২০২৪ সালের অর্থবছরে আনুমানিক ৮.২ শতাংশ প্রকৃত বৃদ্ধি, ২০২০ অর্থবছর থেকে প্রকৃত জিডিপিতে সামগ্রিকভাবে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি, এবং ২০২৫ অর্থবছরের জন্য একটি আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে ২২ জুলাই ২০২৪-এ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩-২৪ প্রকাশিত হয়। এতে একটি সামগ্রিক, ব্যাপক-ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মধ্যমেয়াদি বৃদ্ধির কৌশলের বিস্তৃত রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এর লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত তৈরি করা, এবং এর জন্য ছয়-মুখী পদ্ধতি ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। বিগত বছরগুলির ভিত্তিগত সরবরাহ-পার্শ্ব কাঠামো সংস্কারগুলিকে পুঁজি করতে, এবং এই মধ্যমেয়াদি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে তুলে ধরা সম্ভাবনাগুলিকে একীভূত করতে, ভারতকে এমন একটি নিচ-থেকে-উপর (বটম আপ) পদ্ধতির পথ অনুসরণ করতে হবে যা তার উপকরণ (ফ্যাক্টর) বাজারের প্রকট ফাঁকগুলির মোকাবিলা করবে এবং অর্থনীতির মধ্যে উপভোগ-চালিত বৃদ্ধির ঘটনাকে পুনরুজ্জীবিত করবে।
এই প্রেক্ষাপটে বর্তমান নিবন্ধটি কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৪-২৫-এ উল্লিখিত সামাজিক ক্ষেত্রের অগ্রাধিকারগুলি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এই অগ্রাধিকারগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কর্মশক্তির অংশগ্রহণ ও নিয়োগযোগ্যতার ব্যবধানগুলি মোকাবিলা করতে, উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে, জীবিকা রক্ষা ও আয়ের স্তর বৃদ্ধি করতে, এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে, যেখানে বিশেষ জোর দেওয়া হয় 'দরিদ্র, নারী, যুবা ও কৃষক'-এর উপর। অধিকন্তু, সামাজিক কল্যাণ একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি, যেখানে অর্থনৈতিক উত্তরণ ও সামাজিক নিরাপত্তা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
বাজেট ২০২৪-২৫: ভারতের সামাজিক ক্ষেত্রের লক্ষ্য লাভগুলি
গত কয়েক বছরে উপস্থাপিত পরের পর কেন্দ্রীয় বাজেট সরকারি পরিকাঠামো বিনিয়োগ, সরকারি পরিষেবা সরবরাহের ডিজিটালাইজেশন, এবং আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অধীনে লক্ষ্যযুক্ত ত্রাণ ও কাঠামোগত সংস্কারের উপর টেকসই গুরুত্ব আরোপ করেছে, যার সঙ্গে মূল্যস্ফীতি চাপের কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং রাজস্ব ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা থেকে ভারতের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও প্রসারণ হচ্ছে। এই বছর অবশ্য কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৪-২৫ ভারতের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্যগুলির মঞ্চ তৈরি করার জন্য প্রত্যাশিত নয়টি মূল কৌশলকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে।
সকল সামাজিক ক্ষেত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তহবিলসহ শিক্ষা ক্ষেত্র একটি অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গিয়েছে, যদিও তা ২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত প্রাককলনের তুলনায় কিছুটা কম।
সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয়ের প্রসঙ্গে, বাজেট ২০২৪-২৫-এ উপস্থাপিত ব্যয় বরাদ্দ বেশ কয়েকটি মূল প্রবণতাকে তুলে ধরে (সারণি ১ দেখুন অর্থবর্ষ ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫-এর প্রকৃত হিসাব (এই), বাজেটের আনুমানিক হিসাব (বিই) ও সংশোধিত প্রাককলন (আরই)-এর জন্য)। সকল সামাজিক ক্ষেত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তহবিলসহ শিক্ষা ক্ষেত্র একটি অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গিয়েছে, যদিও তা ২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত প্রা্ককলনের তুলনায় কিছুটা কম। দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রকের বরাদ্দ এই বছর ৪,৫২০ কোটি ভারতীয় রুপির আনুমানিক ব্যয় সংস্থানের সঙ্গে যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে — যা ২০২৩-২৪ বিই থেকে ২৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ২০২৩-২৪ আরই-র তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য ৩৮.৬ শতাংশ বৃদ্ধি। এটি কর্মশক্তির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রত্যাশিত কাজের বাজার পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতির উপর মনোযোগ নির্দেশ করে৷ স্বাস্থ্যক্ষেত্রের তহবিল ক্রমাগত নিরঙ্কুশভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির উপর ক্রমাগত গুরুত্ব প্রতিফলিত করে। যাই হোক, পূর্ববর্তী অর্থবছরে মূলধন ব্যয়ের ঘাটতির কারণে ২০২৩-২৪ বিই ও ২০২৩-২৪ আরই-তে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দর উল্লেখযোগ্য ব্যবধানটি সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিযোগ্য ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ায়। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়নের জন্য এবং সেইসঙ্গে আদিবাসী কল্যাণের জন্য যে সব কর্মসূচি বা প্রকল্প শুরু করা হবে, সেগুলির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক/বিভাগগুলি উচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে, যা সবচেয়ে অরক্ষিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতিকে জোরদার করেছে।
সারণি ১: সামাজিক খাতের জন্য ব্যয় পরিমাপ (কোটি টাকায়)
ক্ষেত্র
|
প্রকৃত হিসাব (এই) (২০২২-২০২৩)
|
বাজেটের আনুমানিক হিসাব (বিই) (২০২৩-২০২৪)
|
সংশোধিত প্রাককলন (আরই) (২০২৩-২০২৪)
|
বাজেটের আনুমানিক হিসাব (বিই) (২০২৪-২০২৫)
|
শিক্ষা
|
৯৭১৯৬.৩৬
|
১১২৮৯৯.৪৭
|
১২৯৭১৮.২৮
|
১২০৬২৭.৮৭
|
দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তাবৃত্তি
|
১৩৭১
|
৩৫১৭.৩১
|
৩২৬০.১৮
|
৪৫২০
|
স্বাস্থ্য
|
৭৫৭৩১.০৬
|
৮৯১৫৫
|
৮০৫১৭.৬২
|
৯০৯৫৮.৬৩
|
সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন
|
৭৪১৩.৭৬
|
১২৮৪৭.০২
|
৯৮৫৩.৩২
|
১৩০০০.২
|
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন
|
৯৮৫.৫৮
|
১২২৫.১৫
|
১২২৫.০১
|
১২২৫.২৭
|
আদিবাসী বিষয়ক
|
৭২৭৩.৫৩
|
১২৪৬১.৮৮
|
৭৬০৫
|
১৩০০০
|
নারী ও শিশু উন্নয়ন
|
২৩৯৯৪.০৫
|
২৫৪৪৮.৭৫
|
২৫৪৪৮.৬৮
|
২৬০৯২.১৯
|
সূত্র: এক্সপেন্ডিচার প্রোফাইল, ইউনিয়ন বাজেট ২০২৪-২০২৫ থেকে সংকলিত
ভারতজুড়ে আনুমানিক ৪.১ কোটি যুবাদের উৎসাহিত করতে এবং তাদের জনসংখ্যাগত লভ্যাংশকে পুঁজি করতে, তাদের শিক্ষা, দক্ষতায়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য পাঁচটি প্রকল্প ও উদ্যোগের প্যাকেজ শুরু করার জন্য ১.৪৮ লক্ষ কোটি ভারতীয় রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবসম্পদ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, যা একটি স্থিতিশীল মধ্যমেয়াদি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে, প্রতি বছর ১,০০,০০০ ও ২৫,০০০ শিক্ষার্থীকে সহায়তা করার জন্য নিম্নলিখিতগুলি চালু করা হবে, যথাক্রমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ ভারতীয় রুপি পর্যন্ত ঋণের জন্য আর্থিক সহায়তা, ঋণের পরিমাণের ৩ শতাংশ বার্ষিক সুদের সাবভেনশনের জন্য ই-ভাউচার, এবং সরকার-প্রোমোটেড তহবিল থেকে গ্যারান্টিসহ ৭.৫ লক্ষ ভারতীয় রুপি পর্যন্ত ঋণের সুবিধার্থে একটি সংশোধিত মডেল স্কিল লোন স্কিম।
ভারতজুড়ে আনুমানিক ৪.১ কোটি যুবাদের উৎসাহিত করতে এবং তাদের জনসংখ্যাগত লভ্যাংশকে পুঁজি করতে, তাদের শিক্ষা, দক্ষতায়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য পাঁচটি প্রকল্প ও উদ্যোগের প্যাকেজ শুরু করার জন্য ১.৪৮ লক্ষ কোটি ভারতীয় রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে।
কেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য প্রকল্প, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার (এবি পিএম-জেএওয়াই) জন্য ৭,৩০০ কোটি ভারতীয় রুপি বরাদ্দ রয়েছে, যা আগের বরাদ্দ ৬,৮০০ কোটি ভারতীয় রুপি থেকে বেড়েছে৷ তা ছাড়া চিকিৎসা গবেষণার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর জন্য বাজেট বরাদ্দ ২২৯৫.১২ কোটি ভারতীয় রুপি থেকে বাড়িয়ে ২,৭৩২.১৩ কোটি ভারতীয় রুপি করা হয়েছে৷ যাই হোক, যদিও জাতীয় নমুনা সমীক্ষার ৭৫তম রাউন্ড ব্যক্তিগত ও সরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে পকেটের টাকা দিয়ে চিকিৎসা ব্যয়ের একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবধান তুলে ধরেছে, বাজেটে আরও শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য সহায়তা স্থাপত্যের জন্য কোনও উল্লেখযোগ্য প্রয়াসের কথা ঘোষণা করা হয়নি।
একটি শিক্ষিত, দক্ষ ও সুস্থ কর্মীবাহিনীর জন্য যথেষ্ট সুযোগ নিশ্চিত করতে, এবং কর্মসংস্থানের আনুষ্ঠানিকীকরণকে উৎসাহিত করতে, বাজেট ২০২৪ প্রশংসনীয়ভাবে একটি কর্মসংস্থান-সংযুক্ত প্রণোদনাগুচ্ছের (ইএলআই) মাধ্যমে কর্মীবাহিনীতে নতুন প্রবেশকারীদের জন্য কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থায় (ইপিএফও) তালিকাভুক্তিতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর জন্য সকল আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রের জন্য মাসিক মজুরি তিন কিস্তিতে — প্রতি মাসে ১৫,০০০ ভারতীয় রুপি পর্যন্ত, প্রতি মাসে ১ লক্ষ ভারতীয় রুপি পর্যন্ত বেতনের যোগ্যতার সীমা সহ — দেওয়া হবে। এই প্রকল্পটি সম্ভবত ২১০ লক্ষ তরুণ কর্মচারীকে উপকৃত করবে। এছাড়াও, ছোট ব্যবসায় যুবাদের প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করতে তাদের মুদ্রা ঋণের সীমা দ্বিগুণ করে ২০ লক্ষ ভারতীয় রুপি করা হবে যারা পূর্বে তরুণ (যুব) বিভাগের অধীনে নেওয়া ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করেছেন।
যদিও নারী ও শিশু উন্নয়নে বরাদ্দের সামান্য বৃদ্ধি হতাশাজনক বলে মনে হচ্ছে, ৪৩টি মন্ত্রক/বিভাগ জুড়ে বিস্তৃত জেন্ডার বাজেটের ৩৮.৬ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি এমন একটি লিঙ্গ-রূপান্তরমূলক পদ্ধতি গ্রহণের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করে যা নারীর ক্ষমতায়নকে ছাড়িয়ে গিয়ে জীবনের সব ক্ষেত্রে উৎপাদনশীল সম্ভাবনাকে অন্তর্ভুক্ত করে। নারীনির্দিষ্ট দক্ষতার কর্মসূচি চালু করা এবং নারী-নেতৃত্বাধীন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (এসএইচজি) উদ্যোগে বাজারে প্রবেশাধিকার প্রসারের মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে শ্রমশক্তিতে মহিলাদের বৃহত্তর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার উদ্যোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে শিল্প খেলোয়াড়দের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গুরুত্বপূর্ণ পরিচর্যা পরিকাঠামোর প্রয়োজনীয়তাগুলি পূরণের ব্যবস্থা করার জন্য কর্মজীবী মহিলাদের হোস্টেল ও ক্রেশ সুবিধাগুলি প্রতিষ্ঠার বিধান করে ।
সামাজিক ব্যয়ে ভারসাম্যের জন্য জায়গা
দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব, দক্ষতা ও অন্তর্ভুক্তির উপর জোর দেয় এমন সামাজিক নিরাপত্তার আরও ক্ষমতায়নের মডেলগুলিতে ফোকাস করার জন্য ভারতের সামাজিক ক্ষেত্রের ব্যয় সময়ের সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে বিকশিত হয়েছে। ডিজিটাল ক্ষমতায়ন, ফলাফল-ভিত্তিক বাজেট, লক্ষ্যযুক্ত হস্তক্ষেপ, ও বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার এমন একটি বাস্তুতন্ত্র তৈরি করার লক্ষ্য রেখেছে যা শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক ত্রাণই দেয় না, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদের নিজেদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করার জন্য ক্ষমতায়িত করে। ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই বিস্তৃত পন্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক সুরক্ষার মডেলগুলিকে প্রতি বছর আরও ক্ষমতায়িত করার উপর মনোযোগের সঙ্গে অবশ্য পূর্বে যে ব্যয় করা হয়েছিল তার পরিমাণের বিরোধ থাকা উচিত নয়, বরং তা বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে সারিবদ্ধ হওয়া উচিত। প্রকৃতপক্ষে, তহবিলগুলিকে যাতে আরও দক্ষ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ঐতিহ্যগত কল্যাণ ব্যয়ের পরিপূরণ ও বৃদ্ধি করা উচিত।
দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব, দক্ষতা ও অন্তর্ভুক্তির উপর জোর দেয় এমন সামাজিক নিরাপত্তার আরও ক্ষমতায়নের মডেলগুলিতে ফোকাস করার জন্য ভারতের সামাজিক ক্ষেত্রের ব্যয় সময়ের সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে বিকশিত হয়েছে।
পরম ও আপেক্ষিক বৃদ্ধি সত্ত্বেও শিক্ষার জন্য তহবিল জিডিপির প্রায় ২.৭-২.৯ শতাংশে স্থবির রয়েছে, যা ইউনেস্কো নির্ধারিত ৪-৬ শতাংশের বৈশ্বিক মাপকাঠির নিচে। একইভাবে, যদিও স্বাস্থ্য ব্যয় জিডিপির ১.৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, তবুও তা জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১৭ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা জিডিপি-র ২.৫ শতাংশের কম। স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামোয়, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে ও অনুন্নত এলাকায়, স্থিতিশীল ও বর্ধিত বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া, দক্ষতা উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন, এবং আদিবাসী সংক্রান্ত বিষয়গুলি-সহ কয়েকটি সামাজিক খাতে ২০২৪ অর্থবছরের বাজেট ও সংশোধিত প্রাককলনের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলি (সারণি ১ দ্রষ্টব্য) নির্দেশ করে যে প্রক্রিয়াগত সংস্কার ও দায়বদ্ধতার উপর জোর দেওয়া সত্ত্বেও সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এখনও অপূর্ণতা রয়েছে। তাই, বরাদ্দকৃত তহবিল কার্যকরভাবে ব্যবহার করা এবং উদ্দিষ্ট সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছনো নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সামাজিক ক্ষেত্রের কর্মসূচি বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বাড়াতে প্রশাসনিক কাঠামোর উন্নতি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মৌলিক ডিপিআই স্থাপত্যকে কাজে লাগিয়ে পরিষেবাগুলিকে কার্যকরভাবে পরিচালনা ও সরবরাহ করতে পারে এমন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান তৈরি করা গেলে তা উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করবে। অধিকন্তু, ভারতের ফলাফল-ভিত্তিক বাজেট পদ্ধতিকে সমর্থন করার জন্য ডেটা গভর্ন্যান্স কোয়ালিটি ইনডেক্স (ডিজিকিউআই)-এর মতো উদ্যোগগুলি সঠিক দিকে পদক্ষেপ হলেও নীতিগত সিদ্ধান্তকে অবহিত করতে এবং অগ্রগতি ট্র্যাক করতে আরও ভাল ডেটা সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও সদ্ব্যবহারের প্রয়োজন আছে। কোভিড-১৯ অতিমারির সময়কাল অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিযুক্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। বাজেটে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, সেইভাবে পিএম আবাস যোজনার অধীনে দরিদ্রদের জন্য ঘর ও ডরমিটরি নির্মাণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের পরিকল্পনা এই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশগুলিকে উপযুক্ত বাড়ি সরবরাহ করার জন্য অপরিহার্য। ভারতের শ্রমবাজার স্থাপত্যের ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত করার জন্য সারা দেশের শহুরে কেন্দ্রগুলিতে নিযুক্ত অভিবাসী শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করতে লক্ষ্যযুক্ত সুপরিকল্পিত নীতি নকশা তৈরি করা এবং বাজেট বরাদ্দ খুবই প্রয়োজন।
বর্তমান বাজেট বরাদ্দ ও সামাজিক খাতের ব্যয়ের সামগ্রিক নকশা, সম্ভাব্য কৌশলগুলির সঙ্গে মিলিতভাবে, ভারতের মধ্যমেয়াদি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে ভালভাবে সারিবদ্ধ। যদিও কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে প্রশংসনীয় বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে নির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলিকে ছুঁয়েছে, যেমন কর্মশক্তির রূপান্তর ও নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন, তবুও এটি সকলকে পরিবেশন করে এমন একটি সুষম দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে।
দেবস্মিতা সরকার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোমেসির জুনিয়র ফেলো।
অম্বর কুমার ঘোষ অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.