দক্ষিণ তামিলনাড়ু থেকে মাঝ সমুদ্রে একটি ভারতীয় বটম-ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পরে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর (এসএলএন) এক নাবিকের মৃত্যু হওয়ায় জেলেদের সেই দীর্ঘকাল অমীমাংসিত সমস্যাটি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এর ফলে, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সরকারি স্তরেও সংশ্লিষ্ট ‘কাচ্চাতিভু সমস্যা’কে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ ভারতীয় রাজনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির জটিলতা বুঝতে গেলে সমস্যাগুলিকে আরও বেশি সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখতে হবে এবং যেহেতু এতে উভয় পক্ষের মানুষ, তাঁদের জীবন এবং নির্বাচনী এলাকা জড়িত, তাই শুধু একক দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগেই এই সমস্যা সীমিত থাকে না।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ ভারতীয় ট্রলারের দশ জেলেকে গ্রেফতার করেছে এবং ‘হত্যা’র তদন্ত শুরু করেছে। কলম্বোর বিদেশমন্ত্রক ভারতীয় হাইকমিশনের এক আধিকারিককে তলব করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নথিভুক্ত করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের (এমইএ) সঙ্গে নয়াদিল্লিতে শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনও একই কাজ করেছে। অতীতে যেমন ভাবে ‘জাতিগত যুদ্ধ’ নিয়ে শ্রীলঙ্কার সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি বিরোধী মত পোষণ করেছিল, তার বিপরীতে হেঁটে শ্রীলঙ্কার তামিল (এসএলটি) ফিশার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা মৃত নাবিকের বাড়ি গিয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ ভারতীয় ট্রলারের দশ জেলেকে গ্রেফতার করেছে এবং ‘হত্যা’র তদন্ত শুরু করেছে। কলম্বোর বিদেশমন্ত্রক ভারতীয় হাইকমিশনের এক আধিকারিককে তলব করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নথিভুক্ত করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের (এমইএ) সঙ্গে নয়াদিল্লিতে শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনও একই কাজ করেছে।
মৎস্যমন্ত্রী ডগলাস দেবানন্দ - যিনি উত্তরের এক বিশিষ্ট তামিল নেতাও বটে - নাবিকের শেষকৃত্যে শবাধার বাহকের ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে ‘তামিলনাড়ুর নীরবতা জেলেদের সমস্যার সমাধানে বাধা দিচ্ছে।’ আরও বলেন যে, তিনি মৎস্যজীবীদের বৃহত্তর সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী (ইএএম) এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করতে এবং মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্তালিনের সঙ্গে আলোচনা করতে তামিলনাড়ুতে যেতে চেয়েছিলেন।
ঐতিহাসিক জলরাশি
নাবিকের মৃত্যু সেই বিতর্ককেই ফের উস্কে দিয়েছে, যা শ্রীলঙ্কায় তিন দশক ব্যাপী জাতিগত যুদ্ধের সময় বিরতি-সহ প্রায় ছ’দশক যাবৎ চলে আসছে। এই সমস্যার কেন্দ্রে ছিল ভারতীয়দের তরফে নির্বিচারে ও বেপরোয়া উচ্চ গতির বটম-ট্রলার এবং বড় আকারের পার্স সাইন নেটের ব্যবহার, যা ভারতে চালু করা হলেও এখনও শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ। এসএলটি জেলেরা বরাবরই অভিযোগ করেছেন যে, ভারতীয় জেলেদের তরফে এই ধরনের সামগ্রীর ব্যবহার আখেরে শ্রীলঙ্কার জেলেদের যান্ত্রিক নৌকা ও সরঞ্জামের ক্ষতি করেছে, জেলেদের আহত করেছে এবং প্রবাল ও অন্যান্য মাছের আবাসস্থলকে চিরতরে ধ্বংস করেছে। ২০০৯ সালে জাতিগত যুদ্ধের সমাপ্তি এবং ভয়ঙ্কর এলটিটিই-র ‘সি টাইগারস’ বহরের ধ্বংসের ফলে এসএলটি জেলেদের স্বদেশীয় সমুদ্রে প্রত্যাবর্তন ঘটে, যেখানে ভারতীয় জেলেরা কয়েক বছর আগে পুনরায় প্রবেশ করেছিলেন।
ভারতীয় জেলেদের ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইন বা আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমারেখা (আইএমবিএল) অতিক্রম করার জন্য শ্রীলঙ্কার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে হওয়া দু’টি চুক্তির মাধ্যমে আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যাতে দ্বিপাক্ষিক ভাবে দুই দেশই সম্মত হয়েছিল। নিজেদের দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ড ও সামুদ্রিক সম্পদ সুরক্ষার জন্য এসএলএস প্রধানত তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম উপকূল এবং পুদুচেরির কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কারাইক্কাল ছিটমহল থেকে আসা ভারতীয় ট্রলারগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল, যা কখনও কখনও জেলেদের মৃত্যু ও আহত হওয়ার কারণ হয়ে ওঠে।
উভয় পক্ষের আপাত-বিরোধী সংবেদনশীলতার কারণে নয়াদিল্লি এবং কলম্বো পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে এবং ২০০৮ সালে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার শেষে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে। বিবৃতিটিতে ‘মানবতাবাদী এবং জীবিকার মাত্রা’ স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং ‘আইএমবিএল অতিক্রমকারী ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কার জেলেদের বাস্তবসম্মত ভাবে মোকাবিলা করার জন্য ব্যবহারিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।’ শ্রীলঙ্কায় তখনও যুদ্ধ চলছিল এবং ‘ব্যবহারিক ব্যবস্থা’র মধ্যে কলম্বোর নিরিখে ‘শ্রীলঙ্কার উপকূলরেখা বরাবর সংবেদনশীল এলাকা’ জুড়ে তামিলনাড়ু সরকারের তরফে জেলেদের প্রকৃত মাছ ধরার জাহাজ ও পরিচয়পত্রের অনুমতি প্রদানও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উভয় পক্ষের বিরোধপূর্ণ সংবেদনশীলতার কারণে নয়াদিল্লি এবং কলম্বো পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে এবং ২০০৮ সালে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার শেষে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে।
জীবিকার প্রেক্ষিতে বিষয়টি ভারতীয় জেলেদের ‘ধ্বংসাত্মক মাছ ধরার অনুশীলন’ সংক্রান্ত। সরকার কর্তৃক সহায়তাকৃত মৎস্যজীবী পর্যায়ের আলোচনায় শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা অর্থপূর্ণ আলোচনার জন্য একটি পূর্ব-শর্ত রেখেছিলেন যে, ভারতীয় জেলেরা ট্রলার এবং পার্স সাইন জাল ব্যবহার করেন, যেগুলি শ্রীলঙ্কায় আইনত নিষিদ্ধ ও কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। ভারতের তরফে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সরকার অবশ্য সে সময়ে এই অবস্থানে অটল ছিল যে, মাছ ধরা তামিলনাড়ুর সেই জেলেদের জন্যও একটি ‘জীবিকাগত সমস্যা’ যাঁদের ‘ঐতিহাসিক জলরাশি’তে প্রবেশের ‘চিরাচরিত অধিকার’ ছিল।
এই আখ্যানটি রাজ্য সরকারের অবস্থান থেকে উদ্ভূত হয়েছে যে, ১৯৭৪ এবং ১৯৭৬ সালের চুক্তিগুলি - যা কিনা আইএমবিএল-এর রূপরেখা – আদতে ছিল আইনত ত্রুটিপূর্ণ। যাই হোক, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, কোনও অঞ্চলকেই ‘বাতিল’ করা হয়নি। তবে এ কথা ঠিক যে, এর জন্য সংসদীয় অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা এবং এম করুণানিধির যুক্তি অনুসারে, বিরোধী দলে থাকাকালীন তাঁরা ব্যক্তিগত ক্ষমতায় নিজেদের আবেদনে সে কথা স্পষ্ট করে বলেছিলেন। ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে যথাক্রমে দুই নেতার মৃত্যু হলে তাঁদের আবেদনও ‘বন্ধ’ হয়ে যায়।
ইউএন কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি-র (আনক্লজ) অংশ হিসাবে বিশ্বজুড়ে উপকূলীয় দেশগুলির মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক/বহুপাক্ষিক চুক্তির অধীনে বর্ণনাটি অভূতপূর্ব ছিল, যার যথাযথ প্রশংসা করা হয়নি। ভারত বিশেষত সেই জলসীমায় তৃতীয় দেশগুলির প্রবেশাধিকার দিতে অনাগ্রহী ছিল, যা এ ক্ষেত্রে আনক্লজ-এর মিডিয়ান লাইন প্রিন্সিপল বা মধ্য-রেখা নীতি থেকে বিচ্যুতিকে সহজতর করেছিল। তামিলনাড়ু বিষয়টিকে যে ভাবেই দেখুক না কেন, অপ্রতুল তথ্যের কারণে তখন এবং এখনও কাচ্চাতিভু দ্বীপের বিনিময়ে ভারত দক্ষিণতম অংশ কন্যাকুমারী উপকূলে ১০,০০০ বর্গকিমি খনিজ সমৃদ্ধ ওয়েজ ব্যাঙ্ক জলের মালিকানা এবং দখল পেয়েছে।
অগ্রাধিকার হলেও...
নাবিকের মৃত্যুর জন্য এই ১০ জেলেকে গ্রেফতার করার পরে মুখ্যমন্ত্রী স্তালিন ইএএম জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে সরকারি স্তরের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ-এর (জেডব্লিউজি) দ্রুত পুনরায় সমাবেশের অনুরোধ করেছিলেন। তার প্রত্যুত্তরে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ১৯৭৪ সালের চুক্তির বিতর্কিত প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন, যা এই বছরের শুরুর দিকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচারাভিযানের একটি ব্যর্থ দিকও বটে। সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী আলি সাবরি ঘোষণা করেছিলেন যে, অভ্যন্তরীণ ভারতীয় আখ্যান নিয়ে কলম্বো সরকার উদ্বিগ্ন নয়। কারণ এটি একটি ‘মীমাংসিত সমস্যা’। এমইএ মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সেই সময় থেকেই বলে আসছেন যে, নয়াদিল্লি সর্বদা শ্রীলঙ্কার হেফাজতে তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের কল্যাণকে ‘অগ্রাধিকার দেয়’ এবং ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কলম্বোর সঙ্গে আলোচনাও চালিয়েছে।
নাবিকের মৃত্যুর ঘটনায় ১০ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার আদালতের আদেশের মাত্র কয়েকদিন পরে এসএলএন-এর তরফে ২৫ জন তামিলনাড়ুর জেলেকে গ্রেফতার করার বিষয়টি দক্ষিণ তামিলনাড়ুর উপকূলীয় গ্রামগুলিতে আরও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। সিএম স্তালিন আবারও ইএএম জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছেন। তবে এ বার এই বিষয়টির সঙ্গে রাজনৈতিক প্রসঙ্গে টেনে দাবি করেছেন যে, কেন্দ্রে পরপর তিনটি বিজেপি সরকার ‘কাচ্চাতিভু সমস্যার সমাধান করার জন্য কোনও বাস্তব প্রচেষ্টা চালায়নি।’
নাবিকের মৃত্যুর ঘটনায় ১০ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার আদালতের আদেশের মাত্র কয়েকদিন পরে এসএলএন-এর তরফে ২৫ জন তামিলনাড়ুর জেলেকে গ্রেফতার করার বিষয়টি দক্ষিণ তামিলনাড়ুর উপকূলীয় গ্রামগুলিতে আরও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গক্রমে, ভারতে যত বারই কাচ্চাতিভুর বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে, তত বারই তা শ্রীলঙ্কা জুড়ে গণমাধ্যম/গবেষণার স্তরে প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সামুদ্রিক সম্পদের সুরক্ষার বিষয়গুলি কলম্বোর সংশ্লিষ্ট মহলকে আরও বেশি চাপ দিয়েছে। এ কথা আলাদা যে, সাম্প্রতিক ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ২৫ জন ভারতীয় শুধুমাত্র ‘দেশীয় নৈপুণ্যে’ই মাছ ধরছিলেন - যা শ্রীলঙ্কার তামিল জেলেদের দ্বারা অনুমোদিত হলেও অন্তত পক্ষে এসএলএন দ্বারা অনুমোদিত নয়।
কাচ্চাতিভু এখনও কেন্দ্রীয় বিষয় নয়
ঘটনাচক্রে কাচ্চাতিভু সমস্যাটি বৃহত্তর জেলেদের সমস্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। রামেশ্বরম এলাকার অভিজ্ঞ মৎস্যজীবীরা সহজেই স্বীকার করেন যে, ১৯৭৪ সালের চুক্তিতে যেমনটা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেই অনুযায়ী দ্বীপটিতে তাদের জাল শুকানোর অধিকার পুনর্বহাল করা হয়নি বা কাচ্চাতিভু পুনরুদ্ধারের বিষয়টিকেও আমল দেওয়া হয়নি। তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এই ধরনের পুনরুদ্ধার – তা ভারতীয় আদালতে নতুন করে আবেদনের মাধ্যমেই হোক বা আনক্লজ সচিবালয়, এমনকি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কাছে আবেদনের মাধ্যমে হোক না কেন – সম্ভাব্য বিকল্প নয়। কারণ এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে এসএলএন এবং এসএলটি জেলেদের বিদ্যমান বৈরিতা কাটিয়ে ওঠার আশা করা সম্ভব নয়। এই জেলেদের নেতারা ভারত বা ভারতীয়দের আনক্লজ বা আইসিজে-তে স্থানান্তরিত করার অ-সম্ভাব্যতা সম্পর্কেও সচেতন। বিষয়টি বিবেচনা করা হলেও সেটি যে ভীষণ একতরফা, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
ভারতীয় জেলেরা উল্লেখ করেছেন যে, শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিক সর্বসম্মত অনুমোদিত আইনি উদ্যোগগুলি বটম-ট্রলিং এবং চোরাশিকারের জন্য জরিমানা ও জেলের মেয়াদকে তীব্র ভাবে বৃদ্ধি করেছে, যা সমস্যাটি আরও গুরুতর করে তুলেছে।
এই সব কিছুই কার্যকর বিকল্পগুলির বিষয়ে চিন্তাভাবনা উস্কে দিয়েছে, যেখানে প্রথম দিকে প্রত্যাশিত বাধা সত্ত্বেও ‘গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা’ এখনও তালিকার শীর্ষে থাকতে পারে। প্রায় এক দশক আগে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সমন্বিত ভর্তুকিচালিত প্রকল্প হিসাবে চালু করা হলেও এই প্রকল্প কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যেও রাজনৈতিক চাপানউতোরের ফলে বাস্তবায়িত হয়নি। এর অর্থ হল রামেশ্বরমের জেলেদের কথা বলার সমান্তরাল প্রচেষ্টাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় ওখিতে আরও দক্ষিণাঞ্চলের গভীর সমুদ্রে একাধিক জেলের মৃত্যুতে বিষয়টি ধাপাচাপা পড়ে গিয়েছে।
তা সত্ত্বেও আইএমবিএল জুড়ে ব্যাপক বাধার পরিপ্রেক্ষিতে, মূল্যস্ফীতির নিরিখে অতিরিক্ত ভর্তুকি দিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং ২০১১ সালে রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুসারে আন্তর্জাতিক মূল্য ব্যবস্থা ও বিপণন প্রচেষ্টার বিষয়ে জেলেদের শিক্ষিত করাই সম্ভবত একমাত্র উপায়। যদি রামেশ্বরম এবং আশপাশের মাছ ধরার গ্রামগুলিতে স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অব্যাহত সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, তা হলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এখনই সচেতন প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সেই প্রচেষ্টাকে সর্বাঙ্গীন হতে হবে, সকল অংশীদারকে এতে সম্পৃক্ত হতে হবে। এর পাশাপাশি অর্থ, সময় এবং প্রচেষ্টা-সহ এই দীর্ঘমেয়াদি সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে।
এন সত্য মূর্তি চেন্নাইভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.