মার্কিন-চিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে ক্রিটিক্যাল মিনারেলস বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির প্রতিযোগিতা রাষ্ট্রগুলিকে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তাদের দুর্বলতা পরীক্ষা করতে বাধ্য করেছে। দক্ষিণ কোরিয়াও নিজেকে একটি জটিল সন্ধিক্ষণে খুঁজে পায়: এটি একটি সম্পদের ঘাটতি রাষ্ট্র যেখানে একটি রফতানিচালিত অর্থনীতি এবং খনিজগুলির জন্য চিনের উপর উচ্চ নির্ভরতা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদও এর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। এই গুরুতর কাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলি উপলব্ধি করা সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। যাই হোক, চিনা সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর তার ক্রমাগত নির্ভরতার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝোঁক শুধু বাণিজ্যই বৃদ্ধি করেনি, বরং চিন-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ককেও ব্যাহত করেছে। অতএব, এই কাঠামোগত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করতে এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অর্জনের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া একটি দ্বিমুখী সম্পদ কূটনীতি কৌশল গ্রহণ করেছে: ১) চিনা সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর নির্ভর করার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলি হ্রাস করা এবং ২) দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য একটি বিকল্প সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরিতে বিনিয়োগ করা।
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি স্থিতিশীল ও সুরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল অপরিহার্য। কারণ এটি বাড়তে থাকা ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্য রাখে, যার মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী, সেকেন্ডারি ব্যাটারি এবং ইভি। এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য সাউথ কোরিয়ান মিনিস্ট্রি অব সায়েন্স অ্যান্ড আইসিটি ১২টি গুরুত্বপূর্ণ এবং উদীয়মান প্রযুক্তির ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ১২টি ক্ষেত্রে ৫০টি মূল এবং উন্নত গতিশীলতা ও সেকেন্ডারি ব্যাটারি রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি স্থিতিশীল ও সুরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল অপরিহার্য। কারণ এটি বাড়তে থাকা ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্য রাখে, যার মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী, সেকেন্ডারি ব্যাটারি এবং ইভি।
প্রেসিডেন্ট ইউনের প্রশাসন একটি উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে এবং দূষণহীন প্রযুক্তি, ইভি, সেকেন্ডারি ব্যাটারি এবং অর্ধপরিবাহীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি খাতের উপর বাজি ধরেছে। জাতীয় কৌশল সভায় সভাপতিত্ব করার সময় ইউন ব্যাটারির খনিজ ও উপকরণে অস্থিরতা এবং অস্থিতিশীলতা মোকাবিলায় সরবরাহ শৃঙ্খলকে বৈচিত্র্যময় করার গুরুত্বের উপর জোর দেন। এই কৌশলটি বাস্তবায়নের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া তার ৩৩টি মনোনীত প্রধান খনিজের মধ্যে ১০টি কৌশলগত খনিজগুলির জন্য ২০২৩ সালের ৮০ শতাংশ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ কমিয়ে চিনের উপর তার গুরুত্বপূর্ণ খনিজ নির্ভরতা হ্রাস করার পরিকল্পনা করেছে। বর্তমানে চিনের উপর তার নির্ভরতা অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়া চিন থেকে তার খনিজগুলির ৯৫ শতাংশ আমদানি করেছে, যার মধ্যে লিথিয়াম হাইড্রক্সাইড ৮৪ শতাংশ এবং কোবাল্ট হাইড্রক্সাইড ৬৯ শতাংশ। জাতীয় ভাবে স্ব-নির্ভর নীতিগুলি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্ষমতাকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োগ করা হয়, যা কম অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করে, আর অ্যান্ড ডি বৃদ্ধি করে এবং ঝুঁকিমুক্তকরণের উদ্দেশ্যে ‘কৌশলগত বিদেশি বিনিয়োগ এবং রিশোরিং কোম্পানি’র পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ইউন প্রশাসন সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রধান পণ্যগুলির জন্য আর অ্যান্ড ডি বাজেট ২০২৩ সালে ১৭.৬ বিলিয়ন ওয়ান থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সালে ৭৩.৯ বিলিয়ন ওয়ান করেছে।
যাই হোক, চিনের উপর নির্ভরতা কমানোর সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও বৈদেশিক নীতির চ্যালেঞ্জগুলি সিওলের বর্তমান অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পদ্ধতিতে বাধা দেয়। মার্কিন-চিন বাণিজ্য সম্পর্ককে চালিত করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার পথচলা একই সঙ্গে সফল ও ব্যর্থ হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির সঙ্গে শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কারণ এটি তার মিত্র ও নিরাপত্তা প্রদানকারী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে থেকে তার প্রাথমিক রফতানি বাজার হিসেবে যে কোনও একটি দেশকে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিল। এই চ্যালেঞ্জ বোঝার জন্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন অর্থনৈতিক ঝুঁকিমুক্তকরণের বিষয়ে দু’টি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন: অর্থনৈতিক নীতি হিসেবে নিউ সাদার্ন পলিসির (এনএসপি) প্রণয়ন করা, যা আসিয়ান ও ভারতের সঙ্গে নিজের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করার লক্ষ্য রাখে এবং সিওলের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে বিচ্ছিন্ন করা। যাই হোক, প্রেসিডেন্ট ইউনের অধীনে সিওল তার নীতি পরিবর্তন করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে পড়ে তার অর্থনৈতিক অংশীদার চিনের তুলনায় নিজের নিরাপত্তা জোটকে অগ্রাধিকার দেয়। যাই হোক, ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট বা মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইন (আইআরএ) এবং শুল্কের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যবাদী নীতির কারণে সিওলের প্রত্যাশা অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব পূর্ণ হয়নি। এই ধরনের নীতিগুলি দক্ষিণ কোরিয়ার ইভি শিল্পের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। কারণ দক্ষিণ কোরিয়া চিনা ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে, যার ফলে আইআরএ-র অধীনে ভর্তুকি সুবিধা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার ইভি ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা আরও খারাপ হতে পারে। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি ‘চিনা বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি সংস্থাগুলিকে ভর্তুকি দিয়ে মার্কিন কর ডলারের প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করবেন।’ স্বল্পমেয়াদে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়া খনিজ সুরক্ষা অর্জনের জন্য দ্বিমুখী কৌশল গ্রহণ করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পদ কূটনীতির স্তম্ভ: ঝুঁকিমুক্তকরণ এবং বৈচিত্র্যকরণ
ক্রমবর্ধমান সরবরাহ শৃঙ্খলের অনিশ্চয়তার মাঝেই দক্ষিণ কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ খনিজ কূটনীতির সবচেয়ে ব্যাপক অনুশীলনের একটি গ্রহণ করেছে। সিওলের রিসোর্স কূটনীতিকে যা আলাদা করে তোলে তা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন উভয় পক্ষের চাপের মুখে দেশটির যুক্তিসঙ্গত নীতি। একটি শক্তিশালী গুরুত্বপূর্ণ খনিজ কৌশল দ্বারা চালিত দেশটির সংস্থান কূটনীতি এখনও পর্যন্ত চিন থেকে ঝুঁকিমুক্ত করতে এবং বেজিংকে না চটিয়েই বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম হয়েছে। সিওলের উদ্দেশ্য হল স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদে সরবরাহ শৃঙ্খলের বাস্তবতা বিবেচনা করে চিনের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা সরিয়ে আংশিক নির্ভর হয়ে ওঠা। একই সময়ে সিওল বিশ্বব্যাপী সম্পদসমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ করেছে এবং প্রধানত আফ্রিকা, মধ্য এশীয় প্রজাতন্ত্র (সিএআর) ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলিকে লক্ষ্য করে এগিয়েছে। আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ইউন ঝুঁকিগুলি গ্রহণ করেছিলেন এবং একটি স্থিতিস্থাপক সরবরাহ শৃঙ্খল প্রতিষ্ঠার জন্য তার অংশীদারিত্বের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলের অস্থিতিশীলতার মুখে দাঁড়িয়ে আমরা বৈদ্যুতিক গাড়ি, ব্যাটারি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির মতো ভবিষ্যতের শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের উপর জোর দিই।’
ক্রমবর্ধমান সরবরাহ শৃঙ্খলের অনিশ্চয়তার মাঝেই দক্ষিণ কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ খনিজ কূটনীতির সবচেয়ে ব্যাপক অনুশীলনের একটি গ্রহণ করেছে।
স্পষ্টতই, দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পদ কূটনীতি দু’টি প্রধান স্তম্ভের উপর নির্ভর করে: ঝুঁকিমুক্তকরণ এবং বৈচিত্র্যকরণ। ঝুঁকিমুক্তকরণ স্তম্ভের অধীনে, দক্ষিণ কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অংশীদারদের (দ্রষ্টব্য সারণি ১) মিনারেল সিকিউরিটি পার্টনারশিপ ও ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সংক্রান্ত আলোচনার মতো বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা স্থাপন করেছে। সিওলের লক্ষ্য হল তার সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কোয়াড ও অউকাস-এর অন্যান্য অংশীদার যেমন ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ব্রিটেনের সঙ্গে নিজেকে সাযুজ্যপূর্ণ করে তোলা। সিওল তার বৈদ্যুতিক গতিশীলতা এবং সবুজ প্রযুক্তি খাতের জন্য ক্রমবর্ধমান রফতানি সম্ভাবনা-সহ একটি উন্নত ও উন্নয়নশীল বাজার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, যা দুই ভৌগোলিক পরিবেশেই ব্যাপক ভাবে গৃহীত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ব্যাপক গ্রহণের পাশাপাশি সিওল ইভি এবং সবুজ প্রযুক্তির মতো প্রধান বিভাগগুলিতে চিনের প্রধান প্রতিযোগী হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সারণি ১: মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি
দেশসমূহ
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজসমূহ
|
মনোযোগের ক্ষেত্র
|
দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
|
লিথিয়াম, কোবাল্ট, রেয়ার আর্থ দ্রব্য, গ্রাফাইট, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম
|
উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিশীল করা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-অস্ট্রেলিয়া
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বা ক্রিটিক্যাল মিনারেলস
|
অন্বেষণ, উন্নয়ন এবং উৎপাদন। এর পাশাপাশি পরিশোধন, খনিজ গলানো এবং প্রক্রিয়াকরণ
|
দক্ষিণ কোরিয়া-কানাডা
|
নিকেল, লিথিয়াম ও গ্রাফাইট, কোবাল্ট এবং রেয়ার আর্থ
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল, দূষণহীন শক্তি স্থানান্তর এবং জ্বালানি নিরাপত্তা
|
সূত্র: লেখক কর্তৃক সঙ্কলিত
বৈচিত্র্যকরণের পরিসরেও অনেক উন্নয়ন ঘটেছে; পদ্ধতিটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের অংশ নয় এমন তৃতীয় দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা গড়ে তোলার উপর জোর দেয়। সিওল সম্পদ-সমৃদ্ধ খনিজ দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে (দ্রষ্টব্য সারণি ২)। উদাহরণস্বরূপ, গত কয়েক মাসে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন ঘটেছে; একটি ছিল আফ্রিকান দেশগুলির সঙ্গে অনুষ্ঠিত একটি শীর্ষ সম্মেলন এবং দ্বিতীয়টি ছিল তিনটি মধ্য এশিয়ার দেশ অর্থাৎ কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সফর।
বৈচিত্র্যকরণের পরিসরেও অনেক উন্নয়ন ঘটেছে; পদ্ধতিটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের অংশ নয় এমন তৃতীয় দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা গড়ে তোলার উপর জোর দেয়।
এই বছরের জুন মাসে সিওল ২০২৪ কোরিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। শীর্ষ বৈঠকের পর ‘কোরিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করার উদ্দেশ্যে’ কোরিয়া-আফ্রিকা ক্রিটিক্যাল মিনারেল ডায়লগ প্রতিষ্ঠিত হয়। একই ভাবে, মধ্য এশিয়ায় নিজের ভ্রমণের সময় প্রেসিডেন্ট কে-সিল্ক রোড ইনিশিয়েটিভের সূচনা করেছিলেন, যা তাঁর প্রশাসনের অধীনে ইন্দো-প্যাসিফিক ও কোরিয়া-আসিয়ান সলিডারিটি ইনিশিয়েটিভের (কেএএসআই) এর পরে তৃতীয় উদ্যোগ এবং এই উদ্যোগের অধীনে চারটি অংশীদারি স্তম্ভের মধ্যে সম্পদের (গুরুত্বপূর্ণ খনিজ) উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার লক্ষ্য এই উদ্যোগটিকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, এটিকে পাঁচটি সিএআর-এর সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং পরের বছর পাঁচটি দেশের সঙ্গে প্রথম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা।
সারণি ২: তৃতীয় দেশের সঙ্গে চুক্তি
দেশসমূহ
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজসমূহ
|
মনোযোগের ক্ষেত্র
|
দক্ষিণ কোরিয়া-মঙ্গোলিয়া
|
মলিবডেনাম এবং টিন
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও রেয়ার আর্থ ধাতুর সহযোগিতা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-ইকুয়েডর
|
তামা, জিঙ্ক ও সোনা
|
সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা, ইভি, ব্যাটারি এবং অন্যান্য ব্যাটারি সাপ্লাই শৃঙ্খলের মতো পরিসর
|
দক্ষিণ কোরিয়া-ইন্দোনেশিয়া
|
নিকেল
|
ইভি, ব্যাটারি এবং অন্যান্য ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের মতো উন্নত পরিসর
|
দক্ষিণ কোরিয়া-ভিয়েতনাম
|
টাংস্টেন ও রেয়ার আর্থ দ্রব্য
|
মউ স্বাক্ষরের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে গবেষণা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-চিলি
|
তামা সরবরাহ
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সহযোগিতা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-তানজানিয়া
|
নিকেল, লিথিয়াম ও গ্রাফাইট, কোবাল্ট ও নিকেল
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ
|
দক্ষিণ কোরিয়া-উজবেকিস্তান
|
মলিবডেনাম ও টাংস্টেন
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল
|
দক্ষিণ কোরিয়া-জাম্বিয়া
|
তামা ও কোবাল্ট
|
জাম্বিয়ার মিনিস্ট্রি অব মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস ডেভেলপমেন্ট এবং কোরিয়া মাইন রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্সেস কর্পোরেশনের মধ্যে মউ
|
দক্ষিণ কোরিয়া-কাজাখস্তান
|
ইউরেনিয়াম ও রেয়ার আর্থ
|
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সহযোগিতা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-আফ্রিকার দেশসমূহ
|
ক্রোম, কোবাল্ট ও ম্যাঙ্গানিজ
|
সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ খাতে অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ করা
|
দক্ষিণ কোরিয়া-আর্জেন্তিনা
|
লিথিয়াম
|
দক্ষিণ কোরিয়ায় লিথিয়ামের স্থিতিশীল সরবরাহ
|
সূত্র: লেখক কর্তৃক সঙ্কলিত
এই প্রাতিষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলন প্রতিষ্ঠা করে এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলিকে আলোচ্যসূচিতে সমন্বিত করে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্য হল খনিজ নিরাপত্তার মাধ্যমে তার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষা করা। এটি সম্পন্ন করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলগুলির সঙ্গে তার কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করছে, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সিওলের অন্য উদ্দেশ্য হল বৃহৎ ক্ষমতার রাজনীতি থেকে মুক্ত একটি বিকল্প সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরি করা এবং এই দেশগুলির গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খলের নিচের দিকের অংশগুলিকে প্রাধান্য দিতে অংশীদারিত্বকে কাজে লাগানো।
অভিষেক শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।
লেখক তথ্য সঙ্কলনের জন্য রিসার্চ ইন্টার্ন অঙ্কিতা ব্রিজেশের কাছে কৃতজ্ঞ।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.