে’‌। ভারতীয় নৌবাহিনী বলে থাকে এমডিএ তথ্য–সিদ্ধান্ত–কাজ চক্রের অন্তর্নিহিত। এটি যে কোনও দেশকে তার সামুদ্রিক স্থান জুড়ে নিরাপত্তা, অর্থনীতি বা পরিবেশের জন্য বিপদের মূল্যায়ন করার সুযোগ দেয়। সেই অনুযায়ী, বিমস্টেক দেশগুলির জন্য বঙ্গোপসাগরে কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য তাদের নিজেদের এবং সেই সঙ্গে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য জরুরি।

উপসাগরের বিপদ

বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়:‌ প্রথাগত বিপদ, অর্থাৎ যার উৎপত্তি কোনও রাষ্ট্র থেকে, এবং অ–প্রথাগত বিপদ, অর্থাৎ যা অ-রাষ্ট্রকেন্দ্রিক উৎস থেকে উদ্ভূত। শক্তি সম্পদের জন্য প্রতিযোগিতায় ভরা ভবিষ্যতের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গোপসাগর তার শক্তি বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ এবং সুবিশাল হাইড্রোকার্বন সম্পদের কারণে কৌশলগত মনোযোগের আলোয় ফিরে এসেছে। ঐতিহ্যগত নিরাপত্তা উদ্বেগের জন্ম দিয়ে শক্তির জন্য চিনের অন্বেষণের ফলস্বরূপ এই জলসীমার মধ্যে সেই দেশটির দৃঢ়সংকল্পিত উত্থান ঘটেছে, যা নৌপথগুলিতে নৌ–চলাচলের স্বাধীনতা অব্যাহত রাখার প্রশ্নে আশঙ্কার ছায়া ফেলেছে। অন্য অংশীদার দেশগুলি সম্ভাব্য একচেটিয়াকরণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং নৌপথের স্বায়ত্তশাসন সংরক্ষণের পাশাপাশি তাদের স্বার্থকে আরও এগিয়ে নিতে একত্র হওয়ার ফলে সম্পদ রাজনীতি উপসাগরে ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙক্ষার সঙ্গে সারিবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। তার ফলে এই এলাকাটি হয়ে উঠেছে কৌশলগত সহযোগিতা, প্রতিযোগিতা এবং সম্ভাব্য সংঘাতের একটি ক্ষেত্র।

বিষয়টিকে আরও জটিল করেছে বেশ কিছু অ–প্রচলিত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, যার প্রাদুর্ভাব উপসাগরেও কিছু কম নয়। এগুলিকে মানবসৃষ্ট এবং পরিবেশগত উদ্বেগের মধ্যে ভাগ করা যেতে পারে। উপসাগরে অবৈধ কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস, মাদকের ব্যবসা, জলদস্যু সমস্যা, অবৈধ ও নথিবিহীন অভিবাসন ও মানব পাচার। বিমস্টেকের সব দেশই হয় সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার, নয়তো সন্ত্রাসবাদের প্রজনন ক্ষেত্র। সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক মানি লন্ডারিং, মাদক ব্যবসা ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ২০২২ সালের গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স অনুসারে, বিমস্টেকের সমস্ত সদস্য দেশই সূচকে ১০০–র মধ্যে রয়েছে। এটাও মনে রাখতে হবে যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা আছে, আর ইন্দোনেশিয়া সামুদ্রিক সীমানা ভাগ করে ভারত ও তাইল্যান্ডের সঙ্গে। যে হেতু এই দেশগুলি সন্ত্রাস সূচকের শীর্ষে রয়েছে, তাই এর ফলে বিমস্টেক সদস্য দেশগুলির সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রেক্ষিতে দুর্বলতা বেড়ে যায়। ইতিমধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলের কিছু পকেটে জলদস্যুতা, সশস্ত্র ডাকাতি এবং মুক্তিপণের জন্য জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটছে, যেমন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে।

ঐতিহ্যগত নিরাপত্তা উদ্বেগের জন্ম দিয়ে শক্তির জন্য চিনের অন্বেষণের ফলস্বরূপ এই জলসীমায় সেই দেশটির দৃঢ়সংকল্পিত উত্থান ঘটেছে, যা নৌপথগুলিতে নৌ–চলাচলের স্বাধীনতা অব্যাহত রাখার প্রশ্নে আশঙ্কার ছায়া ফেলেছে।

উপসাগরে অবৈধ, অনিয়ন্ত্রিত ও অ–প্রতিবেদিত (আই ইউ ইউ) মাছ ধরা একটি ক্রমবর্ধমান বিপদ, বিশেষ করে পক প্রণালীতে, যা ভারত–শ্রীলঙ্কা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উত্তেজক হিসেবে কাজ করছে। এটি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশেও হয়ে থাকে, এবং উপসাগরের উপকূলে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটি সম্ভাব্য বাধা। অবৈধ ও নথিবিহীন অভিবাসনের সমস্যাও একটি বড় উদ্বেগ, কারণ রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসেন। তাঁদের কেউ কেউ যেমন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন, অন্যরা উপসাগরের অন্যত্র যাত্রা করেছেন, মারাত্মক রোগের শিকার হয়েছেন এবং সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে পাচার হয়েছেন। এই সংখ্যার বৃদ্ধি, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সংখ্যার বৃদ্ধি, বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলোর জন্য জরুরি উদ্বেগের বিষয়। অন্যদিকে পরিবেশগত উদ্বেগের ক্ষেত্রে উপসাগর তার অস্থিরতার জন্য কুখ্যাত, যা ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় এবং সুনামির কারণে উপসাগরের উপকূলরেখা বরাবর বসবাসকারী এবং কর্মরত মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। ১৮৯১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে ৪১টি তীব্র ঘূর্ণিঝড় এবং ২১টি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। এবং শুধু ১৯৯৬ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগে ৩১৭,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন

এই ধরনের উদ্বেগের বাইরে বিমস্টেকের ‘‌অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না–করার’‌ মৌলিক নীতি এবং বাণিজ্যের জন্য চিনের উপর এর সদস্যদের অত্যধিক নির্ভরতা নৌ–চলাচলের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ঐতিহ্যগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিপদের দিকে নজর দেওয়া থেকে বিরত রাখে। বরং এটি ‘‌নিরাপত্তা’‌র পরিধির অধীনে অ–প্রচলিত উদ্বেগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। যে হেতু এই বিপদগুলি একাধিক দেশ সংক্রান্ত, তাই এগুলির প্রতিকার বা মোকাবিলার জন্য সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন। এই ধরনের সহযোগিতা বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের মতো একটি সামুদ্রিক স্থানের জন্য প্রয়োজনীয়, কারণ এটির অর্ধবেষ্টিত গঠন, যার দৌলতে উপকূলীয় দেশগুলির একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলি (ই ই জেড)‌ সংলগ্ন হয় এবং কখনও কখনও একের সীমানা অপরকে ছাপিয়ে যায়। অতএব, উপসাগরের প্রায় ৮০ শতাংশই ই ই জেড, আর মাত্র ২০ শতাংশ উন্মুক্ত সাগর। তবে উপকূলবর্তীদের এত তাৎপর্যপূর্ণ  ই ই জেড থাকলেও তুলনামূলক ভাবে তাদের নজরদারির ক্ষমতা সীমিত। একটি ভাল ও সহযোগী এম ডি এ ক্রমাগত নজরদারির সুযোগ দেবে এবং বিদ্যমান বিপদগুলি শনাক্ত করতে সহায়তা করবে। সেই কারণেই সামগ্রিক এবং ব্যাপক এম ডি এ প্রয়োজন।

নেতৃত্বদানকারী দেশের সক্ষমতা এবং আঞ্চলিক সম্ভাবনা

বিমস্টেক–এর অধীনে ‘‌নিরাপত্তা’‌-র ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে ভারত আঞ্চলিক স্তরে এম ডি এ তৈরির জন্য প্রস্তুত। ২৬/১১ সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে দেশটি ন্যাশনাল মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস‌–এর মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে তার এম ডি এ সক্ষমতা বিকাশের চেষ্টা করছে, যা সমস্ত সামুদ্রিক এজেন্সি, উপকূলীয় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছে এবং ‘শিপিং ও মৎস্য ক্ষেত্রগুলির মতো অতিরিক্ত ডেটা উৎসগুলির সঙ্গে যোগাযোগের ’‌ মাধ্যমে ডেটা জোগাড় করে চলেছে৷  উপসাগরে এম ডি এ অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভারতের আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সুবিধাও রয়েছে। এই দ্বীপপুঞ্জকে প্রায়শই বিশ্বের সবচেয়ে কৌশলগত স্থানে অবস্থিত দ্বীপ–শৃঙ্খলগুলির মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়, কারণ এটি অনেকগুলি সামুদ্রিক যোগাযোগের পথকে সংযুক্ত করার এবং মালাক্কা প্রণালীর নিকটবর্তী হওয়ার ফলে পর পর অনেকগুলি চোকপয়েন্ট তৈরি করে।  সেই কারণে এই দ্বীপপুঞ্জের আঞ্চলিক নজরদারি সক্ষমতা বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপসাগরের কৌশলগত গতিশীলতার কারণে উপকূলবর্তীরা তাদের স্বার্থরক্ষায় একে অপরের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হওয়ায় এই বহুপাক্ষিক ফোরাম নতুন করে গতি পেয়েছে, বিশেষ করে নিরাপত্তার আলোকে।

দ্বিপাক্ষিক ভাবে বাংলাদেশ, মায়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের হোয়াইট শিপিং চুক্তি রয়েছে, যা আরও ভাল সচেতনতা চিত্র তৈরি করার লক্ষ্যে বাণিজ্যিক নৌচলাচল সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের সুযোগ করে দেয়। তাইল্যান্ডের সঙ্গেও একই ধরনের চুক্তি হওয়ার কথা আছে। ভারত তাইল্যান্ডকে একটি উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম স্থাপনে এবং মায়ানমারকে উন্নত নজরদারি ক্ষমতার জন্য রাডার এবং সোনার সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে। নজরদারির জন্য শ্রীলঙ্কা ব্যতীত সমস্ত বিমস্টেক দেশের সঙ্গে ভারত সমন্বিত টহল দেয়, আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নৌ–মহড়ার আয়োজনে যুক্ত হয়। অন্য বিমস্টেক দেশগুলি এখনও এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ২০১৮ সালে ভারতীয় নৌসেনা এই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তার প্রসারের জন্য ইনফরমেশন ফিউশন সেন্টার—ইন্ডিয়ান ওশন রিজিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছে। এর লক্ষ্য নির্বাচিত দেশগুলির সঙ্গে একটি সহযোগিতামূলক কাঠামোর অধীনে শিপিং ট্র্যাফিক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির উপর লক্ষ্য রাখা। এটা লক্ষণীয় যে যদিও সমস্ত বিমস্টেক দেশ ভারত মহাসাগর অঞ্চলের অংশ, তা হলেও শুধু মায়ানমারই এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

বহুপাক্ষিক ভাবে, বিমস্টেক–এর প্রাতিষ্ঠানিক সুপ্ততা, অপ্রতুল তহবিল এবং এর সদস্য দেশগুলির উদ্যোগের অভাবের কারণে এম ডি এ তৈরি করার প্রয়োজন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের আগে পর্যন্ত আলোচনা হয়নি। উপসাগরের কৌশলগত গতিশীলতার কারণে উপকূলবর্তীরা তাদের স্বার্থরক্ষায় একে অপরের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হওয়ায় এই বহুপাক্ষিক ফোরাম নতুন করে গতি পেয়েছে, বিশেষ করে নিরাপত্তার আলোকে। ফলস্বরূপ বিগত দশকে বিমস্টেক নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত কনভেনশন স্বাক্ষরের সীমা পেরিয়ে আরও সক্রিয় ভাবে কাজ শুরু করেছে। এটি গবেষণার জন্য ২০১৪ সালে সেন্টার ফর ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেছে, এবং সম্প্রতি যৌথ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুশীলন শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এর ‘নিরাপত্তা’‌ ক্ষেত্রটির অধীনে বেশ কয়েকটি উপগোষ্ঠী গঠন করা হয়েছে, যার প্রতিটি একটি নির্দিষ্ট দিক দেখাশোনা করার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে। যদিও এই উপগোষ্ঠীগুলিতে এম ডি এ–র সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই, তবে এই বিষয়টি আকর্ষণীয় যে উপগোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি হল গোয়েন্দা তথ্য আদান–প্রদান সংক্রান্ত, যেখানে শ্রীলঙ্কা নেতৃত্বে রয়েছে। এ পর্যন্ত এর চারটি বৈঠক হয়েছে। সহযোগিতাকে আরও গভীর করার জন্য বিমস্টেক ইনফরমেশন শেয়ারিং সেন্টার –এর বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করাও বিমস্টেকের কর্মসূচিতে রয়েছে। এর থেকেই প্রমাণ হয় বিমস্টেক–এর সদস্যরা যে সব বিপদের মোকাবিলা করতে চাইছে তার পরিপ্রেক্ষিতে তারা এম ডি এ–র মূল্য উপলব্ধি করে। তবে এটি বাস্তবায়নের জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করতে হবে, কারণ তথ্য বিনিময় ও বিপদ মূল্যায়নের একটি মৌলিক ভিত্তি ছাড়া অর্থবহ এবং কার্যকর নিরাপত্তা সহযোগিতার অগ্রগতি হতে পারে না। সর্বোপরি, বঙ্গোপসাগর এর প্রধান মঞ্চ হওয়ায় এম ডি এ বিমস্টেক–এর কাজের জন্য অপরিহার্য, এবং তা শুধু নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নয়, উন্নয়নের ক্ষেত্রেও।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury is Senior Fellow with ORF’s Neighbourhood Initiative. She is the Editor, ORF Bangla. She specialises in regional and sub-regional cooperation in ...

Read More +
Sohini Bose

Sohini Bose

Sohini Bose is an Associate Fellow at Observer Research Foundation (ORF), Kolkata with the Strategic Studies Programme. Her area of research is India’s eastern maritime ...

Read More +