Published on Dec 21, 2024 Updated 0 Hours ago

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রজননের হারে উদ্বেগজনক পতন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে, যার ফলে নিয়োগের হার এবং সামরিক শক্তিতে তীব্র হ্রাসকেই দর্শায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা: একটি জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা

পূর্ব এশীয় অঞ্চলটি জনসংখ্যার সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে, যা অঞ্চলটির অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত প্রতিযোগিতার জন্য আশঙ্কার বিষয়। পূর্ব এশিয়ার প্রধান অর্থনীতির মধ্যে আঞ্চলিক ও বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া সর্বনিম্ন প্রজননের হার রয়েছে। ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার মোট প্রজননের হার (টিএফআর, একজন মহিলার প্রজনন বয়সে গড় সন্তানের সংখ্যা) দাঁড়িয়েছে ০.৭২, যা একটি সুস্থ ও স্থিতিশীল জনসংখ্যা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ২.১ প্রতিস্থাপন স্তরের অনেকটাই নিচে। এই পতন দক্ষিণ কোরিয়ার স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। জন্মের হারে পতন একটি গুরুতর জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা হয়ে উঠছে, যা নিয়োগ এবং সামরিক প্রস্তুতিকে প্রভাবিত করছে। তাই, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় তীব্র নিরাপত্তা প্রতিযোগিতার মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তার উপর এই সমস্যাটির প্রভাব বোঝা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে

পূর্ব এশিয়ার প্রধান অর্থনীতির মধ্যে আঞ্চলিক ও বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বনিম্ন প্রজননের হার রয়েছে।

জনসংখ্যার পতন এবং জাতীয় নিরাপত্তা

দক্ষিণ কোরিয়ার কম টিএফআর-এর নেপথ্যে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছেযেমন বার্ধক্য জনসংখ্যা, ধীর অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবা উচ্চ ব্যয়। এই ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যারও গুরুতর জাতীয় নিরাপত্তা প্রভাব রয়েছে: এগুলি ভবিষ্যতের সংঘাতের উত্সকে প্রভাবিত করে, জাতীয় শক্তির উপর প্রভাব ফেলে এবং সংঘাতের প্রকৃতি পরিবর্তন করে। সর্বোপরি, জনসংখ্যার পতন দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক প্রস্তুতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই উদ্বেগগুলি অঞ্চলটির অর্থনৈতিক অবস্থা কৌশলগত ভূগোলের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলস্বরূপ, অঞ্চলটির নিম্ন টিএফআর-এর প্রভাবগুলিকে মোকাবিলা করার জন্য দেশটি সম্পূর্ণ কর্মী সশস্ত্র বাহিনী বজায় রেখেছেকারণ দক্ষিণ কোরিয়া প্রযুক্তিগত ভাবে এখনও তার প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুসারে, ১৯ বছরের বেশি বয়সি সমস্ত সক্ষম পুরুষ কমপক্ষে ১৮ মাসের জন্য সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে বাধ্য, যেখানে মহিলারা স্বেচ্ছায় এই সেবামূলক কাজটি করতে পারেন।

তা সত্ত্বেও, জনসংখ্যা ক্রমশ সঙ্কুচিত হওয়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সামরিক শক্তি উত্তর কোরিয়ার সৈন্যের মাত্র ৪০ শতাংশ, যা প্রায় ১.১৪ মিলিয়ন। দক্ষিণ কোরিয়া ইতিমধ্যে তার সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ শক্তিতে বজায় রাখতে রীতিমতো যুঝছে। সাংমিউং ইউনিভার্সিটির জাতীয় নিরাপত্তা অধ্যাপক চোই বাইউং-ওক উল্লেখ করেছেন যে, আগামী বছরগুলিতে বাহিনীর আকার হ্রাস অনিবার্য হয়ে উঠবে।’ ২০২২ সালে সামরিক কর্মীদের সংখ্যা প্রথম বারের মতো পাঁচ লক্ষ বেঞ্চমার্কের নিচে নেমে গিয়েছে। এর বিপরীতে আবার উত্তর কোরিয়া প্রায় ১.২৮ মিলিয়ন সেনা-শক্তি বজায় রেখেছিল এবং এই পার্থক্যটি আরও গুরুতর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেমনটা চিত্র ১-এ দেখানো হয়েছে। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স অ্যানালাইসিস-এর বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, ২০৩৮ সালের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক কর্মীদের সংখ্যা ৩,৯৬,০০০-এ নেমে আসতে পারে।

চিত্র ১: কোরীয় উপদ্বীপে প্রজননের হার হ্রাস পাচ্ছে

সূত্র: নিউজউইক

*দুই কোরিয়াই যদিও তাদের জনসংখ্যা হ্রাসের সম্মুখীন, তা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার প্রজননের হার (১.৭৮) এখনও দক্ষিণ কোরিয়ার (০.৭২) তুলনায় বেশি।

দক্ষিণ কোরিয়ার ক্রমহ্রাসমান প্রজননের হার: কারণ এবং প্রভাব

২০২০ সালে প্রথম বারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা ডেথ ক্রস-এর সম্মুখীন হয়েছিল। অর্থাৎ এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যেখানে মৃত্যুর হার জন্মের হারকে ছাড়িয়ে গিয়েছে২০১৯ সাল থেকে ৩০৭,৭৬৪টি মৃত্যুর তুলনায় শুধুমাত্র ‘২৭৫,৮১৫ জনের জন্ম হয়েছে..., যা ৩.১ শতাংশ মৃত্যুর হারকেই দর্শায়।’ সরকারের চিরস্থায়ী ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আগামী বছরগুলিতে প্রজনন হার হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে এই হার ০.৬৮-এ নেমে আসবে এবং ২০৭২ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৩৬.২২ মিলিয়নে নেমে আসবে বলে অনুমান করা হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে যে, ২০২৪ সালের মে মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ক্রমহ্রাসমান প্রজননের হারকে একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করার পাশাপাশি মিনিস্ট্রি অফ পপুলেশন স্ট্র্যাটেজি প্ল্যানিং নামে একটি নতুন সরকারি মন্ত্রক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেনদক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান জনসংখ্যা ৫১.৭ মিলিয়ন।

সরকারের চিরস্থায়ী ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আগামী বছরগুলিতে প্রজনন হার হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে এই হার ০.৬৮-এ নেমে আসবে এবং ২০৭২ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৩৬.২২ মিলিয়নে নেমে আসবে বলে অনুমান করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রজননের নিম্ন হারের সমস্যাটি অত্যন্ত জটিল, যা একাধিক কারণ দ্বারা চালিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিযোগিতামূলক কর্মশক্তি, লিঙ্গ বৈষম্য, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, জীবনযাত্রার উচ্চ খরচ এবং শিশু স্বাস্থ্যসেবা-সহ আরও অনেক কিছু। পপুলেশন হেলথ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ২০২২ সালের একটি সমীক্ষা দর্শিয়েছে যে, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৫ শতাংশ মহিলা সন্তান চান না। অন্যান্য কারণের মধ্যে মহিলারা তাঁদের ‘বেবি স্ট্রাইক’ বা ‘শিশু ধর্মঘটেরকারণ হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ার পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে দায়ী করেছেন। তাই পদ্ধতিগত সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য প্রেসিডেন্ট ইউন পিতামাতা এবং যাঁরা সন্তানের প্রত্যাশা করছেন, এমন দম্পতিদের উপর বোঝা হালকা করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন: তাঁদের কাজের সময়সূচি নমনীয় করা, পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া ও প্রণোদনা প্রদান করা এবং পিতামাতার ছুটির ভাতা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি। নিম্ন প্রজনন হারের প্রভাব দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। যুব জনবলের অভাব বয়স্ক জনসংখ্যাও ‘সরকারি পেনশন স্বাস্থ্যসেবার আর্থিক বোঝা বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় স্কুলে ভর্তির হার কমেছে। ২০২৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের সংখ্যা প্রথম বারের মতো ৬০,০০০-এর নিচে নেমে গিয়েছে

সামরিক প্রস্তুতি এবং ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা

আর্থ-সামাজিক প্রভাব ছাড়াও জনসংখ্যাগত পতন দেশের সামরিক প্রস্তুতি, বিশেষ করে মানুষদের সামরিক যোগদানকে প্রভাবিত করেছে। দেশটি সামরিক চাকরিতে যুবকদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যেমনটা চিত্র ২-এ দেখানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে ৬,২০,০০০ জন সক্রিয় কর্মরত সামরিক কর্মী ছিলেন, যা ২০২২ সালে পাঁচ লক্ষে নেমে এসেছে। ভবিষ্যতে, একটি আদর্শ সেনাস্তর বজায় রাখার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রতি বছর দু’লক্ষ করে সৈন্য নিয়োগ করতে হবে। যাই হোক, ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার দরুন আগামী ২০ বছরে দেশকে রক্ষা করার জন্য মাত্র ১,২৫,০০০ জনই পুরুষ থাকবেন।

আর্থ-সামাজিক প্রভাব ছাড়াও জনসংখ্যাগত পতন দেশের সামরিক প্রস্তুতি, বিশেষ করে মানুষদের সামরিক যোগদানকে প্রভাবিত করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক বাহিনীতে কমিশনড এবং নন-কমিশনড অফিসারদের (এনসিও) তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন। ২০২৩ সালে ৫৫০ জন কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ৪৭৯০ এনসিও-র ঘাটতি থাকায় নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কর্মীদের সামরিক বাহিনীতে ধরে রাখার সঙ্কট বিষয়টিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অ্যাকাডেমি ছেড়ে আসা কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ১২২ জন কর্মকর্তা কাজ ছেড়েছেন, যেখানে ২০২৩ সালে মাত্র ৪৮ জন কর্মকর্তা কাজ ছেড়েছিলেন। অর্থাৎ এই কাজ ছাড়ার হার ২.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রযুক্তি হাই-টেক যুদ্ধকে সক্ষম করলেও মানব সম্পদ এখনও জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য অপরিহার্য। অনেক বিশ্লেষকই জনসংখ্যাকে একটি সম্পদ হিসাবে তুলে ধরেছেন এবং জনসংখ্যা সামরিক শক্তির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।

চিত্র ২: প্রকৃত প্রত্যাশিত কনস্ক্রিপ্ট এবং দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রয়োজনীয় কনস্ক্রিপ্টের মধ্যে পার্থক্য (কনস্ক্রিপ্ট অর্থাৎ সামরিক বাহিনীতে যোগদানে বাধ্য করা)

সূত্র: কার্নেগি

এজ স্ট্রাকচার বা বয়সের কাঠামো আসলে সামরিক জনশক্তি হিসাবে উপলব্ধ যুবকদের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে সংজ্ঞায়িত করে। কম টিএফআর এবং দীর্ঘ আয়ু হওয়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া পরিপক্ব বয়সের কাঠামো বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছে। একটি পরিপক্ব বয়সের কাঠামো তখনই ঘটে যদি আয়ু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের মধ্যে প্রজননের হার হ্রাস পায়কর্মক্ষম বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস এবং নিম্ন প্রতিস্থাপন স্তরের প্রজননের দরুন প্রতিটি প্রজন্ম ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র হতে থাকে, যার ফলে আকার আনুপাতিক হারে হ্রাস পায়। তা সত্ত্বেও, পরিপক্ব বয়সের কাঠামো-সহ দেশগুলি প্রযুক্তি, জোট এবং দক্ষতার সাহায্যে তাদের হৃত মানবসম্পদের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা এখনও অব্যাহত আছে।

একটি সক্ষমকারী হিসাবে প্রযুক্তি: আদৌ কি কাজ করবে?

দক্ষিণ কোরিয়া এই পতন সামাল দিতে একটি সক্ষমকারী সমাধান হিসাবে প্রযুক্তির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। দেশটি তার ২০২২ সালের ডিফেন্স ইনোভেশন ৪.০ প্ল্যান দ্বারা চালিত হয়, যা কিনা ‘একটি চৌকস সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে এবং সৈন্যের ঘাটতির উদ্বেগগুলি মোকাবিলায় প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি উদ্যোগ। পরিকল্পনায় দেশটির পূর্ব দিকে এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উপকূলীয় সীমান্ত বরাবর সীমান্ত নজরদারি ব্যবস্থার মতো প্রযুক্তির ব্যবহার জড়িত। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে প্রথম বারের মতো দক্ষিণ কোরিয়া আর্মি টাইগার ডেমনস্ট্রেশন ব্রিগেড নামে পরিচিত একটি নিবেদিত দল প্রতিষ্ঠা করেছিল এটি আসলে ‘একটি নতুন ইউনিট যার অর্থ ড্রোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য উন্নত সিস্টেমের পাশাপাশি স্থল যুদ্ধের ভবিষ্যতের পূর্বরূপ। পরিকল্পনাটি হল ২০৪০ সালের মধ্যে সমস্ত যুদ্ধ ব্রিগেডকে একই ধরনের শৃঙ্খলে রূপান্তরিত করা এবং ভবিষ্যতের যুদ্ধের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। এর পাশাপাশি দেশটি ২০২২ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে তার সামরিক কাঠামো আট থেকে দু কর্পোরাল এবং ৩৮ থেকে ৩৩ ডিভিশন পুনর্গঠন করবে।

পরিপক্ব বয়সের কাঠামো-সহ দেশগুলি প্রযুক্তি, জোট এবং দক্ষতার সাহায্যে তাদের হৃত মানবসম্পদের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা এখনও অব্যাহত আছে।

এই প্রচেষ্টায় প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম সেগুলির আত্তীকরণ, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অত্যাধুনিক অস্ত্র পরিচালনার জন্য সামরিক কর্মীদের চাহিদা যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস করেছেতবে এখনও সামরিক বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে মানবিক হস্তক্ষেপ একটি কৌশলগত ভূমিকা পালন করে। অভিযোজনযোগ্যতা, তত্পরতা এবং নির্ভুলতা হল প্রয়োজনীয় সামরিক বৈশিষ্ট্য, যা শুধুমাত্র মানুষের অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধের মতো উচ্চ হতাহতের হারসম্পন্ন একটি দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষ দেখিয়েছে যে, জনশক্তি যোগদানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় যুদ্ধ একটি বৃহৎ সামরিক বাহিনীর গুরুত্ব সংহতির জন্য এর গুরুত্ব প্রদর্শন করেছে। এই সবই যুদ্ধের সময় জনশক্তির গুরুত্বের একটি উদাহরণ, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য তো বটেই, যেখানে জনসংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যার সমস্যা মোকাবিলার বর্তমান ব্যবস্থাগুলি পদ্ধতিগত কারণগুলি মোকাবিলায় অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে। তাদের সীমিত সুবিধাগুলি সম্ভবত দীর্ঘ মেয়াদে লভ্যাংশ প্রদান করবে। এই ভাবে স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদে সামরিক ঝুঁকি হুমকির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তীব্রতর আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার মধ্যে, দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য তার সামরিক যোগদানের ক্ষেত্রে লক্ষ্যযুক্ত প্রণোদনা প্রদান করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। দেশটির সামরিক বাহিনীতে মহিলাদের নিয়োগ বৃদ্ধি একটি সফল মডেল, যা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। যাই হোক, অভিবাসনকে জনশক্তির একটি আকর্ষণীয় উৎস হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যা দেশটির সামরিক ও অর্থনৈতিক উভয় চাহিদা পূরণ করতে পারে। এর জন্য প্রথম পদক্ষেপ হবে অভ্যন্তরীণ আলোচনার পাশাপাশি নাগরিকদের মধ্যে সরকারের ব্যাপক প্রচার চালানো।

 


অভিষেক শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

তরুণিকা রায় জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির কোরিয়ান স্টাডিজের পিএইচডি ক্যান্ডিডেট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma is a Research Assistant with ORF’s Strategic Studies Programme. His research focuses on the Indo-Pacific regional security and geopolitical developments with a special ...

Read More +
Torunika Roy

Torunika Roy

Torunika Roy is a PhD Candidate in Korean Studies at Jawaharlal Nehru University ...

Read More +