Author : Shoba Suri

Published on Jan 06, 2024 Updated 0 Hours ago

অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত ইওর রিফ্লেকশন খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্থিতিশীলতার অনুসারী কৃষি ও ভূমি ব্যবহারের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক সামনে নিয়ে আসে। এই অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কগুলি নিয়ে সচেতনতা আছে কি?

স্থিতিশীলতার অনুসারী কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন ও পুষ্টি: একটি জটিল চ্যালেঞ্জ

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা, টেকসই কৃষি পদ্ধতি ও জমি ব্যবহারের মধ্যে জটিল ও আন্তঃনির্ভর সম্পর্কের স্বীকৃতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আন্তঃনির্ভর জালিকাটির এই গ্রহ এবং এর নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য সুদূরপ্রসারী ফলাফল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা, যার অর্থ পুষ্টিকর খাদ্যের নিয়মিত ও ন্যায়সঙ্গত সুযোগের নিশ্চয়তা, ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আবহাওয়ার ধরন ঐতিহ্যগত কৃষি পদ্ধতিকে ব্যাহত করছে, যার ফলস্বরূপ ফসলের ব্যর্থতা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। খরা এবং বন্যার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি এই সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তোলে, বিশেষ করে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য। অন্যদিকে, জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতা অভ্যন্তরীণভাবে কৃষি অনুশীলন ও ভূমি ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত। বন উজাড়, গবাদি পশুপালন ও কৃত্রিম সার ব্যবহারের মতো কৃষি পদ্ধতি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে অবদান রাখে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ হয় এবং আবহাওয়ার ধরনকে আরও ব্যাহত করে। এইভাবে একটি অশুভ চক্র তৈরি হয় এবং খাদ্য উৎপাদনকে বিপদের মুখে ফেলে। এই চ্যালেঞ্জের সমাধান আছে স্থিতিশীলতার অনুসারী কৃষিতে, যা পরিবেশগত অবক্ষয় হ্রাস করার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনশীলতা বজায় রাখা বা উন্নত করার উপযোগী অনুশীলনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এমন টেকসই কৃষির সাধারণ নীতিগুলির মধ্যে রয়েছে ফসলের আবর্তন, জৈব চাষ ও কীটনাশকের কম ব্যবহার। এই সমীকরণে ভূমি ব্যবহারও একটি মূল বিষয়, কারণ কৃষি সম্প্রসারণ বায়ুমণ্ডলে কার্বন নির্গমন করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও খারাপ করে। অন্যদিকে, পুনর্বনায়ন ও কৃষি বনায়নের পাশাপাশি ভূমি সংরক্ষণের মতো অনুশীলনগুলি কার্বনকে আলাদা করতে পারে এবং মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এইভাবে কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তন উভয়ই প্রশমনে অবদান রাখে৷ এই সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য একটি ব্যাপক পদ্ধতির প্রয়োজন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ প্যারিস চুক্তি ও স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যগুলির মতো আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলি এই গ্রহ এবং এর বাসিন্দাদের জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই ভবিষ্যৎ তৈরি করার লক্ষ্যে এই সমস্যাগুলিকে একত্রে সমাধান করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।

আপনি যে বিষয়টি অন্বেষণ করেছেন তার বিশ্বব্যাপী এবং স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলির সম্প্রদায়গুলিতে কীভাবে কৃষিকে আরও স্থিতিশীল ও স্থিতিস্থাপক করা যায়?

উন্নয়নশীল দেশগুলি কৃষি জলবায়ু পরিবর্তন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মতো বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি। এই সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য প্রতিটি সম্প্রদায়ের বিশেষ প্রয়োজন ও পরিস্থিতি অনুসারে কৌশলগুলির সংমিশ্রণ কৃষিকে আরও স্থিতিশীল ও স্থিতিস্থাপক করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণ:‌ পুষ্টির চক্র ও স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে শস্য বৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও মিশ্র চাষ পদ্ধতি বৈচিত্র্যময় করা, যার মধ্যে পশুপালন ও অ্যাকুয়াকালচার অন্তর্ভুক্ত; মাটির স্বাস্থ্য ও মাটি সংরক্ষণের উন্নতির জন্য দক্ষ সেচ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করা; জৈব চাষ পদ্ধতির প্রসার; বাজরার মতো জলবায়ু–প্রতিরোধী ফসল ও খরা–প্রতিরোধী বীজের চাষ; কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে সক্ষম করার জন্য বাজারের সংযোগ ও মূল্য শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করা; এবং স্থিতিশীল অনুশীলনে বিনিয়োগে কৃষকদের সহায়তা করার জন্য ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ প্রদান। অবশেষে প্রয়োজন নীতি সমর্থন, যা স্থিতিশীল কৃষির উপর জোর দেয় এবং স্থিতিশীলতার অনুসারী অনুশীলনের জন্য প্রণোদনা প্রদান করে।

ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি একটি অসাধারণ সুযোগ এবং আপনি যে বিষয়টি অন্বেষণ করেছেন তা কৌশলগত বিতর্কের অংশ। বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে আপনি কোনও নির্দিষ্ট সম্ভাবনা দেখতে পান?

ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন ও খাদ্যের চাহিদা সম্পর্কিত বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি অনন্য সুযোগ প্রদান করেছে। একটি আরও স্থিতিশীল, স্থিতিস্থাপক ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব খাদ্য ব্যবস্থা তৈরি করার প্রয়াসের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জ্ঞান ভাগাভাগি, নীতি সমর্থন এবং সম্পদ সংহতকরণ অন্তর্ভুক্ত। জি২০ এই গ্রহকে রক্ষা করার সময় ক্রমবর্ধমান বিশ্ব জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে কৃষির ভবিষ্যৎ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপক কৃষি অনুশীলন ও প্রযুক্তিগুলি বিশ্বজুড়ে গ্রহণ করা যায়৷ জি২০ দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রবণতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং কৃষি–সম্পর্কিত জিএইচজি নির্গমন হ্রাস করতে সহায়তা করার জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ভাগ করে নিতে পারে। জি২০ দেশগুলি তাদের সম্পদ ও দক্ষতা একত্র করে কৃষি গবেষণা ও উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রসার ঘটাতে সক্ষম। একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দেশগুলি টেকসই ধরনের শস্যের বৈচিত্র‌্য, কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী ফসল ও প্রিসিশন ফার্মিং প্রযুক্তির বিকাশকে ত্বরান্বিত করতেও সক্ষম হবে। ভারতসহ জি২০ দেশগুলি বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং খাদ্যের ক্ষয়ক্ষতি ও বর্জ্য হ্রাস করার পাশাপাশি স্থিতিশীলতার অনুসারী কৃষিকে উন্নত করার প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন করা হলে তা বিশ্বজুড়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য আরও বেশি খাদ্য সরবরাহ করতে সাহায্য করতে পারে। দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই চাষাবাদের চর্চাকে উন্নত করার লক্ষ্যে পরিকাঠামোগত বিনিয়োগ, সক্ষমতা বিকাশ ও ক্ষুদ্র কৃষকদের আর্থিক সহায়তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে বিনিয়োগ হল এমন একটি বিষয় যাকে জি২০ একটি স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা তৈরির জন্য একটি গ্লোবাল গভর্নেন্স প্ল্যাটফর্ম হিসাবে তুলে ধরতে পারে।এই প্ল্যাটফর্মটি দেশগুলির মধ্যে সংলাপ ও চুক্তিগুলিকে সহজতর করতে পারে, এবং স্থিতিশীল কৃষির জন্য অভিন্ন উদ্দেশ্য ও মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে পারে।




এই ভাষ্যটি প্রথমে
দ্য গ্লোবাল আই.
  -তে প্রকাশিত হয়েছিল।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.