Author : Kabir Taneja

Published on Feb 13, 2024 Updated 0 Hours ago

এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, ইরানের নিরাপত্তা নীতি এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে এবং কৌশলগত ও চাতুর্যের তাস সকলকে দেখানোর জন্য দেশটি প্রচারের আলোয় উঠে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: তেহরান তার ভূ-রাজনৈতিক তুরুপের তাস প্রকাশ্যে রেখেছে

প্রধান সংবাদমাধ্যম সংস্থার, বিশেষ করে পশ্চিমের খবরের শিরোনামগুলিতে আর গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানের খবর উঠে আসছে না, যা এক সময় নিজস্ব ভৌগোলিক পরিসরের ঊর্ধ্বে উঠে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই জায়গায় শিরোনামে এসেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের খবর, যারা লোহিত সাগরের বাণিজ্যিক জাহাজের উপর আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছে। এ ছাড়া ইরান বর্তমানে সিরিয়া, ইরাক এবং এমনকি পাকিস্তানেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ইরান যে ইয়েমেনে হুতি কি লেবাননে হিজবুল্লা-র মতো বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন জোগাচ্ছে, তার উপর নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে, সিরিয়ায় তেহরানের লক্ষ্যবস্তু ছিল ভৌগোলিক ভাবে একই ধরনের অঞ্চল, যেখানে ইজরায়েল এর আগে ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীর উপরে হামলা চালিয়েছে।

দেশটির শক্তিশালী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পোরালস (আইআরজিসি) অনুসারে, ইরান সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছে গুপ্তচরবৃত্তি কেন্দ্রএবং ইরান-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সমাবেশলক্ষ্য করে। প্রথমটি ইজরায়েলি বাস্তুতন্ত্রের প্রতি ইঙ্গিত করা হলে পরবর্তীটির লক্ষ্য ছিল ইসলামিক স্টেটের (আরবিতে আইএসআইএস বা দায়েশ) শক্ত ঘাঁটিগুলি

বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত কুদস ফোর্সের কম্যান্ডার কাসেম সোলেইমানির সমাধির কাছে ইরানের কেরমান শহরে সাম্প্রতিক আত্মঘাতী সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে আইএসআইএস। ভাগ্যের পরিহাসে যখন ইরান, ইজরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন সাধারণ শত্রু হয়ে উঠেছে আইএসআইএস ও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির কার্যকলাপ, তখন উক্ত তিনটি দেশ একে অপরের লক্ষ্যসাধনের শরিক হয়ে উঠেছে।

ইরাকে হামলা সম্ভবত আরও আকর্ষণীয়। হামলাটি ঘটে ইরবিলের কাছে, যে অঞ্চলের কাছাকাছি মার্কিন সেনারা এখনও অবস্থান করছে। পেন্টাগনের সূত্র অনুযায়ী, এখনও দেশটিতে প্রায় ২৫০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে (আরও ৯০০ সৈন্য রয়েছে সিরিয়ায়)। কিছু ড্রোন ও অন্যান্য অনুরূপ অস্ত্র ব্যবহার করে ইরান-সমর্থিত সেনাবাহিনী নিয়মিত ভাবে মার্কিন সেনার উপর হামলা চালাচ্ছে।

 

বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত কুদস ফোর্সের কম্যান্ডার কাসেম সোলেইমানির সমাধির কাছে ইরানের কেরমান শহরে সাম্প্রতিক আত্মঘাতী সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে আইএসআইএস।

 

বাগদাদের রাজনীতিকে প্রায়শই মার্কিন ও ইরানের স্বার্থের মধ্যে পড়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হয়। যাই হোক, ইরবিলের বর্তমান হামলা বাগদাদের তরফে এক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে এবং শীর্ষ নেতৃত্ব তেহরান থেকে তার দূতকে প্রতিবাদস্বরূপ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিছু দিন আগে, প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির নেতৃত্বে একই প্রশাসন দেশটিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের উপস্থিতিকে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

তবে এ সব ঘটনা নতুন নয়। ইরান এর আগে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরাকের ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে এবং মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে তাদের ছোট আকারের অব্যাহত আঘাত বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে। সিরিয়া ও ইরাকে হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানের হামলা নজরে উঠে এসেছে। পাকিস্তানের অশান্ত বেলুচিস্তান প্রদেশে জইশ উল-আদিল (বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী) দ্বারা পরিচালিত শিবিরগুলিতে তেহরানের আক্রমণের নেপথ্যে প্রধান দুটি বিষয় হল দেশটির দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য এবং পাকিস্তানের একটি শূন্য রাষ্ট্রে নিমজ্জিত হওয়া সংক্রান্ত আখ্যান।

অবশেষে, গত কয়েক মাস ধরে ইরানের কর্মকাণ্ড বেশ কিছু বিষয়কে স্পষ্ট করে দিয়েছে। প্রথমত, আগ্রাসী ভাবে হামলা চালানোর বিষয়ে ইরানের রাজনৈতিক ইচ্ছা বছরের পর বছর ধরে আরও দৃঢ় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, ইরান অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ভাবে সমর্থন সুদৃঢ় করার জন্য এই ধরনের সক্রিয়তাকে ব্যবহার করতে চায়। এবং সবশেষে, ইরান সেই মৌলিক বিষয়গুলিকে সশক্ত করে তুলেছে, যেগুলির উপর ভিত্তি করে শিয়া রাষ্ট্রটি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর পুনঃনির্মিতহয়েছিল।

কেউ কেউ এই পরিস্থিতিকে একটি বিপর্যয়মূলক সাফল্য বলে অভিহিত করলেও এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, ২০২৩ সাল থেকে সকলের জন্য দ্রষ্টব্য ইরানের নিরাপত্তা নীতিটি তার কৌশলগত এবং চাতুর্যের তাসটি সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ্যে এনেছে।

 


এই প্রবন্ধটি প্রথম প্রকাশিত হয় মানি কন্ট্রোল-এ।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Kabir Taneja

Kabir Taneja

Kabir Taneja is a Fellow with Strategic Studies programme. His research focuses on Indias relations with West Asia specifically looking at the domestic political dynamics ...

Read More +