Published on Apr 13, 2023 Updated 0 Hours ago

‘‌বাজারে প্রতিযোগিতা’‌নিশ্চিত করার জন্য নিয়ামক ব্যবস্থাগুলি কি টেক দৈত্যগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পর্যাপ্ত?

ডিজিটাল টাইটানদের পোষ মানানো

২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পাঁচটি ডিজিটাল টাইটানের (অ্যামাজন, মেটা, অ্যাপল, অ্যালফাবেট ও মাইক্রোসফট) সম্মিলিত রাজস্ব ১৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বিস্ফোরিত হয়ে ৩.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, অর্থাৎ প্রতি বছর ২৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনৈতিক শক্তির এই দ্রুত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ‘‌বাজারে প্রতিযোগিতা’‌ নিশ্চিত করার জন্য নিয়ামক ব্যবস্থাগুলি পর্যাপ্ত কি না তা গভীরভাবে পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন।

নিয়ামক চ্যালেঞ্জ স্থানান্তর

চারটি অগ্রগতি সেই প্রযুক্তিগত নিয়ামক সমাধানগুলিকে বানচাল করে দেয় যা বিকশিত হয়েছিল আগের শতাব্দীতে, যখন রেলওয়ে, তারপর বিমান চলাচল এবং অবশেষে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করা হত। প্রথমত, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ডের দ্রুত বৃদ্ধি লাভের চেয়ে রাজস্বের বৃদ্ধিকে বেশি সম্মান দিয়েছিল। দ্বিতীয়ত, বিশ্বায়ন দ্রুত বৃদ্ধির জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়, এবং চলতি মুনাফার বর্তমান মূল্যকে ভবিষ্যতের মুনাফার একটি ছোট অংশে সঙ্কুচিত করে। তৃতীয়ত, একটি প্রাণবন্ত স্টার্টআপ বাস্তুতন্ত্র এনে দেয় উদ্যোগের অধিগ্রহণের মাধ্যমে বৃদ্ধির সুযোগ।  গুগল, একটি সার্চ ইঞ্জিন, ২০০৬ সালে বিষয়বস্তু প্রদানকারী ইউটিউবকে ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে অধিগ্রহণ করে, যার ফলে নতুন আয়ের উৎস তৈরি হয়। চতুর্থত, প্রযুক্তিগত খরচ গোড়ায় অনেক বেশি, কিন্তু প্রান্তিক খরচ কম। বিদ্যমান ভোক্তাদের জন্য মূল্য বাড়ানোর পরিবর্তে সংলগ্ন বাজারে সম্প্রসারণ প্রযুক্তির একচেটিয়া কারবারিদের কাছে রাজস্ব সর্বাধিক করার অনেক ভাল উপায়। অতিরিক্ত সুবিধা হল যে একচেটিয়া কারবারিরা পণ্য বা পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির মতো দৃশ্যমান নেতিবাচক ভোক্তা কল্যাণ মেট্রিক্স তৈরি না–করেই লাভ সর্বাধিক করে।

বিজনেস লাইন জুড়ে একীকরণ নতুন নিয়ামক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। অন্যায্য বৈষম্য এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। যদি একটি সার্চ ইঞ্জিন একটি অপারেটিং সিস্টেম অধিগ্রহণ করে — যা একটি সংলগ্ন বাজারে উল্লম্ব অধিগ্রহণের একটি উদাহরণ (গুগল ২০০৫ সালে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে অ্যান্ড্রয়েড অধিগ্রহণ করেছিল)‌) — তবে ওএস–এর নিজেদের সার্চ ইঞ্জিনের পক্ষে এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের ক্ষতি করার জন্য বৈষম্য সৃষ্টির প্রণোদনা থাকে। একইভাবে, যদি একটি সার্চ ইঞ্জিন (গুগল) একটি বিষয়বস্তু প্রদানকারীকে (ইউটিউব) অধিগ্রহণ করে, তবে এটি ব্যবহারকারীদের ‘‌স্ব–মালিকানাধীন’‌ প্রদানকারীর কাছে পৌঁছে দিতে এবং অন্য বিষয়বস্তু প্রদানকারীদের ক্ষতি করার জন্য প্রণোদনা অর্জন করে। অমীমাংসিত নেতিবাচক দিকটি হল বাজারের উন্মত্ত উদ্ভাবন বাজারে প্রতিযোগিতায় রূপান্তরিত হয় না। পরিবর্তে, আক্রমণাত্মক, প্রাইভেট ইক্যুইটি–অর্থায়িত টেক টাইটানরা প্রায়ই নতুন প্রতিযোগীদের অধিগ্রহণ করে প্রতিযোগিতার বিনাশ ঘটায়।

২০২০ সালের মধ্যে ইউনাইটেড স্টেটস হাউস অফ রেপ্রেজেন্টেটিভস–এর অ্যান্টি–ট্রাস্ট সাবকমিটি ‘‌ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা পুনরুদ্ধার’‌ করার জন্য অ্যান্টি–ট্রাস্ট আইনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সুপারিশ করে। বছরের পর বছর ধরে বিচারবিভাগীয় পদক্ষেপ একচেটিয়া কারবারিদের উপর আইন প্রণয়নের সীমাবদ্ধতার উদারীকরণ করেছে। প্রচলিত ‘‌কারণের ভিত্তিতে শাসন’‌ পদ্ধতি, যা প্রতিযোগিতার ক্ষতির প্রমাণ দিয়ে ট্রাস্ট–বিরোধী পদক্ষেপের ন্যায্যতা প্রমাণ করে, তা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে পাশার দান ফেলে। এর কারণ টেক টাইটান ও মামলাকারীদের সম্পদের মধ্যে অসামঞ্জস্য।

জনস্বার্থ রক্ষা করা

বড় কর্পোরেটদের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ সর্বজনীনভাবে জনপ্রিয়। ২০২১ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিযুক্ত করেছিলেন লিনা খানকে, যিনি অ্যান্টি–ট্রাস্ট সত্তা ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। মিসেস খান ২০১৮ সালে একটি প্রভাবশালী গবেষণাপত্র রচনা করে ডিজিটাল বাজারে প্রতিযোগিতা রক্ষার জন্য ‘‌কাঠামোগত বিচ্ছিন্নতা’‌ পুনঃপ্রবর্তনের কথা বলে অ্যান্টি–ট্রাস্ট সংক্রান্ত আইনগত ক্ষেত্রে তাঁর খ্যাতি অর্জন করেন। ২০২১ সালে তৃতীয় পক্ষের মূল্য তুলনার শপিং পরিষেবার বিরুদ্ধে বৈষম্যের জন্য ইইউ কম্পিটিশন কমিশন গুগল–কে ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিল।

ভারতে প্রতিযোগিতা আইন ২০০২ একটি বাজার–বান্ধব, স্বায়ত্তশাসিত অ্যান্টি–ট্রাস্ট সত্তা হিসাবে ভারতের প্রতিযোগিতা কমিশন (সিসিআই) তৈরি করেছে। এটি প্রতিস্থাপিত করেছে একচেটিয়া ও নিষেধাজ্ঞামূলক বাণিজ্য অনুশীলন আইন ১৯৬৯–কে, যা একচেটিয়া ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের আড়ালে ব্যক্তিগত ব্যবসার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। নতুন আইন প্রতিযোগিতামূলক বাজারকে উৎসাহিত করে, এবং বাজারের আধিপত্যের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ। অ্যান্টি–ট্রাস্ট সক্রিয়তা তখনই বৈধ হয়ে ওঠে যখন বাজারের আধিপত্য প্রতিযোগিতা বা প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে সীমাবদ্ধ করতে, বা অন্যায্য বা বৈষম্যমূলক বাণিজ্য অনুশীলনে লিপ্ত হতে, ব্যবহৃত হয়।

সিসিআই গুগলকে শাস্তি দিয়েছে

২০২২ সালের অক্টোবরে, সিসিআই রায় দেয় যে গুগল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক বাজারে তার প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করে প্রতিযোগিতা–বিরোধী অনুশীলনে লিপ্ত হয়েছে, এবং আগের তিন বছরের জন্য ১৩.৪ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি জরিমানা করে, যা ভারতে গুগল–এর গড় আয়ের ১০ শতাংশ।

গুগল প্লে স্টোরের বিরুদ্ধে একটি সংশ্লিষ্ট মামলায় প্লে স্টোর বাজারে এর প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহারের জন্য ৯.৪ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি জরিমানা করা হয় এই কারণগুলির জন্য:‌ (১) ইন–স্টোর অ্যাপের জন্য একমাত্র অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা হিসাবে, এবং কোনও ব্যবহারকারীর একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার পরেও অ্যাপের মাধ্যমে সমস্ত ক্রয় ও পরবর্তী কেনাকাটার জন্য গুগল বিল পে সিস্টেম (জিবিপিএস) চাপিয়ে দেওয়া, (২) বাদবাকি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপগুলির বিপরীতে ইউটিউবকে (গুগল–এর মালিকানাধীন বিষয়বস্তু প্রদানকারী) জিবিপিএস ব্যবহারের জন্য পরিষেবা ফি চার্জ না করা (৩) অর্থপ্রদানের জন্য অন্যান্য ইউপিআই অ্যাপের তুলনায় নিজস্ব ইউপিআই অ্যাপকে বিশেষাধিকার দেওয়া, (৪) ডাউনলোডের পরে  ‘‌স্টিয়ারিং’‌ ব্যবহারকারীদের প্ল্যাটফর্মে হোস্ট করা অ্যাপগুলি থেকে পরবর্তী ইন–অ্যাপ কেনাকাটার জন্য বিকল্প অর্থপ্রদানের বিকল্পগুলির ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া।

এরপর অনেকগুলি ‘‌বন্ধ কর ও বিরত থাকো’‌ নির্দেশ জারি করা হয়েছিল:

(১) স্মার্টফোন নির্মাতাদের কাছে অ্যান্ড্রয়েড ওএস–র লাইসেন্সকে কখনওই গুগল অ্যাপের সম্পূর্ণ স্যুটের বাধ্যতামূলক প্রি–ইনস্টলেশনের সঙ্গে সংযুক্ত করা যাবে না বা খুচরা গ্রাহকদের অ্যাপগুলি আন–ইনস্টল করার কোনও বিকল্প ছাড়াই গুগল অ্যাপগুলির জন্য বিশিষ্ট প্লেসমেন্টের শর্ত রাখা যাবে না।

(২) নির্মাতাদের প্লে স্টোরের লাইসেন্সিং (গুগল প্লে পরিষেবাগুলি সহ)–এর সঙ্গে গুগল অ্যাপগুলির সম্পূর্ণ স্যুটের প্রি–ইনস্টল করার প্রয়োজনীয়তাকে সংযুক্ত করা যাবে না ৷

(৩) গুগল তার অনুসন্ধান পরিষেবাগুলির জন্য শুধু একক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে নির্মাতাদের আর্থিক বা অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান করবে না৷

(৪) গুগল ‘‌অ্যান্ড্রয়েড ফর্ক’‌–এর ব্যবহারে বাধা দেওয়ার জন্য নির্মাতাদের উপর অ্যান্টি–ফ্র্যাগমেন্টেশন বাধ্যবাধকতা আরোপ করবে না।

(৫) গুগল–এর লাইসেন্সের অধীনে থাকা নির্মাতাদের অ্যান্ড্রয়েড ফর্ক–ভিত্তিক স্মার্ট ডিভাইস তৈরি করতে বাধা দেওয়া যাবে না।

(৬) গুগল অবশ্যই প্রণোদনা দেবে না বা অন্যথায় নির্মাতাদের অ্যান্ড্রয়েড ফর্কের উপর ভিত্তি করে স্মার্ট ডিভাইস তৈরি বা বিক্রি না–করতে বাধ্য করবে না।

(৭) প্রাথমিক ডিভাইস সেটআপের সময় গুগলকে অবশ্যই চূড়ান্ত ব্যবহারকারীদের তাদের পছন্দের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন সেট করতে সক্ষম করতে হবে।

(8) গুগল অবশ্যই প্রতিযোগী অ্যাপ স্টোরের বিকাশকারীদের তাদের অ্যাপ স্টোরগুলি প্লে স্টোরের মাধ্যমে বিতরণ করার অনুমতি দেবে।

চতুরভাবে ডিজাইন করা আইনি লাঠি ও আর্থিক গাজর গুগলের উন্মুক্ত বাস্তুতন্ত্রকে অ্যাপলের মতো প্রতিযোগীদের থেকে নিরাপদ, কার্যত একীভূত দুর্গে রূপান্তরিত করেছে।

গুগল এরপর ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের (এনসিএলএটি) কাছে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছে, কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট থেকে জরিমানা পরিশোধে স্থগিতাদেশ পেতে ব্যর্থ হয়েছে। এনসিএলএটি শুনানি শুরু করেছে। গুগল–কে তার চুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থা বদলাতে হবে। বর্তমানে নির্মাতারা বিনামূল্যে প্লে সার্ভিস স্যুট পান। উপরন্তু, নির্মাতাদের সঙ্গে বিজ্ঞাপন পরিষেবা বাবদ উপার্জন শেয়ার করে গুগল তাদের ইন–হাউস গুগল নির্মাতা করে তোলে। চতুরভাবে ডিজাইন করা আইনি লাঠি ও আর্থিক গাজর গুগলের উন্মুক্ত বাস্তুতন্ত্রকে অ্যাপলের মতো প্রতিযোগীদের থেকে নিরাপদ, কার্যত একীভূত দুর্গে রূপান্তরিত করেছে। নিয়ামক সংস্থাগুলি ইউরোপে এবং এখন ভারতেও পাল্টা আঘাত করছে, যদিও কিছুটা অন্যায্যভাবে, কারণ অ্যাপল স্টোর ও গুগল প্লে স্টোরের মতো অনুরূপ পরিষেবাগুলির জন্য প্রতিযোগিতার বিভিন্ন মানদণ্ড ব্যবহৃত হয়েছে৷

স্মার্টফোন নির্মাতাদের জন্য এর পর কী?

নির্মাতারা গুগল দ্বারা রাজস্ব ভাগাভাগি ব্যতীত অন্যান্য উৎস থেকে লাভের সন্ধান করবে৷ তারপরে তারা বেছে নিতে পারে কোন অ্যাপগুলি ইনস্টল করা হবে না, যেহেতু গুগল মোবাইল পরিষেবা নিলে সেগুলি কেনার জন্য অর্থ প্রদান করতে হতে পারে। ইউরোপীয় নির্মাতারা, বলা হয়, ফোনপ্রতি ৪০ মার্কিন ডলার প্রদান করে। তারা তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ফর্ক সিস্টেমের সঙ্গেও অংশীদারিতে যেতে পারবে, যা এখন গুগল দ্বারা অনুমোদিত নয়৷ গুগল এখন তার অ্যাপস ও পরিষেবাগুলিকে সিস্টেম অ্যাপস–এর রূপ দিয়ে যে আনইনস্টল–সুরক্ষা ভোগ করে তা হারাবে, এবং তার হোম স্ক্রিনে এগুলির বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত, বাধ্যতামূলক, বিশিষ্ট অবস্থানও আর থাকবে না।

ভারতীয় স্মার্টফোন নির্মাতারা এবং অ্যাপ ডেভেলপাররা অভ্যন্তরীণ সরবরাহকারী হিসাবে কাজ করা থেকে নিজেদের মুক্ত করতে চায় কিনা, তা গুগল–এর প্রস্তাবিত সংশোধিত শর্তগুলির উপর নির্ভর করবে। সংযুক্ত সম্পূরক চুক্তির বিদ্যমান বাধ্যবাধকতা বাদ দিয়ে আইনত কোশার (‌অনুমোদিত)‌ স্বেচ্ছানির্ভর চুক্তির মাধ্যমে তা করার সংস্থান রয়েছে।

চিনা ফোন নির্মাতারা বিদেশে ব্র্যান্ড বিক্রয়ের জন্য গুগল–এর বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা মেনে ব্যবসা থেকে লাভ সর্বাধিক করে, আর দেশে অভ্যন্তরীণ বিক্রয়ের জন্য হাইব্রিড অ্যান্ড্রয়েড বিকল্পগুলি তৈরি করে। ভারত একটি প্রধান স্মার্টফোন রপ্তানিকারক হতে চায়। একটি হাইব্রিড অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বাস্তুতন্ত্রের বিকাশে বিনিয়োগ করা গুগল–এর উপর অতিনির্ভরতার (‌যা এখন ব্যাহত হয়েছে)‌ পরিধির বাইরে বেরিয়ে শ্রীবৃদ্ধির জন্য অর্থবহ৷

খুচরা ভোক্তাদের জন্য এর অর্থ কী?

মূল্য সংবেদনশীল ভারতীয় খুচরো গ্রাহকদের কী লাভ হবে, তা স্পষ্ট নয়। নিয়ামক পরিবর্তনের সামগ্রিক প্রভাবে যদি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের খুচরো মূল্য বৃদ্ধি পায়, তবে তা সিসিআই–এর ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। নিকটবর্তী সময়ে এটি লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীকে স্মার্টফোনে উত্তীর্ণ হওয়া থেকে বঞ্চিত করবে, আর তাও ঠিক এমন সময়ে যখন ৫জি পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। একটি অ্যান্টি–ট্রাস্ট সংস্থার জন্য তা মোটেই কোনও সুখের ফলাফল নয়। ভবিষ্যতে আরও প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা কিন্তু ভোক্তা মূল্যের অবিলম্বে বৃদ্ধির অপ্রতুল ক্ষতিপূরণ।

ভবিষ্যতে আরও প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা কিন্তু ভোক্তা মূল্যের অবিলম্বে বৃদ্ধির অপ্রতুল ক্ষতিপূরণ।

খুচরো ভোক্তারা সুরক্ষা খুঁজতে পারেন সক্রিয় শিল্পনীতি মডেলের অধীনে, যা বর্তমানে সরকারের আনুকূল্য পাচ্ছে। একটি পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ গুগল অ্যান্ড্রয়েড পরিষেবার উন্মুক্ত ও কম দামের বিকল্প নিয়ে আসতে পারে। যৌথভাবে সরকার ও শিল্পের দ্বারা গড়ে তোলা ডিজিটাল কমার্সের একটি অনুরূপ উদ্যোগ — দ্য ওপেন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কমার্স (ওএমডিসি) — এখন এমন একটি সংস্থা যার উদ্দেশ্য লাভ করা নয়। এটি অ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য এক ধরনের উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হতে চায়। এখন ১.৮ মিলিয়নেরও বেশি পণ্যের জন্য ২৫,০০০ নিবন্ধিত বিক্রেতাসহ ভারতের পনেরোটি শহরব্যাপী এর মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

জাগ্রত বিকল্প

গুগল হল অ্যাপলের মতোই একটি বিশ্বব্যাপী টাইটান। এর অনন্য বাস্তুতন্ত্র, যা একে একচেটিয়াবাদীর মতো আচরণ করতে এবং জনগণের নিন্দা ব্যতীত একচেটিয়া মুনাফা করার অনুমতি দেয়, কঠোর নিয়ামক নিষেধাজ্ঞাগুলি তা ধ্বংস করার হুমকি দেয়। সহযোগিতামূলক মনোভাবকে পুনরুদ্ধার করার ভাবনা, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় গুগল–এর ২০০৭ সালে বিকল্প, মুক্ত বাস্তুতন্ত্র হিসাবে ওপেন হ্যান্ডসেট অ্যালায়েন্সের কল্পনা, সেইটিই হবে জাগ্রত বিকল্প (‌দ্য উয়োক অপশন)‌।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.