Published on Jul 10, 2024 Updated 5 Days ago
চিন-জাপান-আরওকে ত্রিপাক্ষিক জোটকে পুনরুজ্জীবিত করা: সাধারণ ভিত্তি ধরে রাখার প্রচেষ্টা

চি, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নেতারা সাড়ে চার বছর বিরতির পর নবম ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে সিলে মিলিত হয়েছেন। শীর্ষ বৈঠকটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে হল, যখন পূর্ব এশীয় অঞ্চলে চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগিতার ছায়া ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে। একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলটি উল্লেখযোগ্য অস্থিরতার সম্মুখীন হচ্ছে, যা নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি করছে এবং ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন বৃদ্ধি দ্বারা সেই প্রতিবন্ধকতা আকার পাচ্ছে। ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাঝেই চি, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ফের আয়োজিত হওয়ার ফলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে। ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনটি পুনরায় শুরু করার প্রাসঙ্গিকতা কী? এবং কী ভাবে ত্রিপাক্ষিক ২.০ প্রতিটি সদস্যের স্বার্থ পূরণ করতে সাহায্য করবে?

 

অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করা

যেহেতু ২০১৯ সালে শেষ বারের মতো বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছিল, তাই এই ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনটি তিনটি দেশের জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে চাপ দেওয়ার নিরিখে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দীর্ঘদিন এই প্রসঙ্গে কোনও অগ্রগতি হয়নি। ত্রিপাক্ষিক এফটিএ সংক্রান্ত আলোচনা ত্রিপাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে বিদেশমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রীদের মন্ত্রী-পর্যায়ের বৈঠকে নিয়মিত ভাবে উঠে এলেও কোভিড-১৯ অতিমারি এবং রূপান্তরশীল কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে অনেক কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। অতএব, ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে সম্মত হওয়া এফটিএ সংক্রান্ত আলোচনা প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়নের উপর জোর দেওয়া হবেযৌথ বিবৃতিতে নেতারা একটি অবাধ, ন্যায্য, সর্বাত্মক, উচ্চ মানের এবং পারস্পরিক উপকারী এফটিএ মূল্য উপলব্ধি করার লক্ষ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক এফটিএর জন্য আলোচনার গতি ত্বরান্বিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধএফটিএ স্বাক্ষরিত হলে তা তিনটি পক্ষের মধ্যে বৃহত্তর অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করবে। এটিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্থিতিশীলতার স্তম্ভ হিসাবে দেখা হয় ভিন্ন ভিন্ন নিরাপত্তামূলক সমস্যা নিয়মিত ভাবে এই জোটে ফাটল সৃষ্টি করেছে। যেহেতু সকল সদস্যের লক্ষ্য হল অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা, তাই ত্রিপাক্ষিক জোটটি পুনরুজ্জীবনের নেপথ্যের যুক্তি প্রত্যেক দেশের জন্য আলাদা, যেমনটা নীচে বিশদে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

চি

সিল ত্রিপাক্ষিক জোটের আলোচনার শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিটি অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত চিনের কিছু প্রধান উদ্বেগকে দর্শায়। চিনের প্রিমিয়ার লি কিয়াং; দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল; এবং জাপানের প্রাইম মিনিস্টার ফুমিও কিশিদা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বৈষম্যহীন উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ পরিসর গড়ে তুলতে ক্ষেত্রটিকে সমান ও সমতাপূর্ণ করে তোলার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনতাঁরা সরবরাহ শৃঙ্খল সহযোগিতা জোরদার করতে, বাধাগুলি প্রশমিত করতে এবং একে অপরের বাজারগুলিতে প্রবেশাধিকার বজায় রাখতে সম্মত হয়েছেন। অর্ধপরিবাহী সম্পর্কিত সংবেদনশীল প্রযুক্তির রফতানিতে হ্রাস, চিনের উন্নত খাতে বহির্মুখী বিনিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং চিনা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার পর এই শীর্ষ সম্মেলনটি ঘটেছে

 

সিল ত্রিপাক্ষিক জোটের আলোচনার শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিটি অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত চিনের কিছু প্রধান উদ্বেগকে দর্শায়।

 

অত্যাধুনিক অর্ধপরিবাহী উৎপাদন সংক্রান্ত সরঞ্জামে চিনের প্রবেশাধিকার সীমিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় জাপান এবং কোরিয়া (উভয় দেশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তেজনাপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে চিনে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ গত ৩০ বছরে সর্বনিম্নে এসে দাঁড়িয়েছে

অর্থনীতি চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) প্রশাসনের বৈধতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে চিনা অভিজাতদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে যা গত বছর চিনের কেন্দ্রীয় জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের মূল্যায়ন থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, পার্টি-রাষ্ট্রকে অবশ্যই খারাপতম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। চায়না ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের গবেষক লি ওয়েই এই গুরুতর মূল্যায়নের কারণ হিসেবে একতরফা বাণিজ্য সুরক্ষা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব’র কথা উল্লেখ করেছেন। চিন দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পৃক্ততায় প্রতিবেশী দেশ হওয়ার সুযোগ ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। গত বছর কিংডাওতে আয়োজিত ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামের সময় চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জাপান ও কোরিয়ার দূতদের বলেছিলেন যে, তাঁদের উচিত পশ্চিম থেকে স্বায়ত্তশাসন বিকাশ করা এবং এশিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করতে চিনের সঙ্গে সহযোগিতা করা। এই ভাবে চিন মার্কিন-চিন বাণিজ্য যুদ্ধের নেপথ্যে ২০১৯ সালে স্থগিত থাকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা ফের শুরু করার উপর জোর দিচ্ছে।

 

দক্ষিণ কোরিয়া

শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপাক্ষিক জোটটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য অনেক রাজনৈতিক পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। এই প্রচেষ্টাগুলি মার্কিন রাজনীতির যৌক্তিক মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যা ট্রাম্প থেকে বাইডেন প্রশাসন পর্যন্ত ক্রমাগত বাণিজ্যবাদী বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়নের দিকে চালিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট বা মূল্যস্ফীতি হ্রাস আইন (আইআরএ) এবং সাম্প্রতিক শুল্কগুলির মতো বাইডেন প্রশাসন দ্বারা গৃহীত অনেক নীতি এবং হস্তক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সর্বোপরি সি এ বিষয়ে অবগত যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন উভয়ের উপর খুব বেশি নির্ভর করা অর্থনৈতিক কৌশল হিসাবে মোটেও কার্যকর নয়তাই উভয় পক্ষের সঙ্গেই ভাল বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখা শ্রেয়। এই ভাবে, দক্ষিণ কোরিয়া কূটনীতিকে আরও ভাল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য একটি অপরিহার্য সাধনী বলে মনে করে।

 

শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপাক্ষিক জোটটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য অনেক রাজনৈতিক পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। এই প্রচেষ্টাগুলি মার্কিন রাজনীতির যৌক্তিক মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যা ট্রাম্প থেকে বাইডেন প্রশাসন পর্যন্ত ক্রমাগত বাণিজ্যবাদী বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়নের দিকে চালিত করেছে।

 

দক্ষিণ কোরিয়ার লক্ষ্য হল ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক পুনরায় সূচনা করাপাশাপাশি এই তিন দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করাএটি চিনের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা প্রদানের সুযোগ করে দেয়। কারণ প্রেসিডেন্ট ইউন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চিনের সম্পর্ক টানাপড়েনময় থেকেছে এবং ওয়াশিংটন ডি.সি-সঙ্গে সহযোগিতা, মূল্যবোধভিত্তিক কূটনীতি ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তার প্রচার শুরু করেছেন ইউন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সম্পর্ক আসলে বেজিংয়ের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য বা নিরাপত্তা সম্পর্ক তথা সামগ্রিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলেছে।

চিনকে স্থানচ্যুত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ রফতানি বাজার যতই হয়ে উঠুক না কেন, সিওল এ বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল যে, একটি রফতানি-নির্ভর অর্থনীতি হওয়ার দরুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনওই চিনা বাজারের গুরুত্বকে খর্ব করতে পারে না, বিশেষ করে যখন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্টের শিল্প বাণিজ্য নীতি সংক্রান্ত অবস্থান দৃঢ় হবে এবং ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, যা কিনা আবার সিওলের রফতানির জন্য বেশ ক্ষতিকর। ত্রিপাক্ষিক জোটটিকে পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে সি ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের সুনজরে থাকা চিনের সঙ্গে বিদ্যমান সরবরাহ শৃঙ্খল এবং বাণিজ্য সম্পর্ক রক্ষা করতে চায়উপরন্তু, ডিপিআরকে সম্পর্কে সিওলের কৌশলগত হিসাব-নিকাশের নেপথ্যে নিরাপত্তার সমস্যা এখনও স্থবির হয়েই রয়েছে। মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে এখন বেজিং হল সিল এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যকার যোগাযোগের একমাত্র বিন্দু।

 

জাপান

ত্রিপাক্ষিক জোটটির পুনরুজ্জীবন জাপানের জন্য বেশ কিছু কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, যদিও এর বর্তমান সম্ভাবনা আঞ্চলিক জটিলতার আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছে। চিনের শীর্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অন্যতম এবং পূর্ব এশিয়ার সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে জাপান মধ্যবর্তী পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য থেকে উপকৃত হয়, যা তার উৎপাদন ও রফতানিমুখী অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করার ফলে যৌথ বিবৃতিতে চিহ্নিত সহযোগিতার ছটি মূল ক্ষেত্রে প্রদর্শিত অর্থনৈতিক সমন্বয়, অভিন্ন সাধারণ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, জলবায়ু কর্মসূচি, ডিজিটাল রূপান্তর এবং অন্য ক্ষেত্রগুলিও উপকৃত হবে।

 

ত্রিপাক্ষিক জোটটির পুনরুজ্জীবন জাপানের জন্য বেশ কিছু কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, যদিও এর বর্তমান সম্ভাবনা আঞ্চলিক জটিলতার আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছে। চিনের শীর্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অন্যতম এবং পূর্ব এশিয়ার সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে জাপান মধ্যবর্তী পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য থেকে উপকৃত হয়, যা তার উৎপাদন ও রফতানিমুখী অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এই যে, ত্রিপাক্ষিক জোটটি জাপানকে তার কৌশলগত স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একটি মঞ্চ প্রদান করে। চিনের ক্রমবর্ধমান দাবি এবং আগ্রাসনের বিষয়ে ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও - যা নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে - টোকিও কৌশলগত ভাবে খুব বেশি দ্বন্দ্বমূলক পন্থা অবলম্বন না করে বেজিংয়ের ভৌগোলিক এবং অর্থনৈতিক তাত্পর্য বোঝার জন্য আঞ্চলিক কাঠামোর মধ্যে চিনকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক আলোচনাকে উত্সাহিত করার বিষয়টি তাই পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে চিনের ভূমিকার ভারসাম্য বজায় রেখে আঞ্চলিক উত্তেজনা পরিচালনা করার জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রদান করে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি এবং পূর্ব চিন সাগরে আঞ্চলিক বিরোধের মতো বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতার কারণে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যদিও এই বিষয়গুলি নবম ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে উল্লেখ করা হয়নি।

বলা হচ্ছে, টোকিও সিলকে ওয়াশিংটন থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বেজিংয়ের প্রচেষ্টাগুলি অনেকাংশে অকার্যকর হয়েছে, যা জাপানের জোটের অন্তর্নিহিত প্রকৃতিকে প্রতিফলিত করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার জোটের প্রতি জাপানের প্রতিশ্রুতিতেও স্পষ্ট এবং যা আসলে জাপানের বিদেশনীতির মূল ভিত্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী সামরিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক উভয় দেশকে চিন এবং উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে একটি নিরাপত্তামূলক বলয় প্রদান করে, যা চিনের জন্য এই প্রতিষ্ঠিত সম্পর্কগুলিকে ব্যাহত করার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।

 

সামনের পথ

চি, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের ত্রিপাক্ষিক পুনঃসূচনা পূর্ব এশীয় অঞ্চল এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিরাপত্তার জন্য একটি স্বাগত উন্নয়নকারণ এটি বিদ্যমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বিভাজন সৃষ্টি করার পরিবর্তে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় পুনঃবিনিয়োগের চেষ্টা করে। শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্য ত্রিপাক্ষিক জোটের গতিপথে একটি আশাবাদী দিককেই নির্দেশ করে এবং এ কথা অনুমান করা যেতে পারে যে, প্রাথমিক ভাবে এফটিএ আলোচনা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতার মাঝেই নানাবিধ পার্থক্য নির্বিশেষে তিন সদস্য দেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে ঐকমত্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। যাই হোক, এমন একটি পরিসরে যেখানে নিরাপত্তা এবং অর্থনীতি আগের চেয়ে বেশি সংযুক্ত, সেখানে স্বাভাবিকের মতো ব্যবসার আশা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জোটের প্রতিশ্রুতি, মানুষের রূপান্তরশীল আবেগ এবং সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থের মতো অন্যান্য হস্তক্ষেপকারী পরিবর্তনশীলতা পদে পদে ত্রিপাক্ষিক জোটের কার্যকারিতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে। নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ত্রিপাক্ষিক জোটের এখনও পর্যন্ত যেটুকু অগ্রগতি ঘটেছে, তা যথেষ্ট আশাবাদের জন্ম দেয়। তবে তিন সদস্য দেশ অর্থনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য তাদের মতপার্থক্যগুলিকে কতটা দূরে সরিয়ে রাখতে পারে, সেটাই দেখার বিষয় হবে

 


প্রত্নশ্রী বসু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

অভিষেক শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

কল্পিত এ মানকিকর অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Pratnashree Basu

Pratnashree Basu

Pratnashree Basu is an Associate Fellow, Indo-Pacific at Observer Research Foundation, Kolkata, with the Strategic Studies Programme and the Centre for New Economic Diplomacy. She ...

Read More +
Abhishek Sharma

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma is a Research Assistant with ORF’s Strategic Studies Programme. His research focuses on the Indo-Pacific regional security and geopolitical developments with a special ...

Read More +
Kalpit A Mankikar

Kalpit A Mankikar

Kalpit A Mankikar is a Fellow with Strategic Studies programme and is based out of ORFs Delhi centre. His research focusses on China specifically looking ...

Read More +