-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্যকে ব্যাহত করেছে এবং আরও স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দর্শিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত ও পাঁচ দিনের মধ্যে স্থগিত হওয়া ‘লিবারেশন ডে’ শুল্ক কী ভাবে চাপা বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে নির্মিত নীতিগুলির ক্ষতি করতে পারে, তার একটি সর্বোত্তম উদাহরণ। কার্যনির্বাহী আদেশ ১৪২৫৭-টিকে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ‘আত্ম-ক্ষতির এক বিস্ময়কর প্রয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন। এটি চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক সংক্রান্ত নিম্নগামী প্রতিযোগিতাকেও উস্কে দিয়েছে এবং অবশিষ্ট বিশ্ব তার সাক্ষী থেকেছে। এই প্রবন্ধটি লেখার সময়, চিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশের পরিবর্তে ১২৫ শতাংশ শুল্ক এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রফতানির উপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
চিন - যা ২০০১ সালে ডব্লিউটিও-তে যোগদানের পর ধীরে ধীরে নিজের অর্থনীতিকে উন্মুক্ত করেছিল – স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে উৎপাদনে অভ্যস্ত একটি দেশ। অন্যান্য বেশির ভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে এমনটা প্রযোজ্য নয়, যারা জিএটিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে তাদের বাজার প্রতিযোগিতার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে এবং এর ফলে তারা যে সময়কে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করতে পারত, সেই মূল্যবান বছরগুলি হারিয়েছে। এ ছাড়াও, ইইউ এবং কানাডা উভয়ই তাদের নিজস্ব প্রতিশোধমূলক শুল্ক ১০ শতাংশের বেসলাইন এবং আরও বিভাগীয় ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ইইউ এবং কানাডা উভয়ই তাদের নিজস্ব প্রতিশোধমূলক শুল্ক ১০ শতাংশের বেসলাইন এবং আরও বিভাগীয় ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ইতিমধ্যে, বাজার ও তাদের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী পরিসর থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্কের উপর ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করেছে এবং পরে চিন-সহ আমদানির জন্য ছাড়ের একটি তালিকা ঘোষণা করেছে। এটি মোটেও ছাড় নয়। কারণ এই বিরতি ২০২৫ সালের ৫ এপ্রিল যোগ করা বেসলাইন ১০ শতাংশ শুল্ককে (চিনের জন্য ২০ শতাংশ) প্রভাবিত করে না। তবে এটি দেশভিত্তিক অতিরিক্ত উচ্চতর শুল্ককে স্থগিত করে দেয়। তবে একটি বিবৃতি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে যে, সমগ্র ইলেকট্রনিক্স সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য নির্দিষ্ট শুল্ক ঘোষণা করা হবে।
শুল্ক প্রসঙ্গে ‘ইতিবাচক’ বক্তব্য
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে শুল্কের প্রতি তাঁর পছন্দের বিষয়ে অত্যন্ত সরব। তাঁদের মতে, এটি এমন একটি হাতিয়ার যা কৌশলগত ও জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কেবল তাদের বাজারে আমদানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে নয়। এটি মার্কিন উৎপাদন পুনরুজ্জীবিত করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশও বটে।
ভারত-সহ কয়েকটি দেশে লক্ষণগুলি স্পষ্ট ভাবে দেখা গিয়েছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর দ্রুত একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর মার্কিন সফর ও এই বছরের শরৎকালের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনেক আলোচনার সৃষ্টি হলেও ট্রাম্প প্রশাসন তার সব বাণিজ্য অংশীদারের উপর সমান্তরাল ভাবে ১০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছিল।
চিত্র ১: মার্কিন শুল্ক ঘোষণার সময়সীমা: ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল
উৎস: জনসাধারণের তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি লেখকের সঙ্কলন
অংশীদার দেশগুলির জন্য শুল্ক ঘোষণার সর্বশেষ কার্যনির্বাহী আদেশ - যেমনটি প্রত্যাশা করা হয়েছিল - কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই প্রভাবিত করবে না, বরং অন্যান্য অংশীদারের সঙ্গে এই দেশগুলির সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলবে।
উদাহরণস্বরূপ, ভারত - যা ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্যে তৈরি - অন্য কিছু দেশের তুলনায় কম শুল্ক আরোপ করবে। তবে এটি সম্পূর্ণ ইতিবাচক ঘটনা নয়। ভিয়েতনাম (৪৬ শতাংশ), ইন্দোনেশিয়া (৩২ শতাংশ), লাওস (৪৮ শতাংশ), তাইল্যান্ড (৩৬ শতাংশ), বাংলাদেশ (৩৭ শতাংশ) এবং চিনের (বর্তমানে ১৪৫ শতাংশ) মতো উচ্চ শুল্ক আরোপিত অন্য কিছু দেশও ভারতের ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য অংশীদার। কেউ কেউ এটিকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ও আরও রফতানির সুযোগ হিসেবে দেখলেও বিবেচ্য আর একটি বিষয়ও রয়েছে। উচ্চ শুল্ক আরোপের দরুন জর্জরিত অন্যান্য দেশ তাদের পণ্যগুলি তুলনামূলক ভাবে কম শুল্কযুক্ত দেশগুলির মাধ্যমে পাঠাতে পারে - যেমন ভারত। অ্যান্টি-ডাম্পিং এমন একটি পুনরাবৃত্ত সমস্যা, যা চিন-ভারত বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে। এই সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও এটি এমন একটি পরিস্থিতি, যেটিকে আমাদের নীতিনির্ধারকদের স্বীকার করতে হবে এবং বিবেচনা করতে হবে।
কিছু ‘নেতিবাচক’ শব্দ: ঘাটতি এবং অ-ডলারিকরণ
ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয় এবং সম্ভবত এমনটা করা হয় এই শব্দটির অন্তর্নিহিত অর্থের কারণে। ঘাটতির সংখ্যা যা লুকিয়ে রাখে, তা হল মার্কিন সংস্থাগুলির দু’টি প্রধান উপায়ে করা লাভের সত্যতা।
প্রথমত, তারা বিদেশি বাজারে উৎপাদন খরচ বাঁচাতে পারে। জমি, শ্রম, মূলধন ও এমনকি উদ্যোক্তা-সহ উৎপাদনের মৌলিক কারণগুলির উচ্চ ব্যয়ের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেশি। শুল্ক ঘোষণার পরপরই আইফোনের প্রাক-শুল্ক (৫৪৯.৭৩ মার্কিন ডলার) বনাম শুল্ক-পরবর্তী (৮৪৬.৫৯ মার্কিন ডলার) উৎপাদন খরচ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল - যা প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধিকে দর্শায়। একই ভাবে, মার্কিন গাড়ি নির্মাতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ তাঁদের উৎপাদন খরচ প্রতি গাড়িতে কমপক্ষে অতিরিক্ত ৩০০০ মার্কিন ডলার বেশি হবে। চিনা আমদানিতে আরও শুল্ক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যাটিও পরিবর্তিত হবে।
দ্বিতীয়ত, নির্মাতারা তাদের বিনিয়োগের উপর রেমিট্যান্স বা অর্থপ্রেরণ সুবিধা পান। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও মার্কিন প্রস্তুতকারক ভিয়েতনামে কারখানা ব্যবহার করেন, তবুও যখন ‘ভিয়েতনাম’ এই পণ্যটি তৃতীয় কোনও বাজারে বিক্রি করে, তখন মার্কিন সংস্থা লাভের একটি অংশ পায়। এই ভাবে মার্কিন সংস্থাগুলি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারে তাদের প্রায় অলিগোপোলিস্টিক অবস্থান (অর্থাৎ যে অবস্থায় প্রতিযোগিতা অল্প কয়েকজন বিক্রেতা বা উৎপাদকের মধ্যে সীমিত থাকে) বজায় রাখে। জিএএফএএম (গুগল, অ্যাপল, ফেসবুক (মেটা), অ্যামাজন, মাইক্রোসফ্ট) এর সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ, যেখানে আলিবাবা সংক্ষিপ্ত আকারে একটি হস্তক্ষেপকারী সংস্থা এবং এর নতুন অবতার ফ্যাং-এর মাধ্যমে নেটফ্লিক্সকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই সমস্ত বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এবং তাদের প্রবৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের যথেষ্ট কৃতিত্ব রয়েছে।
নির্ভরযোগ্য অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত ঘাটতি বজায় রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই হয়তো একমাত্র দেশ, যাদের লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
তৃতীয়ত, ঘাটতি এবং অ-ডলারিকরণের ভূমিকার মধ্যকার ব্যবধান খুব একটা স্পষ্ট নয়। নির্ভরযোগ্য অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত ঘাটতি বজায় রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই হয়তো একমাত্র দেশ, যাদের লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের ভূমিকা বজায় রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করে, তাহলে তাদের এই ঘাটতি কতটা নেতিবাচক হবে, তা পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন আছে। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমদানির খরচ ডলারে পরিশোধ করে, তা হলে এর অর্থ হল বিশ্ব বাজারে তারা যে পরিমাণ ডলার ব্যয় করছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ডলার তাদের নিজেদের কাছে রয়েছে।
চতুর্থত অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের দিকে ছুটে যাওয়ার বিষয়টি ব্যর্থ হতে পারে। কারণ দেশে উৎপাদনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষতা এবং কর্মক্ষমতার অভাব রয়েছে। মার্কিন বাজারে পণ্যের চাহিদা ও বিশ্বস্ত অংশীদারদের কাছ থেকে সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ - যেখানে বর্তমান প্রশাসন এখনও তার নিজের কোনও অবস্থান খুঁজে পায়নি।
চুক্তি হবে না ব্যর্থ হবে?
এই প্রশাসন যে বিষয়টির ব্যাপারে অবিচল, তা হল চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে তাদের অসঙ্গতি। প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পুনর্বিবেচনা করা এফটিএ (ইউএসএমসিএ, পূর্ববর্তী এনএএফটিএ) সত্ত্বেও কানাডা ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ঘোষিত শুল্ক চুক্তি এর একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
এ কথা জোর দিয়ে বলা গুরুত্বপূর্ণ যে, ইও-তে এই বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যে, কোনও দেশ যদি তার শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে কী ঘটবে। ইও-র ধারা ৪(সি)-তে বলা হয়েছে যে, কোনও মার্কিন বাণিজ্য অংশীদার যদি ‘অ-পারস্পরিক বাণিজ্য ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রতিকার’ করার জন্য পদক্ষেপ নেয়, তা হলে কী ঘটবে। নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ‘এইচটিএসইউএস’ (হারমোনাইজড ট্যারিফ সিস্টেম অফ দি ইউনাইটেড স্টেটস) আরও সংশোধন করতে পারেন।
এর তাৎপর্য হল যে, দেশগুলি শুল্ক কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিলেও এটি এই পারস্পরিক শুল্ক অপসারণের নিশ্চয়তা দেয় না। এ কথাও লক্ষণীয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উচ্চতর শুল্ক বজায় রাখার পাশাপাশি দেশগুলি যে অ-শুল্ক বাধা স্থাপন করে, তা নির্দিষ্ট করেছে এবং তার ব্যতিক্রমও দেখা গিয়েছে। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির ২০২৫ সালের জাতীয় বাণিজ্য অনুমান সংক্রান্ত প্রতিবেদনেও এটি স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অ-শুল্ক এসপিএস এবং টিবিটি ব্যবস্থাগুলির সমাধান হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
এর তাৎপর্য হল যে, দেশগুলি শুল্ক কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিলেও এটি এই পারস্পরিক শুল্ক অপসারণের নিশ্চয়তা দেয় না।
একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির জন্য আলোচনা জরুরি ও প্রাসঙ্গিক হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাকারী সকল দেশের সচেতন থাকা উচিত যে, এটি কেবলমাত্র এক ধরনের ব্যান্ড-এড ডিপ্লোমেসি বা সাময়িক সমাধানমূলক কূটনীতি।
যে দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে, তাদের এই প্রসঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া জরুরি। তবে নতুন পুনর্গঠিত বিশ্ব অর্থনীতি যাতে আরও ভাল নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য বজায় রাখে এবং একটি স্থিতিশীল ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে পারে, তার উপায় খুঁজে বের করারও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ডব্লিউটিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিত্যক্ত হওয়ায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার দায়িত্ব বর্তায় গ্লোবাল সাউথের উপরেই।
জাহ্নবী ত্রিপাঠী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Jhanvi Tripathi is an Associate Fellow with the Observer Research Foundation’s (ORF) Geoeconomics Programme. She served as the coordinator for the Think20 India secretariat during ...
Read More +