Published on Sep 18, 2024 Updated 0 Hours ago

উচ্চাভিলাষী ডিকার্বনাইজেশন লক্ষ্যগুলি ভারত ও চিনের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতিপথকে চ্যালেঞ্জ করে।

ভারত ও চিনে সর্বোচ্চ নির্গমন: প্রতিশ্রুতি, অগ্রগতি ও পূর্বাভাস

প্রতিশ্রুতি

জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি)-‌এর
ওয়ার্কিং গ্রুপ ৩-এর ২০১৪ সালের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মোট মনুষ্যকৃত (‌অ্যানথ্রোপোজেনিক)‌ গ্রিনহাউস গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমনের ৩৫ শতাংশের জন্য শক্তি ক্ষেত্র দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি) ও কিয়োটো প্রোটোকলের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, শক্তি ক্ষেত্র থেকে নির্গমন আগের দশকের তুলনায় ২০০১ ও ২০১০-‌এর মধ্যে আরও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি ক্ষেত্রে জিএইচজি নির্গমন বৃদ্ধি ১৯৯১-২০০০ সময়কালে বছরে ১.৭ শতাংশ থেকে ২০০১-২০১০ সময়কালে বছরে ৩.১ শতাংশে ত্বরান্বিত হয়েছে। এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলি, প্রাথমিকভাবে চিন ও ভারত, যাদের দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং তার দরুন দুই দেশে কয়লা ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি মিশ্রণে কয়লার অংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে প্রশমন নীতির অনুপস্থিতিতে শক্তি সম্পর্কিত সিওটু (কার্বন ডাইঅক্সাইড) নিঃসরণ ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০-৭০  জিটিসিওটু (গিগা টন সিওটু) বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে যে বায়ুমণ্ডলে সিওটু-‌র ঘনত্ব স্থিতিশীল হবে যদি বিশ্বব্যাপী সিওটু নির্গমন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে তারপর দীর্ঘমেয়াদে শূন্যের দিকে হ্রাস পায়। বেশিরভাগ স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে (বায়ুমণ্ডলে সিওটু-র সমতুল্য ঘনত্ব ৪৫০-৫৩০ পিপিএমে [পার্টস পার মিলিয়ন] সীমিত করা) বিদ্যুৎ সরবরাহে কম-‌কার্বন শক্তির অংশ ৩০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশে বৃদ্ধি পায়।  প্রতিবেদন  প্রকাশের পর, ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট যখন চিন সফর করেছিলেন তখন চিন নিম্নলিখিত বিবৃতি দিয়েছিল:

'চিন ২০৩০ সাল বরাবর
সিওটু নির্গমনের সর্বোচ্চ শিখর অর্জন করতে চায়, তাড়াতাড়ি শীর্ষে পৌঁছনোর সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালাতে চায়, এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাথমিক শক্তি খরচে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির অংশ প্রায় ২০ শতাংশে উন্নীত করতে চায়।'

২০১৪ সালে ভারত থেকে কার্বন শিখর নিয়ে সমতুল্য কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি;‌ কিন্তু চাপ বাড়তে শুরু করেছে এবং সাম্প্রতিক বিশেষজ্ঞ মতামত এই পরামর্শ দিয়েছে যে ভারত
২০৪০-৪৫ সালের মধ্যে কার্বন শিখরে পৌঁছে যেতে পারে।

অগ্রগতি

২০২২ সালে, চিনের প্রাথমিক শক্তির মিশ্রণে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির (পারমাণবিক শক্তি, জলবিদ্যুৎ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি) অংশ ছিল ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা ১৮.৩৭ শতাংশের কাছাকাছি। যদিও ভারত তার প্রাথমিক শক্তির মিশ্রণে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির নির্দিষ্ট অংশের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়, তবে ভারত ২০২২ সালে তার প্রাথমিক শক্তির ১১ শতাংশ অ-জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী,  ২০২২ সালে, অ-জীবাশ্ম জ্বালানি প্রাথমিক শক্তির প্রায় ১৮.২ শতাংশ ছিল, যার অর্থ বিশ্বব্যাপী প্রাথমিক শক্তির ৮২ শতাংশেরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এসেছে। ২০০৩-১৩ সালে বৈশ্বিক প্রাথমিক শক্তি জ্বালানি মিশ্রণে কয়লার অংশ ৫ শতাংশ বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে, যা একে তেলের পরে দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানিতে পরিণত করেছে। ২০১৩-১৪ সালে অনুমান করা হয়েছিল যে, চিন একক বৃহত্তম কয়লা উপভোক্তা থাকবে, বিশ্বব্যাপী উপভোগের ৫১ শতাংশ, আর ভারত ২০২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে ১৩ শতাংশ বৈশ্বিক ব্যবহার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকবে। পূর্বাভাসটি অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই বাস্তবায়িত হয়েছে। আরও রক্ষণশীল অনুমান হল চিনের
কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি ১.৩ বিলিয়ন টন (বিটি) থেকে দ্রুত হ্রাস পাবে, যা ২০০৫-১৫ সালে ৬.১ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি বোঝাত, এবং তা মাত্র ১৯.৫ মেট্রিক টন (মিলিয়ন টন) নেমে এসে ২০২৫-৩৫ সালে বছরে মাত্র ০.১ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করবে। আর ইতিমধ্যে ২০৩০ সালে চিনে কয়লার চাহিদা সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবে। ভারত ও চিন ২০৩৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কয়লা ব্যবহার বৃদ্ধিতে ৮৭ শতাংশ অবদান রাখবে বলে অনুমান করা হয়েছিল। কাঠামোগত পরিবর্তন ও নীতিগত ব্যবস্থা, যেমন চিনের ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্প-চালিত অর্থনীতি থেকে পরিষেবা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা-চালিত অর্থনীতিতে কর্মদক্ষতার উন্নতি এবং কঠোর পরিবেশগত ব্যবস্থা চিনে কয়লার চাহিদার দ্রুত পতন ঘটাবে বলে আশা করা হয়েছিল। আরও উচ্চাভিলাষী অনুমান আশা করেছিল যে চিন ২০১৫ সালের মধ্যে কয়লা আমদানি বন্ধ করবে, এবং ২০১৬ সালের মধ্যে চিনের কয়লার চাহিদা কমতে শুরু করবে।



সূত্র: বিশ্ব শক্তি ২০২৩-এর পরিসংখ্যানগত পর্যালোচনা

২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে '
কোল ক্র‌্যাশ' উদযাপনের অনুমানগুলিতে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) দেশগুলিতে কয়লার চাহিদা হ্রাসে চিন ও ভারতের ভূমিকা থাকবে না। সামুদ্রিক তাপীয় কয়লার দাম কমে যাওয়ায় এমন ধারণা তৈরি করা হয়েছিল যে চিন ও ভারতে রপ্তানিকৃত উৎপাদনের বেশির ভাগ খরচ উঠবে না, এবং ভবিষ্যতে কয়লার দামে খুব বেশি উন্নতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। ৭.‌৮৪ শতাংশ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সত্ত্বেও চিনের কয়লা ব্যবহার ১৪ বছরে প্রথমবারের মতো কমে যাওয়ায়, ২০২০ সালের আগে চিনে সর্বোচ্চ কয়লা ব্যবহার প্রত্যাশিত ছিল। আসন্ন কয়লা শিখরের কারণ হিসাবে ধরা হয়েছিল কাঠামোগত পরিবর্তন, যা ভাবা হয়েছিল চালিত হবে পশ্চিমী বিশ্বের অনুসরণে চিনের পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার কমানোর দ্বারা।


২০২২ সালে চিনের কয়লা ব্যবহার ছিল
৮৮.৪১ ইজে (এক্সাজুলস), যা বিশ্বব্যাপী কয়লা ব্যবহারের ৫৪.৮ শতাংশেরও বেশি। যদিও ২০১২-২২ সালে চিনে কয়লা ব্যবহারের বৃদ্ধি ২০০২-১২ সালের বার্ষিক ৯ শতাংশের তুলনায় বার্ষিক গড় ০.৯ শতাংশে নেমে গিয়েছিল, তবে উচ্চাভিলাষী অনুমান অনুসারে এটি প্রত্যাশিত শীর্ষে ওঠেনি। ২০১২-২২ সালে, চিনের মোট আভ্যন্তর উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক গড় ১০.৭ শতাংশ এবং ২০১২-২২ সালে বার্ষিক গড় ৬.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ভারতের কয়লা ব্যবহার ২০০২-১২ সালে বার্ষিক গড় ৬.২ শতাংশের বেশি এবং ২০১২-২২ সালে ৩.৯ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল, যেখানে ভারতের জিডিপি ২০০২-১২ সালে বার্ষিক গড় ৬.৯ শতাংশ এবং ২০১২-২২ সালে বার্ষিক গড় ৫.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কয়লা ব্যবহারে আনুপাতিক বৃদ্ধি ছাড়াই চিন ও ভারতে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কিন্তু কার্বন নিঃসরণ ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মধ্যে বিচ্ছিন্নতার একটি মাত্রা নির্দেশ করে। এটি ২০০২ সাল থেকে চিনা ও ভারতীয় অর্থনীতির কয়লার তীব্রতা হ্রাসের প্রবণতা দ্বারা চিত্রিত হয়েছে (জিডিপি প্রতি ইউনিট কয়লা প্রয়োজনীয়তা)। গত দুই দশকে, চিনা অর্থনীতির কয়লার তীব্রতা ৪৮ শতাংশেরও বেশি কমেছে, আর ভারতের অর্থনীতিতে কয়লার তীব্রতা প্রায় ১৮ শতাংশ কমেছে। পরিষেবাগুলি, যা সাধারণত কম শক্তি-নিবিড়, চিনের তুলনায় ভারতের অর্থনীতিতে অনেক বড় অংশগত অবদান রাখে, তবে ভারতের কয়লা ব্যবহারের দক্ষতা চিনের তুলনায় কম হওয়ার ফলে কয়লার তীব্রতা বেশি।



কয়লা ব্যবহারে আনুপাতিক বৃদ্ধি ছাড়াই চিন ও ভারতে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কিন্তু কার্বন নিঃসরণ ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মধ্যে বিচ্ছিন্নতার একটি মাত্রা নির্দেশ করে।



চিন ২০০৫-২০২০-র মধ্যে তার অর্থনীতির কার্বন তীব্রতা (জিডিপির প্রতি ইউনিট সিওটু নিঃসরণ) ৪০-৪৫ শতাংশ কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, কিন্তু ২০০২-০৯ সালে চিনে কার্বনের তীব্রতা ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হওয়ার থেকে যা লাভ হয়েছিল তা নষ্ট করে দিয়েছিল একটি কার্বন নিবিড় অর্থনৈতিক কাঠামো। চিন যদি সর্বোচ্চ নির্গমনের দিকে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করে, তবে এটি
কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি করতে পারে, কারণ দেশটি সম্ভাব্যভাবে কম দক্ষ দেশে শিল্পগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।


পূর্বাভাস

চিন ও ভারত তাদের নির্গমন কমাতে পারে এবং বস্তুগতভাবে উন্নতি করতে পারে শুধুমাত্র যদি শক্তি-সম্পর্কিত নির্গমন থেকে
অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বিচ্ছিন্ন হয়। এটি তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব, কিন্তু প্রয়োজনীয় রূপান্তরটি যথেষ্ট খরচ আরোপ করবে, এবং কম-‌কার্বন বৃদ্ধির দিকে ব্যাপকভাবে পুনঃনির্দেশিত উন্নয়ন ব্যয়ও কম নয়। ২০২৩ সালের জুনে, ইউএনএফসিসিসি-র অধীনে বিশেষজ্ঞদের কাটোভিস কমিটি তার প্রযুক্তিগত গবেষণাপত্রে স্বীকার করেছে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলি তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা (জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে) বাস্তবায়নের জন্য ডিকার্বনাইজেশনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ খরচ বহন করবে


ওইসিডি দেশগুলিতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের বেশিরভাগই ঘটেছিল কোনও
আমূল নীতি হস্তক্ষেপ ছাড়াই। জ্বালানি কাঠের মতো উচ্চ কার্বন-থেকে-হাইড্রোজেন অনুপাতের জ্বালানি প্রতিস্থাপিত হয়েছিল কম কার্বন-থেকে-হাইড্রোজেন অনুপাতের সস্তা জ্বালানি দিয়ে, যেমন কয়লা, তেল ও গ্যাস। ওইসিডি-র কিছু দেশ কার্বনের তীব্রতায় ২ শতাংশের বার্ষিক হ্রাস অর্জন করেছে, কিন্তু এমন নয় যে বিকল্প জ্বালানির দিকে পরিবর্তন ঘটেছিল শক্তি ব্যবহারে অধিক দক্ষতার কারণে। অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন, যেমন একটি পরিষেবাভিত্তিক ব্যবস্থার দিকে  অগ্রসর হওয়া, একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল। পরিবর্তনটি স্বাভাবিক ছিল, কারণ অধিকাংশ ওইসিডি দেশে ইতিমধ্যেই শিল্পায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। ডিকার্বনাইজেশন হার ১৯৭১-২০০৬ পর্যন্ত ২৬টি ওইসিডি দেশজুড়ে প্রতি বছর ৩.৬ শতাংশ ছিল। সামগ্রিকভাবে ২৬টি ওইসিডি দেশের জন্য আনওয়েটেড অ্যাভারেজ রেট হল প্রতি বছর ১.৫ শতাংশ, দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক ডিকার্বনাইজেশন হারের (প্রতি বছর ১.৩ শতাংশ) তুলনায় মাত্র ১৬.৫ শতাংশ বেশি।


অনেক ওইসিডি দেশ তাদের
দূষণকারী শিল্পগুলিকে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে ডিকার্বনাইজ করেছে। জাপানের একটি সুস্পষ্ট নীতিই ছিল অন্য দেশে ব্যাপকভাবে দূষণকারী শিল্পগুলি স্থাপন করা। ইউরোপীয় দেশগুলি উন্নয়নশীল দেশে উৎপাদন রপ্তানি করে ১৯৯০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ৬ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমিয়েছে। একই সময়ে, উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে মূর্ত কার্বনের (‌এমবডিড কার্বন)‌ ইউরোপীয় আমদানি ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূর্ত কার্বনের ১৮ শতাংশ চিন রপ্তানি করে।


২০২২ সালে কার্বন নির্গমন ৬৪ শতাংশ বেশি ছিল ১৯৯০ সালের তুলনায়, যে বছর ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)-‌এর প্রথম রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল, এবং ৫.২ শতাংশ বেশি প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সময়কার, অর্থাৎ ২০১৫ সালের, তুলনায়৷ এমনকি যখন কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের অধীনে অর্থনীতি নাটকীয়ভাবে মন্থর হয়ে গিয়েছিল, তখন
২০২০ সালে কার্বন নির্গমন প্রায় ৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল, এবং বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করেছিল।


বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার আকার এবং জনপ্রতি জিডিপি-‌র বর্তমান অনুমানগুলি ইঙ্গিত করে যে জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রাগুলিতে পৌঁছনোর জন্য বিশ্বকে প্রতি বছর প্রকৃত জিডিপি-‌র প্রতি ইউনিট সিওটু নির্গমনের হার গড়ে প্রায় ৯ শতাংশ কমাতে হবে। আগামী তিন দশকে বিযুক্তিকরণের হার প্রায় পাঁচ গুণ বেশি হতে হবে।

বিযুক্তিকরণের বেশির ভাগ ভার পড়েছে চিন ও ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির উপর। দেশগুলির মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাস প্রচেষ্টা ভাগাভাগি করার পদ্ধতিগুলি
সমান প্রান্তিক ব্যয় হ্রাসের উপর ভিত্তি করে (বিশ্বব্যাপী কার্বন প্রশমনের ব্যয় হ্রাস করার জন্য) তৈরি, যা কম ঐতিহাসিক নির্গমন-‌সহ ভারত ও চিনের মতো উদীয়মান অর্থনীতির জন্য অন্যায় ও ক্ষতিকর। ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে, বিশ্ব প্রতি বছর গড় তথাকথিত 'বিযুক্তিকরণ হার' ১.৮ শতাংশ অর্জন করেছে। ১৮৬০ সাল থেকে, বিশ্বব্যাপী বার্ষিক গড় বিযুক্তিকরণ হার প্রতি বছর ১.৩ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণ অর্জন করতে চিনের ৪.৫ শতাংশ হ্রাস প্রয়োজন। প্রতি বছর ৪ শতাংশ বা তার বেশি ডিকার্বনাইজেশনের হার অর্জন সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।


ডিকার্বনাইজেশন নীতি চিন ও ভারতে জনপ্রতি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ২০১৫ সালের জুন মাসে, চিনের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ-‌এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জু জি বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি তথা নির্গমনকারী দেশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের যৌথ ঘোষণার গুরুত্ব   তুলে ধরেন, এবং জনপ্রতি ২০-২৫,০০০ মার্কিন ডলার আয়ের স্তরে  পৌঁছনোর আগেই চিনের সর্বোচ্চ নির্গমনের লক্ষ্যের তাৎপর্য তুলে ধরেন। ২০২২ সালে, চিনের জনপ্রতি জিডিপি ছিল প্রায় ১২,৭২০ মার্কিন ডলার (বর্তমান মার্কিন ডলার), এবং ভারতে এটি ছিল প্রায় ২,২৩৮ মার্কিন ডলার৷ শিল্পোন্নত দেশগুলির কার্বন নিঃসরণ শিখরে পৌঁছেছিল ২৩,০০০-৩৪,০০০ মার্কিন ডলারের উপরে ব্যক্তিপ্রতি আয়ের স্তরে৷ যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিপ্রতি সিওটু নিঃসরণ ২০ টনের বেশিতে শিখর ছুঁয়েছে, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিতে তা ঘটেছে প্রায় ১০-১৫ টন সিওটু মাত্রায়। পিক ইয়ার ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৩৪,০০০ মার্কিন ডলার প্রতি ব্যক্তি জিডিপি অর্জন করতে চিনকে বার্ষিক গড় ১৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করতে হবে, যেখানে কার্বনের তীব্রতা প্রায় ৯ শতাংশে কমছে। ভারতের জন্য ২০৪০ সালে প্রতি ব্যক্তি জিডিপি ৩৪,০০০ মার্কিন ডলারের সঙ্গে নির্গমনের শীর্ষে পৌঁছনোর জন্য কার্বনের তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার পাশাপাশি বার্ষিক গড় বৃদ্ধি ১৬ শতাংশের বেশি হতে হবে। এই গতিপথগুলি অর্জন করা কার্যত অসম্ভব।


ডিকার্বনাইজেশনের উপর অ্যাকাডেমিক বিতর্কটি মূলত তাত্ত্বিক, কারণ তা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে প্রায় অসম্ভব ডিকার্বনাইজেশন হারের প্রয়োজনের কথা বলে বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিস্থাপন করে। ভারত ও চিনের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলি বৃদ্ধি পেতে চায় এবং তারা বৃদ্ধির নীতি বাস্তবায়িত করবে। ধনী দেশগুলি ডিকার্বনাইজেশন অর্জন করতে জিডিপিতে গভীরভাবে হ্রাস বরদাস্ত করবে, উন্নয়নশীল দেশগুলির বৃদ্ধির জন্য জায়গা তৈরি করে দেবে, এবং দরিদ্র দেশগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেবে,  এই ধারণাটিও তাত্ত্বিক। ধনী দেশগুলিকে বার্ধক্যজনিত জনসংখ্যার জন্য পরিষেবা পেনশন এবং সামাজিক সুরক্ষার জন্য আর্থিক বহিঃপ্রবাহ সীমাবদ্ধ করতে হবে। এখন সময় হয়েছে ডিকার্বনাইজেশন বিতর্ককে বাস্তব চেহারা দেওয়ার।



‌সূত্র: বিশ্ব শক্তি ২০২৩-‌এর পরিসংখ্যানগত পর্যালোচনা


লিডিয়া পাওয়েল অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিস্টিংগুইশড ফেলো।

অখিলেশ সতী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার।

বিনোদ কুমার তোমর অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Lydia Powell

Lydia Powell

Ms Powell has been with the ORF Centre for Resources Management for over eight years working on policy issues in Energy and Climate Change. Her ...

Read More +
Akhilesh Sati

Akhilesh Sati

Akhilesh Sati is a Programme Manager working under ORFs Energy Initiative for more than fifteen years. With Statistics as academic background his core area of ...

Read More +
Vinod Kumar Tomar

Vinod Kumar Tomar

Vinod Kumar, Assistant Manager, Energy and Climate Change Content Development of the Energy News Monitor Energy and Climate Change. Member of the Energy News Monitor production ...

Read More +