Published on Oct 21, 2025 Updated 0 Hours ago

ভারত-মার্কিন সমুদ্রতল প্রযুক্তিতে সহযোগিতা ডিজিটাল পরিকাঠামো রক্ষা, হুমকি প্রতিরোধ এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে স্থিতিশীলতার জন্য ক্রমবর্ধমান সারিবদ্ধতা প্রতিফলিত করে।

ভারত-মার্কিন সমুদ্রতলের সহযোগিতা আরও বড় করে তোলা

সমুদ্রতলের ক্ষমতা, যদিও দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব-‌প্রতিরোধের (‌ডেটারেন্স)‌ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতায় একটি নতুন মাত্রা অর্জন করেছে — বিশেষ করে নতুন এবং আরও পরিশীলিত প্রযুক্তির কারণে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি — বিশেষ করে চিনের জলতলের যুদ্ধক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ক্ষমতার সঙ্গে — জলতলের ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতার উপর নতুন করে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে। ড্রোন ও নজরদারি প্ল্যাটফর্মের মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলি জলতলের সিস্টেমের তুলনায় বৃহৎ ভূ-পৃষ্ঠের জাহাজের তুলনামূলক সুবিধা হ্রাস করেছে, যা সম্ভাব্যভাবে নৌ-যুদ্ধকে পুনর্গঠন করছে। এই পরিসরটি সামুদ্রিক নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার সাথে সাথে, পরমাণু চালিত সাবমেরিন, স্বয়ংচালিত ব্যবস্থা এবং সমুদ্রতলের নজরদারি পরিকাঠামোতে উন্নত প্রযুক্তির সংযুক্তিকরণ আর ঐচ্ছিক নয়, বরং পূর্ব-‌প্রতিরোধ বজায় রাখার জন্য একটি কৌশলগত অপরিহার্যতা। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত প্রতিযোগিতা গত দশক ধরে ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং ক্ষমতা ঐতিহ্যগতভাবে নৌবহর, ঘাঁটি এবং  বিমানবাহী জাহাজের মতো দৃশ্যমান সম্পদের বোঝাপড়ার চারপাশে আবর্তিত হয়েছে। আজকাল পূর্ব-‌প্রতিরোধ ক্রমবর্ধমানভাবে এমন কিছুর মধ্যে প্রোথিত যা চোখের আড়ালে থাকে:‌ সমুদ্রের নীচের ক্ষেত্র। সমুদ্রের নীচের কেবলগুলিকে এখন বৃহৎ শক্তি প্রতিযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা বিভিন্ন নতুন মাত্রা বহন করে। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ট্র্যাফিকের ৯৫ শতাংশেরও বেশি প্রেরিত হওয়ায়, জলের নীচের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা এখন শুধু বিদ্যুৎ প্রক্ষেপণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং কৌশলগত উপস্থিতিও অন্তর্ভুক্ত করে। সমুদ্রের নীচের পূর্ব-‌প্রতিরোধের মধ্যে সাবমেরিন যোগাযোগ কেবলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো  রক্ষা করা জড়িত, যা বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ট্র্যাফিক এবং ডেটার ৯৫ শতাংশেরও বেশি প্রেরণ করে। বাল্টিক সাগরে সমুদ্রের নীচে তারের সন্দেহজনক নাশকতার মতো ঘটনাগুলিকে  এগুলির ক্রমবর্ধমান দুর্বলতার উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা একটি নতুন গ্রে-জোন সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরির ইঙ্গিত দেয়।

জলের নীচে প্রতিযোগিতার সবচেয়ে স্পষ্ট দিকটি বর্তমানে দুটি বৃহৎ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন বিশাল সাবমেরিন বহর বজায় রেখেছে — মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য 
১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন (এসএসবিএন) এবং চিনের নতুন পারমাণবিক শক্তিচালিত জাহাজসহ ছয়টি — তাদের প্রতিযোগিতা এখন শুধুই জাহাজ গণনার বাইরেও বিস্তৃত। দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সমুদ্রতলের ডেটা সেন্টারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে  এটি স্পষ্ট, যা সামরিক ও নজরদারি ক্ষমতার মিশ্রণকে নির্দেশিত করে। একইভাবে,  মাইক্রোসফটের প্রজেক্ট ন্যাটিক  এখন সমুদ্রতলের কৌশলগুলিকে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও সংযোগ পুনর্নির্ধারণ করছে, তার উদাহরণ।

চিন এগিয়ে যাচ্ছে

চিনের উদ্যোগ, যেমন 
আন্ডারওয়াটার গ্রেট ওয়াল প্রকল্প, ২০১৫ সাল থেকে উন্নয়নাধীন এবং দক্ষিণ চিন সাগরের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি বেজিংয়ের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। আঞ্চলিক জলসীমায়  প্রোথিত হলেও, এই অগ্রগতিগুলিকে ওয়াশিংটন ক্রমবর্ধমানভাবে বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরে কৌশলগত প্রভাব হিসেবে দেখছে। গত দশক ধরে, চিনা গবেষণা জাহাজগুলি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (আইওআর) তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছে, যা সমুদ্রের নীচের মানচিত্রায়ণ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই প্রচেষ্টার পরিপূরক হল চিনের বেইডু নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম — একটি সিস্টেম যা 'আন্ডারওয়াটার বেইডু' নামে পরিচিত। এটি দিয়ে চিন সমুদ্রতল সেন্সর এবং স্বয়ংচালিত জলতলের যানবাহনের (এইউভি) নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। মহাকাশ-ভিত্তিক এবং সমুদ্রতলের নজরদারি প্রযুক্তির এই সংযুক্তিকরণ, এবং চিনের পাঁচটি অতি-বৃহৎ মানবহীন জলতলের যানবাহন (এক্সএলইউইউভি) ডিজাইনের গোপন উন্নয়ন সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদনের প্রকাশ্যে আসা, দুয়ে মিলে সমুদ্রতলদেশে চিনের ত্বরান্বিত অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। যদিও বোয়িং ওরকা এক্সএলইউইউভিও, -‌র মতো সিস্টেমের মাধ্যমে এক্সএলইউইউভি উন্নয়নে আমেরিকা এগিয়ে রয়েছে, তবুও চিনের ঘটনাবলি নিয়ে তাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে, বিশেষ করে যেহেতু এই উন্নয়নগুলি গ্রে-জোন কৌশল নিয়ে উদ্বেগের কারণ। মার্কিন সূত্রগুলি এ কথাও বলছে যে, চিনের থেকে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রসীমার পরিসরজুড়ে সক্রিয় থাকার আকাঙ্ক্ষার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।


তরঙ্গের নীচে কৌশলগত প্রতিযোগিতায় তথ্য প্রবাহ নিয়েও প্রতিদ্বন্দিতা রয়েছে। ডিজিটাল পরিকাঠামো সম্প্রসারণের সাথে সাথে সাব-সি কেবলগুলি ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং একইসঙ্গে সম্ভাব্য চ্যুতিরেখা হয়ে উঠেছে।



তরঙ্গের নীচে কৌশলগত প্রতিযোগিতায় তথ্য প্রবাহ নিয়েও প্রতিদ্বন্দিতা রয়েছে। ডিজিটাল পরিকাঠামো সম্প্রসারণের সাথে সাথে সাব-সি কেবলগুলি ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং একইসঙ্গে সম্ভাব্য চ্যুতিরেখা হয়ে উঠেছে। এইচএমএন টেক-এর মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির নেতৃত্বে চিনের প্রবেশের সময় এই ক্ষেত্রে একটি নতুন প্রতিযোগিতামূলক ধারণার উদ্ভব হয়েছে। বেজিং সমুদ্রতলের অপারেশনের জন্য কমপ্যাক্ট গভীর-সমুদ্র কেবল জাহাজ তৈরি করেছে, যা ফেনদাউঝে ও হাইডউ-এর মতো উন্নত সাবমার্সিবলের সঙ্গে সমন্বিত। উপরন্তু, চিনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-সক্ষম স্থানীয়করণ অ্যালগরিদম এবং চৌম্বকীয় সনাক্তকরণ ও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত-‌সক্ষম রোবোটিক্স সিস্টেমের ব্যবহার সমুদ্রতলের ক্ষেত্রে তার 
গ্রে-জোন কৌশলগুলিকে  প্রসারিত করেছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্টিগ্রেটেড আন্ডারসি নজরদারি সিস্টেম (আইইউএসএস) I শক্তিশালী করেছে এবং পর্যবেক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য ইউইউভি ও এইউভি মোতায়েন করেছে। দ্বৈত-ব্যবহারের সেন্সর প্রযুক্তি, কেবল বেরিয়াল ও রিয়েল-টাইম পরিমাপের মাধ্যমে, ওয়াশিংটন পরিহার্যতা ও পূর্ব-‌প্রতিরোধের উপর জোর দিয়েছে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে যে সমুদ্রের নীচের কেবলগুলি চিনা মেরামতকারী জাহাজগুলির গুপ্তচরবৃত্তির জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এই উদ্বেগ আরও বেড়ে যায় যখন মার্কিন কর্মকর্তারা গুগল ও মেটার মতো সংস্থাগুলিকে ব্যক্তিগতভাবে এসবি সাবমেরিন সিস্টেমস সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন — যা হল একটি চিনা মেরামতকারী সংস্থা যার জাহাজ ফু হাই ও বোল্ড ম্যাভেরিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় কেবলগুলির কাছে কাজ করার সময় কয়েকদিন ধরে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যদিও নিখোঁজ হওয়ার ব্যাখ্যা ভিন্ন হতে পারে, তবে এই ধরনটি গোপনে হস্তক্ষেপের আশঙ্কা আরও তীব্র করে তুলেছে। নিশ্চিত না হলেও, কেবল-কাটার  প্রোটোকলের চিনের সন্দেহজনক বিকাশ সমুদ্রের নীচে প্রযুক্তিগত-কৌশলগত সংঘাতের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

জরুরি অবস্থা স্বীকার করে ভারত — যার সামুদ্রিক নিরাপত্তা ইন্দো-প্যাসিফিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত — তার সমুদ্রের নীচে পূর্ব-‌প্রতিরোধ ক্ষমতার সম্প্রসারণ এবং এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্বকে 
গভীরতর করতে প্রয়াসী হয়েছে, যার অগ্রভাগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এই উদ্বেগগুলি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ভারতসহ ইন্দো-প্যাসিফেকের দেশগুলি বেজিংয়ের ক্রমবর্ধমান জলের নীচের ক্ষমতা সম্পর্কে সতর্ক হয়ে উঠেছে, এবং বিশেষ করে ভারত মহাসাগরে আরও বেশি করে জলের নীচে সচেতনতা (ইউডিএ)-‌র প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

ভারত-মার্কিন প্রতিশ্রুতি

সমুদ্রতল পর্যবেক্ষণ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা-‌সহ ইউডিএ উদ্যোগে বিনিয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক খেলোয়াড় হিসেবে ভারতের ভূমিকাকে আরও উন্নত করতে পারে। ভারত-মার্কিন কৌশলগত কাঠামোর অধীনে অটোনোমাস সিস্টেমস ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স (এএসআইএ) প্রতিষ্ঠা এমন সমন্বয় তৈরি করে যা শিল্প অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বায়ত্তশাসিত সমুদ্রতল প্রযুক্তির সহ-উন্নয়নকে সক্ষম করবে। অ্যান্ডুরিল ইন্ডাস্ট্রিজ ও 
মাহিন্দ্রা গ্রুপের মধ্যে  অংশীদারিত্ব পরবর্তী প্রজন্মের স্বয়ংচালিত  সিস্টেমের স্থাপনার উপর আলোকপাত করে, যেমন সি৪আইএসআর (কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশনস, কম্পিউটার, ইন্ট্যালিজেন্স, নজরদারি এবং রিকনেসেন্স) ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম প্রযুক্তিতে এআই অন্তর্ভুক্ত করে। ডাইভ-এলডিডাইভ-এক্সএলকপারহেড,  এবং সিবেড সেন্ট্রি সহ অ্যান্ডুরিলের প্ল্যাটফর্মগুলি পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও সেন্সিংয়ে উন্নত জলতলের ক্ষমতা তৈরি করতে পারে। এর ফলে নৌ-‌ইলেকট্রনিক্স, অটোনোমাস মেরিটাইম সিস্টেম, উন্নত এআই-সক্ষম কাউন্টার আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম (সিইউএএস) প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল (সি২) সফটওয়্যারে মাহিন্দ্রা গ্রুপের দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে, এবং আন্তঃকার্যক্ষমতার একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে। ২০২৫ সালের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সময় জারি করা যৌথ বিবৃতি  সমুদ্রতলের পূর্ব-‌প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার প্রতি একটি যৌথ প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে, যা উভয়ই ক্রমশ রূপায়িত করছে। বৃহত্তর ট্রাস্ট (ট্রান্সফর্মিং দ্য রিলেশনশিপ ইউটিলাইজিং স্ট্র্যাটেজিক টেকনোলজি) কাঠামোর অধীনে অটোনোমাস সিস্টেমস ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্সের সূচনা অটোনোমাস আন্ডারওয়াটার ভেহিকেল (এইউভি), আনম্যানড সারফেস ভেসেল (ইউএসভি), এবং এআই-চালিত মেরিটাইম নজরদারি সিস্টেমের মতো প্রযুক্তির সহ-উন্নয়ন ও স্থাপনার উপর সহযোগিতার পরিকল্পনা করে। উল্লেখযোগ্য উদাহরণগুলির মধ্যে ভারতের এইউভি-১৫০ ও রোসাব ৬০০০-এর মতো দেশীয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি রয়েছে ওয়েভ গ্লাইডার আনক্রুড সারফেস ভেহিকেল (ইউএসভি), নাইফফিশ ইউইউভি এবং ওরকা এক্সএলইউইউভি-এর সহ-উৎপাদন। যৌথ প্রকল্পগুলি, যেমন এল৩হ্যারিস-‌সহ লো-ফ্রিকোয়েন্সি টোড সোনার সিস্টেম ও ভারত ডায়নামিক্স-‌এর সঙ্গে এমএসএ সোনোবয় এই বিষয়ে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির যৌথ স্বীকৃতিকে প্রতিফলিত করে যে প্রযুক্তিগত আন্তঃকার্যক্ষমতা ও সমুদ্রের তলদেশে সচেতনতা শিল্প অংশীদারিত্বের প্রসারের পরবর্তী পর্যায়কে সংজ্ঞায়িত করবে।

এ ছাড়া, নজরদারি সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি উৎপাদনকারী মার্কিন সামরিক ঠিকাদার এল৩ হ্যারিস এবং ভারত ফোর্জের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কল্যাণী স্ট্র্যাটেজিক সিস্টেমের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্য হল প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতার রোডম্যাপের অধীনে উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও সরবরাহ শৃঙ্খল নেটওয়ার্কের সহ-উন্নয়ন। একই সঙ্গে
বরুণাস্ত্র ও টিএএল-এর মতো দেশীয় টর্পেডোর জন্য পরিচিত ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড (বিডিএল) ভারতের 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রচারণার আওতায় 'প্রোডাক্ট প্ল্যানিং' চুক্তির মাধ্যমে ভারতের মেরিটাইম পেট্রোল বিমানের জন্য মার্কিন-ভিত্তিক সোনোবয়, পি-৮১, এমএইচ-৬০আর ও এমকিউ-৯বি সরবরাহ করতে মার্কিন-ভিত্তিক সমুদ্রতলের সিস্টেম প্রস্তুতকারক আল্ট্রা মেরিটাইমের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে। এই উদ্যোগগুলি সমুদ্রতলের কেবলের উপর মেটার সাম্প্রতিক প্রকল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারত মহাসাগরের বর্ধিত সংযোগকে সমর্থন করে। গ্রে-জোন কৌশল মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থাপত্যকে শক্তিশালী করার জন্য এই উদ্যোগের অধীনে শিল্প অংশীদারিত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া স্বায়ত্তশাসিত সমুদ্রতলের প্রযুক্তির সহ-উন্নয়নের দিকে একটি সচেতন পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করে।


যদিও আন্ডারওয়াটার ডোমেন অ্যাওয়ারনেস (ইউডিএ) একটি তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিক ধারণা, এর উত্থান রিয়েল-টাইম ডেটা ভাগাভাগি ও নজরদারির উপর কেন্দ্রীভূত সহযোগিতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে।



আন্ডারওয়াটার ডোমেইন অ্যাওয়ারনেস (ইউডিএ)-‌এ ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত সমন্বয়কে তুলে ধরে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিকে চিনের ক্রমবর্ধমান সমুদ্রতলের সক্ষমতার প্রতিক্রিয়ায়। যদিও আন্ডারওয়াটার ডোমেন অ্যাওয়ারনেস (ইউডিএ) একটি তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিক ধারণা, এর উত্থান রিয়েল-টাইম ডেটা ভাগাভাগি ও নজরদারির উপর কেন্দ্রীভূত সহযোগিতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে নির্দেশ করে। যাই হোক, এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বেশিরভাগই অনুসন্ধানমূলক এবং নবজাতক। যে কোনও সমুদ্রতল কৌশলের প্রযুক্তি অংশীদারিত্বের উপর উচ্চ নির্ভরতার কারণে, সম্ভবত 
ইন্ডাস-‌এক্স  (ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা ত্বরণ বাস্তুতন্ত্র) এবং  ইউ-‌এস ইন্ডিয়া ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেকনোলজি (আইসেট)  (এখন ট্রাস্ট)-‌র মতো বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ভারত-মার্কিন সমুদ্রতলের সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।



বিবেক মিশ্র অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

হিমাংশী শর্মা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের রিসার্চ ইন্টার্ন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Vivek Mishra

Vivek Mishra

Vivek Mishra is Deputy Director – Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. His work focuses on US foreign policy, domestic politics in the US, ...

Read More +
Himanshi Sharma

Himanshi Sharma

Himanshi Sharma is a Research Intern at the Strategic Studies Programme, Observer Research Foundation. ...

Read More +