Published on Aug 01, 2022 Updated 0 Hours ago

অগ্নিপথ প্রকল্পে যে সংস্কারের বিষয় রয়েছে, তা ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে সাহায্য করবে।

অগ্নিবীর প্রকল্প: শুধু অগ্নিপরীক্ষাই নিখুঁত ইস্পাত তৈরি করবে

এই প্রবন্ধটি ‘‌অগ্নিপথ স্কিম: র‌্যাডিক্যাল না অযৌক্তিক’‌ সিরিজের অংশ


অগ্নিপথ অবশ্যই ভারতীয় সেনাবাহিনীর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় একটি সাহসী, রূপান্তরমূলক সংস্কার। এর বৈশিষ্ট্যগুলিকেও ভারতের বৃহত্তর জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা দরকার। এই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি অসংখ্য, বিশেষ করে পরিবর্তনশীল জাতীয় নিরাপত্তা চিত্র এবং যুদ্ধের প্রকৃতি। সক্ষমতা তৈরি করা এবং যুদ্ধ করা, দুটোই আরও জটিল ও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে। এবং তা এতটাই, যে সারা বিশ্ব জুড়ে সামরিক বাহিনীগুলি ধ্যানধারণার ক্ষেত্রে ও কৌশলগত অপারেশনাল প্যারাডাইমে, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে, এবং নতুন প্রতিভা সন্ধানের প্রয়াসে মানবসম্পদের ক্ষেত্রেও ব্যাপক সংস্কার করছে। এই সত্যকে চিহ্নিত করাও বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে যে ভারতে প্রতিরক্ষা যখন বৈদেশিক নীতির ছায়া থেকে বার হতে শুরু করেছে (যা একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা), ঠিক সেই সময় প্রস্তাবিত সংস্কারটি হল ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পরিবর্তনের ধারণা, পরিকল্পনা এবং তা রূপায়ণ করার ক্ষমতার পরীক্ষা। এই বিষয়টিই চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে প্রবর্তন করে সি ডি এস/ডি এম এ, একজন ক্ষমতাপ্রাপ্ত চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ এবং সামরিক বিষয়ক বিভাগ, যার লক্ষ্য বৃহত্তর জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে সক্ষম একটি প্রধান কাঠামোগত সংশোধন। সুতরাং, অগ্নিপথের ধারণাটির মধ্যেই একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত রয়েছে।

সারা বিশ্বে আরও উন্নত মডেল তৈরি করা হয়েছে অনলাইন বাছাই এবং আরও ভাল আকাঙ্ক্ষা–প্রয়োজন সমন্বয়ের মাধ্যমে, যাতে প্রার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর কাজের প্রয়োজনের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম মেলবন্ধন নিশ্চিত করা যায়।

কেন্দ্রীয় নীতিসমূহের পরিপ্রেক্ষিতে, প্রকল্পটির তিনটি মডিউল রয়েছে: একটি নিয়োগ মডিউল, একটি বাহিনীতে থাকাকালীন প্রশিক্ষণ বা ইন–সার্ভিস ট্রেনিং মডিউল এবং একটি পুনর্ভুক্তি/প্রস্থান মডিউল—প্রতিটিই এক একটি বড় সংস্কার উদ্যোগ যা যোগ্যতা ও লড়াইয়ের ফলাফলকে সর্বাধিক করতে চায়। বর্তমান ভারতীয় নিয়োগপদ্ধতিটি কিছুটা সাবেকি, যা শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা ও মেডিক্যাল ফিটনেসের ত্রয়ীর উপর ভিত্তি করে তৈরি। সারা বিশ্বে আরও উন্নত মডেল তৈরি করা হয়েছে অনলাইন বাছাই এবং আরও ভাল আকাঙ্ক্ষা–প্রয়োজন সমন্বয়ের মাধ্যমে, যাতে প্রার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর কাজের প্রয়োজনের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম মেলবন্ধন নিশ্চিত করা যায়। অগ্নিপথ কাঠামোয়  আমরাও একটি আরও সূক্ষ্ম মডেল গ্রহণ করছি। একই ভাবে, ইন–সার্ভিস ট্রেনিং আধুনিক ব্যবস্থার সঙ্গে মিশ্রিত করা হচ্ছে:‌ ব্যস্ততাহীন, দীর্ঘায়িত অতীতের মডেলগুলির পর্যালোচনা করা হয়েছে, তাদের দৈর্ঘ্য আদর্শ জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে, এবং এই ভাবে সাশ্রয় করা অর্থ সিমুলেটর, এ আর/ভি আর, এ আই ল্যাব, ডিজিটাল পাঠক্রম ইত্যাদির মতো মূল্য সংযোজনে বিনিয়োগ করা হবে যাতে একটি অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ কাঠামো তৈরি করা যায়। এটি করার সময় আমাদের আই টি আই–এ উপলব্ধ এবং ‘‌স্কিল ইন্ডিয়া’‌র তৈরি করা ক্ষমতা ব্যবহার করা হবে, যাতে  প্রশিক্ষণের আদর্শ সময়কাল নির্ধারণ এবং সর্বাধিক ফলাফল অর্জন করা যায়। সামগ্রিক ভাবে, শুধু একটি সংস্কারকৃত নিয়োগপদ্ধতি গুণগত ভাবে আরও ভাল প্রবেশই নিশ্চিত করবে না, সেই সঙ্গে পরিমার্জিত প্রশিক্ষণ মডিউলগুলি নিশ্চিত করবে যে অগ্নিবীর একটি উন্নততর পণ্য। যুদ্ধে মোতায়েন করার জন্য ব্যয় করা চারটি বছর অনন্য বিশিষ্টতা নিয়ে আসবে, আর একটি সুপরিকল্পিত পুনর্নথিভুক্তি প্রকল্প নিশ্চিত করবে যে শুধুমাত্র সেরার সেরাদের সেনাবাহিনীতে রাখা হবে। পরবর্তীতে ঘোষিত বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে যে বাকি অগ্নিবীরদের প্রস্থান হবে সুরক্ষিত (সেবানিধি) এবং অ্যাকাডেমিক ও বৃত্তিমূলক ভাবে সজ্জিত (ব্রিজিং কোর্স, দক্ষতা ও দক্ষতার শংসাপত্র এবং সেই সঙ্গে এন আই ও এস, ইগনু, আর আর ইউ এবং এমন আরও নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশাধিকার);‌ আর কাজ চাইলে সরকারি, আধাসামরিক, ভারতীয় উপকূলরক্ষী, অসম রাইফেলস, ডি পি এস ইউ, এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে সহজে প্রবেশের সুযোগ থাকবে। তা ছাড়া অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এ আই সি টি ই), ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এন এস ডি সি), এবং ন্যাশনাল  কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (এন সি ভি ই টি) দ্বারা সামরিক গুণাবলি/দক্ষতার স্বীকৃতি আরও মূল্য সংযোজনে সক্ষম করবে। যে অগ্নিবীরদের মধ্যে উদ্যোগপতি হওয়ার প্রবণতা থাকবে, তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য সরকারি ব্যাঙ্ক, বিমা সংস্থা ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে উপযুক্ত ঋণের ব্যবস্থা থাকবে। গত ৭০ বছরে ভারতীয় সামরিক বাহিনী ক্রমাগত চেষ্টা করেও যা পায়নি, তা মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।

যুদ্ধে মোতায়েন করার জন্য ব্যয় করা চারটি বছর অনন্য বিশিষ্টতা নিয়ে আসবে, আর একটি সুপরিকল্পিত পুনর্নথিভুক্তি প্রকল্প নিশ্চিত করবে যে শুধুমাত্র সেরার সেরাদের সেনাবাহিনীতে রাখা হবে।

প্রজ্ঞা এবং অধ্যবসায়ের সঙ্গে অগ্নিপথকে এমন একটি কর্মশালা হিসেবে বিকশিত করা যেতে পারে যাতে এটি সর্বোত্তম ইস্পাত তৈরি করে। সেটাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কাজেই অগ্নিবীরদের ক্ষমতায়ন প্রয়োজন এমন ভাবে যে তারা নিছক নিয়োগযোগ্যই হবে না, বরং চাকরির বাজারে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে। ব্র্যান্ড অগ্নিবীরকে দৈনন্দিন বাস্তবতায় রূপান্তরিত করার দায় অবশ্যই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক্তিয়ারের থেকে বৃহত্তর;‌ তাই এগিয়ে আসতে হবে আরও অনেক মন্ত্রক, কর্পোরেট সংস্থা, স্টার্ট-আপ বাস্তুতন্ত্র, একাডেমিয়া এবং নীতি আয়োগের মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে। আমরা যদি দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে উদ্যোগটি চালাই, তাহলে ভবিষ্যতে একটি জেলায় একজন এসপি তাঁর কনস্ট্যাবুলারিতে এবং ডিএম তাঁর কর্মী–বাহিনীতে অগ্নিবীরদের অনেক বড় অংশ চাইবেন। অগ্নিবীর ছোট বা বড় শহরে একই ভাবে ছোট এবং বড় ব্যবসার জন্য পছন্দের হয়ে উঠবে।

যোগ্যতার প্রবাহপথ এভাবে কাজ করবে:‌ প্রথমে উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণদের সেনাবাহিনীতে টানা হবে। সেনাবাহিনী তাদের দক্ষ করে তুলবে, এবং বাহিনীতে থাকার / তালিকাভুক্তির জন্য  নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অগ্নিবীরদের আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্প করে তুলবে। যারা চলে যাবে তাদের অন্যেরা নিতে চাইবে;‌ অর্থাৎ তাদের চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না, তারাই যোগ্য প্রার্থী হয়ে উঠবে।

প্রকল্পটির সুস্পষ্ট ভাল অভিপ্রায় সত্ত্বেও এটি কিন্তু নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের ইউনিট এবং ফরমেশনগুলির লড়াইয়ের কার্যকারিতা যেন বাড়ে, এবং কোনও ভাবেই কমে না যায়। ইতিমধ্যে কিছু আশঙ্কার সমাধান করা হয়েছে; অন্যগুলির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নেতৃত্বের সঙ্গে অনুগামীদের অনুপাতের একটি ভাল ভারসাম্য, আর সেই সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের প্রোফাইলের সঠিক মিশ্রণ এর একটি দিক। এই ধরনের সাহসী ও রূপান্তরমূলক সংস্কারে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে, কিন্তু কোনওটিই এমন নয় যা অতিক্রম করা যাবে না।

সেনাবাহিনী তাদের দক্ষ করে তুলবে, এবং বাহিনীতে থাকার / তালিকাভুক্তির জন্য  নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অগ্নিবীরদের আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্প করে তুলবে।

কোনও বাধা নিশ্চিত ভাবেই অনতিক্রম্য নয়, বিশেষ করে যখন প্রকল্পটি আমাদের অত্যন্ত শক্তিশালী সার্ভিস চিফ, প্রতিরক্ষা সচিব, এন এস এ, মাননীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পি এম ও, রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী, এম এইচ এ এবং অন্যান্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সক্ষমকারী মন্ত্রকের সমর্থন পেয়েছে। ব্যবসা–বাণিজ্যের জগতের কিছু শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ও সংস্থার সমর্থনও পাওয়া গিয়েছে। এদের অনেকের মধ্যে আছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা, হর্ষ গোয়েঙ্কা, কিরণ শ, সঙ্গীতা রেড্ডি, এল এন্ড টি, অশোক লেল্যান্ড, ভারত ফোর্জ ও অ্যামিটি গ্রুপ।

অগ্নিপথ একটি সম্ভাব্য গেমচেঞ্জারও, কারণ এটি অসামরিক ও সামরিক, শ্রেষ্ঠত্বের এই দুটি ক্ষেত্রের মধ্যেকার গ্রানাইটের দেওয়ালগুলিকে ভেঙে ফেলতে সাহায্য করবে। এটা ক্ষেত্রনির্দিষ্ট সীমা পেরোতে সাহায্য করবে, পৃথকীকৃত ভান্ডারগুলির পতন ঘটাবে, এবং প্রতিভার প্রবাহ শক্তি জোরদার করবে। এই আন্তঃপ্রবাহ সামরিক বাস্তুতন্ত্রের অনেকগুলি সুপ্ত বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করতে সাহায্য করবে। বৃহত্তর রাজনৈতিক ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থা এটা আবিষ্কার করবে যে সামরিক বাহিনী নিছক নিরাপত্তারক্ষীদের একটি গোষ্ঠীর চেয়ে অনেক বেশি কিছু:‌ আমাদের সৈন্যদের একটি বড় অংশ সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনা, আই টি, কর্পোরেট অপারেশন, প্রশাসন, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, কমিউনিকেশনস, ইকুইপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার অপারেশন, অফিস পদ্ধতি, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদিতে অত্যন্ত দক্ষ। তাদের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি, যেমন আনুগত্য, উৎসর্গ, দায়িত্বমনস্কতা, দায়বদ্ধতা ও সহযোগিতার প্রখর বোধ এবং সংকট ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, সহজলভ্য নয়। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষতাগুলি ব্যবহৃত হওয়ার অপেক্ষায়  রয়েছে।

এই বিষয়টি জোর দিয়ে বলা দরকার যে সামরিক পেশা ব্যবসা, আইন বা চিকিৎসা সহ অন্য যে কোনও পেশার মতোই প্রশস্ত ও গভীর। এর পণ্যগুলি মস্তিষ্ক, শক্তি, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞার একত্রিত বৈশিষ্ট্য। অগ্নিবীর সফল হলে অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইজরায়েল, চিন এমনকি তুরস্কের মতোই সামরিক বাহিনী থেকে আরও বেশি প্রতিভা আবির্ভূত হবে, এবং সামরিক পেশাদারেরা (উপর থেকে নিচু তলার সকলেই) ব্যবসা, প্রযুক্তি উদ্যোগ, অর্থ, প্রশাসন, একাডেমিয়া ও বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলি সহ বহু জায়গায় তাঁদের উপযোগিতা প্রমাণ করবেন। সরস্বতী (আমাদের শিক্ষার কেন্দ্র), লক্ষ্মী (সম্পদ সৃষ্টি ও ব্যবসার কেন্দ্র), এবং দুর্গার (ক্ষমতার উপকরণ) সংমিশ্রণ ভারতীয় রাষ্ট্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: প্রতিভা ও মেধাতন্ত্রের রাজত্ব শুরু হবে, এবং আমাদের কৌশলগত ওজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ করতে সাহায্য করবে।

অগ্নিপথ যখন আত্মনির্ভরতার সঙ্গে মিলিত হবে (বৃহত্তর ক্ষেত্রে এবং আত্মরক্ষায় আত্মনির্ভরতা), তখন তা আরও বেশি ভাল ফল প্রদর্শন করবে; এটি মানব ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপের বিস্তৃত অংশ জুড়ে উদ্ভাবন, শক্তি ও উদ্যোগের চেতনা উন্মোচন করবে। এটি আমাদের অতীতের দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে:‌ বেতন, পেনশন ও নির্ভরতার গর্ভ থেকে বার করে এনে সরকারকে সঙ্কুচিত হওয়ার পরিবর্তে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করবে, ঠিক যেমনটি হওয়া উচিত।

অগ্নিবীর সফল হলে অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইজরায়েল, চিন এমনকি তুরস্কের মতোই সামরিক বাহিনী থেকে আরও বেশি প্রতিভা আবির্ভূত হবে, এবং সামরিক পেশাদারেরা (উপর থেকে নিচু তলার সকলেই) ব্যবসা, প্রযুক্তি উদ্যোগ, অর্থ, প্রশাসন, একাডেমিয়া ও বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলি সহ বহু জায়গায় তাঁদের উপযোগিতা প্রমাণ করবেন।

সশস্ত্র বাহিনী কখনও কখনও পরিবর্তন কার্যকর করার এবং বিবর্তনের বক্ররেখা থেকে এগিয়ে থাকার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করে — যখন আমরা অফিসারদের জন্য টেকনিক্যাল এন্ট্রি স্কিম (টিইএস) চালু করি তখনও একই রকম উদ্বেগ ছিল। আজ, টি ই এস থেকে বেরনো অফিসারেরা এন ডি এ–র প্রাক্তন ছাত্রদের গুরুতর চাপে ফেলে দিয়েছে: তারা প্রকৃতপক্ষে প্রতিযোগিতামূলক ভারসাম্যের মধ্যে রয়েছে। মহিলা অফিসারদের ক্ষেত্রেও সমান আপত্তি উঠেছিল; আজ, ও টি এ–তে মহিলা ক্যাডেটদের পারফরম্যান্স এবং সি এম পি সেন্টার, বেঙ্গালুরু থেকে স্নাতক হওয়া মহিলারা সমস্ত প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের বিরাট সাফল্যেরও পূর্বসূরি ছিল ব্যাপক শঙ্কা; অথচ ভারতীয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে তার অসাধারণ অবদান আজ বিতর্কের ঊর্ধ্বে।

অগ্নিপথ যদি গতি পায় এবং তার পূর্ণ স্থিতি অর্জন করে, তবে কালান্তরে বৃহত্তর ভারতীয় সমাজ কিছু অনন্য উপযোগবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে পরিচিত হবে — শৃঙ্খলা, প্রেরণা, আমরা–করতে–পারি মনোভাব, কাজ করে দেখানো, উদ্ভাবন এবং উদ্যোগ — এবং তা শুধু আমাদের দৈনন্দিন অস্তিত্বকে আরও বেশি উৎপাদনশীল করে তুলবে না, ভারতীয় সমাজ যখন কোনও সংকটে পড়বে তখন তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

তাই অগ্নিপথ প্রকল্পের শক্তি ও উদ্দেশ্য শান্ত ভাবে ভেবে দেখতে হবে এবং বুঝতে হবে, এবং তারপরে সুদৃঢ় ভাবে তা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.