Author : Stuart Rollo

Published on Mar 25, 2023 Updated 0 Hours ago
টেকনোপলি এবং তার থেকে অসন্তোষ

এই নিবন্ধটি রাইসিনা জার্নাল ২০২৩’এর একটি অধ্যায়।


প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সুবিধা ও ক্ষতি সম্পর্কে আলোচনা প্রায়শই নির্দিষ্ট প্রযুক্তির গুণাগুণ বা অসুবিধাগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, কারণ সেগুলি মানুষের জীবনকে কমবেশি সহজ, দক্ষ, আরামদায়ক ও নিরাপদ করে তোলে। কোনও প্রদত্ত প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের কারণে ঠিক কে উপকৃত হয় এবং কাকে মূল্য দিতে হয় তার মধ্যে পার্থক্য অনুসন্ধান করে এমন আলোচনা সাধারণত হয় না। আরও বিরল হল সেই গভীর রূপান্তরগুলির অনুসন্ধান যা কোনও বিশেষ প্রযুক্তির প্রভাবের ফলে নয়, ঘটে থাকে মানব সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সামগ্রিক যৌক্তিকতা প্রয়োগের ফলে। নিল পোস্টম্যানের ‘‌টেকনোপলি’‌ বিকাশের ধারণা — এমন একটি সমাজ যা সমস্ত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকে প্রযুক্তির ইচ্ছার অধীন করে — এই বিষয়টিকে বিশেষভাবে স্পষ্ট করে।

এই ধরনের আলোচনা বিরল একটি সহজ কারণে, এবং তা হল টেক–ইউটোপিয়ানদের অনেক অনুমান এক অর্থে (এখন নব্য) উদারনৈতিক পুঁজিবাদের সূত্রে পালিত হয়েছে, যা কিনা একটি প্রযুক্তি–সমাজে আমাদের রাজনৈতিক উত্তরণের নিয়ন্ত্রক আদর্শ হিসাবে কাজ করেছে। টেক–ইউটোপিয়ানরা একটি আরোহী রেখা দেখতে পান, যার সূচনা সাধারণভাবে এনলাইটেনমেন্ট–এর সময় থেকে, এবং তারপর শিল্প, কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবহণ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রজুড়ে ধারাবাহিক ও জটিল প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে যা আরও এগিয়ে সংযুক্ত, পরস্পর নির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বিশ্বের দিকে চালিত করেছে। প্রযুক্তির সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত অতি–উৎসাহীরা এমনকি  বৈশ্বিক ব্যবস্থায় এর অনুমিত শান্ত প্রভাবের দিকে ইঙ্গিত করেন, এবং ঘোষণা করেন: প্রাচুর্য শান্তি আনে।[১]

টেক–ইউটোপিয়ানিজম মূলত হুইগের ইতিহাস তত্ত্বের একটি ডিজিটাল ধারাবাহিকতা, অর্থাৎ প্রযুক্তির ইতিবাচক ও আলোকিত প্রভাবের একটি নির্ধারণমূলক মূল্যায়ন। কয়েক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি শিল্পের হাবগুলি থেকে বিকীর্ণ এই ধারণাটি বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রচলিত হয়ে উঠেছে। টেক–ইউটোপিয়ানরা প্রযুক্তিকে মানবিক লক্ষ্য অর্জনের সরঞ্জাম হিসাবে দেখেন না; বরং মনে করেন প্রযুক্তিই আরও নিখুঁত একটি মানব সমাজ গঠন করে, যার গঠন প্রযুক্তি ছাড়া অসম্ভব ছিল। এইভাবে সমাজকে শুধু কাজ করার হাতিয়ার ও যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল বলেই ধরা হয় না, বরং সেগুলির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যুক্তির ভিত্তিতে সমাজের মূল্যবোধ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে মনে করা হয়। চিন্তার এই পদ্ধতিটি, যেমনটি পরে আরও বিশদে অন্বেষণ করা হবে, শুধু সামাজিক ও অর্থনৈতিক নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যত্র বিদেশনীতি ও নিরাপত্তা নীতিকেও রূপ দিয়েছে।

প্রযুক্তির দ্বারা এত গভীরভাবে প্রভাবিত একটি সাংস্কৃতিক জলবায়ুতে এর অগণিত ক্ষতিকারক প্রভাবগুলির অনেকাংশে অবমূল্যায়ন করা হয়। প্রযুক্তির প্রভাব, যেমনটি নিল পোস্টম্যান উল্লেখ করেছেন, কেবল তা যা করে (ভাল বা খারাপ) তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তা যা বিনাশ করে তার মধ্যেও বিস্তৃত।[২] প্রকৃতপক্ষে, ১৮ শতকে পশ্চিম ইউরোপে প্রযুক্তির সামাজিক কেন্দ্রীকরণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রচুর পরিমাণে এমন ক্ষতিকারক কাজ ও বিনাশ ঘটছে। জৈব, স্থানীয় ও বৈচিত্র্যময় সামাজিক জীবনকে বাজারের যুক্তির ভিত্তিতে গঠিত একটি ঘেরাটোপে আবদ্ধ ও অভিন্ন ধাঁচের শিল্প সমাজে পরিণত করা হয়েছে, যার পরিণতিতে তৈরি হয় শহুরে কোলাহল, ঘটে সামাজিক অবক্ষয় এবং জীবনের মানের উল্লেখযোগ্য শারীরিক, বস্তুগত ও আত্মিক পরিবর্তন হয়। পশ্চিমী শিল্পায়নকারী দেশগুলিতে গড় শ্রমিকের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। পশ্চিমের এই নেতিবাচক প্রভাবগুলি আরও ভয়ঙ্কর হয়েছে ঔপনিবেশিক বিশ্বে, যেখান থেকে শিল্পায়ন ও নতুন প্রযুক্তিগত সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় ভূখণ্ড ও কাঁচামাল সরবরাহ করা হত। এই রূপান্তরকে সমর্থন করার বোঝা বহনের জন্য বৈশ্বিক পরিধিতে স্থানীয় জনগণ বিশাল মূল্য দিয়েছে তাদের জীবন, বস্তুগত সম্পদ ও সাংস্কৃতিক অখণ্ডতার পরিপ্রেক্ষিতে। প্রযুক্তিনির্ভর সমাজের ইমারত, এবং তা সত্যিকারের যে সব আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে, তা এই ভিত্তির উপর নির্মিত হয়েছিল।[৩]

টেকনোপলির বিকাশ

মানব সমাজ তার সমগ্র ইতিহাসে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, এবং সভ্যতা নির্মাণের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে অভিনব প্রযুক্তির আবিষ্কার, উৎপাদন ও বিনিময়। চিন, ভারত ও পশ্চিম এশিয়ায় উচ্চ প্রযুক্তিগত, জটিল ও বৈজ্ঞানিকভাবে উন্নত সমাজগুলি সহস্রাব্দ ধরে বিদ্যমান। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সরঞ্জাম ও বস্তুগত প্রক্রিয়াগুলির দীর্ঘ ও অবিরত বিকাশের সঙ্গে জড়িত থাকা সত্ত্বেও, এবং সেইসঙ্গেই গণিত, ধাতুবিদ্যা ও রসায়নের মতো ক্ষেত্রগুলিতে যুগ–পরিবর্তনকারী একক অগ্রগতি ঘটানো সত্ত্বেও, এই সমাজগুলিকে কখনই তাদের প্রযুক্তিগত বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সেইভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি যেভাবে পশ্চিম, ও ক্রমবর্ধমানভাবে সমগ্র আধুনিক বিশ্ব, হয়ে এসেছে।

প্রযুক্তি এখন উৎপাদনশীল ও বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের প্রায় সীমাহীন যে সুযোগ নিয়ে আসে তা সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় রীতিনীতি, প্রথা ও জীবনযাপনের উপায়গুলিকে লঙ্ঘন করে, কারণ তা অন্যথায় প্রযুক্তিগত বিকাশকে ব্যাহত করবে। লুইস মামফোর্ড ১৯৩০–এর দশকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই ঘটে যাওয়া একটি প্রযুক্তিগত সমাজে রূপান্তরের মূল্যায়ন করে পরিস্থিতিটি এভাবে বর্ণনা করেছেন: ‘‌‘‌আমাদের বর্তমান সভ্যতার প্রায় প্রতিটি বিভাগেই দেখা যায় বিস্তৃত পণ্য উৎপাদনের অভ্যাস তা সেগুলি প্রয়োজনীয় হোক বা না হোক, উদ্ভাবনগুলিকে ব্যবহারের অভ্যাস তা সে কাজের হোক বা না হোক, এবং ক্ষমতার প্রয়োগ তা সে কার্যকর হোক বা না হোক।”[৪]

মামফোর্ড বর্ণিত প্রযুক্তির প্রভাবগুলি ১৯৩০–এর দশকের তুলনায় এখন অনেক বেশি তীব্র, বিস্তৃত ও বিশ্বব্যাপী ব্যাপ্ত হয়েছে। ইতিহাসজুড়ে সমস্ত সমাজই সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির দ্বারা গঠিত হয়েছে, এবং তাদের রীতিনীতি ও সংস্কৃতি সেগুলিকে ঘিরেই পুনর্নির্মিত হয়েছে। প্রাক–আধুনিক বিশ্বে এটি একটি ধীরগতির এবং আরও গতিশীল প্রক্রিয়া হিসাবে ঘটেছে, যেখানে সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিগুলি এবং তাদের ব্যবহার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নিয়ম দ্বারা দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ ছিল। শুধু পুঁজিবাদ এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের নিরবচ্ছিন্ন ঢেউয়ের অধীনে সামাজিক অনুশীলন ও জীবনযাপনের উপায়গুলি, যা একসময় স্থিতিশীল ও দৃঢ় ছিল, তা বাতাসে মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে, এবং কোনও গুরুতর প্রতিরোধ শক্তি না–থাকায় সমাজ ও সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করার হুমকি দিচ্ছে প্রযুক্তি ।

ইতিহাসবিদ ফার্নান্দ ব্রদেল বিশ্বাস করতেন যে প্রাক–আধুনিক বিশ্বে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তির ‘‌ধীরগতিসম্পন্ন, নিঃশব্দ, ও জটিল’‌ মিশ্রণ নির্ধারণ করত কীভাবে ও কখন প্রযুক্তি গৃহীত হবে।[৫] প্রযুক্তির সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের অধ্যয়নে নেতৃস্থানীয় তাত্ত্বিকেরা একমত যে ১৯ শতক থেকে এই গতিশীলতা উল্টে গিয়েছে। আজ যুক্তিগত শক্তি ও উদ্ভাবনই ক্রমাগত সমাজকে আকৃতি দিচ্ছে ও তার পুনর্নির্মাণ করছে, এবং একটি নতুন ধরনের সমাজ তৈরি করছে যাকে নিল পোস্টম্যান ‘টেকনোক্র্যাসি’‌ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। পোস্টম্যানের মতে, টেকনোক্র্যাসিতে সব কিছুকে অবশ্যই কিছু মাত্রায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য পথ ছেড়ে দিতে হয়, এবং সামাজিক ও প্রতীকী জগৎগুলি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের অধীনস্থ হয়ে পড়ে। সংস্কৃতিতে  একীভূত হওয়ার পরিবর্তে প্রযুক্তি ও সরঞ্জামগুলি বিদ্যমান সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে এবং তাকে প্রতিস্থাপিত করে। ফলস্বরূপ ঐতিহ্য, নিয়ম, পুরাকথা, রাজনীতি, আচার–অনুষ্ঠান ও ধর্মসহ প্রাক–টেকনোক্র্যাটিক বিশ্বের সমস্ত উপাদানকে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হয়।[৬]

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের যৌক্তিকতায় আবদ্ধ টেকনোক্র্যাসি ‘‌প্রগতি’‌ হিসাবে এখনও পুরোপুরি সামাজিক বা প্রতীকী জগৎকে অন্তর্ভুক্ত করে না।[৭] যাই হোক, ডিজিটাল বিপ্লবের আগমনের সঙ্গেসঙ্গে পোস্টম্যান পশ্চিমকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে, একটি টেকনোক্র্যাসি থেকে একটি টেকনোপলিতে রূপান্তরিত হতে দেখেছিলেন, যা এমন একটি সমাজ যা সম্পূর্ণরূপে যান্ত্রিকতার যুক্তি ও প্রযুক্তিগত পদ্ধতির ভিত্তিতে মানবতাকে এবং বিশ্বে তার গুরুত্বকে বোঝার চেষ্টা করে।  টেকনোপলি অবস্থার অধীনে প্রযুক্তির সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্রদেল কথিত ‘ধীরগতির শক্তি’‌র যে কোনও চিহ্নকে প্রতিস্থাপিত করা হয় প্রযুক্তির আরও দ্রুত অগ্রগতি দিয়ে। সেখানে প্রযুক্তিকে কোনও লক্ষ্যসাধনের উপায় নয়, বরং শেষ লক্ষ্য হিসাবে, এবং যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংগঠনের সমস্ত প্রশ্নের সমাধান হিসাবে দেখা হয়। পোস্টম্যানের ভাষায়, ‘‌প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির সার্বভৌমত্বের কাছে সমস্ত ধরনের সাংস্কৃতিক জীবনকে মাথা নোয়াতে’‌ হয়।”[৮]

টেকনোপলি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

বিশেষ করে তার পরমার্থিক আবাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র টেকনোপলির মতাদর্শ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি গঠনেও প্রয়োগ করেছে। শীতল যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভূ–রাজনীতির মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রযুক্তি–ইউটোপিয়ানিজম বিশিষ্ট ছিল, যার উদাহরণ ১৯৮৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের দাবি:‌  ‘‌মাইক্রোচিপের ডেভিড দ্বারা সর্বগ্রাসবাদের গলিয়াথকে পরাভূত করা হবে।”[৯] কিন্তু শীতল যুদ্ধের অব্যবহিত পরবর্তী যুগে, যখন ‘‌ইতিহাসের সমাপ্তি’‌র ধারণা জোরদার হল এবং অর্থনীতি ও শাসনের মার্কিন মডেলের স্থায়ী বিজয় হয়েছে বলে দাবি করা হল, তখন বৈদেশিক বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে এইটাই হয়ে দাঁড়াল নীতিগত গোঁড়ামি। এই বিদেশনীতি তখন প্রযুক্তি ও মুক্ত বাজার পুঁজিবাদের একটি শক্তিশালী মিশ্রণের মাধ্যমে  বিশ্বের পুনর্বিন্যাস ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

১৯৯০–এর দশকে চিনের প্রতি ক্লিনটন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে এই বিষয়টি সবচেয়ে স্পষ্ট ছিল। সেই সময় তিয়ানানমেন স্কোয়ার বিক্ষোভের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে আরও বৈশ্বিক ব্যবসা, বিদেশি বিনিয়োগ, ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক যোগাযোগের জালিকার সঙ্গে প্রযুক্তিগত একীকরণ পশ্চিমের চোখে চিনের ভাবমূর্তিকে নতুন আকার দেবে। জানুয়ারি ২০০০ সালে চিনের একটি ইন্টারনেট ক্যাফে পরিদর্শন করার পরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন মন্তব্য করেছিলেন যে এটি তাঁর ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অমঙ্গলজনক দৃশ্য ছিল: “মানুষ যত বেশি জানবে, তাদের তত বেশি মতামত থাকবে; এবং ততই বেশি গণতন্ত্র ছড়িয়ে পড়বে।”[১০]

ক্লিনটন, বুশ জুনিয়র, ও ওবামা প্রশাসন বিভিন্ন উপায়ে নিজেদের বৈদেশিক নীতি কার্যকর করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা সকলেই প্রযুক্তির বিস্তার, অর্থনৈতিক আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি, মধ্যবিত্ত শ্রেণির বৃদ্ধি এবং গণতন্ত্রে রূপান্তরের মধ্যে একটি কার্যকারণগত  যোগসূত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। এটি সম্ভবত ২০১০ সালে সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছেছিল, যখন তৎকালীন সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন ইন্টারনেট স্বাধীনতাকে মার্কিন বিদেশনীতির মূল ভিত্তি করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন: “সাইবার গতিতে তথ্যের স্বাধীনতা পশ্চাদপদ ও দমনমূলক সমাজ ও শাসনগুলিকে আধুনিক উদারতাবাদের অসাধারণত্বে উন্নীত করবে।”[১১] এই প্রযুক্তি–উচ্ছ্বলতা এখন ক্রমবর্ধমানভাবে সংশয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বাক–স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা ও সংগঠিত আলোচনামূলক যোগাযোগের ক্ষমতা এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য প্রকাশ্যে ও গোপনে সেন্সরশিপ নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে।

ভূ–রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে, যা অংশত ১৯৯০–এর দশকে চিনের সঙ্গে অর্থনৈতিক একীকরণের কারণে তৈরি হওয়া আর্থিক সুযোগগুলি নিতে আমেরিকার অত্যন্ত আগ্রহের ফলে সৃষ্ট, বিশ্ব অর্থনীতির দুটি প্রতিযোগী মেরু হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে এক প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়েছে। এখন একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্ব নেতৃত্বের অবস্থানের দুই সম্ভাব্য দাবিদার হিসাবে এই দুই দেশ আবির্ভূত হয়েছে। এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে আপেক্ষিক অর্থনৈতিক শক্তি নির্ধারিত হবে নেটওয়ার্কযুক্ত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আধিপত্যের ভিত্তিতে।[১২] আগামী কয়েক দশকে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রথাগত অর্থনীতির তুলনায় বৃদ্ধির হার অনেক বেশি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, এবং এই জায়গাটিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রবল হয়ে উঠবে। চলতি শতাব্দীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও কোয়ান্টাম উদ্ভাবনের মতো মূল প্রযুক্তিগুলিকে বিশ্বব্যাপী শক্তি ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে গণ্য করা হয়। চিন এগুলিকে প্রযুক্তির এমন ক্ষেত্র হিসাবে দেখে যেখানে সে ধীরে ধীরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে যেতে পারে, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে তাদের উচ্চপ্রযুক্তি অর্থনীতির ক্ষেত্র হিসাবে দেখে, যেখানে তার নিজস্ব ক্রমাগত আধিপত্যের ফলে চিনকে স্থায়ীভাবে একটি নিম্নস্তরের শিল্প শক্তি মর্যাদায় অবনমিত করা সম্ভব।

ইউএস সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির বর্তমান পরিচালক উইলিয়াম বার্নস স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তাঁর দৃষ্টিতে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা আগামী বছরগুলিতে চিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রধান ক্ষেত্র হবে।[১৩] চিন ইতিমধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নেতৃত্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিস্থাপিত করেছে। গত ৪০ বছরে চিন একটি প্রান্তিক অর্থনৈতিক বহিরাগত শক্তি থেকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি (ক্রয়ক্ষমতা সমতার হিসাবে), ব্যবসায়ী, প্রস্তুতকারক ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ধারকে রূপান্তরিত হয়েছে।[১৪] তবে অস্ত্র তৈরি, মহাকাশ প্রকৌশল ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক যোগাযোগ সহ ২১ শতকের অর্থনীতির অনেকগুলি কৌশলগত শিল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বব্যাপী নেতা হিসাবে রয়ে গেছে। চিনা অনুকরণ ও প্রতিযোগিতা থেকে মার্কিন ‘‌ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইনোভেশন বেস’‌ ও ‘‌ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেস’‌ (অর্থাৎ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জাতীয় ঘাঁটি)–কে সুরক্ষিত করে এই নেতৃত্ব বজায় রাখাই চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মার্কিন কৌশলগত পরিকল্পনার সবচেয়ে দৃশ্যমান অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে ‘‌ক্লিন নেটওয়ার্ক’‌ প্রোগ্রামে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান ও ব্যাপকভাবে উদ্ভাসিত হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল মার্কিন টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক থেকে ‘‌অবিশ্বস্ত’‌ চিনা বাহকদের বাদ দেওয়া, আমেরিকান মোবাইল অ্যাপ স্টোর থেকে চিনা অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে সরিয়ে দেওয়া, চিনা ব্যবসাগুলিকে আমেরিকান ক্লাউড স্টোরেজে রাখা মালিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে বাধা দেওয়া, এবং ডিজিটাল নেটওয়ার্কগুলির অন্তর্গত সমুদ্রতলের তারের মতো ভৌত পরিকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।[১৫] ট্রাম্পিয়ান রাজনীতি থেকে আমূল প্রস্থানের সূচনা করার পরেও বাইডেন প্রশাসনও কিন্তু চিনের সঙ্গে প্রযুক্তিগত শত্রুতার বিচারে প্রায় সম্পূর্ণ ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করেছে।

কংগ্রেসের হাউসে তাঁর প্রথম প্রধান ভাষণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন যে চিনের বিরুদ্ধে ২১ শতকের সংগ্রামে জয়ী হওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ভবিষ্যতের পণ্য ও প্রযুক্তির পণ্যগুলি তৈরি করতে হবে ও ক্ষেত্রটিতে আধিপত্য রাখতে হবে’‌।[১৬] এরপর ২০২২–এর অক্টোবরে সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক ক্রমশ বেড়ে–চলা প্রযুক্তি–অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল চিনে উৎপাদিত উন্নত কম্পিউটিং ও সেমিকন্ডাক্টর আইটেমগুলির উপর ব্যাপক রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের একগুচ্ছ ঘোষণার মাধ্যমে।[১৭] গ্রেগরি সি অ্যালেন, সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এআই গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট–এর ডিরেক্টর, এই পদক্ষেপগুলিকে ‘‌‌চিনা প্রযুক্তি শিল্পের বড় অংশকে সক্রিয়ভাবে শ্বাসরোধ করার একটি নতুন মার্কিন নীতির’‌ সূচনা হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যার লক্ষ্য ‘‌হত্যার অভিপ্রায়ে শ্বাসরোধ করা’‌।[১৮]

অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মতো ধারালো ক্ষেত্রে উভয়ই বৈরী আন্তর্জাতিক কর্মের ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করে, এবং আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতার একীকরণের মাধ্যমে তৈরি হওয়া বৈশ্বিক সুবিধাগুলিকে দমিয়ে দেয়। এ কথা মাথায় রাখতে হবে যে অত্যন্ত শক্তিশালী নতুন প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিবাদী সমাজের সংমিশ্রণের বিপদগুলি ভয়ঙ্কর ভূ–রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে তার বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম ও অনিচ্ছুক। মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনিয়ন্ত্রিত বিস্তারের সম্ভাব্য ক্ষতিগুলি, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, আজ তুলনামূলকভাবে সুপরিচিত;‌ কিন্তু অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিতে এর বিপর্যয়কর দিকগুলির সম্ভাবনা কম স্বীকৃত। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় কোয়ান্টাম আধিপত্য যে সুবিধাগুলি প্রদান করবে তা এতটাই ব্যাপক যে, যদি মনে হয় কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী স্পষ্টভাবে এই প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তা হলে নিবারণমূলক সামরিক হামলার একটি নির্দিষ্ট কৌশলগত যুক্তিও থাকবে। ইয়ান ব্রেমার যুক্তি দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে এই কাঠামোগত বিরোধের হুমকি এতটাই বড় হয়ে উঠছে যে সরকারগুলিকে অবিলম্বে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, যা অতি–গুরুত্বপূর্ণ ও ক্রমবর্ধমানভাবে সংরক্ষিত নতুন প্রযুক্তিগুলির একটি, সে সম্পর্কে উন্নয়নের তথ্য ভাগ করে নেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, কারণ ‘‌এমনকি এই ধরনের যুগান্তকারী অগ্রগতির হুমকিও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।”[১৯]

উপসংহার

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সুবিধা, বিশেষ করে বস্তুগত সম্পদ, স্বাস্থ্য ও বিলাসিতার ক্ষেত্রগুলিতে, ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। প্রযুক্তির কাছে সামাজিক জীবনের অবিরত আত্মসমর্পণ এবং টেকনোপলির দিকে ধাবিত হওয়া কিন্তু মানবতার নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক দিগন্তকে হ্রাস করার বিপদ নিয়ে আসে। ২০ শতকের প্রযুক্তির মহান তাত্ত্বিকদের বেশিরভাগ কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উপরে স্থান দেওয়া হয়েছিল সামাজিক ও মানবিক উপাদানগুলিকে পুনরুদ্ধার করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে। হাইডেগার, ম্যাকলুহান, মামফোর্ড ও পোস্টম্যান সকলেই এই বিষয়ে একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, এবং শুধু বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিবাদী না–হয়ে শৈল্পিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তির মিশ্রণের মাধ্যমে প্রকাশিত অনন্য মানবিক উপাদানটিকে পুনরায় আবিষ্কার ও পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনের উপর জোর দিয়েছেন। মামফোর্ডের ভাষায়, ‘‘যন্ত্রকে আবার জয় করতে এবং মানুষের লক্ষ্যসাধনের উদ্দেশ্যে বশীভূত করতে হলে একজনকে প্রথমে একে বুঝতে হবে এবং আত্মস্থ করতে হবে।’‌’‌[২০]

এই কাজটি আজ আরও কঠিন হয়ে উঠেছে, কারণ এখন মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনের অনেকাংশ প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপের বিমূর্ত, জটিল ও স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থার অন্তর্গত। ১৯৬০–এর দশকে মার্শাল ম্যাকলুহান প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন মেশিন প্রযুক্তির সারমর্ম বুঝতে, বিশেষ করে যেভাবে এটি মিডিয়ার উৎপাদন ও প্রচারে উদ্ভাসিত হয়েছিল এবং যেভাবে তা মানব সমাজকে আরও যন্ত্রের মতো করে পুনর্গঠন করেছিল।[২১] এখন ২১ শতকের বিশ্ব সমাজের জন্য কোয়ান্টাম সায়েন্স, মেশিন লার্নিং ও এআই–এর প্রভাব এবং মানব সমাজের জন্য তার তাৎপর্য  অবশ্যই অ–বিশেষজ্ঞদের কাছে কঠিন, কম দৃশ্যমান ও আত্মিক, এবং কম বোধগম্য হবে। তা সত্ত্বেও যে সময়ে আরও উন্নত ও আরও বিমূর্ত প্রযুক্তি সমাজের বর্তমান ‘অগ্রগতির’‌ একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে চালিত করছে, এবং আন্তর্জাতিক কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও যুদ্ধ–নির্মাণের কেন্দ্রে এসে পড়ছে উন্নততর প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সেই সময়ে প্রযুক্তিগত উন্নয়নগুলিকে গভীরভাবে অনুধাবন করা, এবং তাদের মূল্য ও উপকারের দিকগুলি ভালভাবে বিবেচনা করা আরও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।


এন্ডনোট

[১] স্টিভেন পিঙ্কার, দ্য বেটার এঞ্জেলস অফ আওয়ার নেচার: দ্য ডিক্লাইন অফ ভায়োলেন্স ইন হিস্ট্রি অ্যান্ড ইটস কজ (ইউকে: পেঙ্গুইন, ২০১১)

[২] নিল পোস্টম্যান, টেকনোপলি: দ্য সারেন্ডার অফ কালচার টু টেকনোলজি (ভিন্টেজ, ২০১১), ১১

[৩] এই গতিশীলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনুসন্ধানের জন্য দেখুন:‌ কার্ল পোলানি, দ্য গ্রেট ট্রান্সফরমেশন (নিউ ইয়র্ক: ফারার অ্যান্ড রাইনহার্ট, ১৯৪৪)

[৪] লিউইস মামফোর্ড, টেকনিকস অ্যান্ড সিভিলাইজেশন, (নিউ ইয়র্ক: হারকোর্ট, ব্রেস অ্যান্ড কোং, ১৯৩৪), ২৭৪

[৫] ফার্নান্দ ব্রদেল, সিভিলাইজেশন অ্যান্ড ক্যাপিটালিজম, ১৫–১৮ শতক, খণ্ড ১:‌ দ্য স্ট্রাকচার অফ এভরিডে লাইফ (ক্যালিফোর্নিয়া: ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, ১৯৯২), ৩৩৫

[৬] পোস্টম্যান, টেকনোপলি: দ্য সারেন্ডার অফ কালচার টু টেকনোলজি, ৪০

[৭] পোস্টম্যান, টেকনোপলি: দ্য সারেন্ডার অফ কালচার টু টেকনোলজি, ৭৪

[৮] পোস্টম্যান, টেকনোপলি: দ্য সারেন্ডার অফ কালচার টু টেকনোলজি, ৭৪

[৯] রোনাল্ড রেগান, শিইলা রুল দ্বারা উদ্ধৃত, “রেগান গেটস আ রেড কার্পেট ফ্রম দ্য ব্রিটিশ,” নিউ ইয়র্ক টাইমস, জুন ১৪, ১৯৮৯।

[১০] উইলিয়াম জে ক্লিনটন, “বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে মন্তব্য এবং একটি প্রশ্ন–উত্তর অধিবেশন” (বক্তৃতা, দাভোস, সুইজারল্যান্ড, জানুয়ারি ২৯, ২০০০), আমেরিকান প্রেসিডেন্সি প্রোজেক্ট।

[১১] হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন, “ইন্টারনেট স্বাধীনতা সম্পর্কে মন্তব্য” (বক্তৃতা, দ্য নিউজিয়াম, ওয়াশিংটন, ডিসি, ২১ জানুয়ারি, ২০১০), মার্কিন বিদেশ দপ্তর।

[১২] ইয়ান জুয়েটং, “প্রাথমিক ডিজিটাল যুগে দ্বিমেরু প্রতিদ্বন্দ্বিতা,” দ্য চাইনিজ জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স ১৩: ৩১৩-৩৪১

[১৩] ট্রান্সক্রিপ্ট: সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নসের সঙ্গে এনপিআর–এর সম্পূর্ণ কথোপকথন। ” এনপিআর, ২২ জুলাই, ২০২১

[১৪] ওয়েন এম মরিসন, চিনের অর্থনৈতিক উত্থান: ইতিহাস, প্রবণতা, চ্যালেঞ্জ, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর প্রভাব (ওয়াশিংটন, ডিসি: কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস, ২০১৯)।

[১৫] মাইকেল আর পম্পেও, “আমেরিকার সম্পদ রক্ষায় ক্লিন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ঘোষণা,” ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট, ৫ আগস্ট, ২০২০।

[১৬] জোসেফ আর বাইডেন, “রিমার্কস অ্যাজ প্রিপেয়ার্ড ফর ডেলিভারি বাই প্রেসিডেন্ট বাইডেন — অ্যাড্রেস টু আ জয়েন্ট সেশন অফ কংগ্রেস” (বক্তৃতা, ওয়াশিংটন, ডিসি, এপ্রিল ২৮, ২০২১), দ্য হোয়াইট হাউজ

[১৭] ইউ এস ব্যুরো অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সিকিউরিটি

[১৮] গ্রেগরি সি অ্যালেন, “চোকিং অফ চায়না’‌স অ্যাকসেস টু দ্য ফিউচার অফ এআই,” সেন্টার ফর স্ট্র‌্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ, অক্টোবর ১১, ২০২২

[১৯] আয়ান ব্রেমার, দ্য পাওয়ার অফ ক্রাইসিস: হাউ থ্রি থ্রেটস – অ্যান্ড আওয়ার রেসপন্স – উইল চেঞ্জ দ্য ওয়র্ল্ড (নিউ ইয়র্ক: সাইমন অ্যান্ড শুসটার, ২০২২), ১৭২

[২০] মামফোর্ড, টেকনিকস অ্যান্ড সিভিলাইজেশন, ৬

[২১] মার্শাল ম্যাকক্লুহান, “দ্য মিডিয়াম অ্যান্ড দ্য মেসেজ,” ইন আন্ডারস্ট্যান্ডিং মিডিয়া: দ্য এক্সটেনশন অফ ম্যান (লন্ডন অ্যান্ড নিউ ইয়র্ক: সিগনেট, ১৯৬৪), ৭

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.