Published on Aug 03, 2023 Updated 0 Hours ago

ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইল বা জাতীয় চিকিৎসা-সরঞ্জাম মজুত রাখার উদ্দেশ্যে ডায়নামিক স্টকপাইলিংয়ের একটি নতুন মডেল কাজে লাগানো যেতে পারে।
 

ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইল: ডায়নামিক স্টকপাইলিংয়ের প্রয়োজনীয়তা

সাম্প্রতিক অতিমারি এবং সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত বিশ্বে ৭৫তম বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এই অনিশ্চিত সময়ে ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য’ বা ‘হেলথ ফর অল’-এর ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার উদ্দেশ্যে ডায়নামিক স্টকপাইলিংয়ের একটি নতুন মডেল ব্যবহার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইল সংক্রান্ত প্রায়শই আলোচিত ধারণার দিকে ফের আরও এক বার নজর দেওয়া প্রয়োজন।

স্টকপাইলিং প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা

প্রথম দু’টি প্রবাহে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ভারতে পিপিই-র অপ্রতুল উৎপাদন, আমদানিকৃত সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (এপিআই) এবং কাঁচামালের উপর নির্ভরতার মতো সমস্যাগুলিকে প্রকাশ্যে তুলে এনেছিল। ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে তৃতীয় প্রবাহের আশংকায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি এপিআই ও নিঃশেষিত ওষুধের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী মজুত করতে শুরু করে। যদিও এই ব্যবস্থাগুলি শুধু মাত্র স্বল্প মেয়াদের জন্যই গৃহীত হয়েছিল এবং এই স্টকপাইলিংয়ের মধ্যে কোনওটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় কি না, সে সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। হোম শোরিং বা অভ্যন্তরীণ  উৎপাদন এক আকর্ষণীয় বিকল্প হলেও ভারতের সকল গুরুত্বপূর্ণ ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদনকে (এপিআই থেকে চিকিৎসা প্রযুক্তি, টিকা থেকে শুরু করে নিঃশেষিত ওষুধ পর্যন্ত) পুনঃস্থাপন করা অসম্ভব, যার জন্য জরুরি অবস্থা অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় সঞ্চয়ভাণ্ডার তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

প্রথম দু’টি প্রবাহে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ভারতে পিপিই-র অপ্রতুল উৎপাদন, আমদানিকৃত সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (এপিআই) এবং কাঁচামালের উপর নির্ভরতার মতো সমস্যাগুলিকে প্রকাশ্যে তুলে এনেছিল।

দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে একটি জাতীয় সঞ্চয়ভাণ্ডার আরও শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য জরুরি প্রতিক্রিয়া তৈরি করার নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি একটি মহামারি/অতিমারির প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক দিনগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যে সময় উৎপাদনকারীরা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত থাকেন।

স্টকপাইল হোল্ডারদের শ্রেণিবিভাগ

বিস্তৃত পরিসরে চিকিৎসা সংক্রান্ত পণ্য মজুত করার বিষয়টি প্রধানত চারটি পর্যায়ে বিভক্ত: নির্মাতা স্তরের সঞ্চয়, ভোক্তা স্তরের সঞ্চয়, রাজ্য স্তরের সঞ্চয় এবং জাতীয় স্তরের সঞ্চয়।

নির্মাতা স্তরের সঞ্চয়

নির্মাতা স্তরের সঞ্চয় আদর্শ পদ্ধতি নয়। কারণ জাতীয় স্বার্থে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য যখন ফার্মাসিউটিক্যাল উত্পাদকরা (ওষুধ, টিকা এবং সরঞ্জাম-সহ) কাঁচামালের উপর একটি বাধ্যতামূলক বাফার রাখতে বাধ্য হন, তখন তা উৎপাদিত পণ্যের জন্য আদর্শ হয় না। এমনটা করার দরুন খরচ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে তাঁদের প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয় এবং এটি মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ইউএস স্ট্র্যাটেজিক ন্যাশনাল স্টকপাইল তার সমস্ত বিক্রেতা পরিচালিত ইনভেন্টরি বা সঞ্চয়ভাণ্ডারকে বাতিল করে দেয়, যেখানে খরচের কার্যকারিতা, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং ব্যবহারকে সুনিশ্চিত করার অক্ষমতাজনিত উদ্বেগের কারণে তারা বিক্রেতাদের পণ্য মজুত করার জন্য অর্থ প্রদান করেছে এবং ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা বিক্রি করতে বাধ্য করে।

সমস্যাটি এক ব্যাপক নিয়ন্ত্রক বোঝা উত্থাপন করে এবং বাধার সৃষ্টি করে।

ভোক্তা / হাসপাতাল স্তরের সঞ্চয়

ভোক্তা / হাসপাতাল স্তরের সঞ্চয়কে তুলনামূলক ভাবে সহজ সমাধান বলে মনে হয়। কারণ এ ক্ষেত্রে মজুত প্রক্রিয়ার দায়িত্ব সরাসরি শেষ ভোক্তার উপর বর্তায়, যা প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক স্তরে ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে। যদিও সমস্যাটি এক ব্যাপক নিয়ন্ত্রক বোঝা উত্থাপন করে এবং বাধার সৃষ্টি করে। ভারতে ২০১৯ সালে ~৬৯,০০০ (আনুমানিক) সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থাকার ফলে সেই হাসপাতালগুলির প্রত্যেকটিতে উপযুক্ত, পরিষেবাযোগ্য / ব্যবহারযোগ্য এবং অমেয়াদোত্তীর্ণ বাফার স্টক রক্ষণাবেক্ষণ করার কাজটি সুনিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রকদের জন্য পাহাড়প্রমাণ হয়ে ওঠে।

পণ্য সঞ্চয়ের জন্য গুদামঘরের জায়গা খুঁজে বের করতে, পণ্যগুলির জন্য পরিবর্তনশীল গুদামের শর্ত পূরণে হাসপাতাল / পরীক্ষাগার দ্বারা বহন করা খরচও বৃদ্ধি পায়। এই বিষয়ে নথি সীমিত হলেও পাকিস্তানের লাহোরে একটি ১৯৫ শয্যাবিশিষ্ট ক্যানসার হাসপাতালের অনুমান অনুযায়ী, অক্সিজেন, পিপিই, ওষুধ এবং প্যাথলজিক রিএজেন্ট মজুত করার মাসিক নির্দিষ্ট খরচ ২ লক্ষ মার্কিন ডলার এবং মাসিক পরিবর্তনশীল খরচ ৪৩০ মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। ভারতের অনেক বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ন্ত্রক বোঝার পাশাপাশি আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হওয়ায় হাসপাতাল স্তরের এন৯৫ মাস্ক, সিরিঞ্জ ইত্যাদির মতো মৌলিক, ‘দ্রুত বিক্রয়যোগ্য’ সরঞ্জাম মজুত করা বাধ্যতামূলক করা শুধু মাত্র বৃহত্তর ভাল অর্থায়িত হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রেই সম্ভব।

রাজ্য স্তরের সঞ্চয়

‘জনস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি’ ভারতীয় সংবিধানের সপ্তম তফসিলে রাজ্য তালিকায় থাকায় উপযুক্ত সঞ্চয়ভাণ্ডার স্থাপনে রাজ্যগুলিকে আদর্শ ভাবে নেতৃত্ব দেওয়া জরুরি। ভারতের মতো সুবিশাল এবং জলবায়ুগত ও অর্থনৈতিক ভাবে বৈচিত্র্যময় একটি দেশে রাজ্য স্তরের সঞ্চয় জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তাকে পূরণ করতে সক্ষম হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, হিমাচল প্রদেশের (কলেরার কম প্রকোপবিশিষ্ট) পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গে (যে রাজ্যে কলেরার প্রকোপ বেশি) কলেরার টিকা মজুত করা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। প্রকৃত পক্ষে, ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (এনডিএমপি) ২০১৯ অনুসারে, রাজ্যগুলি ‘পর্যাপ্ত পরিশুদ্ধকরণ ব্যবস্থা, ক্রিটিক্যাল কেয়ার আইসিইউ এবং আইসোলেশন ওয়ার্ড স্থাপন’-এর পাশাপাশি যে কোনও জৈবিক জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য পর্যাপ্ত পিপিই কিট প্রদানে দায়বদ্ধ ছিল।’

হিমাচল প্রদেশের (কম কলেরার প্রকোপবিশিষ্ট) পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গে (যে রাজ্যে কলেরার প্রকোপ বেশি) কলেরার টিকা মজুত করা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়।

তা সত্ত্বেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্সের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পিপিই কিট, ওষুধ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সংক্রান্ত সামগ্রীর জন্য রাজ্য পর্যায়ের কোনও সঞ্চয় নেই। এই পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে এবং রাজ্যের দুর্বল অর্থভাণ্ডার ও বিপুল ঋণের কারণে অবস্থার আমূল পরিবর্তন হওয়া অসম্ভব। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক সুবিধা হল, এই সীমিত রাজ্য তহবিলগুলিকে দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ভাণ্ডার তৈরিতে বিনিয়োগ করাও অগ্রাধিকারের তালিকায় পড়ে না। সর্বোপরি রাজনৈতিক বিরূপতা এবং ক্ষমতার দলবদলের জন্য সমস্ত রাজ্যে এই ধরনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জ হবে। এমনকি এমন একটি আদর্শগত পরিস্থিতিতে যেখানে সমস্ত রাজ্য কার্যকর সঞ্চয়ভাণ্ডার স্থাপন করতে রাজি হতে পারে,  সেখানে জাতীয় জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সময় রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় সংক্রান্ত সমস্যার অর্থ হল, এটি জাতীয় স্তরের সঞ্চয়ভাণ্ডারকে সম্পূর্ণ রূপে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হবে না। প্রকৃত পক্ষে, এনডিএমপি ২০১৯ স্পষ্টতই বলে, ‘দীর্ঘমেয়াদি (টি৩)’ সময়সীমার মধ্যে ‘টিকা এবং অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদির মতো জরুরি ওষুধ সরবরাহের সঞ্চয়’-এর ভার ‘রেসপন্সিবিলিটি সেন্টার’ বা ‘দায়িত্ব কেন্দ্রের’ উপর বর্তায়।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইল: একটি ধাঁধা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস), ব্রিটেন (ইউকে), কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ফিনল্যান্ডের মতো দেশে জাতীয় চিকিৎসা সংক্রান্ত পণ্য মজুতের ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়েছে। সেই দেশগুলির অভিজ্ঞতা বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক সমস্যাকে তুলে ধরেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হল এই যে, জাতীয় সঞ্চয়ভাণ্ডারগুলি স্পষ্ট ভাবে প্রজন্মে এক বার ঘটার জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং তাই ধারণাটি এ হেন পরিস্থিতি না আসা পর্যন্ত (বা অব্যবহারযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত) পণ্যগুলিকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য মজুত করাটাই দস্তুর। সংজ্ঞা অনুসারে, এই সঞ্চয়ব্যবস্থা সাধারণ সময়ে অর্থায়নের অগ্রাধিকার পায় না। এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য তারা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ পিছিয়ে দেওয়া (স্থিতিশীলতা এবং গুণমান পরীক্ষার মাধ্যমে), মেয়াদোত্তীর্ণ স্টক ফেরত দেওয়া এবং স্টক রোটেশন বা কার্যকারিতা অনুযায়ী স্টকের ব্যবহার-সহ বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করে।

তবে এই পদ্ধতিও একাধিক পর্যালোচনায় অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে দর্শানো হয়েছে যে, এ হেন সঞ্চয়ভাণ্ডার এমন মেয়াদোত্তীর্ণ/অব্যবহারযোগ্য পণ্য দ্বারা জর্জরিত, যেগুলির প্রতিস্থাপন করা হয়নি এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম, চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ওষুধের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। এর পাশাপাশি একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা অতিমারির ঝুঁকির উপর অত্যধিক মনোযোগ দেওয়া অতি সুনির্দিষ্ট সঞ্চয়ের দিকে পরিচালিত করেছে, যা কোভিড-১৯-এর মতো এক নতুন ঝুঁকির সময়ে যথেষ্ট বলে প্রমাণিত হয়নি।

ডায়নামিক স্টকপাই লিং বা বহুমুখী সঞ্চয়ভাণ্ডার: সমাধানের একটি মূল সূত্র

এই সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য ‘ডায়নামিক স্টকপাইলিং’ বা ‘বহুমুখী সঞ্চয়ভাণ্ডার’ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এর ফলে সরকার মূল পণ্যগুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট ‘ন্যূনতম বাধ্যতামূলক প্রয়োজনীয়তা’ নির্ধারণ করবে, যেমন বার্ষিক মাস্ক ব্যবহারের X (একটি নির্দিষ্ট) শতাংশ।

পরবর্তী পর্যায়ে সরকার মাস্কের জন্য একটি নিয়মিত বড় চুক্তি স্বাক্ষর করবে (বিশেষত দেশীয় নির্মাতাদের কাছ থেকে), ক্রমাগত ভাবে তা বিতরণ করা হবে এবং মোট বরাতের সংখ্যা যে কোনও সময়ে ‘ন্যূনতম বাধ্যতামূলক প্রয়োজনীয়তা’কে ছাড়িয়ে যাবে। বড় বরাতের সঙ্গে সরকার প্রাসঙ্গিক বড় হারে ছাড় বা ডিসকাউন্ট নিয়েও আলোচনা করতে পারে। যেহেতু মাস্কের প্রতিটি ক্ষেত্র বাধ্যতামূলক মজুতের উপরে নির্ভরশীল, তাই সবচেয়ে পুরনো ব্যাচটি অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক ভাবে বাজার মূল্যে বা এমনকি যদি সম্ভব হয় তার মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি/নিলাম করা হবে। বিক্রয়ের জন্য এই ক্ষেত্রগুলিকে ছোট ছোট বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। ‘ডায়নামিক স্টকপাইলিং’ বা ‘বহুমুখী সঞ্চয়ভাণ্ডার’ এই ভাবে একাধিক সুবিধাসম্পন্ন এক গতিশীলতার সূচনা ঘটাবে।

যেহেতু মাস্কের প্রতিটি ক্ষেত্র বাধ্যতামূলক মজুতের উপরে নির্ভরশীল, তাই সবচেয়ে পুরনো ব্যাচটি অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক ভাবে বাজার মূল্যে বা এমনকি যদি সম্ভব হয় তার মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি/নিলাম করা হবে। বিক্রয়ের জন্য এই ক্ষেত্রগুলিকে ছোট ছোট বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে।

প্রথমত, এটি সুনিশ্চিত করবে যে, পণ্যের মেয়াদ শেষ হবে না (যেহেতু তা ক্রমাগত বিক্রি করা হয়)। যখন সরকার পণ্যগুলি পুনরায় বিক্রি করবে তা স্পষ্ট ভাবে নির্দেশ করে দেবে যে, অন্তিম ভোক্তা নিজস্ব ক্রয়ের সময়সূচির সঙ্গে পণ্যটিকে সমন্বিত করতে সক্ষম হবেন এবং সম্ভবত তিনি বাজারের চেয়ে ভাল দামে পাবেন।

দ্বিতীয়ত, চুক্তির নিয়মিত পুনর্নবীকরণ সুনিশ্চিত করবে যে, সঞ্চয়কৃত পণ্যগুলি বাজারের গুণমানের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে চলবে। কারণ সরকার তাদের প্রয়োজনীয়তাগুলি পর্যায়ক্রমে পুনর্বিবেচনা করবে। উত্পাদনকারীরাও এই ক্ষেত্রে সরকারকে চাপ দিতে সমর্থ হবে, যাতে পুরনো পণ্যগুলির উত্পাদন শৃঙ্খলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তৃতীয়ত, সরকার ক্রয়ের উপর বড় হারে ছাড় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার মূল্যে বা তারও কম দামে পণ্যটিকে আবার বিক্রি করে পণ্য মজুত করার খরচ পুনরুদ্ধার করবে। এর পাশাপাশি, মূল্যের উপর নির্ভর করে এটি আংশিক বা সম্পূর্ণ রূপে সঞ্চয়ভাণ্ডারের খরচের ভারসাম্য রক্ষা করবে। নির্মাতাদের একই আলোচনায় অংশীদার করার জন্য খরচের মূল্যের উপর একটি অংশ বজায় রেখে লাভ ভাগ করে নেওয়ার মডেল তৈরি করার প্রয়োজন পড়তে পারে, যা সঞ্চয়ভাণ্ডারের খরচ সংক্রান্ত ভারসাম্যকে প্রতিরোধ করবে। সরকার যদি বড় মাপের চিকিৎসা সংক্রান্ত সুবিধাগুলির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে, তা হলে তা আর্থিক ঝুঁকির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনবে। এ কথা  অনস্বীকার্য যে, মূল্যের ওঠাপড়া সংক্রান্ত ঝুঁকি সব সময়ই থাকবে এবং তাকে উপযুক্ত মূল্য হ্রাস এবং বাজারের অন্তত আংশিক খরচ পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে প্রশমিত করা যেতে পারে, এমনকি তা ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম হলেও।

স্পষ্ট করে বলতে গেলে, ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত পণ্য নির্মাতাদের কাঁচামালের ভারসাম্য বজায় রাখা, বড় হাসপাতালের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সংক্রান্ত অক্সিজেন এবং মাস্কের মতো পণ্যের সঞ্চয় সুনিশ্চিত করা এবং রাজ্যগুলির প্রেক্ষিতে তাদের জনস্বাস্থ্যের নিরিখে প্রাসঙ্গিক পণ্য মজুত করার ক্ষেত্রে একটি আন্তঃসংযুক্ত ব্যবস্থার প্রয়োজন। এটি কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পর্যবেক্ষিত একটি ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইলের প্রয়োজনীয়তাকে হ্রাস না করলেও সঞ্চয়ভাণ্ডারকে অতিমারি/ মহামারি থেকে শুরু করে সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে কাজে লাগানো যেতে পারে। বহুমুখী সঞ্চয়ভাণ্ডারের অন্তর্ভুক্তি সরকারকে অন্য দেশগুলির সম্মুখীন একাধিক সমস্যার সমাধান করতে এবং একটি ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্টকপাইলিং আরও কার্যকর ভাবে প্রস্তুত করে আর্থিক ভাবে ভাল মডেল তৈরি করার প্রেরণা জোগাবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.